আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেখিনি ৫২এর ২১ অথবা ৭১এর মার্চ কিন্তু দেখেছি ২০০৯ এর ২৫ ফেব্রুয়ারি

২৫ ফেব্রুয়ারি .........!! স্বাধীনতার পর এ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ঘৃণিত, বর্বরোচিত, কলঙ্কিত দিন। ২০০৯ সালের এইদিনে অদৃশ্য এক মহাশক্তির ইশারায় কিছু বিপদ্গামী বিডিআর সদস্য নির্মমভাবে হত্যা করেছিল ৫৭ জন সেনা অফিসার সহ ৭৪ জনকে। পাকিস্তানীদের সেই হত্যা, লুণ্ঠন আর ধর্ষণের বর্ণনা আজও আমাকে মুক্তিযুদ্ধা হতে অনুপ্রাণিত করে, প্রতিশোধের নেশাই পাগল করে, বেদনায় ভারাক্রান্ত করে, ঘৃণায় অন্ধ করে। কিন্তু বিডিআর বিদ্রোহের সেই নির্মম দৃশ্য ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের কালো রাতের বর্বরতাকে হার মানায়। মানবতা বিরোধী এমন কোন অপরাধ নেই যা ঘটেনি সেদিন।

দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের লাইনে দার করিয়ে পাখির মত গুলি করে হত্যা করেছে, মায়ের জাতি নারীদের ধর্ষণের পর স্তন কেটে নিয়েছে, সবশেষে আগুনে পুড়িয়ে সবাইকে একসাথে গণকবর দিয়েছে। সেদিনের সেই হৃদয় বিদারক দৃশ্য আজও আমাকে তারা করে বেড়াই, পিলখানার হত্যাযজ্ঞ ছিল অনেক বেশি নারকীয়, অনেক বেশি মরমান্তিক। অপরাধী (অথবা নিরীহ) বিডিআর বিদ্রোহীদের এখনও বিচার চলছে। বিভিন্নি মিয়াদে শাস্তিও দেউয়া হচ্ছে তাদের। কিন্তু এটা সত্য যে, এদেশের মানুষ আজও জানে না, পিলখনার নারকীয় সেই হত্যাযজ্ঞের আসল খলনায়ক কারা.....?? কে সেই গডফাদার....?? কেন ঘটিয়ে ছিল সেই হত্যাযজ্ঞ......?? কি ছিল তাদের উদ্দেশ্য–অভিলাষ.....?? কেন র‍্যাব এবং সেনাবাহিনীকে সামরিক অভিযানের অনুমতি দেওয়া হয়নি......?? কিভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাকি দিয়ে হাজার হাজার বিডিআর বিদ্রোহী পিলখানা থেকে পালিয়ে গেল......?? এই সকল প্রশ্নের কোন উত্তর এখনও খুঁজে পাইনি সাধারণ জনগণ।

কিছু কিছু বেদনা আছে, আছে কিছু যন্ত্রণা, যা মানুষ কখনও ভুলতে পারেনা, ভুলেও না। তাকে অহর্নিশ কষাঘাত করে, যাতনা দেই, কাঁতর করে। দাউ দাউ করে আগুণ জ্বালায়। আমার বাবার হত্যা, আমার মায়ের অপমান, আমার কচি বোনটির লাঞ্ছনা কি আমি ভুলতে পারি......?? এ যে রক্তের ঋণ, রক্তেই সুধ দিতে হয়। রক্ত দিয়েছি ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে, ৬৯ এর গনঅভূদ্যানে, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে।

৩০ লক্ষ তাজা প্রান আর ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অবশেষে পেয়াছী স্বাধীনতা । আজকের এই তরুণ প্রজন্ম ৭১ এর বর্বরতা দেখেনি, শুধু বর্ণনা শুনে গড়ে তুলেছে “প্রজন্ম চত্বর”, রাজাকারদের ফাঁসীর দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করেছে বাংলার আকাশ বাতাস, সর্বোপরি স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গোটা জাতী সোচ্চার। আর আমার নতুন প্রজন্মের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে কেউ কি “প্রজন্ম চত্বর” গড়ে তুলবে না......?? স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করবে না রাজ পথ......?? মাত্র ৪ বছরের কাল স্রোতে ভুলে যাবো এ দেশের জাতীয় সম্পদ, শহীদ সেনাদের কে......?? তাদের সন্তানেরা আজও অনেক ছোট, শুধু বাবা-মার আদরকেই মিস করে, প্রতিশোধ কি জিনিস এখনো বুঝে উঠেনি। তারা যেদিন প্রশ্ন করবে, প্রকাশ্য দিবালোকে আপনার চোখের সামনে আমার বাবা-মার হত্যাকারীদের বিচার আজও হয়নি কেন......?? কি জবাব দিবেন সেদিন মেজর জেনারেল শাকিল, কর্নেল গুলজারের ছেলে মেয়াদের কে......?? মনে রাখবেন মাত্র ৪ বছর পর যদি তা না পারেন, ৪০ বছর পর কিন্তু আপনাকেও বিবেকের কাঠগড়ায় দারাতে হবে ফাঁসীর আসামি হয়ে....... আমরা এই দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণার দাবি জানায়। এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত চাই।

“র”, বিএনপি অথাবা ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ যেই হোক না কেন, আমরা সেই খলনায়ক, গদফাদারদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দেখতে চায়। রক্তের ঋণ রক্তে শোধ নিতে চায়............ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।