আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপেক্ষায় যে প্রার্থনা

আম। র পৃথিবী

প্রিয় অর্পা, আমার হৃদয়ভর্তি অফুরান ভালোবাসা তোমার প্রতি নিবেদনে আজ তোমায় লিখছি কিংবা তোমাকে নিয়ে লিখাই। মেইল, এস.এম.এস এর এই যুগে তোমাতে লিখতে কোন এই আদিমতর যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার, তাই না? মনে কি পড়ে তোমার, তুমি সবসময় বলতে তোমাকে যেন সবনসময় চিঠি লিখি। তুমি বলতে একটি চিঠির মধ্যে যে পরিমাণ আবেগ, ভালোবাসা জড়ানো থাকে অন্যবিছুতে নাকি তা থাকে না। কিন্তু তোমাকে কোনদিন ও চিঠি লিখা হয়নি, না হয়নি আমাতে লিখা তোমারো! কারণ মুঠোফোন নামক এক আশ্চর্য ডাকঘরের মাধ্যমে আমাদের যত কথা, ব্যথা, চিঠিগুলো আদান প্রদান করতাম।

এস, এম, এস. নামক এক ডিজিটাল খামে আমাদের কত আনন্দ বেদনার চিরকুট পৌছে দিতাম একে অফরের কাছে। যাক সে কথা। এই চিঠিতে যখন আমাদের ভালোবাসার গল্পটি লিখছি তখন পৌষের হিমভরা এক মধ্যরাত এবং মাসটা জানুয়ারি। জানুয়ারি.... আমারেদ প্রণয়ের সূচনা মাস। মনে পড়ে তোমার আমাদের পরিচয় পর্ব কত অদ্ভুত আর রোমান্টিক ছিল।

জানুয়ারী মুরু দিকটার কোন এক শীত বিকেল। আমি আমাদের মেসবাসার ছাদে দাড়িয়ে আনমনে আকাশ দেখছিলাম, ভাবছিলাম এই শহরভর্তি মানুষের জঙ্গল ছেড়ে, যান্ত্রিক নগর ছেড়ে যদি কোন মুক্ত হাওয়ায় ভেসে যেতাম অন্যকোন ভুবনে, স্বাধীন পাখির মতন উড়ে বেড়াতে পারতাম নীলাকাশ ছুঁড়ে ছুঁয়ে। আমরা ভাবনাটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না এক অনাকাঙ্খিত স্পর্শ পেয়ে পিঠে। পিছন ফিরে তাকালাম দেখি একটা সুন্দর কাগজের রঙ্গীন ঘুড়ি। আমি ভাবলাম ঘুড়িটা হয়তো উড়ে উড়ে এসেছে কিংবা সুতা কেটে এসে পড়েছে।

আমি ঘুড়িটা এম্নি উল্টে পাল্টে দেখছিলাম হঠাr ঘুড়িটার এক পিঠের এক কোনে একটা লেখায় চোখ আটকো পড়ল। অতে লেখা এরকম উড়িয়ে দিলাম আমার স্বপ্নঘুড়ি বাল্পমানবের কাছে। আমি পাবোকি কভু তার দেখা? ফোন: ০২১১০৩. আমি বিস্ময়ে চোখ বড় বড় করে কয়েকবার লেখাগুলো পড়লাম। রুমে ঢোকে আরো বেশ কয়েকবার পড়লাম। পুরোটা সন্ধ্যা এক অজানা ভাবনায় কাটলো।

বুঝলে পারলাম কনটা কেমন যেন অস্থির অস্থির। যাহোক রাত দশটায় মেসের বড়ভাই এবং আমার খুব ভালো বন্ধু ও নয়ন ভাইয়ের সেই ফোন নাম্বারর কল করলাম। আমি লক্ষ্য করলাম আমি নাম্বারের ডিজিটগুলো যখন চাপছিলাম তখন কোন এক অজ্ঞাত কারণে আমার হাত কাপছিলো। হ্যালো কে কাকে চান? এ নারীর কন্ঠস্বার ভেসে এলো। তারমানে নাম্বার ঠিক আছে।

