আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রেমে জল হয়ে যাও গলে

জীবনধারার ছাপ চেতনাকে গড়ে, চেতনার ছাপ জীবনধারাকে নয়

আজ পাকিস্তান-ভারত মহারণ মোহালিতে। অনেকেই মুখিয়ে আছেন প্রাণভরে উত্তেজনাময় এই খেলা দেখার জন্যে। আমাদের মধ্যে অনেকে আজ সমর্থন দেবেন পাকিস্তানকে, কিছু ভারতকে। পাকিস্তানপ্রেম আমাদের সত্যি অসীম! '৭১-এর দোহাই, ভালো ক্রিকেটের দোহাই, ক্রিকেটে নৈতিকতার দোহাই, এমনকি বাঙালিদের প্রতি পাকদের বর্তমান মানসিকতার দোহাই দিয়েও আটকানো যায় না এসব। সবার ওপরে অমর বাণী: "খেলা আর রাজনীতি মেশাবেন না।

" আর, মানসিকতায় ধর্মের ধ্বজা বহন করা তো আছেই, চলবেই। কাজেই, পাকিস্তানের প্রতি সমর্থনও চলবে। আসুন, বর্তমান যুগে পাকিস্তান আমাদর কতোটা মূল্য দেয়, কী ভাবে তারা আমাদের সাথে তাদের অতীত নিয়ে, একটু দেখি। এবং, আরো মশগুল হয়ে যাই পাকপ্রেমে। ইতিহাস সম্পর্কে একটা দেশের অফিসিয়াল স্টেটমেন্টের বেশ কিছুটা বুঝবেন আপনি সে-দেশের পাঠ্যপুস্তক থেকে।

একটা জাতি বা রাষ্ট্র নিজের ভবিষ্যৎ কর্ণধারদের কী শেখায় এবং তাদের কাছ থেকে কী আশা করে, তার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে সেদেশের পাঠ্যপুস্তকগুলো ঘাঁটলে। গত ১৬ ডিসেম্বর, ২০১০ তারিখে পাকিস্তানের বহুলপরিচিত পত্রিকা 'ডন' ১৯৭১ বাংলাদেশের এবং পাকিস্তানের পাঠ্যপুস্তকে কিভাবে উঠে এসেছে, সেটা নিয়ে একটা প্রতিবেদন বের করে। প্রথমে সেখান থেকে কিছু অংশ পড়া যাক। দেখা যাক, তাদের মনোভাব বাংলাদেশ, এর অভ্যুদয়, এর স্বাধীনতা সংগ্রাম সম্পর্কে। পাকিস্তানের নবম ও দশম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকের 'ফল অব ই্স্ট পাকিস্তান' অংশ থেকে কিছু অংশ: "হিন্দু শিক্ষকদের ভূমিকা বিশাল সংখ্যক হিন্দু শিক্ষক পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদানে রত ছিলো।

এমনসব লেখালেখি তারা করতো যাতে করে বাঙালিদের মনে পশ্চিম পাকিস্তান সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব জন্ম নেয়। আন্তর্জাতিক চক্রান্ত প্রায় ১ কোটি হিন্দু পাকিস্তান ছেড়ে চলে যায়। ভারত নিজেদের স্বার্থে এসব হিন্দুদের পৃষ্ঠপোষকতা করে। পূর্ব পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন করে ভারত চাইছিলো হিন্দুদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে। অনেক হিন্দু কাজ করতো ভারতের গুপ্তচর হিসেবে।

রাশিয়া ছিলো পাকিস্তানের বিরুদ্ধ পক্ষে কারণ পাকিস্তান আমেরিকাকে পাকিস্তানে সেনাঘাঁটি স্থাপন করতে দেয়। অন্যদিকে, আমেরিকাও পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতা চায়। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া পাকিস্তানের ওপর ভারতীয় নির্যাতন খোলাখুলি সমর্থন দেয়। " দশম আর একাদশ শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে আরো বিশদে বেঠিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়। "শেষপর্যন্ত মার্শাল ল কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনী নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

