আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অব্যক্ত ভালোবাসা

সময়কে কাধে নিয়ে চলো বন্ধু

যত না জাগাও তুমি ফুলের সুরভি আঁচলে আলগা করো কোমলতা, অন্ধকার মাটি থেকে মৌনতার ময়ূর নাঁচাও আমি ফিরবো না আর, আমি কোন দিন কারো প্রেমিক হবো না। আমি কোনদিন কারো প্রেমিক হবো না। এই দৃঢ় কথাটিতে কেউ আমরা স্থির থাকতে পারি না। প্রেমের সংজ্ঞা জানিনা তবে ভালোলাগা মানুষের শূণ্যতায় হৃদয়তন্দ্রীতে তোলপাড় সৃষ্টি করে জাগিয়ে তোলে ভালোবাসা। স্বার্থের মানচিত্র এঁকে নয় সত্যিই হৃদয়ে ভালোবাসার মিনার গড়ে উঠে তার জন্য।

আমার ভালোবাসাটা কাল্পনিক। তোমার কাছে আমি হেরে গেছি লাবন্য। হ্যা আমি আমার শপথের কাছে পরাজিত এক বিধ্বস্থ বৃ। ঝড়ের রাতে যখন তুমি আশ্রয় খুজতে এসেছিলে আমার কাছে তখন ফিরিয়ে দিতে গিয়ে দ্বায়িত্ববোধকে এড়াতে পারিনি। ঝড় শেষে বিদায় দিলাম তোমাকে।

কিন্তু না, তুমি বিদায় নিতে চাইলে না। শরতের আকাশের পানে তাকিয়ে গাছের ছায়ায় বসে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললে তুমি। বললে এতো প্রশান্তি জীবন পথের ১৯বসন্তে বহু বৃ খুজেও পাওনি তুমি। নিছক জীবনবোধের কল্পকথা নয়। বাস্তবিক অর্থেই আমি কখনও প্রেম ভালবাসার পিছলে পথে পা বাড়ানোর সাহস করিনা।

এপথটা অনেক রঙ্গিণ কিন্তু সুখকর নয় বলেই বারে বারে প্রমাণিত হয়। এপথের শেষ দৃশ্যটা খুব কম সংখ্যক পথিকই সুন্দরভাবে দেখতে পায়, অধিকাংশ পথিকই পথের বাকে বাকে হোচট খেয়ে আছড়ে পড়ে। এই আছড়ে পড়ায় হয়তো কারো জীবন প্রদীপ নিভে যায়, হয়তো কেউ পথ হারিয়ে মিলিয়ে যায় অন্ধকারে। তাই এ পথটাকে বড় ভয় আমার। তোমার পথের কাটায় করবো চয়ন/ সেথায় তোমার ধূলায় শয়ন।

সেথায় আচল পাতবো আমার/ তোমার রাগে/ অনুরাগে/ কলঙ্কভাগী। আমি সূচী আসন টেনে টেনে/ বেড়াবোনা বিধান মেনে। তথাকথিত ভালোবাসায় কখনো প্রশান্তি খুজে পাওয়া যায় না। তণ্বী তরুনী একটি মেয়ে আমাকে নানাভাবে প্রভাবিক করতে শুরু করল। এড়িয়ে যেতে থাকলাম দিনের পর দিন।

সবচেয়ে মজার বিষয় হল প্রেম আর ভালোবাসার মাঠে তার দৌরাত্ম অনেক। অর্থাৎ তার রূপ লাবণ্যে বিমোহিত তারুণ্য শুধু তার ভালোবাসার একটি হাসি দেখার জন্য এর একটু সম্মতি পাওয়ার জন্য আকাশ থেকে চাঁদ এনে দেয়ার প্রতিযোগিতায় উন্মত্ত। সেই মেয়েটি যখন আমাকে খুজে ফেরে তার আঙ্গিণায় তখন আমার স্পষ্ট উচ্চারণ না, সম্ভব নয়। মেয়েটি আমাকে হাত জোড় করে বললো তাকে যেন আমি ফিরিয়ে না দেই। আমি তার চোখে তাকিয়ে বললাম ভালোবাসা মানে কি জানো, সে তাকিয়েই রইল।

বললাম, ভালোবাসা মানে ফাস্ট ফুড, রিকসায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো, কফি ক্যান্ডি আর আইসক্রিম, সুন্দর সুন্দর এসএমএস, তিক্ত ঝগড়া মান অভিমান, পার্কে অপো, মিথ্যা বলে বাসায় ফাঁকি দেয়া, প্রিয়ার সাথে অভিমানে একটার পর একটা সিগারেটের ধুয়া শূণ্যে ওড়ানো, বন্ধু ও বান্ধবীদের নিয়ে পার্টি দেয়া আর হাতে হাত ধরে ঘুরে বেড়ানো ইত্যাদি ইত্যাদি। সে বলল আমি ভালোবাসার পরিণতি চাই। বললাম বিয়ে? সে পর্যন্ত অপো সইবে তো। তবে প্রেম আর গদবাধা ভালোবাসার গল্প রচনা করে নয়। তার আগে আমাকে জানতে হবে তুমি আমার কিংবা আমি তোমার যোগ্য কি না।