আমি ভাবলাম। এটা কি ....., আপনি কি অর্পা? জ্বি না -আমি বিলকিছ, অর্পা আপা বাসায় নাই। আপনি কে? আমি উনার পরিচিত। আপা আসলে কি কিছু বলতে হবে? না কিছু বলতে হবে না। আচ্ছা আমি রাখলাম।

লাইনটা কেটে দিলাম। নামও নাম্বার ঠিক আছে দেখে অজানা এক আনন্দ পেলাম। পরদিন সন্ধ্যার পর আবার কোন দিলাম ও পাশে ফোনটা বাজছে.... একই সাথে আমার হার্টবিটের কম্পনটাও তাল দিয়ে বাড়ছে। হ্যালো, কে বলছেন? একটি মিষ্টি নারীর কন্ঠস্বর ওপাশ থেকে ভেসে এলো। এপাশে আমি একদম নির্বাক।

কোন কথা বলতে পারছেলাম না। হয়তো ক্ষনিকের জন্য সব কথা ভুলে গিয়ে ছিলাম। হ্যালো কে, কথা বলছেন না কেন। আপনি কি অর্পা! আমার কন্ঠ কিছুটা কাপা কাপা। হ্যাঁ, আমি কিন্তু আপনি? যদি বলি আপনার স্বপ্ন ঘুড়ির সদ্য মালিক।

আমি অদিত্য। ফোনের ওপাশটা তখন হঠাৎ করেই নিশ্চুপ হয়ে গেল। হ্যালো আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন? জ্বি হ্যাঁ বলুন। আপনি কি কিছু ভাবছেন? না ভাবছি অজানা গন্তব্যে ছাড়া ঘুড়িটা কেমন করে গন্তব্য খুঁজে নিল। কিন্তু আপনি তো একজন মানবের গন্তব্যেই ঘুড়িটা উড়িয়েছেন।

আচ্ছা আমাদের মতো কেউকি সেই কল্পমানব হওয়ার যোগ্যতা রাখে না? না, না আমি তা বলছি না। আসলে আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা। আমি ভেবেছিলাম হওতো ধুলোর মত উড়ে উড়ে কোথাও হারিয়ে যাবে। আমার এই স্বপ্নঘুড়িটি। যে ঘুড়ির সাথে আপনার স্বপ্ন মিশানো তা কেমন করে হারিয়ে যাবে বলুন।

তা আপনার সম্মন্ধে তো কিছুই জানা হলো না, কি করেন আপনি? আমি অর্পা আহসান। ইডেন কলেজে বপড়হড়সরবং নিয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে আছি। আপনি? আমি অদিত্য শহীদ রুদ্র। একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে বি.বি.এ করছি। আপনার মতই দ্বিতীয় বর্ষে আছি।

আপনি থাকেন কোথায়। সেটা না হয় পরে আরেকদিনের জন্য তোলা থাক। একদিনেই যদি সব জেনে যান পরে আর কি নিয়ে কথা বলবেন। কিছুটা না হয় নাইক আজ জানা হলো। অনেক কিছুই তো জানলেন।

কিন্তু কি জানেন, পৃথিবীতে একটা জিনিস আছে যার কোন শেষ নেই সেটা হচ্ছে কথা। যে কোন বিষয় নিয়ে কথা বলুন দেখবেন এর শেষ নেই একটার পর একটা আসছেই। কথা বলতে থাকুন দেখবেন শেষ হবে না। ] তাই নাকি, আমাদের কথায় আপাততত ভঙ্গ দিতে হবে যে। আমি ফোনটা এখন ছাড়বো।

