আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশ কুকুরমুক্ত হোক....আমীন।



বাংলাদেশ ইংল্যান্ড ম্যাচ দেখার জন্য গিয়েছিলাম টি এস সি তে। ওখানে দাড়িয়ে সবার সাথে ম্যাচ দেখার মজাই অন্য রকম। আমি এর আগে কখনও টি এস সি তে খেলা দেখতে যাই নি। আমাদের আসে পাশে বিভিন্ন হলের ছেলেরা খেলা দেখছে। মেয়েদের সংখ্যা কমই।

তবে ছেলেগুলো ভাল মনে হল। নিরিহ টাইপ এর । খেলা দেখছে সাথে মজার বিভিন্ন কমেন্ট করছে। তাতে খেলা ডেখার মজা আরো বেড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু একটু দুরেই কিছু ছেলেদের দেখা গেল তারা চরম ভায়োলেন্ট।

কোথাকার কোন ডিপার্টমেন্টের আদৌ ঢাকা ভার্সিটির ছেলে কিন আমি জানিনা। কিন্তু তারা যা করছে তাতে তো আমার ভিরমি খাবার অবস্থা!! পুলিশের গাড়ি আসছে এরা সেই পুলিশের গারিতে উঠে নাচানাচি করছে। পুলিশ ঠেলে ধাককায়ে এদেরকে নামায়ে দিচ্ছে। কিনতু কিসের কি এররা আবার উঠছে। অবাক হয়ে গেলাম এটা দেখে যারা আইন শৃংখলার রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত তারাই আইন অমান্য কারীদের হাতে অসহায়।

আবার অনেকে দেখলাম পুলিশের এ অবস্থা দেখে হাসা হাসি করছে। কিন্তু মনে রাখা উচিত পুলিশকে সেখানে নাস্তানাবুদ হতে দেখে যতই হাসি পাক আমাদের ওখানে যারা পুলিশকে নাস্তানাবুদ করতে চাইছে তাদেরকে সরে যেতে বলা উচিত। অবশ্য বলবেই বা কে । ওরা একসাথে প্রায় ৪০-৫০ জন। এখানে কারো কিছু বলা মানে সে নিজেই তাদের আক্রমনের শিকার হতে যাওয়া।

এসময়ে দেখলাম একটা গাড়ি টি এস সি পার হচ্ছে। কতকগুলো উচ্ছৃংল ছেলেদের দেখলাম গাড়িতে সমানে গুতাগুতি করেই যাচ্ছে। এর মধ্যে কতকজন গাড়ির বাম্পারে উঠে পড়ল। উঠে হইচই করছে। এমন সময় গাড়ির বাম্পার খুলে আসলো।

তখন ঐ গাড়িটি বাম্পার না নিয়েই তাড়াতাড়ি চলে গেল। এখন তারা কি বুঝতে পেরেছিল কিনা যে বাম্পার খুলে গেছে তা আমি জানি না। আবার এর মাঝখানে দেখলাম কেউ কেউ পটকা ফুটাচ্ছে। এত লোকজনের মধ্যে এই পটকা থেকে ভয়াভহ আগুনের সুত্রপাত হলে তখন কাকে দোষারোপ করা হবে?? আবার বাইক থেকে এই পটকাগুলা ইচ্ছামত যেখানে সেখানে ফেলা হচ্ছে। কারো কোনো ইনজুরী হলে এতে তার দায়ভার কে নেবে?? যখন খেলা প্রায় শেষের দিকে বাংলাদেশ জিতবে এমন একটা অবসথা তখন তারাতারি বাসায় চলে আসলাম।

কারন আমার ভয় হচ্ছিল খেলা শেষ হওয়া মাত্রই লোক জন আরো উচ্ছৃংখল আচরন করতে শুরু করবে তখন আমার নিজের ই মান সম্মান বাচানো মুশ্কিল হয়ে যাবে। তাই বাসায় ফিরে আসলাম। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে গেল। সবাই আনন্দে আত্মহারা। তখন ভাবলাম দেখি বাসার সামনের রাস্তায় কে কেমনে আনন্দ করছে।

বাসার সামনের রাস্তায় একটু এগোতেই দেখি ওমা হাজার হাজার মানুষ একজন মেয়েমানুষকে হাতের সামনে দেখে দৌরে আক্রমনের জন্য তেড়ে আসছে। আমার হাসবেন্ড কোনো উপায় না দেখে বাইক ঘুরিয়ে ফেলল এবং জোড়ে হর্ন দি্যে উল্টা চলে যেতে চাইল। ইতি মধ্যে উল্টা দিক থেকেও কিচু মানুষ চলে আসছে। আমরা উপায় না দেখে একটা গোলিতে ঢুকে গেলাম। ওখানে কেউ নাই।

আমার মনে তখন চরম ভয় ঢুকে গেছে। আমি বল্লাম দরকার নাই ঢাকায় আনন্দ মিছিল দেখার তুমি বাসায় চল। ও বলল না থাক সবাই তো বের হয়। দেখো সামনে সমস্যা হবে না। আমি তবু নিশ্চিত হতে পারিনা।

আগারগাও এ পৌছালাম। আমার মনে প্রচন্ড ভয়। কি যেন হয়। আমি কোনো আনন্দই উপভোগ করতে পারছিনা। মনে হচ্ছে সব কুকুরের দল হামলে পড়বে।

তীব্র আতংক মনের ভিতর। আমি এই কুকুরগুলার আক্রমনের শিকার হতে চাইনা। আমি খবরের কাগজের চটকদার খবরের শিরোনাম হতে চাইনা। আমি বাসায় চলে যেতে চাই। আমি কোনো আনন্দ মিছিল দেখতে চাইনা।

রাস্তায় দেখলাম আরো কিছু মানুষ তাদের স্ত্রী দের বা বোনদের বা মেয়েদের ণিয়ে আনন্দ মিছিলে আসছে। মেয়েরা দেখলাম সেখানে শুধু দর্শক মাত্র। তারা যে আনন্দ মিছিলে শামিল হবে তার অধিকার তাদের নাই। শুধু তাকিয়ে দেখবে। সবার মধ্যেই সংশয়।

সবাই মিছিল থেকে একটু দুরে দারিয়ে দেখছে আর হাসছে অথবা হাতে তালি দিচ্ছে। আমি বুঝলাম না। মেয়েরা কি এতটাই অস্পৃশ্য নাকি এতটাই লোভনীয় যে কারো সাথে আনন্দ মিছিলে পর্যন্ত যাওয়া যাবে না। দুরে দারিয়ে সব উপভোগ করতে হবে। দুরে দারিয়ে আনন্দ পেতে হবে।

কাছে গেলেই শাস্তি কাছে গেলেই সংবাদ শিরোনাম পত্রিকার কাটতি ....। এ শাস্তির কারন কি?? আমরা যেকোনো বিজয়ে অবশ্যই আনন্দ করব। কিন্তু সেটা অন্যকে ক্ষতি করে কেন? অন্যকে বাধা দিয়ে কেন? অন্যকে হয়রানী করে কেন??অন্যকে আক্রমন করে কেনো?? ক্ষতি করার মাঝে হয়রানী করার মাঝে কি আনন্দ?? যারা এসবে আনন্দ পাচ্ছে তারা সবাই মানসিক রোগী এরা কি তা বুঝতে পারছে??আক্রমনের মধ্যে মানুষ এর আনন্দ পড়েনা এটা কি তারা বোঝে?? সবশেষে শুধু এটুকুই কামনা করি বাংলাদেশ কুকুরমুক্ত হোক....দুই পায়ের কুকুরমুক্ত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.