সেনাঅভিযানে জামাত-এ-ইসলামির সশস্ত্র অংশটিও যোগদান করে এবং তাদের পুরনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সাথে হিসেব চুকানোর জন্যে সুযোগটা ব্যবহার করে। সেনাঅভিযানের ফলে, আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী ভারতে পালায় এবং ওখানে আশ্রয় নেয়। ভারত এসব কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র দেয় এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে লড়ার জন্যে তাদের পূর্ব পাকিস্তানে পাঠায়। 'মুক্তিবাহিনীর' এই সশস্ত্র সেচ্ছাসেবকেরা তাদের সংগ্রাম এবং গেরিলা যুদ্ধ চালিয়ে যায়। স্থানীয় জনসাধারণের সমর্থনের অভাবে এবং সেনা ও রসদের অপ্রতুল সরবরাহ ব্যবস্থার কারণে পাকিস্তানি সেনারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১-এ আত্মসমর্পণ করে এবং পশ্চিম পাকিস্তান ফ্রন্টে তেমন একটা উল্লেখযোগ্য আক্রমণ ছাড়াই অস্ত্রবিরতি হয়।

১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১-এ পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ নামে একটা স্বাধীন এবং মুক্ত রাষ্ট্র জন্ম নেয়। " মুক্তিবাহিনী আর বাংলার জনসাধারণের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চালানো দালিলিক নৃশংসতার-যার মধ্যে আছে ধর্ষণ, লক্ষ্যনির্ধারণী হত্যা- কোন বিবরণ পাঠ্যবইদুটোর কোনটাতেই পাওয়া যায় না। পাঠ্যবইগুলো বাংলাদেশ সৃষ্টির প্রক্রিয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক নাগরিক হত্যার কোন বিবরণ দিতে ব্যর্থ। মুজিব-উর-রেহমানের (sic) আওয়ামী লীগের সাথে জুলফিকার আলি ভুট্টোর ক্ষমতা ভাগাভাগির ব্যাপারে অনমনীয়তার কোন উল্লেখও বইগুলো করে না। বরং, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন হওয়ার ব্যাপারে যাদের ভূমিকা মুখ্য, তাদের আড়াল করে ষড়যন্ত্র, জনতার ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ এবং ভাষা আর ভারতের ভূমিকার মতো ব্যাপারগুলো নিয়েই মাতামাতি করা হয়।

টিচার্স ডেভলেপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক আব্বাস হুসেন ইতিহাসের এই বিবরণকে একটা প্রহসন মনে করেন। "আমাদের সন্তানদের আমরা পাঠ্যবইয়ে হাবিজাবি শেখাচ্ছি। " এসব শেখাতে গিয়ে শিক্ষকদের কেমন লাগে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি উত্তর দেন: "বেশিরভাগ শিক্ষকেরই শ্রেণিকক্ষ সিজোফ্রেনিয়া আছে, যেখানে শিক্ষক আর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এমনই একটা যোগসাজশ হয় যে শ্রেণিকক্ষের বাইরে একটা আসল দুনিয়া আছে আর শ্রেণিকক্ষেরটা হলো বানোয়াট দুনিয়া আর তোমরাও এটা হাসিমুখে মেনে নাও। " নামকরা একজন শিক্ষাবিদ এবং ইসলামাবাদের কায়েদ-এ-আজম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক পারভেজ হুদভয় জানান, "চল্লিশ বছর পরে, বাংলাদেশ ভারতের সাথে অনেক বিরোধিতায় জড়িয়ে পড়েছে বটে, কিন্তু পাকিস্তানের সাথে পুনর্মিলনের বিন্দুমাত্র আগ্রহ তাদের নেই। পাকিস্তানের স্কুলের পাঠ্যবইগুলো যদি সৎ ইতিহাস শেখাতো, তাহলে পূর্ব পাকিস্তান কেন শোষিত ভাবতো নিজেদের আর কেন তারা স্বাধীনতার জন্যে লড়াই করেছিলো, তা তারা বুঝতো।

