আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে সরকারের দায়মুক্তি আইন



মহাজোট সরকার জনদুর্ভোগ দ্রুত লাঘবের দোহাই দিয়ে সম্পূর্ণ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় এবং দরপত্র ছাড়াই বেশি দামে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতি গ্রহণ করেছে । অস্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যাতে কেউ পরবর্তীকালে মামলা করতে না পারেন, সেই লক্ষ্যে গত ৩ অক্টোবর 'বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০' সংসদে স্রেফ কণ্ঠভোটেই পাস করেছে। এটা যতোটা না দেশের স্বার্থে করেছে, তার চেয়ে বেশি করেছে দুর্নীতি আড়াল করতে। ইতিমধ্যে ২৭টির বেশি রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি হয়েছে। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, এসব রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন খরচ রাষ্ট্রীয় খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সাত গুণ বেশি হবে।

বিদ্যুৎ সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য বিশ্বের কোনো দেশেই এতো বড় মাপের দুর্নীতিকে জাতীয় সংসদকে ব্যবহার করে দায়মুক্তি দেয়নি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, অধিকাংশ রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে যেতে না পারলেও সরকার কিছুই করতে পারেনি। এখানেও দুর্নীতির গণ্ধ রয়েছে। কারণ যারা চুক্তির পরও সময় মতো উৎপাদনে যেতে পারেনি, তাদের জরিমানা মওকুফের বিধানও এই আইনে রাখা হয়েছে। আইনটির ক্ষমতা অসীম।

কারণ জ্বালানি খাতে নেয়া সরকারের যে কোনো সিদ্ধান্ত এই আইনের আওতায় পড়বে। প্রচলতি আইনের সঙ্গে বিরোধ থাকলেও আদালতে মামলা চলবে না। অর্থাৎ 'এই খাতে এখন কেউ দুর্নীতি করলেও তার বিরুদ্ধে কোনো আইনী পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হবে না। ' সোজা কথায়, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এই খাতটিকে ব্যর্থ করে দেয়ার ষোলকলা পূর্ণ করা হয়েছে। কারণ বিদ্যুতের মতো একটি খাতকে স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতার হাত থেকে সরিয়ে দুর্নীতির হাতেই তুলে দেয়া হলো।

সরকার সুশাসন নিশ্চিত করতে পারেনি বলে কালো পথ বেছে নিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আদালতে মামলা করার অধিকার কেড়ে নেয়ার বিধান আইনটিতে রেখে সংবিধান স্বীকৃত অধিকারটুকুও কেড়ে নেয়া হলো গণতন্ত্রের নামে। এই আইনের আওতায় বিদ্যুৎ ছাড়াও গ্যাস, কয়লা, পেট্রোল, ডিজেলসহ যাবতীয় পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য ও নাবায়নযোগ্য জ্বালানিও অন্তর্ভুক্ত। সোজা কথায়, বিদ্যুতের ব্যানারে টোটাল জ্বালানি খাতের হাতপা বাঁধা হয়ে গেছে। এখন সরকার একটাই ডুগডুগি বাজাবে : বিএনপি সরকার এতো বেশি দুর্নীতি করেছে যে, আমরা বিদ্যুৎখাতে এখনো খুব বেশি সফল হয়নি।

আরেকটু ধৈয্য ধরুন বাবারা

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.