আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্রিকেট মাষ্টার শচীনের আম্পায়ার লাগে না। সারা বিশ্বকে বুঝিয়ে দিলেন এই লিটল মাষ্টার। এবং কি বুঝিয়ে দিয়েছেন অসি অধিনায়ক রিকি পন্টিংকে।

স্বাধীন দেশে স্বাধীন ভাবে চলতে চাই.......

আগেই বলে রাখি আমি কোন দিন ভারত সাফোর্ট করি নাই। কিন্তু ভদ্র এবং গ্রেটদের সাফোর্ট সব সময় করে যাই। তেমনই এই ভদ্র এবং গ্রেটদের তালিকায় আছেন ভারতের লিটল মাষ্টার শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। গত পরশু ও.ইন্ডিজের সাথে তার সেই আচরনই বলে দেই শচীন কি জিনিস! বিশ্ব ক্রিকেটে শচীন টেন্ডুলকার বলবেন শেষ কথা। এ যাবৎ তিনি যা করছেন তা অন্য কেউ তার ধারে কাছেও নেই।

তিনি যা করবেন আর কেউ তা করতে পারবেন না। পারেননি দু'বারের বিশ্বজয়ী দলনেতা রিকি পন্টিং। শনিবার প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে পাকিস্তান ম্যাচে কট বিহাইন্ড হয়েও পন্টিং উইকেট ছেড়ে চলে যাওয়ার ভদ্রতা দেখাতে পারেননি, তার পর দিন চিপক স্টেডিয়ামে শচীন দেখালেন অনন্য নজির। আম্পায়ার নট আউট দিলেও শচীন সেই সিদ্ধান্ত পরোয়া না করে সোজা ড্রেসিংরুমে হাঁটা ধরেছেন। শচীনের ক্রিকেটের জন্য আম্পায়ার লাগে না, নিজেই যেন নিজের খেলার 'বিচারক'! একেই যেন বলে জেন্টালম্যান গেম।

ভারত ম্যাচটিতে জিতবে কি না, সে তো অনেক দূরের ব্যাপার। তখন সবার একটিই চাওয়া_ শচীন যেন তার স্বপ্নের বিচরণভূমিতে সেঞ্চুরির 'সেঞ্চুরি' করতে পারেন। এই সেই মাঠ, যেখানে 'বান্দ্রার বাদশা' কোনোদিন খালি হাতে ফেরেননি। দিনের প্রথম ওভারে এমন অঘটন ঘটার অপেক্ষায় কেইবা ছিলেন। ষষ্ঠবার বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলতে নামা এক মহীরুহের উইকেট নিয়ে চলে যাচ্ছেন মেগা ইভেন্টের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা এক অখ্যাত ক্যারিবিয়ান রবি রামপাল।

ক্যারিবিয়ান পেসারের ডেলিভারি আদৌ কোনো বাউন্সার ছিল না। ফরোয়ার্ড করতে গিয়ে শচীনের ব্যাটের হাতল ছুঁয়ে তালুবন্দী করেন বিপক্ষ উইকেটরক্ষক। উইন্ডিজ ক্রিকেটাররা তেমন আবেদন করেনি, এমনকি আম্পায়ার স্টিভ ডেভিসও আঙ্গুল না তুলে জানিয়ে দেন শচীন নট আউট, কিন্তু 'মাস্টার ব্লাস্টার' কোনো দিকে না তাকিয়ে বিবেকের কাছে পরিষ্কার_ তিনি আউটই ছিলেন। আম্পায়ার স্টিভ ডেভিসকে বুঝিয়ে দিলেন, ক্রিকেটে ভূরি ভূরি রান আপনার দেশের দলনেতা করতে পারেন, কিন্তু 'ক্রিকেটের ভদ্রতা' তাকে এখনো শিখতে হবে। এরপর আর কিভাবে পন্টিংকে শিক্ষা দেবেন শচীন? তখন শচীনের ব্যক্তিগত রান চার বলে দু'রান।

ক্রিকেট নিন্দুকেরা বলতে পারেন, কি দরকার ছিল নিজ সিদ্ধান্তে বেরিয়ে আসার। সেঞ্চুরিটা হয়েও যেতে পারত। কিন্তু শচীন যে সবকিছুর ঊধর্ে্ব। শচীনের আউট হওয়ার স্বপ্নভঙ্গের পরে সুনীল গাভাস্কার যেমন কমেন্ট্রি বক্স থেকে বেরুলেন একেবারে গালভরা হাসি নিয়ে। 'আরে বাবা, আমার রতন চিনতে ভুল হয় না।

সাধে কি আর ওকে আমি এত স্নেহ করি, ওর নাম যে শচীন টেন্ডুলকার বুঝিয়ে দিয়ে গেল। ক্রিকেটের মতো জেন্টলম্যান গেমকে ওর মতো ক্রিকেটারই টেনে নিয়ে যাচ্ছে। গর্বের হাসি সানির। ২৪ বছর আগে ১৯৮৭ সালে কোটলি ওয়ালস একবার মরণবাঁচন ম্যাচ পাক দলের টেলএন্ডার সেলিম জাফর নন স্ট্রাইকার প্রান্তে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গেলেও তাকে রান আউট না করে ভদ্রতার পরিচয় দিয়েছিলেন, ম্যাচের শেষ ওভারে ওয়ালশ ওই সৌজন্য না দেখালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হয়তো জিতে ফিরত। কিন্তু সেদিন ওয়ালশের দল হেরে গেলেও ক্রিকেটবিশ্বে ক্যারিবিয়ান পেসার হৃদয় জিতে নিয়েছিলেন।

গত রবিবার চিপকেও সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি না পেলেও ক্রিকেটবিশ্বে 'সেঞ্চুরি' পেয়ে গেলেন শচীন। আমি কোন দিন শচীন নামের এই নক্ষত্রকে ভুলবো না। যত দিন বেঁচে থাকবো শচীন কে মনে রাখবই। কারন তার অবদান তাকে ভুলতে দিবে না। ক্রিকেট জগতের এই নক্ষত্রের বিস্তারিত এইখানে।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.