বাবা ডাকছে। আচ্ছা শুনুন আগামীকাল কথা হবে তো? আপনার কি মনে হয়? আমার তো মনে হয় হওয়া উচিত। তাহলে হবে সাথে সাথে টুপ করে লাইনটা কেটে গেল। আমার মনে হল আমি প্রচন্ড ঘোরের মধ্যে আছি। স্বপ্নের আকাশে যেন ডানামেলে উড়ছি।

পুরো রাত জাগরন স্বপ্নে পার করলাম। তারপর থেকে যেন কি এক অন্য আমি সারাবেলা তোমাকে নিয়ে স্বপ্নদেখা তোমাকে নিয়ে ভাবই হয়ে উঠলো। আমার প্রদান কাজ। পড়াশুনায় মন বসে না, বন্ধুদের আড্ডা ভালো লাগে না। অফেক্ষা তখন প্রতিটি রাতের।

শুধু তোমার সাথে কথা বলবে সেই স্বপ্ন মধুর ক্ষনের জন্যই আমার যত অফেক্ষা, যত উদগ্রীবতা। কারণ তখনো আমি কিংবা তুমি কেউই মুটোফোন নেইনি। তাইসেট ফোনেই রাতের গভীরে আমাদের যত মান অভিমান, আনন্দ বেদনা গুলো শেয়ার করতাম। শুধু কি মান অভিমান, আনন্দ বেদনারই আখ্যান তা তো না গান, কবিতা কিছুই বাপ পড়ত না আমাদের আলা পন হতে। তোমার খুব কবিতা পছন্দ তাই তোমার প্রিয় কবিতা গুলো মুখস্থ করে আমার কার্কশ কন্ঠ দিয়ে আবার আবৃত্তি ও করতে হতো আর তোম অভিমান ভাঙ্গাতে একটা না একটা গান শুনতেই হতো।

না হলে তোমার অভিমান ভাঙ্গানোই দায় দিল। সেই দিনগুলো ছিল, স্বপ্নের বিয়ে মধুরতর/ অপারীমের আবেগীয়, জোছনা ও বৃষ্টির স্নিগ্ধ পরশ মাখা / আর রংধুনর অবিরময় রঙ্গেবাঙ্গা। ও হ্যাঁ কথায কথায় ভুলে গেছি এই দিনটির কথা বলতে সেই দিন, যে দিনটা ছিল আমাদের প্রথম পরস্পরকে সরাসরি চোখে দেখার পদন, কথা বলার দিন। অনেকদিন আমাদের মধ্যে পরিচয়ের কিন্তু তখনো কারো সাথে কারো দেখা হয়নি। তাই ঠিক হলো সামনেই যখন ফেব্রয়ারি এ দিনটিকে আমরা সরন্মীয় করে রাখবো দুজনের প্রথম সাক্ষাতের মাধ্যমে।

যাহোক ফেব্র“য়ারী রাতটা আমার তোমাকে দেখার উত্তজনায়, তোমাকে কাছে পাবার আনন্দে নির্ঘুম কাটলো। পরদিন খুব সকালেই বিছানা ছাড়লাম। বাথরুমে ঢুকে শেভ করলাম। গোসল সেরে যখন ফতুয়া পরতে যাব তখন দেখি নীল রঙ্গের আমরা বোন ফতুয়া নেই। কারণ গতকাল রাতে যখন তোমার সাথে কথা হয় তখন তুমি বলেছিলে আগামীকাল আমি যেন নীল রঙ্গের ফতুয়া পড়ে তোমার সাথে দেখা করি আর কথা ছিল তুমি লাল রঙ্গের শাড়ি পরে আমার সাথে দেখা করবে।

