আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সন্ত্রাস দমনে মরিচ

নিরপেক্ষ আমি

‘মশা মারতে কামান দাগা’র কথা শুনেছেন। কিন্তু সন্ত্রাস দমনে মরিচ-গ্রেনেড দাগানোর কথা কি শুনেছেন! মরিচ তো রন্ধন শিল্পের অংশ। হেঁশেলের গণ্ডিই এর সীমা। রসনায় ঝাল এনে ভোজনবিলাসীদের ভূরিভোজের ষোলোকলা পূর্ণ করার মধ্যেই এর বাহাদুরি, তা কীভাবে সন্ত্রাস দমনে ব্যবহূত হয়! বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, সন্ত্রাসীদের দমনে মরিচ-গ্রেনেড ব্যবহারের পরিকল্পনাই করছে এখন ভারত। মরিচের ঝাল এখন হেঁশেলের বাইরে থেকেও টের পাওয়া যাবে।

বিদ্রোহী আর সন্ত্রাসীদের পাকড়াও করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এতদিন বিস্ফোরক জাতীয় গ্রেনেড ব্যবহার করতে দেখা গেলেও এবার তাদের দেখা যাবে মরিচের তৈরি গ্রেনেড ব্যবহার করতে। সম্প্রতি মরিচ দিয়ে গ্রেনেড তৈরিতে সফল হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আর. কালিয়া জানিয়েছেন, ‘ভারতের প্রতিরক্ষা-গবেষণাগারে পরীক্ষামূলকভাবে মরিচ-গ্রেনেড ব্যবহারের মহড়া হয়েছে এবং তা বাস্তব ক্ষেত্রে ব্যবহারের উপযোগী বলে দেখা গেছে। ’ ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার বিজ্ঞানীরাও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশনের (ডিআরডিও) কর্মকর্তা আর বি শ্রীবাস্তব বলেন, ‘এটা বিস্ফোরকবিহীন এক কার্যকর অস্ত্র হতে যাচ্ছে।

কারণ এর তীব্র ঝাঁজযুক্ত গন্ধ সন্ত্রাসীদের কাবু করে ফেলতে পারবে এবং তাদের পালানোর পথ বন্ধ করে দেবে। ’ এই মরিচ দিয়ে তীব্র ঝাঁজযুক্ত স্প্রে তৈরির ব্যাপারেও মহড়া চলছে। এই স্প্র্রে নারীরা তাঁদের ওপর আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারবেন। অরাজকতার বিস্তার রোধ ও নিয়ন্ত্রণ করতেও নিরাপত্তা বাহিনী এই স্প্রে ব্যবহার করতে পারবে। শ্রীবাস্তব আরও বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত যে দ্রুতই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই বিচিত্র গ্রেনেডের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হবে।

এই গ্রেনেডে কারও মৃত্য না হওয়ায়, তা বেশ নিরাপদ। শুধু সন্ত্রাস দমনই নয়, শীতপ্রধান অঞ্চলে নিয়োজিত ভারতীয় সেনাদের শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে ও তাঁদের খাদ্য উপাদান হিসেবে এই মরিচ ব্যবহূত হবে। তা ছাড়া সেনা ছাউনিতে হিংস্র প্রাণীদের আক্রমণ ঠেকাতেও এই মরিচের ঝাঁজ কাজে লাগানো হবে। ’ তবে এসব কাজ করা হবে বিশেষ এক ধরনের মরিচ দিয়ে। এর নাম ভূত জোলোকিয়া বা ভূতমরিচ।

এটি দেখতে অনেকটা হাতের বুড়ো আঙুলের মতো। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় এ ধরনের মরিচ জন্মে। ২০০৭ সালে গিনেজ বুক কর্তৃপক্ষ ভূতমরিচকে বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল মরিচ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সাধারণ মরিচের চেয়ে এই মরিচের ঝাল হাজারগুণ বেশি। তাই সাধারণ মরিচের চেয়ে এর কেরামতিও অনেক বেশি ।

বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ভূতমরিচ অসম্ভব রকমের ঝাল উৎপাদন করে। এই মরিচের তীব্র ঝালযুক্ত ঝাঁজ যখন অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে, তা মানুষকে কাবু করে ফেলবে। সন্ত্রাসীদের হত্যা না করে পাকড়াও করার জন্য এ পর্যন্ত বিশ্বে যেসব অস্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছে, এর মধ্যে এটিই সবচেয়ে নিরাপদ ও মোক্ষম অস্ত্র বলে দাবি করা হচ্ছে। ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিভিন্ন কাজে বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল মরিচ আর কী কী উপায়ে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে আরও গবেষণা চলছে । দ্য টেলিগ্রাফ অবলম্বনে সাইফুল সামিন সুত্র: প্রথম আলো।

তারিখ: ২৩-০৪-২০১০ http://digitalvillagebd.blogspot.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.