আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি নামের জন্য।



পূর্ব রাজাবাজার ফার্মগেট। একজন নানার কথা বলছি। রাজাবাজারের নানা অনেক সুপরিচিত ব্যক্তি ছিলেন। নানা এখন নেই। সমাজে তার ব্যাপক প্রভাব ছিল।

নানা ছিলেন অতি মাত্রায় বঙ্গবন্ধু ভক্ত। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর তিনি প্রতিদিন ধানমন্ডি ৩২ এ যেতেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে নীরবে কিছুক্ষণের জন্য দাড়াতেন। সুরা পাঠের পর তার মাগফেরাতের দোয়া করতেন। মসজিদে প্রতি জুমআর নামাজের পর বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া করাতেন।

জীবিত থাকা অবস্থায় সুধাসদনে যাওয়ার জন্য তার কোন অনুমতির দরকার ছিলনা। শেখ হাসিনাকে তার মেয়ের মতই জানতেন। তিনি সবসময় বঙ্গবন্ধুর একটি ছবি সাথে রাখতেন। ছবি নিয়ে নানার সাথে মসজিদের ইমামের সাথে রসাত্মক বাক-বিতন্ডা হয়েছিল। মসজিদের ইমাম একবার নানাকে বলেছিল মসজিদে ছবি নিয়ে প্রবেশ করা ইসলামে নিষেধ।

নানা ইমাম সাহেবকে উত্তর দিলেন - পৃথিবীর মাঝে একটি ছোট্র দেশ বাংলাদেশ। যে দেশটির জম্ম হয়েছিল শেখ মুজিবের মাধ্যমেই। দেশের কর্ণধার একমাত্র শেখ মুজিব। সেই দেশের ভিতরেই ছোট্র একটা মসজিদ। সেই মসজিদেই তার ছবি নিয়ে ঢুকা যাবেনা, এটা কেমন কথা? নানা তাজ্জবভাবে ইমাম সাহেবকে বললেন - হুজুর পড়েন আসতাগফিরুল্লাহ।

তার দেশে তার ছবি নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করা যাবেনা এটা কি কথা বললেন? নানা শেখ মুজিব কে ভালবাসতেন প্রাণ দিয়ে। এটা ছিল তার ভালবাসার প্রমাণ। যা দিয়ে তিনি ইমামকে পর্যন্ত বিব্রত করেছিলেন। পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছেন, যারা তাদের কর্মের স্বাক্ষর রেখে গেছেন। অনেকে ইতিহাসে প্রশংসিত আবার অনেকে নিন্দনীয়।

কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ মানুষ নিন্দনীয় বা প্রশংসিত হয়। ইতিহাসে বেচে থাকার জন্য অনেক মানুষ অনেক ধরনের কাজ করছেন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কর্মের স্বীকৃতি মিলে ব্যক্তির অনুপুস্থিতে। ব্যক্তি নিজেই তার কর্মের স্বীকৃতি রেখে যান। ইতিহাস তাকে সে হিসেবে মুল্যায়ণ করে।

আবার ব্যক্তির অনুপুস্থিতে তার অনুসারীরাই তাকে বাচিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। কেউ নাম কুড়িয়ে মজা পান। আবার কেউ কাজ করে মজা পান। বঙ্গবন্ধুর নামে দেশে অনেক প্রতিষ্ঠানের নাম। বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, র্স্টেডিয়াম. পার্ক, সম্মেলন কেন্দ্র, সেতু কি নেই তার নামে? আমরা তাকে ভালবাসি বলেই তার নামে এত্তসব? তিনি জীবিত থাকতে তার নামে তেমন কিছু করেননি।

তার নামে কিছু হোক তা তিনি পছন্দ করতেন কিনা জানিনা। আকষ্মিক মৃত্যুর কারনে তিনি তার জন্য তেমন কিছু করতে পারেননি। তিনি হয়তো স্বপ্নেও ভাবেননি তার এত দ্রুত প্রস্থান হবে। তার জীবনযাত্রা যাতে নিরাপদ হয় তার জন্য তিনি সংবিধান সংশোধন করেছিলেন। আজীবন যাতে ক্ষমতায় থাকতে পারেন , সেজন্য তিনি ব্যবস্থাও করেছিলেন।

কিন্তু বাস্তবতা অনেক করুণ। তার জন্য এতকাল পরেও আমার দূঃখ হয়। বাংলাদেশে নাম প্রসংঙ্গ আসলেই কিছু বিব্রতকর বিষয় ফুটে উঠে। একদল ক্ষমতায় আসলেই অন্যদলের বা বিপরীত আদর্শের ব্যক্তির বা দলের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। নাম মোছা যায়না ।

