আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসুন জেনে নিই ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ম্যানেজারদের অজানা কথা দ্বিতীয় কিস্তি।। [ স্যাম আলাডাইস (সাবেক ব্লাকবার্ন), স্টিভ ব্রুস (উইগন)]

নিজের ছাঁয়ার কাছ থেকে পালিয়ে থাকার প্রানান্তকর প্রচেষ্টায় আছি।

প্রথম কিস্তি তে ওয়েস্ট হ্যাম কোচ আভ্রাহাম গ্রান্ট ও স্টোক সিটির টনি পুলিস কে নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিলো। । আজ থাকছে স্যাম আলাডাইস (সাবেক ব্লাকবার্ন), স্টিভ ব্রুস (উইগন)। ।

প্রথম কিস্তি পাবেন এখানে। । স্যাম আলাডাইস (ব্লাকবার্ন রোভার্স,১৩ ডিসেম্বর ২০১০ পর্জন্ত) স্যামুয়েল আলাডাইস ১৯৫৪ সালে ইংল্যান্ডে জন্ম গ্রহন করেন। । স্যাম আলাডাইস তার জন্ম স্থান ডাডলী তে বড় হন।

। সেখানে তিনি প্রাথমিক অ মাধ্যমীক শিক্ষা শেষ করে বোল্টন ওয়ান্ডারার্স দলে রক্ষনভাগের খেলোয়াড় হিসাবে যোগ দেন ১৯৭৩ সালে। । ৭৭-৭৮ মওসুমে বোল্টন দ্বিতীয় বিভাগ থেকে প্রথম বিভাগে উন্নীতো হয় তখন তিনি তাদের হয়ে অসাধারন পারফর্মেন্স করেন। ।

১৯৮০ সালে তিনি সান্ডারল্যান্ডের হয়ে খেলেন। । এরপর তিনি কিছু ছোটো দলের হয়ে খেলে তার খেলোয়াড়ী জীবনের ইতি টানেন। । ১৯৮৯ এর ফেব্রুয়ারী তে স্যাম ওয়েস্ট ব্রমউইচ আলবিয়নের ততকালীন ম্যানেজার ব্রায়ন ট্যাবলটের সহকারী ম্যানেজার কাম খেলোয়াড় হিসাবে যোগ দেন।

। তাদের হয়ে তিনি মাত্র একটি ম্যাচে পরিবর্তিতো খেলোয়াড় হিসাবে মাঠে নামেন। । ৯১ এ ওয়েস্টব্রম রেলিগেটেড হয়ে তৃতীয় বিভাগে নেমে গেলে তিনি স্কটিস দল লিমারিকে যোগ দেন। ।

সেখানে এক বছর থেকে লিমারিককে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ন করে তিনি ইংল্যান্ডে প্রত্যাবর্তন করেন প্রিস্টন নর্থ ইন্ডের সহকারী ম্যানেজার হিসাবে। । ১৯৯৫ এ ব্লাকপুল ১৯৯৭ এ নটস কাউন্টির দায়িত্ব পালন করে তিনি ১৯৯৯ এ যোগ দেন বোল্টন ওয়ান্ডারার্সে। । ১৯৯৯-২০০০ মওসুমে বোল্টনকে নিয়ে তিনি প্লে-অফে জায়গা করে নেন,কিন্তু ইপসুইচ টাউনের কাছে হেরে যান।

। ২০০০-০১ মওসুনে বোল্টন প্লে-অফের ফাইনালে ওঠে এবং প্রিস্টন নর্থ ইন্ড কে হারিয়ে ৩ বছর পর প্রিমিয়ারলীগে খেলার যোগ্যতা লাভ করে। । ০১-০২ ও ০২-০৩ মওসুমে তারা লীগ টেবিলের শেষ অর্ধেকে থাকার পর ০৩-০৪ মওসুমে তারা ৮ম স্থান অধীকার করে। ।

২০০৬ এ বোল্টন ষষ্ঠ স্থন পায় এবং ক্লাবের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো উয়েফা কাপে খেলার যোগ্যতা লাভ করে। । ২০০৭ তে লীগে ৭ম স্থান দখল করে আবারো উয়েফা কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বোল্টন। । এ সময় স্যাম আলাডাইস বোল্টন ছেড়ে ঐতিহ্যবাহী দল নিউক্যাসেলে যোগ দেন।