যাক কি আর করার মেজাজটা খারাপ হযে গেল। তোমার দেখা পাবার আনন্দে আমি সবকিছু ভুলে গিয়েছিলাম। ব্যাপারটা আমি তোমাকে জানানোর জন্য মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করি কিন্তু ফোনটা তোমার বন্ধ। সেই ফোনে কল দিলাম দেখি তোমার বাবার কন্ঠ কোন কথা না বলে ফোনটা রেখেদিলাম। অবশেষে ইস্ত্রি করা ধবধবে সাদা একটা পাঞ্জাবি পরে তোমার সাথে দেখা করতে আগের দিন রাতের আলাপে ঠিক করা একটি মার্কেটের সামনে উপস্থিত হলাম।

মার্কেটের সামনে মানুষের সামনে মানুষের প্রচন্ড ভিড় আবার কিছু লাল শাড়ি পরিহিত তরুণী ও দেখলাম। আমি ভীষণ দ্বন্ধে পড়ে যাই, এর মধ্যে কি তুমি আছো নাকি তুমি এখনো আসোই নি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। এদিকে তোমার ফোনে বারবার চেষ্টা করছি কিন্তু ঐ একই কথা এই মুহুর্তে সংযোগ ....। অনেক টেনশন নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি কিন্তু তোমার দেখা নাই। এক দিকে বিরক্তিবার অফেক্ষা অপরদিকে আমার সামনে দিয়ে হেটে চলা অনেক যোগলদের মত সুখে ভেসে যাওয়ার স্বপ্নে আমি তখন বিভোর।

ঘন্টাখানিক অপেক্ষা করার পরও যখন তোমার কোন খবর নেই তখন টেনশন কমানোর জন্য মার্কেটের ভিতর থেকে বাইরে আসলাম। সিড়ি দিয়ে নিচে নামছি ঠিক তখন এক অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে গেল। ভিড়ের মধ্যে থেকে হঠাৎ যেন একটা ধাক্কা অনুভব করলাম। যেহেতু কিছুটা আনমনা ছিলাম তাই কিছু বুঝে উঠার আগেই নিচে থেকে উটে আসা একটি মেয়ের সাথে সরাসরি ধাক্কা খেলাম। অত;পর মেয়েটা আমার দিকে মূর্তি নিয়ে তাকালো।

অনেক রূঢ় কথা শুনতে হলো, মেয়ে দেখলে মাথা ঠিক থাকে না, আপনার কি পেয়েছেন ইত্যাদি, ইত্যাদি। আমার শুধু হাতজোড় করে ক্ষমা প্রার্থনা আর কথাগুলো হজম করা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না। কারণ আমার আত্মপক্ষ প্রদর্শনের কোন সুযোগ সেখানে ছিলো না। যাহোক প্রচন্ড মন খারাপ করে সোজা বাসায় ফিরলাম। সারাটা বিকেল বাসায় শুয়ে কাটালাম।

রাগ কিংবা প্রচন্ড অভিমানে তোমার সাথে কোন যোগাযোগ করিনি, তুমিও করোনি। যদিও মনে মনে অপেক্ষা করছিলাম তোমার ফোন পাবার। রাতে তোমর ফোন। অনেক অভিমনে ফোনটা রিসিভ করলাম। আজকে তোমার, আমার সাথে দেকা করার কথা ছিলো, কি না? কেন দেখা করলে না? এসব করার মানে কি? তুমি একটানা কথা বলে যাচ্ছ এবং তুমি যথেষ্ট ক্ষুদ্ধ বুঝতে পারছিলাম তোমার কথা শুনে।

এবার আমি বলা শুরু করলাম অরপা তোমার প্রশ্নগুলো তো আমার করার কথা তুমি করছ কেন? মানে? মানে তোমার জন্য আজ আমি কতক্ষণ অপেক্ষা করেছি সেটা কি তুমি জানো। শুধু তোমার জন্য আমার যত প্ল্যান প্রোগ্রাম নষ্ট হলো? এবং ঠিক তোমার জন্য আমারও দিনটা খারাপ গেলো। সবকিছু জলে গেল। অর্পা আমি জানি না তুমি কখন আমার জন্য অপেক্ষা করেছ। কিন্তু আমি ঠিকই সময়মত ওখানে গিয়ে ছিলাম এবং ঘন্টাবাজবার মত অপেক্ষা করছিলাম।

