আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশের ১৬১৪২ গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই



দেশের ১৬ হাজার ১৪২টি গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এর মধ্যে সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী, জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনা করলে এক হাজার ৯৪৩টি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকা উচিত ছিল। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক জরিপে ওই তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, দেশের চর, সীমান্ত, হাওর-বাঁওড় ও পাহাড়ি এলাকায় প্রয়োজন থাকলেও বিদ্যালয় গড়ে না ওঠায় প্রাথমিক শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। দেশের ১৬ হাজার ১৪২টি গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই।

এর মধ্যে সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী, জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনা করলে এক হাজার ৯৪৩টি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকা উচিত ছিল। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক জরিপে ওই তথ্য পাওয়া গেছে। জানা যায়, দেশের চর, সীমান্ত, হাওর-বাঁওড় ও পাহাড়ি এলাকায় প্রয়োজন থাকলেও বিদ্যালয় গড়ে না ওঠায় প্রাথমিক শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী দেশের কোন কোন গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই, তার হিসাব বের করার উদ্যোগ নেন। এ প্রসঙ্গে সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই চিত্র প্রমাণ করে, সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলো দেশের সর্বত্র, সব মানুষের কাছে, বিশেষ করে অনুন্নত ও অনগ্রসর এলাকায় পৌঁছাতে পারেনি।

’ তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের কতটি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই, সংশ্লিষ্টদের সেই হিসাব বের করতে বলেছিলাম। ’ এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, সরকার না-হয় করতে পারেনি, বেসরকারি সংস্থাগুলো এসব প্রত্যন্ত এলাকায় কেন যায়নি—এটা তাঁরও প্রশ্ন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে সরকারি-বেসরকারিসহ ১১ ধরনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৮০ হাজার ৩৯৭টি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৬৭২টি এবং নিবন্ধিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৯ হাজার ৬৮২টি। প্রাথমিক স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ শিশু-কিশোর।

জানা যায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০০৮ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকা গ্রামের তালিকা চূড়ান্ত করে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী কুমিল্লা জেলার এক হাজার ১৭৩টি গ্রামে, মানিকগঞ্জ জেলার ৫৪৮টি গ্রামে, টাঙ্গাইল জেলার ৫২৮টি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এ ছাড়া দিনাজপুরের ৩৩৬, রংপুরের ২৩৭, জয়পুরহাটের ৩২৬, সিরাজগঞ্জের ৩৫৬, পাবনার ৩৬৮, সাতক্ষীরার ৩৩৫, নেত্রকোনার ৮৭৯টি গ্রামসহ বিভিন্ন জেলার কয়েক শ গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর ও বোহাইলইউনিয়নের মধ্যবর্তী মাত্র আড়াই কিলোমিটার এলাকায় ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়গড়ে উঠেছে। অথচ বোহাইলইউনিয়নের নদীবেষ্টিত চরমাঝিড়া গ্রামে কোনো বিদ্যালয় না থাকায় ওই গ্রামের শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

যমুনা তীরের বিভিন্ন গ্রাম ভাঙনের কবলে পড়ে নদীবক্ষে বিলীন হওয়ার পর ওইসব গ্রামের স্কুলগুলো কামালপুর ইউনিয়নের দড়িপাড়া গ্রাম ও এর আশেপাশের আড়াই কিলোমিটারের মধ্যে ঠাঁই করে নেয়। পরে সরকারি উদ্যোগের অভাবে স্কুলগুলো আর আগের ঠিকানায়ফিরতে পারেনি। টেকনাফ প্রতিনিধি গিয়াসউদ্দিন জানান, কক্সবাজারের মিয়ানমার সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের ছয়টি ইউনিয়নে গ্রাম রয়েছে ১৪৩টি। এগুলোর মধ্যে ৭৭টি গ্রামে সরকারি-বেসরকারি কোনো ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। ব্যক্তি উদ্যোগে দুর্গম গ্রামে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হলেও নানা সমস্যায় সেগুলোও পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে।

ফলে প্রায় ৪৫ হাজারের মতো শিশু-কিশোর শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব শিশু-কিশোর লেখাপড়ার পরিবর্তে সমুদ্র উপকূলে চিংড়ি পোনা আহরণ, মাছ ধরা, পাহাড় থেকে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তোফায়েল ইসলাম জানান, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও সরকারের উচ্চ মহলে লেখালেখি করে ৭৭টি গ্রামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান। হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের কম্বনিয়া পাড়ার বাসিন্দা সাহিলা চাকমা জানান, পাহাড়ঘেরা এই দুটি গ্রামে চার শতাধিক উপজাতি পরিবার বসবাস করে। এসব পরিবারে বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী অন্তত দেড় হাজার শিশু-কিশোর থাকলেও দুটি গ্রামে কোনো বিদ্যালয় নেই।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোবারক আখতার জানান, গ্রামগুলোতে বিদ্যালয় স্থাপনের গুরুত্ব তুলে ধরে ওপর মহলে কয়েকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.