পরিবর্তন হয় মাত্র। বিএনপি শেখ মুজিবের নাম মুছে ফেলে। আওয়ামীলীগ জিয়াউর রহমানের নাম গুড়িয়ে দেয়। নাম পরিবর্তন নিয়ে বিবিসির সিরাজুর রহমানের একটি কলাম পড়েছিলাম। তিনি জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম নিয়ে লিখেছিলেন।

৯৬ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর জিয়া বিমানবন্দর এর জিয়া অংশের নাম সিলিকনের বোর্ডে লাইট অফ করা থাকতো। এই অংশটা অন্ধকার থাকতো। শুধু আন্তজাতিক বিমানবন্দর এই জ্বলতো। বারবার দেখার পর দেশের ভাবমূর্তির কথা চিন্তা করে একবার তিনি বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করলেন- কেন লাইটটি জলছে না? কর্মকর্তা যে উত্তর দিলেন তাতে সিরাজুর রহমান খুব আশ্চর্য হলেন। উপরের নির্দেশেই নাকি লাইট অফ করা ছিল।

বাহিরের পৃথিবীর কেউ যাতে নামটি না দেখতে পারে সে জন্যই নাকি এ ব্যবস্থা। আসলে বঙ্গবন্ধুর দেশে মানুষ আসবে অন্যের নামের বিমানবন্দর দিয়ে মানুষ আসা যাওয়া করবে। এটা সরকার চায়নি বলেই জিয়া অংশের লাইট অফ। বঙ্গবন্ধুর এইদেশে তার নামে সবকিছু থাকলে ও একটি বিমানবন্দর ছিলনা। যা আসলেই বেমানান।

এই জন্য একটি বিমানবন্দর তার নামে করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় সরকার তার নামে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এর সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। গত বছরের ২৯ আগস্ট প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের ব্যাপারে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়।

ওই বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলা হয়, প্রকল্পটি সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা কমিটি সাতটি স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করে তিনটি স্থানের নাম প্রস্তাব করে। এক. ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ত্রিশাল, আমিরাবাড়ী, মোক্ষপুর ও মঠবাড়ী ইউনিয়ন। দুই. ত্রিশাল উপজেলার রামপাল, কানহর, কাঁঠাল ও বৈলর ইউনিয়ন। তিন. টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর।

এই তিনের মধ্যে প্রথম প্রস্তাবের পক্ষে (ময়মনসিংহের ত্রিশাল) গত বছরের ৭ এপ্রিলের বেসরকারি বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভায় সুপারিশ করা হয়। এরপর কমিটি ১৫ নভেম্বর আবার বিমানবন্দরের স্থান নির্বাচনের জন্য ফরিদপুরের ভাঙ্গা, মাদারীপুরের শিবচর ও রাজৈর, শরীয়তপুরের জাজিরা এবং মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের আড়িয়ল বিল এলাকা পরিদর্শন করে। ৩০ নভেম্বর বিমান মন্ত্রণালয়ের সচিব সাংবাদিকদের জানান, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের স্থান হিসেবে আড়িয়ল বিলকেই চূড়ান্ত করার সুপারিশ করেছে এ-সংক্রান্ত কমিটি। গত ১২ ডিসেম্বর আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর এবং পাশেই বঙ্গবন্ধু সিটি নির্মাণের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আড়িয়ল বিলের ২৫ হাজার একর জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

নতুন বিমানবন্দরের পক্ষে যুক্তি: মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ সেলের প্রধান (যুগ্ম সচিব) জয়নাল আবেদীন তালুকদার গত ৬ ডিসেম্বর স্থান নির্বাচন-সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠান বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে। প্রতিবেদনে নতুন বিমানবন্দরের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলা হয়, দেশে এখন ১৭টি বিমান সংস্থা ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বাড়ছে। ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে এর বর্তমান অবকাঠামো যথেষ্ট নয়। ক্ষমতার ৮০ শতাংশ এখন ব্যবহূত হচ্ছে।

এ বিমানবন্দরের একটি রানওয়ে এবং বছরে ৮০ লাখ যাত্রী পরিচালনক্ষমতা রয়েছে। ক্রমবর্ধমান বিমানযাত্রীর তুলনায় তা অপ্রতুল। এই বিমানবন্দরের চারদিকে আবাসিক এলাকা ও সেনানিবাস থাকায় ভবিষ্যতে সম্প্রসারণ করা সম্ভব নয়। এর যাত্রী টার্মিনাল ভবন অপ্রশস্ত এবং পাঁচ স্তরের আধুনিক নিরাপত্তাব্যবস্থার ধারণা বাস্তবায়নের যথেষ্ট সুযোগ নেই। এ ছাড়া বর্তমান বিমানবন্দরে সর্বশেষ প্রযুক্তির সুপরিসর উড়োজাহাজ এয়ারবাস এ-৩৮০ পরিচালনের ক্ষমতা নেই।