তোমর ফোনে বার বার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু তোমার ফোনটা বন্ধ। যখন সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে যাব ঠিক তখন এক অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলো সিড়ির নিচ থেকে উঠে আসা একটা মেয়ের সাথে জোরে ধাক্কা খেলাম। আমি কোনভাবেই মেয়েটাককে বুঝাতে পারলাম না যে ধাক্কাটা আমি ইচ্ছাকৃত ভাবে দেইনি। কিন্তু মেয়েটা বুঝবে কেন। কি আর করা তার কথাগুলো আমাকে নীরবে হজম করতে হলো।

একদিকে তোমার দেখা নেই অন্যদিকে এই ঘটনা মেজাজটা প্রচন্ড খারাপ হলো। আর একমুহুর্ত না দাড়িয়ে সোজা চলে এলাম বাসায়। তার পর এই তো....। আচ্ছা এখন তোমার কথা বলো, তুমি কখন আমার জন্য অপেক্ষা করেছিলে? ফোনের ওপাশটা তখন পুরোপুরি নির্বাক, নিশ্চুপ। অর্পা তুমি শনতে পাচ্ছো তো, হ্যালো? কেন কি হয়েছে।

যে মেয়েটির সাথে তুমি ধাক্কা খেয়েছ, সে মেয়েটির কথা তুমি হজম করেছ সেই মেয়েটি যে আমি। অর্পা তুমি!!! কি বলছো এসব!!! ও মাই গড এত কাছে থেকে ও আমরা দু’জন দ’জনকে চিনতে পারলাম না। আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না । এতো দেখি এক রুপালী পর্দার গল্প। যার দুটো চরিত্র তুমি কিন্তু তোমার পরনে তো লাল শাড়ি ছিল না ছিল অন্য কোন কালারের, কেন? আসলে আমি একটু মজা করতে চেয়েছিলাম নিজেকে একটু আড়াল করে দেখতে চেয়েছিলাম তুমি কেমন উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা কর।

কিন্তু বিশ্বাস করে আমি ভাবতে পারিনি এরকম একটা ঘটনা ঘটে যাবে। তুমি আমাকে ক্ষমা করো তুমি ক্ষমা না করলে আমার অপরাধ বোধ কখনো কমবে না। আদিত্য রাজি। ও বলতে ভুলে গেলাম, এত দেরি করে তুমি ওখানে এসেছিলে কেন আর ফোন ই বা কেন বন্ধ করে রেখেছিলে। আসলে বাসার একটা কাজে ছিল।

ওটা শেষ করতে করতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। তুমি সারা সকাল অনেক বার কল দেবে কিন্তু আমার ফোনটা বন্ধ পেয়ে তোমার অনেক টেনশন হবে অনেক উদগ্রীব হয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করবে হঠাৎ আমি তোমাকে অবাক করে দিয়ে তোমর সামনে উপস্তিত হবো। সারা সকাল ফোন বন্ধ পেয়ে তুমি মনে মনে ভাববে হয়তো আমি আসব না। কিন্তু তোমার সমস্ত ধারণা আমি ভুল প্রমানিত করে, আমি তোমার কাছে আসবো । এ ধারণা থেকেই ফোনটা অফ রেখেছিলাম।

কিন্তু তুমি কাজটা মোটেও ভালো করনি। আমাকে এভাবে কষ্ট দেয়া তোমার খুব অন্যায় হয়েছে। এজন্য সরি লক্ষ কোটিবার আচ্ছা ঠিক আছে, ক্ষমা চাইতে হবে না। আমার কাছে তোমার সাত খুনই মাফ। তুমি অনেক ভালো।

