আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডারউইন দিবসে ডারউইনের প্রতি শ্রদ্ধান্জ্ঞলি

Not for sale

ডিসক্লেইমার: ইহা একটি বিজ্ঞান বিষয়ক পোস্ট। অতত্রব পাঠকগণ নিজ দায়িত্বে প্রবেশ করবেন। কারো ধর্মানুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হলে লেখক দায়ী নন। গতকাল ১২ই ফেব্রুয়ারি ছিল ডারউইন দিবস। ১৮০৯ সালের এই দিনে চালর্স রবার্ট ডারউইন জন্ম গ্রহন করেন।

ডারউইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতি বছর তাঁর জন্মদিনটিকে ডারউইন দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়। ১৮৩১ সালের ২৭ ডিসেম্বর ডারউইন তাঁর ঐতিহাসিক ভ্রমনে বের হন এবং সুদীর্ঘ পাঁচ বছর দক্ষিন আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রতটে বিচরন করেন। এ সময় তিনি এ অঞ্চলের বিভিন্ন দ্বীপের নানাবিধ প্রজাতির জীবের উপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যান। তিনি তাঁর ভ্রমনের যাবতীয় পর্যবেক্ষণ বিস্তারিতভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখেন। তাঁর লেখায় মনগড়া কিছু ছিল না, তিন যা পর্যবেক্ষণ করেছেন তাই লিখেছেন।

এবং এসব পর্যবেক্ষণ থেকেই তিনি তাঁর প্রাকৃতিক নির্বাচন তথা বিবর্তনবাদ প্রকাশ করেন। প্রাকৃতিক নির্বাচনের ব্যপারে ডারউইনের আগেই বিজ্ঞানীদের জানা-শোনা ছিল। বিশেষ করে ডারউইনের দাদা ইরাসমাস ডারউইনও এই তত্ত্ব নিয়ে বেশ খানিকটা এগিয়েছিলেন কিন্তু তাঁর পর্যবেক্ষণ নিয়ে তিনি তাঁর সময়ের কারো সাথে আলোচনা করতে পারেন নি। তাছাড়া ডারউইনের সমসাময়িক আরেকজন প্রকৃতিবিদ আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস ইন্দোনেশিয়া ও জাভা দ্বীপপুঞ্জে স্থানীয় প্রাণীকূলের উপর প্রাকৃতিক নির্বাচনের প্রভাব নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চালান। আলাফ্রেড রাসেল ওয়ালেসের কর্মকান্ডে অনুপ্রাণীত হয়েই ডারউইন তাঁর মতবাদ প্রকাশ করতে উৎসাহী হন।

আমরা অনেকেই বিজ্ঞানের ছাত্র। আমাদের পাঠ্যসূচিতে রয়েছে পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞানের অনেক গভীর অনুসন্ধান। কিন্তু এই পাঠ্যসূচি আমাদের কতটা বিজ্ঞান মনষ্ক করতে পেরেছে সেটা অনেক বড় একটা প্রশ্নবোধক চিন্থের আড়ালে রয়ে গেছে। কারন বিজ্ঞান পড়লেই সবাই বিজ্ঞানী হয় না; বিজ্ঞানের অপারেটর হতে পারে বড় জোর। আবার বিজ্ঞান না পড়েও মানুষ বিজ্ঞানমনষ্ক হয়ে থাকে যদি বিজ্ঞানের যথার্থ সঙ্গা কেউ অনুধাবন করতে পারে।

তা নাহলে কেন একজন জীববিজ্ঞানের প্রফেসর ডারউইনকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করবেন, বানরের সাথে তুলনা করবেন যখন অন্যান্য বিজ্ঞানীদের গবেষণা তিনি অকপটে গ্রহন করছেন। তার ধর্মগ্রন্থের বিরুদ্ধে যায় বলে? যদি ধর্মগ্রন্থকেই মহার্ঘ্য মনে হয় তবে বিজ্ঞান পড়ার প্রয়োজন কি? প্রত্যেক ধর্মের যেমন কিছু পথপ্রদর্শক থাকেন তেমনি বিজ্ঞানের যদি পথপ্রদর্শক নির্ধারন করা হয় তাহলে ডারউইনকে প্রথম সারিতেই রাখতে হবে। বিশেষ করে ধর্মগুলো যখন বিজ্ঞানকে সর্বব্যপী আঘাত হানছিলো, হিংস্র থাবায় কব্জা করে নিচ্ছিল বিজ্ঞানকে তখনি ডারউইনের বিবর্তনবাদ হয়ে উঠেছিলো সেই নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা। এজন্য বোধকরি আজকের পৃথিবীতে ডারউইন হয়ে উঠেছেন সবধর্মের ধর্মগুরুদের প্রধান শত্রু। ডারউইনকে এরা যতটা ভয় পায় আর কোন কিছুকেই এতটা ভয় পায় না।

ডারউইনকে মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য অনর্গল মিথ্যা বলে যেতেও এরা দ্বিধা বোধ করে না। তবে সব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে ডারউইন বিজ্ঞানমনষ্ক মুক্তমনা মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। ডারউইন দিবস উপলক্ষে গত ১২ ফেব্রুয়ারি কিছু মুক্তমনা মানুষ পাঠচক্রে শামিল হন। বাংলাদেশে এটাই সম্ভবত ডারউইন দিবসের প্রথম উদযাপন। এই পাঠচক্রের বিস্তারিত খবর দেখুন এখানে।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.