আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফতোয়া এবং এ নিয়ে কিছু কথা

কেবল একজন নারীকে ভালবাস বধু হিসেবে

প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কারন ধর্ম সম্পর্কে আমার জ্ঞান অনেক কম। আজকের জ্বুমার নামাজে ঈমামের বক্তব্যটা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি মাত্র। পাঠকদের বলে রাখছি পুরোটা পড়ে তার পর কমেন্ট করবেন প্লিজ। ফতোয়া শব্দের অর্থ কোরআন ও সুন্নাহের আলোকে কোন ঘটমান বিষয়ের সমাধান বা সমালোচনা। আলেম মাশায়েখগণ কোরআন সুন্নাহের আলোকে যখন কোন ঘটমান বিষয়ের উপর কোন মন্তব্য করবেন তখন সেটাকে বলা হবে ফতোয়া।

ফতোয়া মোটেও খারাপ কিছুনা আমরা যেভাবে এটাকে খারাপ অর্থে ব্যবহার করছি। এখন ফতোয়া শব্দের অর্থ আমাদের কাছে খুব খারাপ কাজ বলে মনে হচ্ছে। ফতোয়ার শিকার কিছু ঘটনা উল্লেখ করছি। ১৯৯৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দেশে ৫০৩টি ফতোয়াবাজির ঘটনা ঘটেছে। ফতোয়াবাজির কারণে মৃত্যু ও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ১৫টি।

১৯৯৩ সালে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ছাতকছড়া গ্রামে গৃহবধূ নূরজাহানকে মাটিতে পুঁতে ১০১টি পাথর ছুড়ে মারা হয়। পরে নূরজাহান বিষপানে আত্মহত্যা করেন। ফতোয়া দিয়েছিলেন প্রভাবশালীরা। ২০০৯ সালের ২৮ মে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় পরকীয়ার অভিযোগ এনে এক নারী ও পুরুষকে ১১০টি করে দোররা মারা হয়। ফতোয়া দেন গ্রামের মাতব্বরেরা।

২০১০ সালের ১৯ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার পূর্বহাটি গ্রামে ভিন্নধর্মাবলম্বীর সঙ্গে প্রেম করায় এক তরুণীকে দোররা মারা হয়। ফতোয়াটি দেন গোলাম জিলানী, আজাদ বেগ, মাইনউদ্দিন মিয়া, মাওলানা আবদুর রহিমসহ কয়েকজন। ২০০৯ সালের জুন মাসে কুমিল্লার দেবীদ্বারে এক নারী ও এক যুবককে ৩০৩টি দোররা মারা হয়। ফতোয়াটি দেন গ্রামের মসজিদের ঈমাম এবং মাতব্বরেরা। ২০০৯ সালের মে মাসে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বিটেশ্বর ইউনিয়নে এক কিশোরীকে ৩৯টি দোররা মারা হয়।

ফতোয়াটি দেন গ্রামের মাতব্বরেরা। লক্ষ্মীপুর সদরের চররুহিতা গ্রামে ২০০৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘পরপুরুষে’র সঙ্গে কথা বলায় সমাজপতিরা এক গৃহবধূকে ৫০টি বেত্রাঘাত করেন। রেফারেন্স এখানে ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ফতোয়াগুলো দিয়েছেন গ্রামের প্রভাবশালী, গ্রাম্য মাতব্বর বড়জোর সাথে কোন মসজিদের ঈমাম। এখন প্রশ্ন হল এরা আসলেই ফতোয়া দেয়ার জন্য উপযুক্ত কি?? ফতোয়া এবং দোররা: যে ঘটনার জন্য ফতোয়া দেয়া হচ্ছে প্রথমেই সেই ঘটনার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। উদাহরন সরুপ: যেখানে আমাদের দেশে বিবাহবহির্ভুত সম্পর্কের (যেনা) ক্ষেত্রে কনডম ব্যবহারের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে সেদেশে এই অপরাধের জন্য ফতোয়া দেয়া যাবেনা।

যেনার (যদি পুরুষ ও মহিলা সেচ্ছায় যৌন সম্পর্ক তৈরি করে ) ক্ষেত্রে অপরাধীকে সাজা দেয়ার আগে উক্ত ঘটনার ন্যুনতম চারজন সাক্ষী থাকতে হবে। ধর্ষনের (যদি পুরুষ জোর পুর্বক মহিলার সাথে যৌন সম্পর্ক তৈরি করে) ক্ষেত্রে মহিলাকে দোররা মারার কথা কোথাও বলা নাই। যিনি বা যারা ফতোয়া দেবেন তাদের অবশ্যই কোরআনের আঈন এবং সুন্নাহরে উপর পর্যপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে। তাছারা ইসলামে তওবার ব্যবস্থা তো আছেই। ইসলাম কখনই মানুষের জন্য কঠিন কোন বিধান দেয়না।

সমালোচনা: যারা ফতোয়া দিচ্ছেন তারা আসলে ফতোয়া দেয়ার উপযুক্ত না। কিছু মানুষ দুর্বলকে শাস্তি দেয়ার জন্য কোরআনের আঈনের অপব্যখ্যা দিচ্ছেন। আর এজন্যই যদিও ইসলাম বলে রাগের মাথায় তালাক দিলে সেটা কার্যকর হবেনা তারপরও কিছু প্রভাবশালী ভণ্ডের কারনে অনেকে সামাজীকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছে, নিজের স্ত্রীকে অন্যের সাথে রাত্রীযাপন করতে দেয়ার মত কঠিন শাস্তির শিকার হচ্ছে। এরা মুলত ইসলামকে বিতর্কিত করছেন। ফতোয়া মোটেও খারাপ কিছুনা।

তবে ফতোয়ার নামে আমাদের সমাজে বর্তমানে যেটা হচ্ছে সেটা মোটেও গ্রহনযোগ্য না। এদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিৎ। সবার কাছে আমার প্রার্থনা ইসলামকে বিকৃত করবেন না। ইসলাম শান্তির ধর্ম।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.