স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে আমাদের দেশে দু' দশক ধরে চলে আসা একটি বিতর্ক দিন দিন আরো অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়ে চলেছে। কিন্তু একটা কথা বলা যায়- যুক্তি এবং তর্ক এক জিনিস নয়। যুক্তি দিয়ে অনেক কিছু প্রমাণ করা যায় কিন্তু তর্ক-বিতর্ক দিয়ে তা সম্ভব নয়।
স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠকারী এবং স্বাধীনতার ঘোষক এক কথা নয়। যিনি মসজিদে আজান দেন এবং যিনি নামাজ পড়ান (ইমাম) উভয় এক সমান পদ মর্যাদার নয়।
এখন যদি যিনি আযান দেন তিনি যদি বলেন যে, আমার ডাকে সকল মানুষ মসজিদে ছুটে আসে তাহলে তিনি তা বলতে পারেন- কিন্তু নামাজ শুদ্ধ রূপে পড়ার দায়িত্ব এবং সকল দায়িত্ব ইমামের উপর বর্তায়। এবং ইমামকে অনেক বেশি জানতে হয়, অনেক বেশি দায়িত্বশীল, উত্তম চরিত্রের অধিকারী হতে হবে।
স্বাধীনতার যুদ্ধের আগে জিয়াউর রহমানের কোন রাজনৈতিক প্ল্যাট ফর্ম ছিল না। এবং স্বাধীনতার কয়েক বছর পর পর্যন্ত তিনি কোন রাজনৈতিক দলের কিছু ছিলেন না। কিন্তু আমরা জানি এদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর নেতৃত্বে এবং জনগণ তথা আপামর জনসাধারণের সক্রিয় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে।
বঙ্গ বন্ধ শেখ মুজবির রহমান ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। তাই স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়ে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ এর নেতৃবৃন্দ এবং আপামর জনসাধারণ তাকিয়ে থাকতেন বঙ্গ বন্ধু স্বাধীনতা এবং এদেশের ভবি্ষ্যত সম্পর্কে কি দিক নির্দেশনা দেন। তখন তো কাউকে বলতে শুনিনি অথবা ইতিহাসে উল্লেখ নেই যে জিয়াউর রহমানের কি বলেন তার দিকে এদেশের জনগণ তাকিয়ে আছে। স্বাধীনতা ঘোষণার এক ঘন্টা আগেও এদেশের জনগণ জিয়াউর রহমান সম্পর্কে কতটুকু জানত?
জিয়াউর রহমান ছিলেন মুক্তিযু্দ্ধের সময় ১১ টি সেক্টরে বিভক্ত একটি সেক্টরের কমান্ডার। তিনি যদি তৎকালীন সময়ে সবচেয়ে বড় দায়িত্বশীল পদে থাকেতেন তাহলে তিনি সেক্টর কমন্ডার না হয়ে হতেন সর্বাধিনায়ক।
মুক্তিযুদ্ধের শেষ হওয়ার পর তিনি হতেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তিনি তা হননি। তিনি বঙ্গ বন্ধু সরকারের অধিনস্ত এক সামরিক অফিসার হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেণ।
বঙ্গ বন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান রাজনৈতিক দল গঠন করেন। তিনি প্রেসিডেন্ট হন।
এদেশের রাজনীতির সংজ্ঞা অনেকটা তিনি বদলে দেন। এবং তার মৃতু্র বিএনপি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক প্রতিষ্ঠার জন্য ওঠে পড়ে লাগেন। আর সেই থেকে এই বিতর্কের শুরু।
জিয়াউর রহমানের অবদান এবং বঙ্গ বন্ধুর অবদান এদেশের মানুষ জানে। জানেন না শুধু আমাদের দেশের বিশেষ করে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
যদি জানতেন তাহলে পানির স্বচ্ছ বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক করে পানি ঘোলা করতেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।