আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাঙালির মানস ও দ্বৈতনীতি

ট্রুথ নট সেইড টুডে, কুড টার্ন টু আ লাই টুমোরো ১। আমরা 'জয় বাংলা' স্লোগান দিতে পারি। কিন্তু 'জয় বঙ্গবন্ধু' না দিয়া 'জয় জনতা' আমদানি করি। ২। আমরা মাহমুদুর আর সাঈদীর কলিজু সংলাপ ধুমায়া শেয়ার করি, মজা লই।

কিন্তু বিচারপতি নাজিমের স্কাইপ আলাপন প্রচার-বিশ্লেষণ নিষিদ্ধ করি। ৩। আমরা সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আসতে বলি, কিন্তু দেশবিরোধী আওয়ামী চুক্তি নিয়া আলাপ করতে অস্বস্তিবোধ করি। ৪। আমরা ফাঁসীর দাবিতে দুনিয়া কাপাই, আবার প্রসিকিউশনের দূর্বলতা আর ৪ বছরের সরকারী অবহেলা দেইখা ক্ষিপ্ত হই না।

৫। আমরা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার শপথ নিয়ে শুরু করলে প্রধানমন্ত্রী শাহবাগ আসতে চান। আবার জামাত নিষিদ্ধ করার কথা বললে মন্ত্রীদের ধমক লাগান। ৬। আমরা গ্রামের মানুষের চান্দে সাঈদীদর্শনকে ট্রল করি, আবার নিজেরাই বেলুনে পত্র পাঠাই আসমানে।

৭। আমরা বাক-স্বাধীনতার, মুক্তচিন্তার কথা বলি ফেইসবুক ইউটিউব ব্যান করলে, আবার আমরাই বিরোধীমতের টিভি চ্যানেল পত্রিকাকে ব্যান করার দাবিতে সরব হই। ৮। আমরা মহানবী মুহাম্মদ (সাঃ)কে অবমাননার দায়ে সাঈদীরে গ্রেফতার করি, কিন্তু থাবাদের হাতে প্রতিনিয়ত অবমাননার ঘটনায় কোন মামলাই করি না। ৯।

আমাদের জনপ্রতিনিধিরা টক শো তে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির কথা বলেন, জামাতের মন্দিরে হামলার নিন্দা করেন। কিন্তু নিজেরা হতাহতদের বাড়িতে যান না। ১০। আমরা প্রবল ধর্মানুভূতিকে ধর্মান্ধতা বলি, কিন্তু প্রবল রবীন্দ্র সঙ্গিতানূভুতির জন্য লজ্জ্বিত হই না। ১১।

আমরা মোল্লাদের পরমতে সহনশীলতারর কথা বলি, আবার নিজের বন্ধুতালিকায় বাশেরকেল্লা লাইকারদের নির্দিধায় ডিলিট করি। ১২। আমরা ২৫ ফেব্রিয়ারী আসলে সেনা অভিসারদের জন্য কাঁদি, স্ট্যাটাস দেই। কিন্তু বিডিয়ারের ৪৭ জন হার্ট এটাকে মারা যাওয়া জওয়ান আর ছয় হাজার দন্ডপ্রাপ্ত পরিবারের কথা ভুলেও মুখে আনি না। ১৩।

আমরা স্বচ্ছ, আন্তর্জাতিক মানের বিচার চাই রাজাকারের জন্য, কিন্তু গরীব বিডিয়ার জওয়ানদের স্বচ্ছ-আন্তর্জাতিক মানের বিচারের জন্য 'সেইভ মুসলিম ব্রাদারস' স্লোগানে ইউটিউব, মসজিদ গরম করি না। ১৪। আমরা বিলাতি টবি ক্যাডম্যানকে সসম্মানে ফেরত পাঠালে দেশজ আইন-কানুনের সাথে বিদেশী কানুন মাপ দেই। কিন্তু ২০জন বিডীয়ারের জন্য ১জন সরকারী উকিল লড়লে আন্তর্জাতিক মান পকেটে ভাজ করে রাখি। ১৫।

আমাদের দেশনেত্রীর সরকারী বাড়ি হারালে হরতাল দেই, কিন্তু হিন্দু পরিবারের বাড়ি পুড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিলে হরতাল দূরের কথা, মানববন্ধন করতেও লোক পাওয়া যায় না। ১৬। টক শো সেমিনারে শেখ মুজিবর রহমানের সাধারন ক্ষমার ভূল ব্যাখ্যা দেই। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলি না। ১৭।

আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গনহত্যার ছবি দেখে মুভি ক্রিটিক সাজি, আবার নিজের দেশের গনহত্যার সংখ্যা নিয়া মিডিয়াতে বাহাস করি। ১৮। সারের দাবিতে বিক্ষোভ করা ১৮ গ্রামবাসীর বুকে গুলি চালানোকে গনহত্যা বলি না, কিন্তু সহিংস জামাতি মিছিলে গুলি চালাইতে গনহত্যা বলি। ১৯। তত্ত্বাবধায়ক আমলে আমরা সেনাবাহিনীর নাম নিলে সামনে পিছনে 'দেশপ্রেমিক' বলতে ভুলি না।

আবার ব্যাপক ভূমিধস বিজয়ে জেতা গনতান্ত্রিক সরকারের আমলে সীমিতমাত্রায় সেনা মোতায়েন করলে গণতন্ত্র 'চমৎকার' হবার ধোয়া তুলি। ২০। দেশের সমস্যা নিয়া হোয়াই হাইজ পর্যন্ত পিটিশন পাঠাই(নিঃসন্দেহে জামাতের সাথে প্রতিযোগিতাটা ভালো উদ্যোগ), কিন্তু নিজের দেশে গণভবনে চিঠি পাঠাইনা, প্রধানমন্ত্রীকেও সরব হতে বলি না। লেখাটি বাঙ্গাল ফেইসবুক পেইজে প্রকাশিত ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.