আচ্ছা অর্পা বলতো আমাকে তোমার কেমন লাগলো। ওখানে বেশ কিছুক্ষণ তো দেখেছিলে? খুব ভালো। যার কোন তুলনা নাই। ও তাই নাকি। যে মানুষটা সকালে ছিলো খুব খারাপ রাতে খুব ভালো হয়ে গেল।

অবাক কান্ড! তার মানে আমি মিথ্যে বলছি, আমি মিথ্যা বাদী। কন্ঠে তোমার অভিমানের সুর। আরে না, না আমি তা বলছি নাকি। আমি..... থাক আর তোমাকে বলতে হবে না। এবার বলো আমাকে তোমার কেমন লাগলো? তোমাকে .... তোমাকে খুব ঝগড়াটে লেগেছে।

মানে! আমি ঝগড়াটে। আসলে সত্যি বলতে কি এত ঝাড়ি খাবার পর আমি তোমার মুখটাই ভুলে গেছি। আবার তোমার মুখটা দেখে নিই তারপর না হয় বলি। আচ্ছা কালকে দেখা হচ্ছে তো? হু , হবে। একই জায়গায়, একই সময়।

আচ্ছা আজকের মত তাহলে পরদিন একটা লাল পাঞ্জাবি পরে তোমার সাথে দেখা করতে গেলাম। মনে পড়ে তুমি পরেছিলে ঐ লাল শাড়িটা যে যেটা পড়ে আগের দিনই আমার সাথে দেখা করবে কথা ছিল। তোমাকে এত সুন্দর লাগছিল যে তোমাকে দেখার পর তোমার দিকে বিমুগ্ধ নয়নে নিল্লক কতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম মনে নেই। তুমি বলেছিলে একদিনেই যদি সব দেখে নাও পরে কি দেখবে। শুধু হা করে না দেখে চলো রিকশা নিয়ে ঘুরি।

হ্যাঁ ঘুরেছিলাম কয়েক ঘন্টা রিকশা করে তোমায় নিয়ে পুরো শহরটা ঘুরেছিলাম। সরাদিন তোমাকে নিয়ে স্বপ্নের চেয়ে ও মধুর সময় পার করে ছিলাম। তারপর থেকে আমরা দু’জন একসাথে কত ঘুরেছি এই শহরের এ মাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত। মাঝে মাঝে দু’জন এ শহর পালিয়ে হারিয়ে দেতাম নির্জন কোন সবুজরণ্যে তোমার আবার কবিত পড়ার অভ্যাস। কি আর করা আমার কর্কশ কন্ঠ নিয়ে তোমাকে আবৃত্তি শুনানোর সালা শুরু হলো।

শুধু কি আবৃত্তি, গান ও গেয়ে যাও রাজক্ন্যার মন খুশি রাখতে। মনে পড়ে তোমার শরতের কত বিকেলবেলা আমরা দু’জন হারিয়ে ছিলাম নীল আকাশ আর সাদা বাশের মিতালী ময় স্থানে । বৃষ্টিতে আমার ভিজতে না চাওয়া কিন্তু তোমার ভিজতে চাওয়ায় ইচ্ছার কাছে আমার সব না চাওয়াই স্রোতের মত ভেসে যেত। তুমি ভিজতে আমাকেও ভিজতে হতো। তুমিই প্রথম আমাকে বৃষ্টির রুপ দেখিয়েছিলে।

একটা প্রজাপতির ডানায় কি পরিমাণ সৌন্দর্য লেগে আঠেছ আমি তোমায় ভালোবাসার পর প্রথম দেখলাম। তোমার ভালোবাসার স্পশর্তে বিমুদ্ধ নয়নে দেখলাম পৃথিবী কত সুন্দর কতটা রঙ্গে রঙ্গীন। কিন্তু আমার রঙ্গীন পৃথিবী এক সময় সাদা কালো হতে লাগল। স্বপ্নের সব রং ধীরে ধীরে ক্ষসে পড়তে লাগল। দীর্ঘ দু'টো বছরের সম্পর্ক তুমি এক সময় কেন যেন উপেক্ষা করতে লাগলে।