এ অবস্থায় আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ এবং এর সঙ্গে রাজধানীর সংযোগ সড়ক এক্সপ্রেসওয়ে জরুরি। পাল্টা যুক্তি: সরকারের এসব যুক্তি সম্পর্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ বিমানের সাবেক এক শীর্ষ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এয়ারবাস কোম্পানির সর্বশেষ সংযোজন এ-৩৮০ উড়োজাহাজ এখন পর্যন্ত খুব কম এয়ারলাইনসই ব্যবহার করছে। ঢাকা থেকে যেসব গন্তব্যে সরাসরি ফ্লাইট আছে, তাতে উড্ডয়ন ঘণ্টা ও যাত্রীর চাপ বিবেচনায় এখানে এ-৩৮০ উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনার সম্ভাবনা নেই। কারণ উড্ডয়ন ঘণ্টা বিবেচনা রেখে এয়ারলাইনসগুলো ফ্লাইট পরিকল্পনা করে। কম দূরত্বে সুপরিসর উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করলে লাভ হয় না।

আধুনিক নিরাপত্তাব্যবস্থার ধারণা বাস্তবায়নের জন্য জরুরি প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ও দক্ষ জনবল। এখানে বিশাল জায়গা বা অবকাঠামো মুখ্য নয়। ভবিষ্যতের প্রয়োজন মেটাতে টার্মিনাল ভবন আরও প্রশস্ত করা দরকার। সে জন্য বর্তমান বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত জমি আছে বলে সিভিল এভিয়েশন-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়। এর পরও যদি স্থানসংকুলান না হয়, তাহলে বিমানবন্দরসংলগ্ন ১৩০ একর জমি কেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া হলো, সে প্রশ্ন উঠছে।

বিগত আওয়ামী লীগের আমলে এটা ইজারা দেওয়া হয়। পরে তা বাতিলও করা হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আবার তা ইজারা দেয় কান্ট্রি ক্লাব, গলফ ক্লাব, পাঁচ তারকা, তিন তারকা হোটেল ইত্যাদি করার নামে। কিন্তু গত ১০ বছরে কিছুই করা হয়নি। বর্তমান সরকারের সময় বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি ওই জমির ইজারা চুক্তি বাতিল করার প্রস্তাব করে।

বিমানমন্ত্রী জি এম কাদের ওই সব জমি ফেরত নেওয়ার উদ্যোগ নেন। কিন্তু পরে সংসদীয় কমিটি ইজারাদারের সঙ্গে সমঝোতার প্রস্তাব দেয়। তখন বিমানমন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেছিলেন, সরকারি জমি ফেরত নিতে মন্ত্রণালয় আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে। ভবিষ্যতে বিমানবন্দর সম্প্রসারণে এই জমি দরকার হবে। কিন্তু এখন নতুন বিমানবন্দরের জন্য আড়িয়ল বিলের জমি অধিগ্রহণ করতে যাচ্ছে সরকার।

আরেকজন বিশেষজ্ঞ বলেন, নতুন বিমানবন্দরকে এ অঞ্চলের বিমান চলাচলের কেন্দ্র করার কথা বলছে সরকার। কিন্তু কোন নিশ্চয়তা বা সমীক্ষার ভিত্তিতে এ সম্ভাবনার কথা বলা হচ্ছে? দুবাই ও সিঙ্গাপুর হাব হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা দেশ দুটির বিমান সংস্থা এমিরেটস ও সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের। এ দুটি এয়ারলাইনস এখন বিশ্বের শীর্ষপর্যায়ের বিমান সংস্থা এবং পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দেশে ও গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে। তারা প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যে বিমান চলাচলে নিজ দেশের বিমানবন্দরকে মূল কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে। দুবাই ও সিঙ্গাপুর এমনিতে বড় ব্যবসায়িক কেন্দ্র।

তাদের রয়েছে আনুষঙ্গিক এমন সব সুবিধা, যা তাদের নগর পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত। ঢাকাকে দুবাই বা সিঙ্গাপুরের মতো বিমান চলাচলের আঞ্চলিক কেন্দ্র করতে হলে তার জন্য পুরো রাজধানীকে ওই রকম পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ঢাকাকে ঘিরে সরকারের এখন পর্যন্ত তেমন চিন্তা-পরিকল্পনার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। '(প্রথমআলো) যুক্তি পাল্টা যুক্তির ভীড়ে মূলত একটাই উদ্দেশ্য শেখ মুজিবের এইদেশে তার নামে একটা বিমান বন্দর চাই। তার নামের বিমানবন্দরে যেই পা রাখবে সেই জানবে বঙ্গবন্ধু র দেশে আসলাম।

