আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশের জনগনের যদি ভোটাধিকার না থাকে, তবে কি জনগনকে আর দেশের মালিক বলা যাবে ?



আমরা সকলেই জানি যে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩আসনে জনগনের ভোট ব্যতিরেকে অর্থ্যাৎ বিনা নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে যাচ্ছে । ভোটের হিসাবে এই ১৫৩আসনে ভোটের পরিমান মোট ভোটের প্রায় ৫৩শতাংশ অর্থ্যাৎ অর্ধেকেরও বেশী ভোটার, আগামী ৫ই জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে ভোট দিতে পারবে না । অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এইরুপ একটি নির্বাচনের মাধ্যমে যদি সরকার গঠিত হয় এবং উক্ত সরকার যদি তার পাঁচ বছরের নির্দিষ্ট মেয়াদ পূরন করতে পারে, তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০আসনেই জনগনের ভোট ব্যতিরেকেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবে, এই ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নাই । অর্থ্যাৎ একাদশ নির্বাচনে যদি জনগনের ভোট ব্যতিরেকেই বিনা নির্বাচনে সকল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় ,তবে দেশের সকল ভোটারই তার ভোটাধিকার হারাবেন । আমাদের সংবিধান অনুযায়ী জনগন হলো দেশের একচ্ছত্র মালিক ।

তাই জনগন নামক মালিকদের সরাসরি ভোটে, প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর আমাদের দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং এই সংসদ নির্বাচনে যারা কমপক্ষে ১৫১টি সংসদীয় আসনে জয়লাভ করে, তারাই তখন সরকার গঠন করে । কিন্ত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে যে, ১৫৩টি সংসদীয় আসনে জনগনের ভোট ব্যতিরেকেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে চলেছে । তাহলে আমার প্রশ্ন- এই ১৫৩টি আসনের যারা ভোটার, তাদেরকে কি আর দেশের মালিক বলা যাবে ? এই ১৫৩টি আসনের সংসদ সদস্যদের কাছে কি অত্র সংসদীয় আসনগুলির ভোটার তথা জনগনের আশা-আকাংখা বা চাহিদার কোন মূল্য থাকবে ? এই প্রসংগে আমি একটি বাস্তব ঘটনার উল্লেখ করছি- গত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার এলাকায় যিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন, তিনি নির্বাচনের সময় জেলখানায় বন্দি ছিলেন । নির্বাচন শেষে সরকার গঠনের পর যখন তিনি জেলখানা থেকে বের হন, তার কিছুদিন পর আমাদের এলাকার বেশ কয়েকজন গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, আমাদের সেই নির্বাচিত সংসদ সদস্যের সাথে দেখা করে, এলাকার কিছু সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে তার সহযোগিতা কামনা করেন । প্রতি উত্তরে আমাদের মান্যবর সেই সংসদ সদস্য, যাদের কল্যানে উনি জেলখানায় বন্দি থেকেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাদেরকে মুখের উপর বলে দিলেন যে, "আমি কি জেলখানা থেকে তোমাদের কাছে ভোট চাইতে গিয়েছিলাম যে, এখন আমাকে তোমাদের আবদার মেটাতে হবে ? " ভোট চায় নাই বলে, তাকে ভোট দেওয়াটাও ছিল আমাদের এলাকার জনগনের অপরাধ ।

সুতরাং ভাবুনতো এখন, যেই জনগন ১৫৩জন সংসদ সদস্যকে ভোট দেওয়ারই কোন সুযোগ পেলনা , সেই জনগনের পক্ষে কিভাবে এই সকল সংসদ সদস্যদের কাছে এলাকার উন্নয়নের জন্য দাবী-দাওয়া পেশ করা সম্ভব হবে ? সুতরাং ৩০০ সংসদীয় আসনের জনগন যদি সরাসরি ভোট দিয়ে, সংসদ সদস্য নির্বাচন করার অধিকার হারায়, তবে এইদেশের জনগন কিভাবে দেশের মালিক হিসাবে প্রমানিত হবে, আর মালিক হিসাবে সরকারের কাছ থেকে কিভাবে তাদের ন্যায্য অধিকার আদায় করবে, এই প্রশ্ন আমার- সকল বিবেকবান নাগরিকদের কাছে ?


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.