তারপর বিয়ের স্বপ্ন নিয়ে কমিটমেন্ট। অবশ্যই আমরা নিজেদের ক্যারিয়ার ডেভেলপ করবো আর উভয়ের পরিবারের উপযোগী করে গড়ে তুলবো নিজেদের। তার আগে আমার দেখা তথাকথিত ভালোবাসা বিনিময়ে আবেগ ঝড়ানোর কোন সুযোগ থাকবে না। আমার কথা শুনে সে তাকিয়েই রইল। বললাম, হুম, আজ থেকে একজন ভালো বন্ধুর সম্পর্কে আমাদের পথচলা।

তবে মনে রাখবে, যদি একান্ত আপন হওয়ার চেষ্টা করি দুজন তবে আমরা আমাদের সম্ভাবনা থেকে হারিয়ে যাবো। আমাদের বিশ্বাস নড়বড়ে হয়ে যাবে। তাতে ভালোবাসার পরিণতি আমরা দেখবো না। তারপর তার কথা শুরু, যদি বিয়ের জন্য আমাকে পিড়িতে বসতে বাধ্য করা হয়? আমি বললাম, তবে তোমার ইচ্ছাটাই চূড়ান্ত বলে মেনে নিব। আর তাতে যদি সহযোগিতা লাগে তাও করবো।

আর যখন তুমি তোমার বাবা মায়ের সামনে আমাকে উপস্থাপন করবে তার আগে নিজেকে বদলে ফেলবে এমন ভাবে যেন বাবা মায়ের চোখ জুড়িয়ে যায় তোমার পরিবর্তন দেখে। তুমি একটা সময় জীবন নিয়ে হেয়ালিপনা করতে, আর এখন সম্পূর্ণ বদলে যাওয়া এক বুদ্ধিমান ঘরকণ্যা যাকে ঘরে ডুকেই বাবা মা প্রথম দেখতে চান আর তাদের সব ভালোলাগা শেয়ার করতে চান। তোমার এই বদলে যাওয়ার পেছনে যে মানুষটি জড়িত তার প্রতিও তাদের ভালোবাসা জাগবে এটাই আমার বিশ্বাস। আর সেই পর্যন্ত নিজের একটা সামাজিক অবস্থান গড়ে তুলতে পারবো আমিও। আমি যা করি তাতে যদি আমার বাবা মা বিশ্বাস ও নির্ভরতা রাখেন তাহলে অবশ্যই আমার পছন্দটিকে কখনো অবহেলা করবেন না।

আর আমার পছন্দের মানুষটিকে তাদের পছন্দের মতো গড়ে তোলার জন্যই এত আল্টিমেটাম। আর মায়ের চোখের দিকে তাকিয়েই আমি তাকে খুজে ফিরি। কারণ তার রুচিটা আমিই জানি। বিয়ে করতে গিয়ে মেয়ে পাওয়াটা এখনকার সময়ে বেশ দূরুহ ব্যপার। প্রেম করার জন্য অসংখ্য প্রেমিকা পাওয়া যায় কিন্তু আগামী জীবনের জন্য একটা ভালো বউ পাওয়া অনেক কঠিন।

মন যদি সুন্দর না হয়, ত্যাগ করার আর ব্যালেন্স করার মানসিকতা যদি না থাকে তবে সুন্দর সূশ্রী আর মিষ্টি কন্ঠের তরুণী তার নতুন জীবনে ঐ যুবকের জন্য আশির্বাদ না হয়ে অভিশাপ হয়ে যায়। তাই সুন্দর মন তৈরী করতে হবে সুন্দর কিছু ভাবতে হবে আর সকল কিছু মেনে নেয়ার মানসিকতা নিয়েই নতুন জীবনের পথে পা বাড়াতে হবে। বিয়ের জন্য একটা মেয়ে পাওয়া যেমন কঠিন ঠিক তেমনি মা আর বাবার চোখের ঘুম হারাম হয়ে যায় বিয়ের উপযোগী মেয়ের জন্য একজন সামাজিক প্রতিষ্ঠিত সৎ চরিত্রবান একটি ছেলের সন্ধান করে। অনেক সুদর্শন, উচ্চ বংশ, গাড়ি বাড়ি আর আভিজাত্যে আকাশচুম্বী সামাজিক ষ্ট্যাটাস নিয়ে থাকা বহু ছেলের সিভি আসে মেয়ের বাবা মায়ের হাতে। কখনো কখনো বাবা মা চোখ ধাধানো আভিজাত্যের কাছে মেয়েকে তুলে দেন।

আর বলে বেড়ান, একটি উচু বংশে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলের অনেক প্রাচুর্য আছে। হয়তো সেই প্রাচুর্য্যরে ছোয়ায় মেয়ের পরিবারটি কিছুটা সামাজিক মর্যাদা পায়। কিন্তু হায়, মেয়েটির কপালে যদি বিজ্ঞাপনের সেই ঘটকের কথার মত, ছেলের নাইনটি নাইন পার্সেন্টই ওকে শুধু মাঝে মাঝে নাইট কাবে যায় আর কি! শুনতে হয়। তাহলে এই প্রাচুর্য্য দিয়ে কখনো ওই মেয়ে সুখ কিনতে পারবে না।

