আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দাসত্বের পোস্টের প্রতি উত্তরে ভীমরুলের পোস্ট: দুটি পোস্টকে ব্যাখ্যা করলে কি দেখতে পাই

বিচ্যুত যৌবনে জোছনা আমায় করেছে উম্মাদ

যারা ইতোমধ্যে দাসত্ব ও ভীম-রুলের পোস্ট দুটি পড়েননি তাদের জন্য নিচে লিংক দিলাম। দাসত্ব সাংবাদিকতার জিলাপীর প্যাচে লুকিয়ে রাখা সমাজের রোগ , হেনার মৃত্যু আর কাঠগড়ায় আসামী যারা......... ভীম-রুল দাসত্বের (ও তালেবানীদের) নতুন ফতোয়া -- "অপরিণত যৌনতা আসক্ত ছিলো হেনা" এবার চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক দাসত্বের পোস্টের মূল উপজিব্য বিষয়: দীর্ঘদিন থেকে খেয়াল করে দেখছি দাসত্ব যখন কোন পোস্ট দেন তার আগে তিনি খানিক স্টাডি করে নেন। আজকাল ব্লগারদের মধ্যে এমন প্রবণতা খুব কমই লক্ষ্য করা যায়। তাই তার পোস্টে থাকে উপচে পড়া ভীড়। প্রশংসায় তিনি প্লাবিত হন।

প্রশংসা পাবার যোগ্যও তিনি । বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ আর ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী ব্লগারদের মধ্যে তার অবস্থান উচ্চ পর্যায়ের। তবে তার আলোচ্য লেখাটি রাজনীতির বাইরে থেকে সমাজের ক্ষয়িষ্ণু অংশকে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন বলে মনে হয়। আর এ বিষয়ে যারা সতর্ক বা অসতর্কতার সাথে নারীর স্বাধীনতার মোড়কে নারীকে ব্যবসার বিষয়বস্তুতে পরিনত করছেন এবং সাংবাদিক সমাজের কতিপয় সাংবাদিক যে পেশাদারিত্বের সীমা লংঘন করে নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য প্রতিনিয়ত মিথ্যাচারিতা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের মুখোশ উম্মোচনের প্রয়াস চালিয়েছিলেন বলে মনে হচ্ছে। দাসত্বের প্রথম আলো মিশন: প্রথম আলো এখন আর বাকি আট/দশটি পত্রিকার মতো কোন সাধারন পত্রিকা নয়।

এটি এখন একটি প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। এটি সম্রাজ্যবাদের দালালদের আড্ডা আর জাতীয় বিনাশী প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়েছে। এটি এখন একটি প্রাতিষ্ঠানিক চক্র। তারা কখনো ঘটনা ঘটার পূর্বেই জানতে পারে কি হবে, কোথায়া হবে, কিভাবে হবে। কখনো কখনো ঘটনা তারাই ঠিক করে দেয় কি হতে হবে।

আবার কখনো ঘটনা ঘটার পর তারা ঠিক করে ঘটনাকে কোথায়, কিভাবে প্রবাহিত করতে হবে, এটা দিয়ে কাদেরকে ফাঁসাতে, প্ররোচিত ও সংযোগ ঘটাতে হবে। হেনার মৃত্যু বিষয়টা এমনই এক প্রথম আলোইয় চক্রান্তের শিকার। প্রথম আলোকে আপাতদৃস্টিতে আওয়ামীলীগের বন্ধু ও বিএনপির শত্রু মনে হলেও গুঢ় সত্য হচ্ছে এরা কারো বন্ধু নয়। বরং আওয়ামীলীগ বিএনপির পিঠে কলম ঠেকিয়ে দেশকে অকার্যকর রাস্ট্র বানিয়ে একটি তৃতীয় শক্তির উত্থান ঘটাতে চায়। প্রথম আলো চক্রের এই সকল চক্রান্ত অনেক খানি সার্থকভাবে ব্লগার দাসত্বের পূর্ববর্তী পোস্ট ইন্কলিং অফ অ্যান আইসকোল্ড কন্সপীরেসী : প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের লাটভাই কে ? ও প্রথম আলোর দুই সেয়ানা কথন : মতি - মিজান মানিক জোড় : মীর কাসেম আলী অন স্পট এবং ... এ উম্মোচিত হয়েছিল।

