আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাশ্মিরে বন্দিদের নির্যাতন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা: উইকিলিকস

আমি আমার মতো

ভারত শাসিত কাশ্মিরের কারাগারে আটক বন্দিদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর লোমহর্ষক নির্যাতনের বিষয়টি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। বিষয়টি রেডক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি মার্কিন দূতদের অবহিতও করেছিল। সূত্র: আল-জাজিরা অনলাইন। বৃহস্পতিবার সাড়া জাগানো ওয়েবসাইট সংবাদমাধ্যম উইকিলিকস প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের গোপন কূটনৈতিক তারবার্তায় বিষয়টি ওঠে আসে। প্রকাশিত নতুন তারবার্তায় বলা হয়, ভারত শাসিত কাশ্মিরে কারাগারে আটক বন্দিদের নিয়মিত নির্যাতন করা হয়।

২০০৫ সালে রেডক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি (আইসিআরসি) বিষয়টি মার্কিন কূটনৈতিকদের অবহিত করে। ২০০৫ সালের ৬ এপ্রিলের ‘ভারত সরকারের কর্মকাণ্ডে হতাশ আইসিআরসি’ শীর্ষক একটি স্মারক এবং পরবর্তীতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আইসিআরসি ‘ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক বন্দিদের নির্যাতনের কৌশল এবং এর অব্যাহত প্রবণতার’ বিষয়টি কূটনৈতিকদের জানান। ২০০২-২০০৪ সাল পর্যন্ত এক হাজার ৪৯১ জন বন্দির সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। আইসিআরসি’র উদ্ধৃতি দিয়ে প্রকাশিত তারবার্তায় বলা হয়, সংস্থাটির কর্মকর্তারা জম্মু-কাশ্মিরের ডিটেনশন সেন্টারগুলো ১৭৭ বার পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা এক হাজার ২৯৬ জন বন্দির একান্ত সাক্ষাৎকার নেন।

তবে কর্মকর্তাদের সব বন্দির সঙ্গে কথা বলতে দেয়নি কর্তৃপক্ষ। নির্যাতনের কৌশল হিসাবে বৈদ্যুতিক শক, যৌন নিপীড়ন এবং পানি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া প্রায় তিনশ’ বন্দিকে বিশেষ কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাংশপেশি নষ্ট করে দিতে বন্দিদের বসিয়ে তাদের উরুর ওপর গোলাকার ধাতব খণ্ড রেখে রক্ষীদের দিয়ে শক্তি প্রয়োগ করা হত। অবশ্য নির্যাতনের প্রকাশিত এ চিত্র হৃদয়স্পর্শী হলেও এ অভিযোগ নতুন নয়।

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো গত বেশ কয়েক বছর ধরে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ করে আসছে। ধারণা করা হচ্ছে, উইকিলিকস প্রকাশিত এ তারবার্তার ফলে কাশ্মিরে নতুন করে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সম্প্রতি উত্তেজনা দেখা দিলে কাশ্মিরের বেশ কয়েকটি এলাকায় নতুন করে কারফিউ জারি করা হয়। প্রসঙ্গত, গত ১১ জুন পুলিশের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী এক ছাত্র নিহত হলে কাশ্মিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী তিন মাসের অব্যাহত প্রতিবাদ বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে আরো শতাধিক নিহত হয়।

নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ওই কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এরপর থেকে কাশ্মিরের জনগণ সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চালিয়ে আসছে। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে সরকার কয়েক দফা কারফিউ জারি করে। উল্লেখ্য, বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানে ভারত মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মির দখলে নেয়। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণ এ দখলদারিত্ব মেনে নিতে পারেনি। ১৯৮০ সালে কাশ্মিরের জনগণ স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে।

এরপর ভারতীয় বাহিনীর নৃশংসতায় ৭০ হাজার কাশ্মিরী নিহত হয়। নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক জনগণ। কাশ্মীর

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।