আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চোখের পানি রহস্য



জসিম উদ্দিনের ‘রাখালি’ কাব্য গ্রন্থের ‘কবর’ কবিতায় বৃদ্ধ দাদু তাঁর শিশু-নাতিকে দাদির কবর দেখিয়ে বলছেন, ‘তিরিশ বছর ভিজিয়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে’। . . . চোখে পানি আসে নানা কারণে। তার মধ্যে রয়েছে রাগ, দুঃখ, ভয় ইত্যাদি ভাবাবেগ। অতিরিক্ত দুঃখে যেমন মানুষের চোখে পানি আসে, আবার অতি আনন্দেও দু’চোখ পানিতে টলটলে হয়ে পড়ে। চোখে পানি আসার আরেকটি প্রধান কারণ হলো খুব ঠাণ্ডা বা গরম।

শীতের রাতে বাইরে বেশি ঘুরাফেরা করলে অনেকেরই চোখের পানি পড়া রোগ হয়। আবার ভর দুপুরে খররোদে চলাফেরা করলে বেশির ভাগ লোকেরই চোখে পানি আসে। জ্বালা করে চোখ। ধোঁয়া বা ঝাঁঝালো জিনিসের সংস্পর্শেও চোখের মণি পানিতে টলটলায়মান হয়। বেশি আলোতে টিভি, ভিসিআর দেখলে কী হয়? তাতেও চোখের ক্ষতি হয়।

চোখ ব্যথা করে। জ্বলে, পানি পড়ে। বিশ্বাস না হয়, একবার পরীক্ষা করেই দেখো না। চোখে পানি আসে কোত্থেকে? চক্ষুগোলকের ওপরে হাড়ের খোলসের নিচে, বাদামের মতো এক ধরনের গ্রন্থি থাকে। নাম অশ্রুগ্রন্থি বা ‘লেকরিমাল গ্ল্যান্ড’।

ল্যাটিন শব্দ ‘লেকরিমা’ মানে অশ্রু। গ্রন্থিতে যে তরল পদার্থ থাকে সেটাই আমাদের চোখের পানি। কখনো চোখের পানি জিভে লেগেছে কি? লাগলে মনে হবে- সেটা খানিক নোনতা। চোখের পানিতে তাই রয়েছে লবণ, পানি আর লাইসোজাইম নামক একটি এনজাইম। এটি মূলতঃ প্রোটিন জাতীয় পদার্থ।

এর কাজ চোখের ক্ষতিকর জীবাণুগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা। অজস্র চিকন নালি বেয়ে গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত রস নাকের পাশের কোণায় এসে জমে। সেখানে থাকে লেকরিমাল সেক বা অশ্রু থলি। সেখান থেকে পরে আরেকটি মোটা নালি পথে সে অশ্রু নাকে এসে পড়ে। সাধারণ অবস্থায় চোখের পানি ওপরের পাতা বন্ধ হবার সময় চোখের বাইরের অংশ ‘নেত্রবর্ত্নকলা’ ধুয়ে দেয়।

তাতে চোখ ভেজা থাকে। এছাড়াও চোখ রক্ষা পায় ক্ষতিকর জীবাণুর হাত থেকে। গ্রন্থি হতে পানির ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে ব্রেইনের মুক্ত কেন্দ্র হতে আগত কিছু স্নায়ু বার্তা। অনেক সময় অশ্রু থলি ও অশ্রু নালীতে জীবাণু সংক্রমণের কারণে পানি প্রবাহের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়। তাই সর্বদাই পানি চোখ দিয়ে উপচে পড়ে।

এর নাম ‘ডেকোরিওসিসটাইটিস’। এটা একটা জটিল রোগ। এর চিকিৎসায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.