এতে দেশের কত লাভক্ষতি তা মুখ্য নয় । মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের আড়িয়ল বিলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগের প্রতিবাদে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ১ পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। আড়িয়ল বিল রক্ষা কমিটি আজ ঢাকা-মাওয়া সড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছিল। হয়তো এর জন্য আরো লোক মারা যাবে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হবে , তাতে কার কি যায় আসে।

আমার একটা বিমানবন্দর চাই। বিলবাসীর দাবি-আমরা বিমানবন্দর চাই না, নতুন শহর চাই না। ৫০হাজার কোটি টাকা দিয়ে প্রতিটি বিভাগীয় শহরকে প্রশাসনিক এবং বাণিজ্যিকভাবে কার্যকর করা হোক। ঢাকা শহরের যানজট নিরসন করা হোক। সীমান্ত সুরক্ষিত হোক।

আসলে একজনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এত প্রচেষ্টা কেন? চাপিয়ে দিয়ে তো ভালবাসা আদায় কর যায়না। আমার যাকে ভাললাগার ভালবাসার আমি তাকে আপনা থেকেই ভালবাসবো। জোর করে তো কোন কিছু মাথায় বসিয়ে দেয়া ঠিকনা। আমরা বিলবাসী বিএনপিকে বলবো- যদি আমাদের জন্য তোমাদের কিছু করার থাকে তাহলে আমাদের পাশে আসো। আমরা যদি আমাদের আন্দোলনে সফল না হই, সরকার যদি আমাদের উপর বিমানবন্দর চাপিয়েই দেয় , তাহলে জিয়ার নামের বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তনের প্রতিশোধ হিসেবে তোমরা এই বিমানবন্দরের নাম জিয়ার নামেই কর।

স্যরি আমার অক্ষমতা হিসেবেই আমি তোমাকে প্রতিশোধ নিতে ডাকলাম। আমরা বিলের বালুচরের কৃষাণীর হাসি চাই। বিল-বালকের ঘুড়ি উড়ানো দেখতে চাই। আমরা বিলবাসী আকাঁড়া লাল চালের ভাত,টাকি ভর্তা, সরষে পাতার শাক,আদামনির ঝাঁঝ খুবই পছন্দ করি । তোমার কাছে ইলিশ চাইনা।

চিকন সুগন্ধী ভাত চাই না। আমাদের ১০ লক্ষ লোকের কথা একবার ভাব। আমার অরণ্য আমায় ফিরিয়ে দাও। আমি তোমার চোখ ধাঁধানো ঝাড়বাতি চাইনা। চাঁদের নিয়ন আলো চাই।

তোমার কাছে নির্বাচনী ইশতেহারের সেই চাকরির দাবী আমি কোন দিন করবোনা। তুমি আমার বিল থেকে ফিরে যাও। আমাকে আমার মত বাচঁতে দাও। আমাদের শেখ মুজিব আমাদের অনেক বেশি ভালবাসতেন। আমরাও তাকে ভালবাসতাম।

৭ মার্চের ভাষণে তিনি আমার মানুষ যাতে কষ্ট না পায় বলেছিলেন। অপরদিকে পাকিস্তানি ইয়াহইয়া খান বলেছিল- বাংলার মানূষ চাইনা, বাংলার মাটি চাই। আমরা বিলবাসী সেদিন পাকিস্তানি শাসকের কথার জবাব দিয়েছিলাম। আজ যদি অনুরূপভাবে তুমি পাকিদের মত আবার বল- বিলের ১০ লক্ষ মানুষ চাইনা, বিমানবন্দরের জন্য বিলের মাটি চাই । তাহলে আমরা আবার লড়বো।

প্রয়োজনে টেস্ট কেস হিসেবে তুমি বঙ্গবন্ধুকে কবর থেকে আবার ঢেকে তোল , জিজ্ঞেস কর একদিকে ১০ লক্ষ লোকের বেঁচে থাকার আবাসভুমি অপরদিকে তোমার নামের একটি বিমানবন্দর কোনটা চাও? হয়তো তিনি হাসবেন, বলবেন হাসিনা দুষ্ট হয়েছ? শাসককে কখনো জনগনের বিরুদ্ধে যেতে হয়না। আমার নামে বিমানবন্দর চাইনা। আমিও ১০ লক্ষ লোকের হাসি মুখ চাই। শুধুই একটি নামের জন্য বিলবাসীর সতীত্ব নষ্ট হতে দিতে পারিনা। আবদুল কাদের সুঘ্রাণ


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.