আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ট্যালেন্ট ও টাইম



ট্যালেন্ট ও টাইম খুব পপুলার ছিলেন তিনি। ১৮৮০ শতকের মাঝামাঝি সময়ে সাহিত্যে তার আবির্ভাব। কিপলিং (Kipling) জীবদ্দশায় ও এন্তেকালের পর দুইভাবে মূল্যায়িত হয়েছেন। এই মূল্যায়নটা বোঝা জরুরি। কেউ কেউ কইছেন, তার লিখার মধ্যে সাম্রাজ্যবাদী ধ্যান-ধারণার প্রকাশ ঘটেছে।

কেউ কেউ বলছেন, তাইন (তিনি) যা লিখছেন , তাতে জতিগত বৈষম্য আর মারামারি-লাইঠালি (যুদ্ধ উস্কান), হানাহানি উসকায়। একপেশে ও ভালগার,দয়াশূন্য ব্রুটাল- মনে যা আইছে তা-ই লিখছেন, সরল মনের সাদাসিধা বয়ান, একপেশে- কিন্তু মনে চোট লাগার মত, সোজা-সরল কথা কিন্তু কোনদিকে না তাকাইয়া চরিত্র বানান- এই বয়ানও কেউ কেউ দিয়াছেন। বৃটেনের রাজনীতিক আবহ ক্ষমতায় পালা বদল হল, লেবার পার্টি ক্ষমতায় আইলো, তাঁর লেখাকে বলা হলো আউটডেটেড, হাল ফ্যাশানের লেবার রাজনীতির সাথে খাপ খায় না। তার জন্ম বোম্বাই শহরে। ভারতে বৃটিশ আধিপত্য একেবারে ঊষাকাল পার করছে, তেজি ভাব।

তারে পড়ে নাই, এমন লেখাপড়া জানা লোক ইংল্যান্ডে ছিলো না। তিনি মানুষের মনে গভীর আবেগ সঞ্চার করতে পারতেন। ১৮৯৬ সালের মধ্যেই এই তরুণের লিখা নিয়া সমগ্র বাহির হইয়া গেলো। কত আর বয়স, কত সন্মান। আপনি যদি বড় কিংবা মনতুষ্টিকর স্বাদের লেখক হন, জনগণের তাদের সাধের লেখকের উপর চোখ রাখবেন।

ভারত নিয়া যা লিখছেন, কথা ঠিক, সাম্রাজ্যবাদিদের চোখ দিয়া তিনি চরিত্রগুলানরে তৈয়ার করছেন। তিনি নিজে সাম্রাজ্যবাদের প্রচারক ছিলেন তা আমি অন্তত মনে করি না। চরিত্রের প্রতি তার নির্বিকারত্ব নিয়াও অনেক কথা আছে। তার নিজের গড়া চরিত্রের প্রতি কোন মায়া –দয়া নাই। রাজনীতিক নেতার সাথে জন সমাবেশের সম্পর্কের লাহান।

চিনার দরকার নাই। কিন্তু কথা দিয়া জড়ো করতে পারেন, মরে যাবার, মারার মন্ত্র দিতে পারেন, প্রতিপক্ষের উপর হামলা করার কানপড়া দিতে পারেন। তিনি বেঁচে থাকতে তার সমালোচনা তার কানে এসেছে। তিনি থামেন নাই। লিখেছেন।

কাউকে পাত্তা দিলেন না। লেখক পাঠকের জন্য বচন-রচন করবেন না নিজের আনন্দে লিখবেন এই নিয়া নন্দনতত্ত্বে অনেক কথা আছে। তবে তার গল্প আমার খুব প্রিয়। গল্পকার ছাড়া মানুষ বাঁচে না। আমরা সবাই গল্পকার।

একটা বিশাল গল্প আর আমাদের নিজের গল্প বলে বলে, ভেবে ভেবে মানুষ দিন পার করে। গল্প মানুষের প্রাণশক্তি। তার মৃত্যুর পর আবার তারে নিয়া হইচই। জনগণ যখন সাহিত্য ভালোবাসে, তখনও রাজনীতিবিদরা অনেক সময় ভাগ্য নির্ধারোণ করে দেয়। সোভিয়েত বিপ্লবের পরে বউয়ের পিছার বাড়ি খেয়ে, কত কষ্ট করে মানুষের উত্থানের , সার্বভৌম হয়ে উঠার, রুশ দেশের বুর্জোয়াদের হয়ে উঠার প্রাক্কালে যে বাড়াবাড়ি ও ভাড়ামির কথা এবং রাজনীতির একটা সাহিত্যিক আদল তৈরি করেছেন, তারে প্রত্যাখান করা প্রায় সারা হয়ে গেছিল।

লেনিন না থাকলে কী যে হতো! কবির জন্ম হয় মরণের পরে, আমি সবসময় কই। তার জনপ্রিয়তা রাজনীতির কারসাজি আর প্রভাবে কমে গেছিল, সইত্য। কিন্তু তারপর শুরু হলো তারে নিয়া ব্যাপক আলোচনা। বলা হলো, তিনি বিচার বুদ্ধি সম্পন্ন, জ্ঞান গরিমা সহ একজন গল্পকার। তারে এইভাবে বিলাতের রাজনৈতিক হাওয়া বদলের সাথে সাথে একটা রাজনৈতিক সিল মাইরা সাম্রাজ্যবাদীদের সাহিত্যিক মুখপাত্র বলা শোভন হয় নাই।

ইন্ডিয়ার গল্প, বাচ্চাদের গল্প, কী এক গোপন রহস্যময় ভাষা, বাচ্চাদের কানে কানে কথা যেন। আল্লাহ বাঁচালেন তাঁকে। তিনি পচাব্দি গাজীর মতো শিকারের গল্প। তার বন্য প্রাণী রক্ষায় সামনের সারিতে ছিলেন। বৃটিশ সোলজারদের গল্প শুনিয়েছেন।

তিনি খুবই আনন্দ দেন তার লিখায়, তার লিখা পড়ে কী যে মজা। আমি শিশু হয়ে যাই। ১৯৩৬ সালে আমার প্রিয় লেখক মারা যান। আসুন কোন লেখককে রাজনীতর বলি না করি। ভুলে না যাই সাহিত্যের ঐতিহাসিক গল্প।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.