আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারি চাকুরিতে নিয়োগ শিথিল হলে কি কি হতে পারে?

থেমে যাবো বলে তো পথ চলা শুরু করিনি।

সরকারি চাকুরিতে নিয়োগের জনা আর সংস্থাপন মন্ত্রনালয়ের পূর্বানুমতি আর লাগবে না বলে একটি খবর বেরিয়েছে। এই ‘না-লাগার’ কারনে শূণ্য পড়ে থাকা প্রায় দেড় লাখের মত চাকুরীতে অতি সত্ত্বর নিয়োগ দেয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু খবরে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে নিম্নশ্রেণীর পদ, নির্দিষ্ট করে বললে, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে ব্যাপক অনিয়ম হবে তা বলাই বাহুল্য। এর আগে ২০০৫ সালে একবার সাতাশি হাজার পদে দ্রুত নিয়োগের জন্য সংস্থাপন মন্ত্রনালয়ের পূর্বানুমতি নেবার বিধান স্থগিত করা হয়েছিল।

ফলাফল ছিল খুবই খারাপ। ফলে সরকারকে সেই পূর্বানুমতি নেবার বিধান ফিরিয়ে আনতে হয়। এর প্রথান কারন হচ্ছে ঐ সব পদে নিয়োগের জন্য কোন নির্দিষ্ট নিয়োগ বিধি নেই। ফলে আশংকা করা হচ্ছে, নিম্ন-শ্রেণীর পদ্গুলোতে নিয়োগের জন্য এইবারে ক্ষমতাশালীরা, মন্ত্রী-সংসদ সদস্যগণ, আওয়ামী লীগের নেতারা আর এদের সাথে আঠার মত লেগে থাকা কর্মীরা আগামী কয়েক বছরের খোরাক জোগাড়ের চেষ্টা করে যাবেন। এই প্রসঙ্গে ২৯ নভেম্বর তারিখের প্রথম আলো-র ‘সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মের চাষ’ শীর্ষক একটি রিপোর্টের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

কাকতালীয় ভাবে সংস্থাপন মন্ত্রনালয়ের পূর্বানুমতি উঠে যাবার খবরের সাথে বাংলাদেশের একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক অনিয়মের মধ্যে হয়ে যাওয়া নিয়োগ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে সরকারের কোন পদে নিয়োগের জন্য নির্দিষ্ট কোন নিয়োগের নীতিমালাই নেই, সেখানে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নির্দিষ্ট নীতিমালা আছে, যার ভিত্তিতে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। সেইসব স্বীকৃত নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিসান কর্তৃক অনুমোদিত এবং নিয়ন্ত্রিত। কেননা, কোন পদে কতজন লোকের নিয়োগ হলে কি বাজেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পেতে পারে, তার হিসাব বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিসান করে সরকারের কাছ থেকে অর্থ বরাদ্দ এনে থাকে। ফলে নিয়োগের ব্যাপারে নাক না গলালেও কটি নিয়োগ হয়েছে, সে ব্যাপারে আপনা আপনি ভাবে শিক্ষা মন্ত্রনালয় আর অর্থ মন্ত্রনালয়ের সংশ্লীষ্টতা চলে আসে।

দেখা যাচ্ছে, সিলেটের ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে এতো অধিক সংখ্যক নিয়োগ হয়েছে যে তা বলার না। এমন কি নিয়োগের সাথে জড়িত এক ব্যাক্তি প্রচ্ছন্নভাবে বলতে ভোলেন নাই যে, তিনি ক্ষমতাসীনদের অনুসারীদের সংখ্যা লঘিষ্ঠতা বরঞ্চ বাড়িয়ে সংখ্যা গরিষ্ঠতা করে দিয়েছেন। দলবাজির এমন উদাহরন যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক করে থাকতে পারেন, তা হলে তো চিন্তা হয় যে দ্বি-দলে বিভক্ত প্রশাসনে “মুক্ত-নিয়োগ” বিধি চালু হলে কি হবে। মনে করতে চাই না যদিও, তারপরেও মনে চলে আসে পাবনার ঘটনা। এই মাত্র কয়েকমাস আগেই তি যে তুলকালাম হয়ে গেল এ নিয়ে সারা দেশে।

এইটা যে খালি আওয়ামী লীগের নেতারা করছেন, তা নয়। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলেও একই ঘটনা ঘটবে বলে ধারণা করা যায়। তাই আমাদের প্রতিটি সুযোগের ব্যবহার করে দেশের জন্য পজেটিভ কিছু করা উচিত। তৃতীয় অ চতুর্থ শ্রেণীর পদ্গুলিকে যদি আউট-সোর্স করা যায়, ইয়া হলে ভাল হয়। সরকার ল্ভাবান হবে এই ভাবে যে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে নিজের ইনভল্ভমেন্ট ছাড়াই কাজটি করিয়ে নিতে পারবে।

যিনি ঠিকাদার হিসাবে আসুন না কেন, তাঁর কাজ মান সম্মত না হলে তা&কে বিদায় করে সেখানে অন্য কাউকে কাজ দেবার সুযোগ থাকবে। তবে আমাদের দেশে যে দল সরকারে থাকবে, তার অনুসারীরা কাজ পেলেই এই সিস্টেম কাজ করছে বলে ধরে নিতে হবে। আর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী পদের নিয়োগের জন্য নূন্যতম প্রথম শ্রেণী প্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দিয়ে নিয়োগের বিধিমালা করা উচিত। বিশেষ করে প্রথম শ্রেণীতে নিয়োগের জন্য প্রথম শ্রেণী থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। যারা ভাল লেখা পড়া করল, এতে করে তাদের মেধার একটা স্বীকৃতি দেওয়া যেতে পারে।

সবাই তো আর বিশ্ববিদ্যালয় বা বিসিএস-এর মত মর্যাদাপূর্ণ কাজে যোগেদান করতে পারবেন না, কিন্তু মেধার স্বীকৃতি মিললে তারা অন্তত সরকারের প্রথম শ্রেণীর কাজগুলোতে যোগ দিতে আগ্রহী হবেন। এ ছাড়া সরকারের অনেক স্থানে উচ্চপদে সরাসরি নিয়োগের ব্যবস্থা থাকা দরকার। এতে করে সরকার তার ক্যাডারদের বাইরে থেকেও ভাল ও যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যকিতদের নিয়োগ করতে পারেন। এতে করে সরকারের ব্যবস্থাপনায় যেমন গতিশীলতা আসবে, তেমনি সরকারের অনেক দৃষ্টিভঙ্গিও আধুনিক হবে। পাশাপাশি শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পদ বিন্যাসের উপরে ভিত্তিকরে বেতন কাঠামো প্রণয়ন করা যায় কিনা, সেটা একটু ভেবে দেখা দরকার।

তা হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে তিনি যে পদেই কাজ করুন না কেন, তাঁর নিম্ন বেতনে কাজ করতে হবে না। ফলে দুর্নীতির প্রকোপ অনেকটাই কমে আসবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.