এর বদলে, আমাদের সন্তানদের সাপ-ব্যাঙ ফালতু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব শেখানো হচ্ছে। " ও-লেভেলের একটা বইতে কিছুটা সত্যি বর্ণিত হয়েছে। রিজওয়ানা জাহিদ আহমেদের "পাকিস্তান-দ্য রিয়েল পিকচার (আ কমপ্রিহেনসিভ হিস্ট্রি কোর্স)" বইতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহিংসতার কিছু বিবরণ আছে: "এসেম্বলি বসার আগেই পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল টিক্কা আওয়ামী লীগের সশস্ত্র অংশ মুক্তিবাহিনীর ওপর একটা সেনাঅভিযান চালান, যা ভারতের অর্থপুষ্ট হিসেবে অভিযুক্ত ছিলো। এই অভিযানে প্রচুর নির্বিচার হত্যা করা হয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতার খবর যতোই বাড়তে থাকে, তেমনি সেনাদের বিরুদ্ধে বাঙালিদের প্রতিরোধও বাড়তে থাকে, যা কিনা অনেক ক্ষেত্রেই বর্বর ছিলো।

সেনাবাহিনীকে আসলে লড়তে হচ্ছিলো দুটো ফ্রন্টে, ভারতীয় আগ্রাসন আর সাধারণ জনতা। অবস্থা হতাশাব্যঞ্জকভাবে আমাদের আওতার বাইরে চলে যাচ্ছিলো। " ডন যে-পাঠ্যবইটায় কিছুটা সততা আছে বলে উল্লেখ করলো সেটার অবস্থাও কী করুণ! কোন ইতিহাসবিদ, যাঁর সম্যক জ্ঞান আছে ১৯৭১ নিয়ে, সেটাও ছুঁড়ে ফেলবেন আবর্জনায়। মুক্তিবাহিনী ছিল আওয়ামী লীগের 'militant wing', যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই মুক্তিবাহিনী ছিলো, তখন থেকেই এরা ভারতের টাকা খেয়ে গতর বানিয়েছে , বাঙালিদের প্রতিরোধও ছিলো 'often brutal' , শেষমেষ হতাশা, হায় সাধের উপনিবেশ চলে যায়, চলে যায়!!! অতএব, পরম করুণাময় পাকিস্তানের কোন কোন অবদান তোমরা অস্বীকার করিবে? এবার আরেকটু বর্তমানে আসুন। এখানে পাবেন পাকিস্তানের মীরপুরে মহান জয়ের পর এক পাকিস্তানি উচ্চশিক্ষিত ভদ্রমহিলার, সুন্দরীও বটেন, মাঠে খেলা দেখার অভিজ্ঞতা।

যারা পাকমনপেয়ার, তাঁরা একটু সামলে পড়ুন, রাগমোচন হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। অনুবাদ এই অধমের। নিশ্চিত হওয়ার জন্যে মূল লেখাটিও পড়তে পারেন। ছোটই। নুরুজ্জামান মানিকের ফেসবুকস্ট্যাটাসের একটি মন্তব্যে এটার খোঁজ পাওয়া গেছে, এজন্যে তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