। ২০০৮ এর জানুয়ারী তে নিউক্যাসেলের ক্রমাগত বাজে ফলাফলের দায় ভার নিয়ে তিনি তাদের ম্যানেজার পদ থেকে অব্যাহতী নেন। । ২০০৯ এর ডিসেম্বর থেকে তিনি ব্লাকবার্ন রোভার্সের দায়িত্ব নেন। ।

তাদের বর্তমান ভারতীয় মালিকের সাথে মতোবিরোধ দেখা দিলে তাকে ১৩ই ডিসেম্বর ২০১০ তে বরখাস্ত করা হয়। । বর্তমানে লীগ টেবিলে তলানীতে থাকা ওয়েস্টহ্যাম তাদের কোচ আভ্রহাম গ্রান্টকে অব্যাহতী দিয়ে স্যাম আলাডাইস কে তার স্থলে নিযুক্ত করতে পারে বলে ফুটবল মিডিয়াগুলোতে গুজব শোনা যাচ্ছে। । স্যাম আলাডাইসের সমস্যাক্রান্ত প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দলে টানার এক দারুন যোগ্যতা ছিলো।

। অন্য দলে ভালো খেলতে পারছেনা,কিন্তু সম্ভাবনা আছে তেমন খেলোয়াড়দের তিনি সুযোগ দিতেন। । আল হাজী দিউফ,ইউরী জার্কাইভ, ফার্নান্দো হাইরো তার উতকৃষ্ট প্রমান। ।

২০১০ সালে ইউনিভার্সিটি অফ বোল্টন তাকে ডক্টর অফ সায়েন্স ডিগ্রী প্রদান করে। । ২০০৬ সালে তার নামে একটি ঘুষ কেকেঙ্কারীর অভিযোগ ওঠে,যাতে বলা হয় তিনি তার ছেলে ক্রেগ এর হাতে অন্য কয়েকজন খেলোয়াড় কে দলে ভিড়ানোর সময় তাদের এজেন্টের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন। । যদিও স্যাম আলাডাইস সব সময় এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।

। স্টিভ কিন (ব্লাকবার্ন রোভার্স, অন্তঃরবর্তীকালিন কোচ) স্টিভ কিন একজন স্কটিস ফুটবল কোচ এবং একজন অবসর প্রাপ্ত ফুটবল খেলোয়াড়। । স্টিভ কিন বর্তমানে ব্লাকবার্ন রোভের্সের খন্ডকালীন কোচের দায়িত্বে আছেন। ।

গত ১৩ ডিসেম্বর রোভার্সের ভারতীয় মালিক বিগ স্যাম কে বরখাস্ত করে কিন কে ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজারের দায়িত্ব প্রদান করেন। । সাবেক আর্জেন্টাইন কোচ ও কিংব্দন্তী খেলোয়াড় ডিয়াগো মারাডোনাকে রোভার্সের নতুন মালিক কোচ হিসাবে পেতে চায়। । কোচ হিসাবে না পেলেও তাকে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসাবে নিয়োগ দিতে আগ্রহী তারা।

। স্টিভ ব্রুস (সান্ডারল্যান্ড) পুরো নাম স্টিভেন রজার ব্রুস, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৬০ এ ইংল্যান্ডে জন্ম গ্রহন করেন। । খুব ছোটো বেলা থেকে ফুটবল খেলে আসা ব্রুস একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড় ছিলেন,কিন্তু কোনো ভালো ফুটবল দল তাকে প্রথমে কোনো প্রকার সুযোগই দেয়নি। ।

খেলা পাগল স্টিভ ব্রুস যখন কোন দলে নিজের জায়গা খুজে পেলেননা,তিনি খেলাধুলা ছেড়ে অন্য কাজ করার কথা চিন্তা করেন। । ঠিক এই সময়ে তখনকার ইংলিশ ফুটবলের তৃতীয় বিভাগের (বর্তমান এন পাওয়ার চ্যাম্পিয়নশীপ লীগ-২) দল জিলিঙ্গহ্যাম তাকে কয়েক দিনের জন্য ট্রায়েলের জন্য ডাক দেয়। । তিনি নিজের যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে জিলিংহ্যাম এর প্রথম একাদশে জায়গা করে নেন।

। ১৯৭৯ থেকে ৮৪ পর্জন্ত জিলিংহ্যামে খেলে তিনি যোগ দেন নরউইচ সিটি দলে। । নরউইচ দলের হয়ে তার অভিষেক ম্যাচের প্রথম মিনিটেই তিনি একটি আত্মঘাতী গোল করেন। ।

