আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গাদ্দাফিকে শায়েস্তা করতে জাতিসংঘের অনুমোদন

I am also expert in body builder.

লিবিয়ায় বেসামরিক জনগণের ওপর গাদ্দাফি বাহিনীর হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে 'প্রয়োজনীয় যেকোনো ব্যবস্থা' নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে জাতিসংঘ। লিবিয়ার আকাশকে 'নো ফ্লাই জোন'ও ঘোষণা করা হয়েছে। যেকোনো ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমোদন দেওয়ার মাধ্যমে জাতিসংঘ গাদ্দাফির বিরুদ্ধে কার্যত সামরিক অভিযান চালাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সবুজ সংকেত দিয়েছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গত বৃহস্পতিবার (বাংলাদেশ সময় গতকাল শুক্রবার ভোর) এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফ্রান্স বলেছে, শিগগিরই লিবিয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হচ্ছে। পর্যবেক্ষকরা ধারণা করছেন, প্রথম পর্যায়ে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নরওয়ে এবং কয়েকটি আরব দেশের বাহিনী সামরিক অভিযানে অংশ নিতে পারে।

জাতিসংঘে লিবিয়াবিষয়ক প্রস্তাব অনুমোদন পাওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। পরে হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, তিন নেতা অবিলম্বে জাতিসংঘের প্রস্তাব কার্যকর করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। এদিকে জাতিসংঘ প্রস্তাবের তাৎক্ষণিক নিন্দা জানায় লিবিয়া সরকার। দেশটির আকাশসীমায় বিদেশি সব ধরনের বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করে বলা হয়, লিবিয়া এখন আগ্রাসনের মুখোমুখি। তবে এর কয়েক ঘণ্টা পর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুসা কোউসা জানান, বিদ্রোহী বাহিনীর বিরুদ্ধে অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, বেসামরিক জনগণকে রক্ষার উদ্দেশ্যেই অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। অন্যদিকে জাতিসংঘে প্রস্তাব অনুমোদনের পর উল্লাস প্রকাশ করে মুয়াম্মার গাদ্দাফির বিরোধী লিবীয়রা। হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কর্তৃপক্ষ বলেছে, লিবিয়ায় বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে দমন অভিযান চলতে থাকলে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে কর্নেল গাদ্দাফিসহ শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে। ফ্রান্সের তোলা প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদে ১০-০ ভোটে অনুমোদন পায়। রাশিয়া, চীন, ভারত, জার্মানি ও ব্রাজিল ভোটদানে বিরত ছিল।

এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গতকাল দুপুরে ফ্রান্স সরকারের মুখপাত্র ফ্রাংকোস ব্যারোন সাংবাদিকদের বলেন, 'খুব অল্প সময়ের মধ্যে লিবিয়ায় ঝটিকা হামলা চালানো হবে। লিবিয়ায় হস্তক্ষেপ করার প্রস্তাব জাতিসংঘে উত্থাপন করেছে ফ্রান্স। তাই স্বাভাবিকভাবে সামরিক অভিযানে আমাদের দেশ অংশ নেবে। ' তবে কখন, কোথায় এবং কিভাবে হামলা চলবে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে তিনি রাজি হননি। জাতিসংঘের প্রস্তাবে লিবিয়ার বেসামরিক জনগণকে রক্ষার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে গাদ্দাফি বাহিনীর ওপরও হামলা চালানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

কাতার সরকার বলেছে, তারা আন্তর্জাতিক বাহিনীর অভিযানে সহায়তা দেবে। বেলজিয়ামের ইউরোপবিষয়ক মন্ত্রী অলিভার ক্যাস্টেল বলেছেন, ন্যাটোর নেতৃত্বে সামরিক অভিযান হলে তাঁরা এফ-সিঙ্টিন যুদ্ধবিমান ও ফ্রিগেট দিতে প্রস্তুত। সুইডেনও সামরিক হামলা চালানোয় সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। লিবিয়ায় বিমান হামলা চালানোর জন্য সামরিক ও বিমানঘাঁটি ন্যাটোকে ব্যবহার করতে দেবে স্পেন। অন্যদিকে, 'ভয়ঙ্কর ঝুঁকি' বিবেচনায় জার্মান সরকার লিবিয়ায় সামরিক অভিযানে অংশ না নেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং কোনো ধরনের চাপে প্রভাবিত না হয়ে লিবিয়ার বিষয়ে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য উত্তর আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে মনমোহন এ অবস্থান ব্যক্ত করেন। পোলান্ড সরকার বলেছে, তারা সামিরক অভিযানে অংশ নেবে না। তবে লিবিয়ায় মানবিক সহায়তা কাজের জন্য সেনা পাঠাতে তাদের আপত্তি নেই। চীনও লিবিয়ায় যেকোনো ধরনের সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করেছে।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিয়াং ইউ গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, 'আমরা যেকোনো দেশে সামরিক হস্তক্ষেপের ঘোর বিরোধী। এরপরও কয়েকটি আরব দেশের অবস্থান এবং লিবিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা জাতিসংঘের প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেইনি। ' রাশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকেও লিবিয়ায় সামরিক হামলায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।