আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আর্মি স্টেডিয়ামের হরর শো, শাহরুখের অনবদ্য 'উপস্থাপনা' এবং মিলার জন্য শিক্ষা

I realized it doesn't really matter whether I exist or not.

প্রথম প্রকাশ ১. ঈদের পরপর এনটিভিতে রাতে একটি লাইভ প্রোগ্রামে দেশের উদীয়মান (নাকি উদিত?) গানস্টারদের জড়ো করা হয়। চ্যানেল ঘোরাতে গিয়ে হঠাৎ চোখে পড়ার পর মনে হলো এই অনুষ্ঠানটা ভালো হবে। কারণ, জনপ্রিয় সব মুখগুলো এক মঞ্চে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর বোঝা গেল ফালতু একটা প্রোগ্রাম ছিল সেটা। অনুষ্ঠান চলাকালীন কেউ একজন ফোন করে ফুয়াদের সাথে কথা বলতে চান।

তিনি ফুয়াদকে বলেন, ভাই আপনি অনেক মোটা হয়ে গেছেন, কিন্তু আপনার কণ্ঠ শুনে বোঝা যায় না সেটা। কথাটার উত্তর হাসি দিয়েই দিয়েছেন ফুয়াদ। তিনি বলেছেন, ভাই আপনার কী? আমি কথাটাকে হাস্যরসাত্মক হিসেবেই ধরে নিয়েছি। কিন্তু মেজাজটা বিগড়ালো যখন মিলা পণ্ডিতি করলো। আউট অফ দ্য ব্লু, মিলা মাইক নিয়ে বলতে শুরু করল, বাংলাদেশের মানুষের কার্টেসির অভাব আছে।

সত্যি কথা বলতে গেলে, যখন লোকটা ফোন করে ফুয়াদকে বলছিল তার শরীরের কথা, তখন আমার কাছেও বেখাপ্পা মনে হয়েছে। কিন্তু ফুয়াদ বেশ ভালোভাবেই সেটা হ্যান্ডল করেছে। পরে যখন মিলা এভাবে বলল যে বাংলাদেশের মানুষের কার্টেসির অভাব আছে, সেটা বেশ গায়ে লাগলো। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের জন্যই মিলা আজকে মিলা। এই মানুষদের ভালোবাসায়ই মিলা আজ মিলা।

অথচ সেই মানুষগুলোকে কার্টেসির অভাব আছে বলতে মিলার একটুও বাধলো না। আমার তখন ইচ্ছে করছিল মিলাকে ফোন করে বলি, আপনি যে লাইভ অনুষ্ঠানে শর্ট পড়ে এসেছেন সেটাও বাংলাদেশের কার্টেসির বাইরে। কিন্তু বরাবরই মিলাকে অপছন্দ করি তাই তার সাথে কথা বলার রুচি হলো না। ২. বাংলাদেশে ক্লোজ-আপ ওয়ান, লাক্স চ্যানেল আই সুপার-স্টার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ইত্যাদি প্রোগ্রামে দেখেছি অসাধারণ সব স্টেজ তৈরি করতে। কিন্তু প্রথমবারের মতো শাহরুখ খানের মতো জনপ্রিয় সুপারস্টার বাংলাদেশে আসলো অথচ স্টেজ করলো ব্যাকস্টেজের চেয়েও খারাপ।

উপস্থাপনায় যাদের দিয়েছে তারা আগে কখনো উপস্থাপনা করেছে কি না আমার জানা নেই। আর বৈশাখী টিভির কথা বাদ দিলাম। ঐটা ডেসটিনির মাল। শাহরুখ খান তার নিজস্ব ট্যালেন্টেই অনুষ্ঠানটাকে 'লিস্ট এনজয়েবল' করেছেন। কিন্তু সমস্যা বাধায় গাজী মো. ইলিয়াস।

সে আর যাই হোক, শাহরুখ খানের সঙ্গে স্টেজে যে ব্যবহার করেছে তা সমীচীন নয়। অন্তত ভদ্রতার খাতিরেও "আমি হিন্দি বলি না হিন্দি পছন্দও করি না" এভাবে বলা ঠিক নয় বলে মনে করি আমি। কিন্তু গাজী মো. ইলিয়াসকে নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছে নেই আমার। আমি লিখবো শাহরুখকে নিয়ে। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন অপ্রীতিকর আচরণ করার পরও শাহরুখ কিন্তু রুঢ় কিছু বলেননি।

এমনকি লোকজন যখন ইলিয়াসকে স্টেজ থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল তখনও শাহরুখ বলছিল, 'রেহনে দো'। হয়তো মনে মনে শাহরুখও চাচ্ছিল সে চলে যাক, কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে সে মুখে এটা বলেছে। আমার ধারণা আপনি থাকলে আপনিও তাই করতেন। শিক্ষা মিলাকে লাইভ অনুষ্ঠানে পেলে হয়তো ফোন করে বলা যেত যে এই ঘটনায় তার জন্য শিক্ষণীয় অনেক বড় কিছু আছে। একে শাহরুখের মতো বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় স্টারের সামনে এসে লোকটা এমন অসৌজন্যমূলক আচরণ করার পরও শাহরুখ তার ভদ্রতা ছেড়ে ইলিয়াসের সঙ্গে বাজে কোনো আচরণ করেননি।

আর মিলা এমনভাবে 'কার্টেসির অভাব আছে' বলল, অথচ কথাটা প্রথমত তাকে বলা হয়নি, দ্বিতীয়ত কথাটা তার মুখে সাজেওনি। পার্শ্ববর্তী দেশের সংস্কৃতি থেকেও আমাদের দেশের তথাকথিত স্টারদের শেখার অনেক কিছু আছে, এটা তারই প্রমাণ স্বরূপ বলা যায়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.