আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আত্মহত্যার মিছিল

‘তুমি যাকে মৃত্যু বল, তুমি যাকে বল শেষ, সমূল পতন

প্রতিকারহীনতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে তারিখ: ০৪-১১-২০১০ বগুড়ার রূপালী ফিরতে পারেনি। চরম অপমান আর অসহায়তার মুখে সে আত্মহত্যা করেছে। সিঁথিতে বখাটের লাঞ্ছনার সিঁদুর সে মুছে ফেলেছে মৃত্যুকে ডেকে নিয়ে। নারায়ণগঞ্জের সিমি, খুলনার রুমী, গাইবান্ধার তৃষাদের মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো আরেকটি নাম। নিপীড়িতের আত্মহত্যার প্রবণতা যে প্রতিকারহীনতারই পরিণাম, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

গত পাঁচ মাসে ১৪ জনের আত্মহত্যার সংবাদ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতো মানবাধিকার সংস্থার দেওয়া তথ্যানুসারে, ২০০৯ সালে এ সংখ্যা ছিল সাত, ২০০৬-এ ছিল পাঁচ। এ ছাড়া গত পাঁচ মাসে ১৪ জনের আত্মহত্যার সংবাদ পাওয়া গেছে। চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয় ১০টি শিশুসহ মোট ৪২ জন। এ ক্ষেত্রে গণধর্ষণের ঘটনা ১৪টি।

গত মাসের প্রথম ১৫ দিনে অনেক স্থানে বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা করেছে ২০ জন। এর মধ্যে নারী ও শিশু ১৮ জন। মেয়ের অপমানে বাবার আত্মহত্যাও আমরা দেখেছি। এদিকে ‘ইভ টিজিং’-এর প্রতিবাদ করায় খুন হয়েছে তিনজন। বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরোর প্রতিবেদন জানায়, ২০১০ সালের প্রথম চার মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৭১ জন।

এর মধ্যে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসিড-সন্ত্রাস ও যৌতুকের শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। এত অপরাধ অথচ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলাগুলোর ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই উচ্চ আদালতে টেকে না। এই ঘাটতি আর এই অসহায়তাই নির্যাতিতদের আত্মহননের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিচারহীনতা এবং লাঞ্ছনাকারীর চেয়ে লাঞ্ছিতকে খারাপ চোখে দেখার অপসংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

এই বাস্তবতা যতটা নারকীয়, রূপালীদের আত্মহত্যা ততটাই প্রতিবাদী। রূপালীরা বাঁচত যদি সরকার, সমাজপতি, অভিভাবকসহ সবার প্রতিরোধ আরও জোরদার হতো। তাহলেই রূপালীরা নিরাপদ হবে, রূপালীর মায়ের মতো মায়েরা শূন্য ঘরে হাহাকার করে বেড়াবেন না। বিপন্ন মেয়েদের বাঁচাতে তাই জানিয়ে দিতে হবে, তাদের সহমর্মী সমগ্র সমাজ, বখাটেদেরও বুঝিয়ে দিতে হবে সমাজের শাসন না মানলে, নারীদের শ্রদ্ধা করতে না শিখলে তাদের পরিণতিও হবে ভয়াবহ। তারিখ: ০৪-১১-২০১০ সূত্র- প্রথম আলো


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।