সেখানে তিনি তিনটি সফল মওসুম পার করে নজর কাড়েন তখন শিরোপা খরায় ধুকতে থাকা ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের। । ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে ১৯৮৭তে যোগ দিয়ে তিনি তার খেলোয়াড়ী জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন। । ১৯৯০-৯১ মওসুমে তিনি মোট ১৯ টি গোল করেন।

। তারসাথে মার্ক হিউজের পার্টনারশীপ ৯০ এর দশকে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সবথেকে সফল পার্টনারশীপ। । ৯২-৯৩ মওসুমে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড যখন লীগ শিরোপা জেতে (১৯৬৭ এর পর প্রথম) তখন তিনি বেশিরভাগ ম্যাচেই অধিনায়কত্ত করেন। ।

স্টিভ ব্রুস প্রথম ইংলিশ ফুটবলার যিনি বিংশ শতকে ক্যাপ্টেন হিসাবে ডাবল শিরোপা (প্রিমিয়ার লীগ ও ইংলিশ এফ.এ. কাপ) জয় করেন (১৯৯৩-৯৪ মওসুমে)। । খেলোয়াড় থাকাকালীন সময়েই তিনি অনেক ক্লাবের কাছ থেকে ম্যানেজার হবার আমন্ত্রন পান,যদিও স্যার এলেক্স ফার্গুসন তাকে নিজের দলে খেলোয়াড় হিসাবেই রেখে দেন। । ১৯৯৬ সালে তিনি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে ফ্রি ট্রান্সফার ফি তে বার্মিংহামে যোগ দেন দুই বছরের জন্য,২ বছরে তার বেতন ছিলো তখনকার সময়ের ২ মিলিয়ন পাউন্ড।

। পরবর্তীতে শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে কিছুদিন খেলেন ও ১৯৯৯ এ অবসর নেন। । ক্যারিয়ারে তার ৯২৬ ম্যাচের বিপক্ষে মোট গোল সংক্ষা ১১৩ টি। ।

স্টিভ ব্রুস ৮০ ও ৯০ এর দশকে ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হলেও তিনি কখনো ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি। । তার মায়েরজন্ম সুত্রে তিনি নরদার্ন আয়ারল্যান্ডের নাগরিক ছিলেন,তাই তিনি আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলার ডাক পান,যদিও তিনি তাতে সাড়া দেননি। । ম্যানেজার হিসাবে তিনি যাত্রা শুরু করেন শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে ১৯৯৮ তে।

। সেই মওসুমে ইউনাইটেড লীগে ৮ম স্থান অর্জন করে। । এর পরে উইগন এথলেটিক,কুইন্স পার্ক রেনজের্স, ক্রিস্টাল প্যালেসে ম্যানেজার হিসাবে কাজ করেন। ।

২০০১ এ যোগ দেন বার্মিংহ্যামে। । সেখানে ২০০৭ পর্জন্ত থেকে তিনি আবার আসেন উইগন এথলেটিকে। । ৩ জুন ২০০৯ থেকে তিনি বর্তমান দল সান্ডারল্যান্ডের দায়িত্বে আছেন।

। খেলোয়াড় হিসাবে তিনি নরউইচ সিটির হয়ে একবার লীগ-২ শিরোপা,একবার লীগ কাপ জেতেন। । ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে তিনি ৩টি প্রিমিয়ার লীগ,৩ টি এফ.এ. কাপ, একটি লীগ কাপ, চ্যারিটি শিল্ড ৩ বার,উয়েফা কাপ উইনার্স কাপ ১ বার ও উয়েফা সুপারকাপ ১ বার জয় করেন। ।

“প্রিমিয়ারলীগ ডমেস্টিক টিম অফ দ্যা ডেকেড” ১৯৯০-১৯৯৯ এর একজন সদস্য ছিলেন তিনি। । তিনি আত্মজিবনী মুলোক বই “হেডিং ফর ভিক্টোরী” লেখেন । । Sweeper, Defender , Striker নামের তিনটি বই ও লিখেন স্টিভ ব্রুস।

। প্রথম কিস্তি পাবেন এখানে। । দুইজন করে লিখতে গিয়ে লিখাটা অনেক বড় হয়ে গেলো। ।

এর পর থেকে একজন করে লিখবো। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.