আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলামকে সহজে জানার উপায়

আমি খুবই সাধারণ

অনেকে মনে করে যে ইসলামকে জানা খুবই কঠিন। আর ইসলামের মধ্যে বিভিন্ন দল মত বিদ্যমান। তাই খুবই কঠিন যে কোনটি সঠিক পথ বের করা। আসলে তা কিছুটা কঠিন হলেও তা অসম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন কিছুটা কৌশল ও আন্তরিকতা।

সেই সাথে প্রয়োজন সঠিক পথ সন্ধানের আকুলতা ও জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করা। আগে থেকেই কিছু অনুমান বা মন্তব্য না করা। আসলে ইসলাম যে বিভিন্ন দলে বিভক্ত হবে তা নাবী (সা হুশিয়ার করে দিয়ে গেছেন। তিনি পূর্বাভাষ দিয়ে গেছেন যে তার উম্মাত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। এদের মধ্যে একটি হবে সঠিক পথ।

এই পথকে আপনাকে খুজেতে হবে । এজন্যই কুরআনের প্রথম নাযিলকৃত আয়াত পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। (সূরা আলাক-আয়াত নং-০১) ইসলামকে সহজে জানার কিছু কৌশল আজ আমি পেশ করব: ১. নিজেকে জ্ঞানী না ভেবে জ্ঞান অর্জনকারী ভাবুন। কোন বিষয় জানার জন্য তার মৌলিক বিষয়গুলোর দিকে গুরুত্ব দিন। কোন কিছু আপনার জানা বা অভ্যাসের বিপরীত হলে তাত্ক্ষনিক মতামত না দিয়ে তা নিয়ে পড়ুন ও পড়ে এটা সমন্ধে মতামত দিন।

২. ইসলামকে জানার জন্য প্রথমেই আপনাকে কুরআন পড়তে হবে। কুরআন না পড়ে ইসলাম জানার চেষ্টা করা বৃথা। কুরআন অবশ্যই অর্থসহ বুঝে পড়তে হবে। আপনি যে ভাষার সে ভাষায় কুরআনের অনুবাদ পড়তে হবে। একটি অনুবাদে সন্তুষ্ট না থেকে কয়েকটি অনুবাদ সংগ্রহ করা ভাল।

তার চেয়ে ভাল হয় যে আরবী শিখা আর সন্তানকে আরবী শিখানোর ব্যবস্থা করা। অনুবাদে ভুল থাকতে পারে তাই বেশ কয়েকটি অনুবাদ সংগ্রহ করা উচিত। ভালো ইংরেজী জানা থাকলে ইংরেজীতে কুরআনের অনুবাদ সংগ্রহ করা ভাল। শুধু অনুবাদ পড়লে কুরআন বুঝা মুশকিল। তাই কুরআনের তাফসীর পড়া উচিত।

কুরআনের তাফসীর আপনাকে এর ভুলগুলি (আপাত দৃষ্টিতে) আপনাকে সংশোধন করবে। ৩.কুরআন বুঝতে হলে অবশ্যই হাদীস পড়তে হবে। তা নাহলে আপনি কুরআনের শানে নুযুল, আহকাম মাসায়েল বিহিত রহিত আয়াত বুঝতে পারবেন না। হাদীস গ্রন্থদের মধ্যে বিশুদ্ধ হাদীস গ্রন্থ হচ্ছে বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ। এরপর মুয়াত্তা,রিয়াদুস সালেহীন ।

তারপর হচ্ছে তিরমিযী, সুনানে আবু দাউদ, সুনানে নাসায়ী, সুনানে ইবনে মাজাহ,দারেমী, বায়হাকী,ইবনে হিব্বান,মুসনাদে আহমাদ,দারে কুতনী, আত তারগীব ওয়াত তারহীব,শারহুস সুন্নাহ,ইবনে খুজায়মা। আহকাম ও মাসায়েল জানার জন্য হাদীস সংগ্রহের বইগুলো যেমন মিশকাত ও পড়া উত্তম। কেননা এসব হাদীস গ্রন্থে বিষয় ভিত্তিক হাদীস লিপিবদ্ধ করা আছে। হাদীস পড়ার অন্যান্য নিয়ম এর পরের লেখায় থাকবে ইনশাআল্লাহ। ০৪.ইসলাম বিষয়ের পত্রিকা পড়া-যেমন আত-তাহরীক, মাসিক আল-কাউসার, মাসিক জিজ্ঞাসা, মাসিক মদীনা পড়া।