সেজন্য তাকে ধন্যবাদ দেই। তার আলোচ্য পোস্ট টিও একই সুতোয় গাঁথা। আর এ পর্যায়ে তিনি ভুল করেছেন। প্রথম আলোর মিথ্যাচারকে তুলে ধরতে গিয়ে তিনি মৃত হেনাকে ফোকাস করে ফেলেছেন। তাকে দায়ী করেছেন প্রিম্যাচিউর সেক্স এডিকশনের ডিজিজে।

এখানেই জাতীয়তাবাদী ঘরানার বুদ্ধিজীবি ও প্রথম আলো চক্রের মধ্যে পার্থক্য। প্রথম আলো চক্র ঘটনাকে সিস্টেমেটিক্যালি পোলারাইজড করেছে কারুকাজ দিয়ে। এরা চক্রান্তের জাল বুনে সবসময় এমন সেনসেটিভ বিষয়গুলো নিয়ে। তাদের প্রিয় কয়েকটি শব্দ যেমন নারী, দোররা, প্রগতি, দিনবদল এসবকে নিয়ে তারা সাজায় তাদের চক্রান্তের জাল। হেনার মৃত্যু কিভাবে হয়েছে সে প্রসংগে দাসত্ব খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার ভাষ্য।

আর সবগুলো রিপোর্ট পড়লেই আপনার আপন মনের আয়নায় ভেসে উঠে লম্পট মাহবুবের সাথে হেনার কি সম্পর্ক?? তাহলে সমস্যা কোথায়? সমস্যা কোথাও না সমস্যা হচ্ছে কন্টেন্টে। কারন হেনা ই হয়ে উঠেছে আলোচ্য। এখানে মিডিয়া সন্ত্রাস বা চ্যানেলগুলোর নারী ব্যাবসা ও সরসুরি দেয়া গানগুলো নিয়ে কেউ কথা বলছেনা। বলছেনা কারন যারা দাসত্বের পোস্টের বিরোধীতা করছেন তারাই এ সব গ্লাসনস্ত থিওরির আদর্শে উজ্জীবিত। দাসত্ব প্রথম আলোর মিথ্যাচার ও তার এজেন্ডা বাস্তবায়নের মুখোশ খুলতে গিয়ে এবং সমাজের এক আত্মঘাতি দিকের উম্মোচন করতে গিয়ে হেনার মতো একটি স্পর্শকাতর বিষয়কে সংযোগ করিয়েছেন।

আর বিপত্তি ঘটিয়েছেন। আমরা এটাও জানি সন্ধ্যার পরে নীলক্ষেতের সিডির দোকানদাররা কি বলে ডাকে। আমরা এও জানি শ্রদ্ধেয় মিলা ম্যডামের গান কারা নিষ্পাপ শিশুদের দিয়ে গাইয়ে সমাজে পাশ্চাত্যের সেক্সুয়াল ফ্রিডম আমদানী করতে চায়। তার এসব কন্টেন্টের সাথে যখন দাসত্ব মৃত হেনাকে বলবেন প্রি ম্যাচিউর সেক্স এডিকশনে অসুস্থ তখন আমারও খারাপ লাগে শুনতে , পড়তে। আপনার ধারনা হয়তো সত্য তবে এটা স্পর্শকাতর।

