তুমি জেনেছিলে মানুষে মানুষে হাত ছুঁয়ে বলে বন্ধু; তুমি জেনেছিলে মানুষে মানুষে মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়, হাসি বিনিময় করে চলে যায় উত্তরে দক্ষিণে; তুমি যেই এসে দাঁড়ালে - কেউ চিনলো না, কেউ দেখলো না; সবাই সবার অচেনা।
বাড়ির গলিটা থেকে বেরোতেই একদল ছোকড়া চোখে পড়লো,
সামনের গলির মোড়ে দাড়িয়ে বিড়ি ফুঁকছিল;
সাথে দুটো মেয়েও আছে।
আশেপাশে ভিড়ের কমতি নেই,
সাথে কানে আসছে গাড়িঘোড়ার প্যাঁ-পোঁ আওয়াজ।
তবু সব ছাপিয়ে ওদের কথোপকথন ওদের দিকে নজর ফেরায়।
ওদের ভাষায় ওরা একটা গ্রুপ!
হয়তো তার নাম ডেডলি বয়েজ, হয়তো বা কিলারজ !
হুড কালচারের প্রভাবটা ভালোই শুরু হয়েছে আজকাল,
নিজেদের দখলে এক একটা এলাকা;
ভাবতেই নিজেদের রাজা রাজা মনে হয়...
একটা কবিতায় পড়েছিলাম আগে,
এরকমই গলির মোড়ে দাঁড়ানো ছন্নছাড়াদের কথা।
তবে তারা আনচান করছিলো এক আহত ব্যক্তির শুশ্রুষার সুব্যবস্থায়।
তাদের সাথে এদের মেলানো যাচ্ছে না!
এরা বেয়ারাপনার হুংকার ছাড়ছে ছিনতাই এর জন্য,
এলাকা দখলে মত্ত হয়ে আছে এরা!
ভাবতে ভাবতেই রিক্সায় চেপে বসলাম;
আর জেঁকে ধরলো চারপাশের যান...
শামুকের গতিতে যখন আমি ত্যক্ত-বিরক্ত;
চোখ পড়লো ঠিক কয়েক হাত দূরে রাস্তার পাশে এক ছেলের উপর।
নোংরা জামা, হাতেপায়ে কৈশোরের ছাপ।
আপনমনে হাতের তালুতে সে ব্যস্ত!
আগ্রহ না চেপে জিজ্ঞেস করে ফেললাম,
"কিরে, গাঁজা টানবি?"
ক্লান্ত চোখ দুটো আমার দিকে ফিরিয়ে মাথা নাড়লো;
সোজাসাপ্টা উত্তর,
"হ ভাই। খাইবেন? আহেন, একলগে খাই।
"
স্মিত হাস্যে বিনয়ী প্রত্যাখ্যান আমার।
ছোট ভাইটার বয়সী; বারো কি তেরো।
কিন্তু ভাই না, তাই অন্যদিকে চোখ ফিরিয়ে নেই ভালো কিছু দেখবার আশায়।
মিথ্যা প্রবোধটা সত্য ভাবনাটাকে দমাতে পারে না।
হঠাৎ মনে হয়,
সব মেনে নিতে নিতে হয়তো অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি।
অনেক চাওয়া-পাওয়ার আড়ালে
হয়তো ছোট্ট আমার স্বপ্নের চারাটাও হারাবে একদিন।
মেনেও নিবো,
বাস্তবতার গলিতে দৃপ্ত পদচারণা থাকবে আমার সেদিন!
রিক্সা গতি ফিরে পেতেই সম্বিৎ ফিরলো;
গন্তব্যের দিকে জটবাধা পথে রিক্সাটা ছুটে চললো আবার ...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।