তাঁর আক্ষেপভরা স্ট্যাটাস এবং সেখানে ত্যানা-পেঁচানির বিবরণও দেখতে পারেন। আশা করি, তিনি কিছু মনে করবেন না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সেদিন অর্থাৎ ২৩শে মার্চ, ১৯৭১-এ প্রথম সর্বত্র আমাদের জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়। "ঢাকায় কোয়ার্টার-ফাইনালে পাকিস্তানের সাথে ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলা দেখতে আসার সবচাইতে আনন্দের দিক এটা ছিল না যে আমরা নিতান্ত সহজ জয়ে উঠে গেছি সেমিতে বা এটাও না যে মুখে রঙ-মাখা আর পাকিস্তানি জার্সি-পরা আমি, আমার ভাই আর তার বন্ধুর ছবি এতবার টিভিতে এসেছে যে, দেশ থেকে আমাদের উত্তেজিত আত্মীয় আর বন্ধুদের পাঠানো ম্যাসেজে বারবার কেঁপে উঠছিলো আমাদের ফোন, কিংবা এ-তথ্যও নয় যে আমাদের নির্ধারক জয়টা এসেছে ঠিক পাকিস্তান দিবসে-মূল কারণটা ছিলো আমাদের জন্যে বাংলাদেশের জনতার অক্লান্ত সমর্থন। শার্টবিহীন যুবকের কপালে বাংলাদেশি পতাকা আঁকা, বুকে লেখা বুম বুম আফ্রিদি আর নৃত্যরত পেটে আঁকা পাকিস্তানি পতাকাই সব বলে দিচ্ছিলো।

পাকিস্তানি পতাকা নিয়ে দলে দলে দৌড়ানোই হোক বা ছেলেদের চন্দরপলের ব্যাট করার ভঙ্গি নকল করে ঠাট্টা করাই হোক-প্রতিটা মিনিটেই আমি ভুলে যাচ্ছিলাম যে আমি পাকিস্তানে নেই, যে এবার আমাদের বিশ্বকাপের যৌথ উদ্যোক্তা হতে দেওয়া হয় নি, যে বিদেশি দল দূরে থাক, নিজেদের নাগরিকদেরই রক্ষা করার ব্যর্থতার কারণেই বছরের পর বছর ধরে নিজের দেশের মাঠে খেলা দেখার সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত, আর পাশের স্যুভেনির বিক্রি-করা লোকটার সাথে আমি কথা বলা শুরু করে দিচ্ছিলাম উর্দুতেই। কেবল যখন তাকে বিভ্রান্ত দেখলাম, তখনই একমাত্র আমার হুঁশ হলো যে আমার ইংরেজি ব্যবহার করা উচিত। আর এই চরম সমর্থনের কারণ শুধু এটাই ছিলো না যে গ্রুপ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশকে খোঁড়া বানিয়ে দিয়েছে আর তারপর অভিযোগ করেছে যে বাংলা সমর্থকেরা তাদের বাসে ঢিল ছুঁড়েছে, বরং এটাও একটা কারণ যে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার সুযোগ পাওয়ার আগে, তাদের সমর্থন পুরোপুরিই ছিলো পাকিস্তানের দিকে। আর এখন আমরা তাদের পছন্দের দলে দ্বিতীয় স্থানে, সহজ কারণটা হলো তারা একদা ছিলো আমাদেরই অংশ। খেলার সময়, মেক্সিকান ঢেউয়ের যেন বিরামহীনভাবে আসছে তো আসছেই, আর পঞ্চমবারের মতো এতে অংশ-নেওয়ার পর আমার পাশের (একমাত্র) পাকিস্তানি আমায় বললেন, "ওরে বাবা, আর পারি না।

পরেরটার জন্যে আর দাঁড়াবো না। আমার ঠিক মাথায় ঢুকছে না যে-দলটা নিজের না তার জন্যে এরা এতো উৎসাহ দেখাচ্ছে কেনো। " কিন্তু, বাংলাদেশিরা নিশ্চয় ঠিক সেভাবে ব্যাপারটা দেখে নি। লোকেরা ভাবতে পারে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যায় ব্যবহারের জন্যে তারা এখনো আমাদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পুষে রেখেছে, কিন্তু ভারত-পাকিস্তানের শত্রুতার এক-দশমাংশও তো তাদের আচরণে দেখতে পাই নি, বরং তাদের অকৃত্রিম প্রেম স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠছিলো আমরা জার্সি কোত্থেকে কিনলাম সে-প্রশ্নে, অন্তত ডজনখানেকবার আমাদের সাথে ছবি তুলতে চাওয়ার অনুরোধে, আমাদের বড়মাপের তারকার মতো খাতির-করায় আর জয়ের পর স্টেডিয়ামের বাইরে উন্মত্ত উচ্ছ্বসিত ধাক্কাধাক্কিতে। খেলা শুরুর আগে যখন পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীত বাজছিলো তখন আমি আর আমার ভাই অর্ধ-চিৎকারে আর অর্ধ-গায়নে গলা মেলাচ্ছিলাম, আমাদের পাশে দাঁড়ানো এক বাংলাদেশি যুবক বলছিলো: "গানের কথাগুলো আমরাও জানি, ওটা তো একসময় আমাদেরও জাতীয় সঙ্গীত ছিলো।