মৃত মানুষের প্রতি সবারই একটা সহানুভুতি থাকে। দাসত্বের ভুল এখানেই। আর এ পয়েন্টটাকেই মাটিতে পরার আগে ডাইভ দিয়ে ক্যাচ করে ফেলে প্রথম আলোর আ্যাক্টিভিস্টরা। এদিকে ভিম-রুল বলেছেন: জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ধর্মাশ্রয়ী। তবে আমার মনে একটা অজানা আশংকা ছিল দাসত্ব শেষ পর্যন্ত ধর্ম ব্যবসায়ীদের পক্ষে যেতে পারে।

আমার আশংকা অনুযায়ী ধীরে ধীরে লক্ষন প্রকাশ পাচ্ছে। জামায়াতীদের মতো করে তিনি একটু একটু করে ইহুদী ইহুদী শব্দ গুলো বেশী করে উচ্চারণ করছেন। তালেবানদের মতো করে ধর্মাশ্রয়ী বেশ কিছু কট্টোর আচরনের পক্ষে যুক্তি তৈরী করছেন। ......................। এমনকি দাসত্বকে জামায়াতের হয়ে আত্মপ্রকাশ করার আশংকাও করেছেন।

আসলে ভিমরুল তার লেখার চেয়ে ব্যাক্তি দাসত্বকে খাটো করার প্রয়াস চালিয়েছেন অনেক বেশী। একটা প্রশ্ন জাগে কেন?? পয়েন্ট ধরেছিলেন ছিলেন তিনি ভালো। এমনকি এরকম আরো ঘটনা ঘটলে প্রিম্যাচিউর সেক্স্ এডিকশনের কথা বলে ধর্ষকরা পার পেয়ে যেতে পারে বলে যে আশংকা করেছেন তার সাথেও একমত পোষন করি। দাসত্বের ভুলের শেষ আর ভিম-রুলের ভুলের শুরু: দাসত্বের পোস্টের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে প্রকারান্তরে আপনি কিন্তু প্রথম আলোর মিথ্যাচারকেই মেনে নিলেন। আপনার আলোচনায় দাসত্বের পোস্টের পুরোটা আসেনি বরং পোস্টের খানিকটা নিয়ে আপনি হইচই শুরু করলেন।

পরোক্ষভাবে আপনি সাফাই গাইলেন প্রথম আলোর। তাদের নোংরা সাংবাদিকতার জন্য আপনি একটু তিরস্কারও করেননি। আপনি বা আপনারা তা করবেন না কারন এটা করলে আপনাদেরকে মেনে নিতে হয় প্রথম আলোর দর্শনই হচ্ছে ভন্ডামি, মিথ্যাচার আর বাংলাদেশকে একটি শেকলবাঁধা সুশীল গনতন্ত্রের মোড়কে আবদ্ধ করা। আর আপনারাও বিশ্বাস হরেন ওপেন সেক্স, গেইজম, লেসবিয়ানিজম ও অবাদ মেলামেশার মাঝেই রয়েছে সত্যিকারের প্রগতিশীলতা। উপসংহার: উপসংহারে আমার কৈফিয়ত দিতে চাই।

আমি দাসত্বের পোস্টের সাথে যেমন একমত তেমনি একমত ভিম-রুলের পোস্টের সাথেও। দাসত্ব পারতেন প্রিম্যাচিউর সেক্স এডিকশান নিয়ে আলাদা পোস্ট দিতে। কিন্তু তিনি তা না করে প্রথম আলো গোস্ঠির বিরাগ ভাজন হয়েছেন যা শেষ পর্যন্ত দাসত্বকে তালেবান হিসেবে ট্যাগায়িত করা হয়েছে। আর ভিম-রুল হেনার বিষয়টাকে যে দৃষ্টিতে দেখেছেন স্বাভাবিক দৃষ্টিতে এমনটাই দেখা উচিত, কিন্তু আপনি যখন সব খবরের কাগজ মিলিয়ে তার পর দাসত্বের পোস্ট পড়বেন তখন বিষয়টি আপনাকেও ভাবাবে। ব্যাক্তি আক্রমন এতো চমৎকার ভাবে করেছেন তা খুবই দৃস্টি কটু।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.