আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেয়াদোত্তীর্ণ ও মানহীন খাদ্য দ্রব্যে সয়লাব দেশের বাজারঃ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে প্রতারিত মানুষ

সামুতে অর্থহীন অশুদ্ধ বাংলা ও বাংলিশ শব্দ পরিহার করি
কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ক্যাব) বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যের উপস্থিতি নিয়ে বেশ কিছু জরিপ চালিয়েছে। ওইসব জরিপ থেকে জানা যায়, বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যের পাশাপাশি এমন অনেক খাদ্য রয়েছে যেগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা থাকে না। ওইসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে ভার্জিন কোলা, চিয়ার্স, পেপসি ডায়েট, প্রাণ ম্যাংগো জুস, ফু-ওয়াং পাউরুটি, বনফুল পাউরুটি, কোকাকোলা, স্প্রাইট, মোজো, আরসি কোলা, তীর সয়াবিন তেল, ফ্রেস সয়াবিন তেল ইত্যাদি। মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্য বিক্রির বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই। এ নিয়ে ভোক্তাদের অভিযোগের শেষ নেই।

শুধু দেশি খাদ্য নয়, বিদেশ থেকে আমদানি করা খাদ্যেও নিরাপদ নন ভোক্তারা। আবার অনেক ক্রেতার অভিযোগ, খাদ্যের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলে নতুন লেবেল লাগিয়ে তা বিক্রি করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্য দেশের সব জায়গাতেই বিক্রি হচ্ছে অনায়াসে। তবে শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামে এসব খাদ্যের বিক্রি বেশি। আর এসব খাদ্য কিনে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন ক্রেতারা।

তাদের ভুগতে হচ্ছে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায়। মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যে গুণগত মানের পরিবর্তন ঘটতে পারে। বদলে যেতে পারে রং, স্বাদ ও গন্ধ। কারণ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলে খাদ্যের প্রিজারভেটিভ কাজ করে না। তখন খাদ্যের মধ্যে বিভিন্ন জীবাণু জন্ম নেয়।

জীবাণু গুলো বংশ বিস্তারের সময় খাদ্যে এক ধরনের টক্সিন উৎপন্ন হয়, যা মানুষের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এর ফলে পাকস্থলীর বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। ডায়রিয়া, আমাশয়ের মতো রোগ হতে পারে। ' তিনি বলেন, 'খাদ্যে যে প্রিজারভেটিভ দেয়া হয় তা বেশি মাত্রায় দিলে ক্যান্সার হতে পারে। এবার জানা যাক কোন খাদ্যদ্রব্যের মেয়াদ সাধারণত কতদিন থাকে ।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একেক খাদ্যে একেক রকম মেয়াদ থাকে। যেমন পাউরুটির মেয়াদ সাধারণত ২৪ ঘণ্টা থাকে। কোলা জাতীয় খাদ্যের মেয়াদ থাকেন তিন মাস থেকে এক বছর। জুস জাতীয় খাদ্যের মেয়াদ সিল করা অবস্থায় উৎপাদন তারিখ থেকে আট মাস এবং খোলা অবস্থায় ৭ থেকে ১০ দিন থাকে। কেচাপ সিল অবস্থায় এক বছর এবং খোলা অবস্থায় চার থেকে ছয় মাস ভালো থাকে।

মেয়নিজ সিল খোলা অবস্থায় দুই থেকে তিন মাস ভালো থাকে। আচার সিল খোলা অবস্থায় ১৮ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে। সস দুই বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। সিরকা প্রায় ৪২ মাস ভালো থাকে। টি-ব্যাগ ভালো থাকে দুই বছর পর্যন্ত।

কিন্তু প্রায়ই মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও এসব খাদ্য নতুন লেবেল লাগিয়ে বাজারে বিক্রি করা হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ ও মেয়াদের তারিখবিহীন খাদ্য বিক্রি করা এক ধরনের প্রতারণা ও অপরাধ। মানহীন বা অযোগ্য খাদ্য উৎপাদন ও বিক্রয় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোন ব্যক্তি মানহীন বা খাবার অযোগ্য খাদ্য কিনে প্রতারিত হলে তিনি বাংলাদেশ দ-বিধির বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ-১৯৫৯-এর ৬৯(১১) ধারায় মামলা করতে পারেন। পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত আইন-১৯৫৯ অনুযায়ী কোন ক্রেতা প্রতারিত হলে তিনি ১৭০ টাকার বিনিময়ে মামলা করতে পারেন।

বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে অভিযোগকারীর প্রথমেই এক হাজার টাকার বেশি খরচ হয়ে যায়। এ অপরাধের জন্য পাঁচ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা জরিমানা এবং ছয় মাস থেকে তিন বছরের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদ- বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন। তবে মামলা চালাতে এবং এর রায় পেতে কয়েক বছর লেগে যায়। এছাড়া প্রয়োজন হয় প্রশাসিন প্রমাণপত্রের। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কেউ সহজে এ পথে পা বাড়ান না।

উপসংহারে বলা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যের ব্যাপারে ক্রেতাদেরও সচেতন হওয়ার কোন বিকল্প নাই। যে কোন পণ্য কেনার আগে তার মেয়াদ আছে কি-না তা দেখে বিশ্বস্ত দোকান থেকে ক্রয় করার অভ্যাস করতে হবে।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.