" লেখাটা পড়ে মাথায় বিস্ফোরণ হয় যেনো। ক্ষোভে বমি করে দিতে ইচ্ছে করে নিজেরই ওপর। শেষ অনুচ্ছেদটা মিথ্যে ধরলেও (ওখানের মন্তব্যগুলো দেখতে পারেন) বাকিটা অস্বীকার করি কোন মুখে! নিজের মাকে অসম্ভব ভালোবাসি আমি, কোন কুকথা মা সম্পর্কে বা দেশমা সম্পর্কে সইতে পারি না। কিন্তু, নিজেকেই আমার শেষমেষ খুব কুৎসিততম একটা গালি দিতে ইচ্ছে করে! মা, মাগো, এই অধম ছেলেকে তুমি ক্ষমা কোর না। সেসব জারজবেজন্মাদেরও ক্ষমা করো না, তোমায় রাস্তায় চুল ধরে একদিন যারা হেঁচড়ে নামিয়েছিলো, নারীর সম্ভবপর সীমাহীন অপমান করেছিলো, তাদের দলকে, তাদের পতাকাকে যারা ভালোবাসে, সেসব গায়ে জড়িয়ে যারা উল্লসিত হয়, তোমার অপমান ভুলে যারা তোমার ধর্ষকদের সাথে হাত মেলায়! আমার মতো নপুংসককেও তুমি ক্ষমা কোর না।

বন্ধুরা, দুঃখিত, আমি একটু আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েছিলাম। এবার, শেষ কিস্তি। এই ভিডিওতে দেখুন, আফ্রিদি আর হাফিজ কিভাবে খেলাশেষে পাকিস্তানিদের ধন্যবাদ জানালো বাংলাদেশি মাদারচোদ পাকসমর্থকদের ওপর ছ্যাড়ছ্যাড় করে মুতে। আশা করি, পাকিমূত্রপান তাদের হায়াত এবং উত্তেজনা দুটোই বাড়াবে, আফট্রল মুতার আউটলেটটা তো সেইরকম! "....the way the people they came all the way from Pakistan and supporting us...thank you so much" এটা আফ্রিদি-বচন। আর, ম্যানচোদাম্যাচ হাফিজের অমর বাণীটি পাকপেয়ারিরা দেয়ালে টানিয়ে রাখবেন কিন্তু! "I would like to thank you the crowd they come all over from pakistan to here and especially the people of pakistan, they really pray for us." এটা আমুর ব্লগার চোরের অবদান , এজন্যে তাঁকে পাখাপোমাচু শুভেচ্ছা।

আসুন, প্লিজ পাকমূত্র এবং পাকবীর্য পান করুন আজও প্রাণভরে। আমার মতো অসুশীল, সহিংস জাতীয়তাবাদী, খেলার সাথে রাজনীতি-মেশানো বর্বর, মানবতাহীন এবং অতীত না-ভোলা গোঁয়ার বাঙালের কথাগুলোয় কান দেবেন না এবং মাহবুব লীলেনের নিচের উক্তিটা পড়বেন না এবং পড়লেও বুঝবেন না, এই প্রত্যাশায়। "আত্মায় জারজ না হলে কোনো বাঙালিই পাকিস্তানকে সমর্থন করতে পারে না"

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.