আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টিভিতে নয়া প্রতিবেদন: ‘পল্লীফোনের নারীরা উধাও’



‘গ্রামীণফোনের উপকারভোগী নারীরা আর নেই। কথিত ৫০ হাজার গ্রামেও একটি পল্লীফোনের দেখা মেলেনি। ’--এই মর্মে নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এনআরকে এবার আরো একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এছাড়া নরওয়ের প্রতিষ্ঠান ‘টেলিনর’ বাংলাদেশ থেকে কীভাবে ‘অলাভজনক প্রতিষ্ঠান’ গ্রামীণ টেলিকমের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করছে তারও একটি বিবরণ দেওয়া হয়েছে। গত ১ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় প্রতিবেদনটি প্রচার ও ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হয়।

এবারের প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন টেলিভিশনটির প্রতিবেদক হারাল্ড এরাকার (Harald Eraker)। শান্তিতে নোবেল পদক গ্রহণের সময় দেওয়া নোবেল-বক্তৃতায় ড. ইউনূস অসত্য তথ্য দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করে প্রতিবেদনে যুক্তি-তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবেদক হারাল্ড এরাকার বাংলাদেশে ২ বছর ঘুরেও সরাসরি পল্লীফোন-এর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত একজন নারীরও দেখা পাননি। অথচ ড. ইউনূস তার নোবেল বক্তৃতায় বলেছিলেন, ৩ লাখ নারী গ্রামীণফোনের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন করেছেন। গ্রামীণফোনের একজন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘৩ লাখ ৮১ হাজার পল্লী সিম বিক্রি হয়েছে।

তার মানে এই নয় যে, সিমগুলো গ্রামীণ নারীরা ব্যবহার করছেন। ’ প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকমের কার্যক্রমকে ড. ইউনূস ‘অলাভজনক’ বলে নোবেল বক্তৃতায় উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু গত ৮ বছরে গ্রামীণফোন ও টেলিনর যৌথভাবে ৮৫৫ মিলিয়ন বা ৮৫ কোটি ৫০লাখ নরওয়েজিয়ান ক্রোনার (প্রায় ১ হাজার ১৮ কোটি টাকা) লভ্যাংশ পেয়েছে। প্রতিবেদনে প্রশ্ন করা হয়, ‘এটা অলাভজনক হলে এতো টাকা আয় হলো কীভাবে?’ প্রকৃত অর্থে এটা একটা স্রেফ একটি লাভজনক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। বাণিজ্যিক ফাঁদ হিসেবে প্রথমত গ্রামীণ নারীদের পল্লীফোন কেনার জন্য একবার ঋণ দেয় গ্রামীণব্যাংক।

ওই টাকা কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য। অথচ ফোন-সেট চার্জ করার মতো সব গ্রামে বিদ্যুৎ নেই বাংলাদেশে। সুতরাং পরবর্তী পর্যায়ে গ্রামীণ ব্যাংক আবারও ঋণ দেয় তাদেরই আরেকটি প্রতিষ্ঠান গ্রামীনশক্তি থেকে সোলার প্যানেল কেনার জন্য। প্রতিবেদনে গ্রামীণ টেলিকমের একজন কর্মকর্তা মাজহারুল হান্নানের লেখা একটি বইয়ের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়। যেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘গ্রামীণ নারীদের জন্য গৃহীত পল্লীফোন প্রকল্পটি মৃত নয়, তবে এটি দারিদ্র বিমোচনের কোনো কার্যকর পন্থা হতে পারে না।

’ লন্ডনের ওভারসিস ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট-এর গবেষক মিলফোর্ড বেইটম্যান এনআরকে টেলিভিশনকে বলেছেন, গরীব নারীরা আরো গরীব হচ্ছেন টেলিফোন ব্যবসার মাধ্যমে। প্রতিবেদনে এ ব্যবসার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কর ফাঁকি দেওয়ার বিষয়েও অভিযোগ করা হয়েছে। প্রতিবেদক দাবি করেন, ভিওআইপি’র মাধ্যমে হাজার হাজার কল টার্মিনেট করে কোটি কোটি টাকার ট্যাক্স ফাঁকি ধরা পড়ে ২০০৭ সালে। সেসময় গ্রামীণফোনকে ২৪.৫ মিলিয়ন ডলার (১৭১ কোটি ৫০ লাখ টাকা) জরিমানা গুনতে হয়। ২০০৮ সালে আবার একই কারণে ৩৭ মিলিয়ন ডলার (২৫৯ কোটি টাকা) জরিমানা দেয় গ্রামীণফোন।

এ প্রতিবেদনটির আগে গত ৩০ নভেম্বর ‘ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদে’ শিরোনামে নরওয়ে রাষ্ট্রীয় সংস্থা এনআরকে গ্রামীণব্যাংক ও ড. ইউনূসের ওপর নির্মিত ৪৯ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডের একটি তথ্যচিত্র প্রচার করে। ডেনমার্কের সাংবাদিক টম হাইনেমান তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেন। মূল

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.