আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার নতুন মটরসাইকেল পুলিশের হাতে ধরা অতঃপর আমার ১৫০০০ টাকার গচ্চা (একটি উচিত শিক্ষা মুলক পোস্ট))

তোমার স্বদেশ লুট হয়ে যায় প্রতিদিন প্রতিরাতে, বিরুদ্ধতার চাবুক ওঠাও হাতে

অনেক শখ করে মাসখানেক আগে নতুন একটা মটরসাইকেল কিনেছিলাম। কেনার পরে একটু হাত টান পড়ে গিয়েছিল আর কাগজপত্রও শো রুম থেকে আনা হয়নি বিধায় রেজিস্ট্রেশন এর টাকাটা জমা দিতে একটু দেরি হচ্ছিল। রেজিস্ট্রেশন নেই বলে বাইরেও খুব একটা যেতাম না। কিন্তু একমাসের মাথাই এত বড় বাঁশ খাব বুঝতে পারিনি। সেদিন বিকালে অফিসের কাজে বাইরে ছিলাম এই ফাকে আমার শালাবাবু আমার মটর সাইকেলটা নিয়ে সরাসরি পুলিশের দরবারে হাজির।

কেনার পর থেকেই মটরসাইকেলটার প্রতি আমার সেকি দরদ। বউ তো মাঝে মাঝে হিংসা করত যে তার চেয়ে মটর সাইকেলটাই আমার কাছে বেশি প্রিয় কিনা। একবার চালালে দশবার করে মুছে রেখে দেই। আবার কাপড় চোপড় দিয়ে ঢেকে ঢুকে রাখি যাতে করে কোন ধুলাবালি না পড়ে। আমার সেই শখের বাইক পুলিশের হাতে ধরা খেয়েছে শুনে বিদ্যুৎ গতিতে ছুটে গেলাম থানায় যেতে যেতে ভাবছিলাম এটা এমন কোন সমস্যা না একটু এদিক সেদিক করলেই ছাড়িয়ে আনা যাবে।

কিন্তু বাংলাদেশের পুলিশ যে আইনের প্রতি এত স্ট্রিক্ট তা আগে জানা ছিলনা। সকল দিক দিয়ে সকল প্রচেস্টা ব্যার্থ হয়ে যখন থানা থেকে বের হয়ে আসছিলাম মটরসাইকেল টার দিকে দেখে এত কষ্ট হল তা বলার মত না। গায়ে কোন কাপড় নাই তার উপর ধুলাবালি পড়েছে। এ অবস্হায় ছেড়ে আসতে কোন মতেই ইচ্ছা করছিল না। পুলিশের এক কথা আগে রেজিস্ট্রেশনের টাকা জমা দিন তার পর মটর সাইকেল নিয়ে যান।

এভাবে তিনদিন অনেক ঘোরাঘুরি করে অবেশেষে রেজিস্ট্রেশন বাবদ ১৪৩০০ এবং আর্ও আনুসাঙ্গিক খরচ বাবদ ৭০০ মোট ১৫০০০ টাকা গচ্চা দিয়ে অবশেষে থানায় গেলাম মটর সাইকেল টা ছাড়িয়ে আনতে। এবং যাওয়ার সময় পকেটে আরও ৪-৫ হাজার টাকা নিয়ে গেলাম এবং যেতে যেতে ভাবছিলাম না জানি কত টাকা ডিমান্ড করে বসে। কিন্তু বড় ধাক্কা টা খেলাম থানায় যাওয়ার পর। আমার টাকা জমা দেয়ার রিসিট টা দেখালাম। ওসি সাহেব একজন সাব ইন্সপেক্টর কে ডেকে বলে দিলেন রিসিটের একটা ফটোকপি রেখে মটর সাইকেল টা দিয়ে দিতে।

আমি পকেটে হাত দিয়ে ভাবছি এখানেই দিব নাকি বাইরে গিয়ে সাব ইন্সপেক্টরের হাতে দিব। বাইরে এলাম সাবইন্সপেক্টর সাহেব আমার কাগজের একটা ফটো কপি রেখে দিলেন রেজিস্ট্রারে একটা সই নিলেন। এবং চাবি টা একজন কনস্টেবল এর হাতে দিয়ে বললেন গাড়িটা বের করে দিতে এবং কনস্টেবল তাই করলেন এবারও ভাবলাম হয়ত সাবইন্সপেক্টর এই কনস্টেবলকেই নিয়োগ করেছে আমার সাথে আলোচনা করতে। কিন্তু যখন কনস্টেবল আমার মটর সাইকেল টা অনেকগুলোর মধ্যেথেকে বেড় করে দিয়ে সালাম দিয়ে সাথে সাথেই উল্টা দিকে হাটা দিলেন । তখন আমার নিজের চোখ এবং কান কোন টাকেই বিশ্বাস হচ্ছিলনা।

ভাবলাম হয়ত কনস্টেবল বলেছে কিন্তু আমি শুনতে পাইনি। কিন্তু যখন মটরসাইকেল টা স্টার্ট দিয়ে থানা থেকে চলে আসছি তখনও কেউ পিছনে ডাকলো না। তখন শুধু একটা কথাই মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের পুলিশের নামে যে দুর্নাম এতদিন শুনে এসেছি তা কি মিথ্যা? এখানে আমার একটা টাকাও খরচ হলোনা এই আনন্দে আমার ১৫০০০ হাজার টাকার দুঃখ একেবারেই উধাও হয়ে গেল । তবে সবার জন্য আমার একটা পরামর্শ আপনার মটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন না থাকলে যত শীঘ্র সম্ভব রেজিস্ট্রেশন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স করুন। নয়ত যে কোন সময় অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন এবং সবার ভাগ্য আমার মত ভাল নাও হতে পারে।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.