আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দিনাজপুরে কৃষিঋণ বিতরণের গতি মন্থর :: কৃষকদের ভোগান্তি



ডিজিটাল দিনাজপুর ## চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে দিনাজপুরের ৬টি ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণের গতি অত্যন্ত মন্থর। কেবলমাত্র সোনালী ব্যাংক ছাড়া অন্য ৫টি ব্যাংকের কৃষিঋণ প্রদানে গতির সঞ্চার হয়নি। জেলা কৃষিঋণ মনিটরিং কমিটির এক সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছর ২০১০-১১ সালে দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলার জন্য ৬টি ব্যাংক ১৫৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা কৃষিঋণের জন্য বরাদ্দ করেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৩ মাস জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ব্যাংক ছয়টি কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ২৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এর শতকরা হার মাত্র ১৯ ভাগ।

উক্ত সময়ের মধ্যে ব্যাংক ৬টি বকেয়া ঋণ আদায় করেছে ২৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ২৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকার মধ্যে সোনালী ব্যাংক বিতরণ করেছে ১০ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সোনালী ব্যাংক এ বছর ১২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। অবশিষ্ট ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা আগামী ৯ মাসের বিতরণ করবে। বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে ৬ কোটি টাকা সোনালী ব্যাংক সেতাবগঞ্জ সুগার মিলের ইক্ষু চাষীদের মাঝে প্রদান করেছে।

৩ মাসে সোনালী ব্যাংকের বকেয়া ঋণ আদায়ের পরিমাণ ১৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এদিকে জনতা ব্যাংক ৩ মাসে বিতরণ করেছে ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। বরাদ্দ রয়েছে ১৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এ পর্যন্ত আদায়ের পরিমাণ ৫৪ লাখ টাকা। অগ্রণী ব্যাংক বরাদ্দকৃত ৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকার বিপরীতে কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।

আর আদায় করেছে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। রূপালী ব্যাংক ৩ কোটি ৫১ লাখ টাকার বিপরীতে মাত্র ৬০ লাখ টাকা বিতরণ করেছে। বকেয়া ঋণ আদায় করেছে ৪১ লাখ টাকা। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ৩ মাসে মাত্র ৬০ লাখ টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে। অথচ এর বরাদ্দ ১৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

বকেয়া ঋণ আদায়ের পরিমাণ মাত্র ৭ লাখ টাকা। উত্তরাঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন এবং কৃষকদের জন্য একমাত্র কৃষি ব্যাংক রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের দুটি আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে ৩ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১৩ কোটি ২ লাখ টাকা। আর আদায় হয়েছে ১০ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকের উত্তর জোন বরাদ্দকৃত ৪৭ কোটি ১৫ লাখ টাকার মধ্যে ৬ কোটি ২১ লাখ টাকা বিতরণ করলেও বকেয়া ঋণ আদায় করেছে ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আর দক্ষিণ জোন বিতরণ করেছে ৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

চলতি অর্থবছরে কৃষিঋণ বাবদ এই জোনের বরাদ্দ ৫২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। বকেয়া ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে ৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা আদায়ের পরিমাণ। জেলা কৃষিঋণ মনিটরিং কমিটির প্রতি মাসের সভায় ৬টি ব্যাংকের ঋণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হলেও জেলায় কর্মরত অধিকাংশ ব্যাংকই কৃষিঋণ সংক্রান্ত কোনো তথ্যই কমিটিকে প্রদান করে না। কমিটির পক্ষ থেকেও এসব ব্যাংকের কাছ থেকে কৃষিঋণ বিতরণের প্রতিবেদন চাওয়া হয় না। বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে পূর্বের তুলনায় অধিকতর সতর্ক ও যতœবান হলেও দিনাজপুরের ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্পে নিয়োজিত উত্তরা ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, এবি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, ইউসিবিএল, আইএফআইসি, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক কি পরিমাণ কৃষিঋণ প্রদান করছে বা এক্ষেত্রে ব্যাংকের বরাদ্দই বা কতো তা জানার বা মনিটরিং করার ব্যবস্থা না থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ মনিটরিং বিষয়ক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে না বলে সোনালী ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অভিমত পোষণ করেন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.