শুধুমাত্র একটি পত্রিকা না পড়ে কয়েকটি পত্রিকা পড়া উচিত। আর বিভিন্ন বিষয়ের মতভেদগুলো প্রমাণ সহকারে যাচাই করা উচিত। কখনই এমন করা উচিত না যে অমুক পত্রিকা ওদের এটা তাদের তাই পড়া যাবে না। তা না করে আপনাকে পড়ার পড়ে মত পেতে হবে যে তা পড়া যাবে কি না। পত্রিকার বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে প্রমাণ ভিত্তিক বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দেয়া ও তা যাচাই করে সিদ্ধান্তে আসা।

০৫. ইসলাম বিষয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ইসলাম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা। ০৬.ইসলাম বিষয়ে ব্লগের লেখা ও মতামত গুলো পড়া । ০৭. ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও তার যুক্তিপূর্ণ জবাব গুলো পড়া। ০৮.ইসলাম সম্পর্কে অজানা প্রশ্নের উত্তর জানা জন্য প্রশ্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রেরণ করা। এবং এটা প্রশ্নে নিশ্চিত করা যে প্রশ্নের জবাব গুলো কুরআন ও হাদীস থেকে দেয়া ।

কারও ব্যক্তিগত মতামত ও কোন দলের বা মতের জবাব না চেয়ে কুরআন ও সুন্নাহর দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাওয়া। উত্তরে কোন মহান ব্যক্তির মতামত বা কোন মতের উপর উত্তর দিলে না গ্রহণ না করা। ০৯.প্রশ্নের উত্তরে কুরআনের আয়াত ও সুরার নম্বর, হাদীসের নম্বর ও কোন প্রকাশনীর প্রকাশিত তা জানতে চাওয়া। ১০. বাস্তব জীবনে আমল করার জন্য আমরা খুবই দ্বিধায় ভুগি কারন আমর নামায রোজা যাকাত, হাজ্জ প্রভৃতির ক্ষেত্রে আমরা অনেক মতভেদ দেখতে পাই। এই মতভেদ দূর করতে প্রথমেই আপনি মনে করা শুরু করুন যে আমি সঠিক পথকে বেছে নিতে কোন আপোষ করব না, আমার বাপদাদা, সমাজ কি করছে তা যদি ভুল হয় বা জানা বিষয়টা অধিকতর উত্তম হয় তাহলে আমি যেকোন মূল্যে আমি সেই পথকেই ধরব যা সঠিক।

আমি অভ্যাস বা সমাজের প্রচলিত নিয়মকে অধিকতর গুরুত্ব না দিয়ে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথ ধরব। ১১.কোন ব্যক্তির অন্ধ অনুকরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সে যত বড়ই হোক না কেন, সে নাবী (সা ও সাহাবীদের থেকে উত্তম হতে পারে না। যেমন আপনি একটি বিষয় জানতে পারলেন যে তা সঠিক না, কিন্ত আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে একজন বড় আলেম তা আমল করছেন । তখন আপনি মনে করলেন যে উনি তো আমার চেয়ে বেশী জানেন, তাই তারটা বোধহয় সঠিক।

এমনটা ভাবার নয়,পৃথিবীতে কেউ পরম (Absolute) নয় নাবী রাসূলগণ ছাড়া। তাই এ ব্যাপারটা তার সাথে আলোচনা করুন। ১২.নামাযের সঠিক নিয়ম জানতে কুরআনে নামায বিষয়ক আয়াত গুলো বেশী পড়ুন। তারপর বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ পড়া। তাছাড়া মিশকাত শরীফের নামায বিষয়ক খন্ডটা পড়া।

সেই অনুযায়ী আমল করা, যদিও তা সমাজের,মতের, অভ্যাসের বিপরীত হয়। এভাবে অন্যান্য বিষয়গুলো পড়া। ১৩. বাজারের বিভিন্ন ছোট ছোট বই না পড়ে নামায রোযা ও দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন বিষয়ের উপর জানতে কুরআন ও হাদীস পড়া উত্তম। জেনে রাখা ভাল গাইড বই (বাজারের বই) থেকে বোর্ড বই (কুরআন ও হাদীস) উত্তম। ১৪.জানা বিষয়ের উপর আমল করা ও সন্দেহপূর্ণ বিষয় বা্ ইবাদত পরিহার করা।

১৫.অজানাকে জানার প্রাণান্তর চেষ্টা করা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.