তাই বিয়ের এই দূর্মূল্যের বাজারে একটা ভালো মেয়েকে খুজে পাওয়াটা আগামী দিনের জন্য একটা স্বপ্ন। আমার এক বন্ধু বলে এ যুগের মেয়েদের বিশ্বাস করতে নেই। সে আরো বলে প্রেম কর সুন্দরী মেয়েদের সাথে আর বিয়ে কর শ্যাম বর্ণের মেয়েকে। আমি তার কথা শুনে সামনেই তাকে গালমন্দ করি। সে হাসে, বলে, দোস্ত এপর্যন্ত যা দেখেছি এবং দেখছি তার সব ফলাফলই শূণ্য।

সুন্দরী মেয়েরা তাদের চামড়ার মাধুর্যে আমাদের মত অস্থির চোখের মানুষদের শূণ্যে ভাসিয়ে রাখে কিছুদিন। তাদের মিষ্টি কথায় আমরা নাঁচতে থাকি। পার্টি দেই বন্ধুদের নিয়ে। ওড়িয়ে দেই বাপের একাউন্টের অজস্র টাকা। কখনো কখনো সামান্য ইনকামের সবটুকুই তার জন্য ব্যয় করতে থাকি।

তার ভালোবাসায় এতোটাই পাগলপারা হয়ে যাই যে বাড়িতে মায়ের ডাক্তারের টাকাটাও দেইনা। ইনিয়ে বিনিয়ে মিথ্যা বলে ফাকি দেই নিজেকে। সময় গড়িয়ে যায়। ভালোবাসা বিনিময়ে একসময় কান্ত মেয়েটি অতিথি পাখির মত ফাকি মেরে আমাকে বিদায় দেয়। নানা অজুহাত আর বাস্তবতাকে এমনভাবে আমার সামনে উপস্থাপন করে যে আমি তখন চতুর্দিকে আবছায়া দেখতে পাই।

হয়তো নতুন কোন বন্ধুকে সে খুজে পেয়েছে যে বন্ধুটি ওকে আমার চেয়ে বেশি ভালোলাগার গল্প শোনাতে পারে, হয়তো বিয়ের পিড়িতে অবাধ্য হয়ে বসতে হচ্ছে বলে আমাকে জানিয়ে দেয় আমার করার কিছুই ছিল না। কথাগুলো শুনতে খুব খারাপ লাগলেও আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে প্রেম আর ভালোবাসা বলতে যা বুঝায় তার পরিণতিতে অধিকাংশই এমন শূণ্য ফলাফলের গল্প। আর এই সাময়িক ভালোলাগা কখনো ভালোবাসা নয়। এ সময়ের আবেগ। মোহে পড়ে মানুষের মাঝে মাঝে অনেক কিছুই ভালো লাগে আবার তা মিলিয়ে যায়।

যেখানে স্বার্থের দৌরাত্ম বেশি সেখানে ভালোবাসা অভিনয় মাত্র। সেটা ছেলে হোক কিংবা মেয়ে হোক সবাই করে থাকে কম বেশি। তাই আমি বিশ্বাস করি ভালোবাসা কখনো সাময়িক আবেগ আর স্বার্থের জুয়াখেলা নয়। ভোগ বিলাসিতা আর উন্মত্ততায় হারিয়ে যাওয়া যায় তবে তা ণিকের জন্য। জীবনের অনাগত দিনগুলোর জন্য একজন সত্যিকারের ভালোমানুষ পাওয়া কঠিন।

আবেগের জুয়াখেলায় কেউ কোন দিন সুখী হতে পারে না। কে কাকে পরাজিত করলো যদি সেটাই হয় ফলাফল তবে পরাজিত মানুষের জীবন দূর্বিষহ হয়ে উঠে অতিত সে মুছতে পারে না বলে। আর বিজয়ী কখনো বিজয় পায় না কারণ মানুষের জীবন নিয়ে যখন কেউ উপহাস করে সময় নিয়ে যারা জুয়া খেলে তারা কখনো সুখ খুজে পায়না। লেখাটি যখন কি বোর্ডে খট খট শব্দে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন মৃদুস্বরে বাজছিল শ্রীকান্ত আর রবীন্দ্রনাথের বেশ কয়েকটি প্রিয় গান । রবী ঠাকুরের শেষ গানটির কয়েকটি পংক্তি দিয়ে ইতি টানছি ভালোবাসা নিয়ে আমার অনুভূতির কিছু কথার।

আর আমার লেখাটি সমস্ত কাল্পনিক। তবে প্রতিনিয়ত ভাবনাগুলো আমার এমনই। - হে ণিকের অতিথি, এলে প্রভাতে কারে চাহিয়া? ঝরা শেফালীর পথ বাহিয়া। কোন অমরার বিরহিনীরে চাহনি ফিরে কার বিষাদের শিশির নীড়ে এলে না হিয়া হে ণিকের অতিথি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।