আমার ফোন তোমার নিকট বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়ালো। কোন এক অজ্ঞাত কারণে আমাকে তোমার অসজ্য লাগতে শুরু করলো। অর্পা আমি আজো জানতে পারিনি আমার এভাবে ছুড়ে ফেলার কি কারণ ছিল। আমি এখনো সেই অজ্ঞাত কারণটা খুজেঁ বেড়াই। এখন মধ্যরাতে বৃষ্টি হলে আমার ভীষণ কান্না পায় আার তোমাকে খুব মনে পড়ে।

বৃষ্টি এখন আর আমাকে টানে না। শরতের সুনীল আকাশ,কাশফুল আমার কাছে মনে হয় এখন অনেক অনেক বিষন্ন। প্রজাপতির ডানায় ভর করা আগুনাভ সুন্দর মনে হয় কত যে বিবর্ণ। ওর ছোট্ট শরীরটা কত যে ব্যথায় ব্যথাতুর । শুনেছি আমার সঙ্গে সম্পকচ্ছেদের কিছুদিন পর তোমার ইচ্ছাতেই তুমি বিযে করেছ।

তারপর তুমি তোমর জীবনের নির্ভরযোগ্য মানুষটির হাত ধরে পাড়ি দিয়েছ স্বপ্নের আমেরিকায়। অর্পা আমি ভালো নেই, তুমি নিশ্চয়ই খুব ভালো আছো স্বামী সংসার, বাচ্চা....। আমি আর কভু ভালো কি থাকতে পারব, কি মনে হয় তোমার? ভালো থাকা কি উচিত? শীতের এই মধ্যরাতে পৃথিবি যখন ঘুমে অতল তখন তোমাকে নিয়ে কিংবা তোমর আমার জীবনের অথবা আমার জীবনের গল্পটি লিখছি কেন জানি না। হয়তো আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। শুনেছি মধ্যরাতে মানুষ নাকি একটু পাগলাটে অনেক অনেক হয়ে যায়।

আমি কি এখন অনেক বেশি আবেগী, খুব বেশি স্থতিকাতর? অর্পা আমার সারা অপেক্ষা এখন সেই দিনের যে দিনে তুমি ফিরে আসবে আবার । খুব কাছে আমার বুকের সন্নিকটে। তারপর এক বৃষ্টির দিনে ঝুমঝুম করা জলে আমার হাত ধরে টেনে নামাবে আমার শত বাধা উপেক্ষা করে। প্রজাপতির ডানায় ভরা সেই আশ্চর্য সুন্দর আবার দেখতে পাবো আমি তোমার চোখ দিয়ে। আমাকে দেখাবে শরতের আকাশ দেখাবে মেঘ আর বাশের মিতালীময় সেই স্থান।

আরো কত কিছু কিছু করতো তোমাকে নিয়ে তুমি ভাবতেই পারবেনা। আমার অপেক্ষার কথা শুনে তোমার কাছে পাগলে প্রলাপ মনে হচ্ছে বুঝতে পারছি। এগুলি জানি আমি এমন এক অপেক্ষায় যার কোন শেষ নেই। কিন্তু কি করবো বলো এযে বুকের ভেতর মনটা আছে না ও তো মানতে চায় না। শুধু মনে হয় একদিন তুমি ফিরতে, অবশ্যই ফিরবে আমার নয়নে নয়ন রেখে বলবে কেমন আছো প্রিয়তম? কি দেখছো ওমন করে, এই যে দেখ আমি এসেছি একান্ত তোমার হতে।

কি আমার বরণ করবে না তুমি? তোমার বুকে, হৃদয়ে? কাছে আসার গল্প (Kache Ashar Golpo)

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।