আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্রিকেট ফাইনাল: ভারতের যৌন পল্লীতে অন্যরকম একদিন



বিশ্বকাপ ফাইনালের লড়াই দেখতে ১২১ কোটি ভারতবাসীর সাথে সে দেশের যৌন কর্মীরাও শনিবার দুপুর থেকে টেলিভিশনের সামনে ভিড় জমিয়েছিল। ভারতের যৌন পল্লীগুলোতেও গতকাল খদ্দেরদের তেমন ভিড় ছিল না। যৌন কর্মীরাও ফাইনাল খেলা দেখার আগ্রহে ঝাঁপ ফেলে দিয়েছিল ঘরের। দু'একজন খদ্দের আসলেও যৌন কর্মীরা তাদের তাড়িয়ে দেয়। সকাল থেকেই ভারতের পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যের সবচেয়ে বড় যৌন পল্লী কলকাতার সোনাগাছীর যৌন কর্মী ও তাদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়।

এ দিনটি ছিল তাদের জন্য একটি ব্যতিক্রমী দিন। খেলা শুরু হওয়ার অনেক আগেই ছেলেমেয়েদের নিয়ে যৌন কর্মীরা টেলিভিশনের সামনে বসে পড়ে। খেলা শুরু হওয়ার আগেই মাঝে মধ্যে সিঁটি বাজিয়ে, শীষ দিয়ে, উলু ধ্বনি দিয়ে মাতিয়ে তোলে তাদের আখড়া। সাথে যোগ দেয় তাদের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরাও। সব মিলিয়ে সোনাগাছি যৌন পল্লী নয় বরং উৎসব পল্লীতে রূপ নিয়েছিল।

হয়ে উঠেছিল সদানন্দের আখড়া। ভারতীয় দলের জয় কামনা করে বারবার তারা অদৃশ্য ঠাকুরের প্রতি প্রণাম জানাচ্ছিল। পাশে রাখা বিভিন্ন খাদ্য প্রণামী হিসাবে অন্যান্যদের মধ্যে বিতরণ করে অজস্র পুণ্যের ভাগিদার হচ্ছিল। খেলা শুরু হওয়ার কিছু আগে জাতীয় সঙ্গীত বাজতে থাকলে ছেলেমেয়েদের নিয়ে যৌন কর্মীরাও দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীতে অংশ নেয়। ৩৮ বছর বয়সী সীমা পোদ্দার বলছিল, ফাইনালের কারণে আজ আর তেমন লোকজন হবে না।

তাইতো ছেলেমেয়েকে নিয়ে ফাইনাল দেখতে বসে গেছি। ভারত জিতবে কিনা জানতে চাইলে সীমা দু'হাত কপালে ঠেকিয়ে বলে, ভগবানের কাছে মানত করিচি যেন আমাদের বাছারা জেতে। পুরো একশ' টাকা মানত করে বলিচি বাছারা জিতলে সবাই মিলে বড় একটা কচ্ছপ কেটে বিলি করবো। ভগবান যেন আমাদের কথা শোনেন। আরেক যৌন কর্মী মাধু ঘোষের ভাষায়, আমি তেমন বুঝি টুঝি না, তবে ছেলেমেয়েদের কারণে আজ ঝাঁপি বন্ধ করে দিয়ে ক্রিকেট দিখতে বসে গেচি।

ওরা মানে আমার ছেলেমেয়ে কিরকেট খু-উ-ব ভালো বোঝে। সোনাগাছি যৌন পল্লীর পুরনো ভাঙাচোরা খুপরি টাইপ ঘরগুলোর ছাদের ওপরে পত পত করে উড়ছিল ভারতের পতাকা। সে সাথে শোভা পাচ্ছিল বিশ্বকাপের রেপ্লিকা। আশপাশের ভবনগুলোয় বিশাল স্ক্রিনে খেলা দেখছিল প্রতিবেশীরা। যৌন কর্মীদের অনেকেই সেখানে ভিড় করছিল।

কিন্তু কিছুক্ষণ পর পর তাড়া খেয়ে ফিরছিল যার যার ঘরে। বিজয় উল্লাস করার জন্য প্রায় সকলের কাছেই ছিল পটকা ও আতশবাজি। খেলার উত্তেজনার মুহূর্তগুলিতেও তারা উল্লাসে ফেটে পড়ছিল। সবমিলিয়ে ক্রিকেট ফাইনালটা সোনাগাছির যৌন পল্লীর বাসিন্দাদের জন্যেও একটি অন্যরকম দিন ছিল। Click This Link


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.