আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি প্রাপকহীন চিঠির কথা

আমি একজন অতিসাধারণ মানুষ, স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। স্বপ্ন আছে বলেই এখনও বেঁচে আছি

একটু ভূমিকা দেয়া আবশ্যক, আমি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই চিঠি লিখতে ও পেতে পছন্দ করতাম। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অভ্যাস অটুট ছিল। ধীরে ধীরে যান্ত্রিক জীবনে সহনীয় হয়ে উঠছি আর ক্রমশ চিঠি লেখার অভ্যাস বদলে যাচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন নিজের কাছে নিজে চিঠি লিখতাম।

আজ বহুদিন পরে শিরোনামহীন, তারিখ বিহীন একটি চিঠি খুঁজে পেলাম। কাকে লিখেছিলাম তা আর মনে পরে না। তাই ব্লগে লিখে দিলাম.. "ভালো আছো নিশ্চয়ই। আমি জানি অভ্যাসটা পুরানো এবং বিস্মৃত প্রায়, তবু একবার চেষ্টা করেই দেখি। আমি চিঠি লেখার ও পড়ার কথা বলছি।

বহুদিন পরে লিখছি। লেখা বন্ধ করেছিলাম ইচ্ছে করে;আজ যে লিখছি তা ও ইচ্ছে করেই। মানসিক অবস্থার এই দ্বৈত অবস্থানের ক্রমাগত রশি টানাটানিতে আমি উপায়হীন এবং বিভ্রান্ত। আমার সম্পর্কে প্রচলিত সত্য কথাটি হলো আমি চিঠিতে অত্যন্ত জটিল ভাষা ব্যবহার করি, আমি মেনে নিচ্ছি। তবে আজ সে চেষ্টা করবো না; তবে পুরোপুরি সহজ কথা বলবো তার নিশ্চয়তাও দিতে পারছিনা।

বহুদিনের অভ্যাস তার উপর বদ-অভ্যাস। ছাড়া এত সহজ নয়। তবে সহজে বোঝার জন্য মূল চিঠির ভূমিকাটুকু ছাড়া বাকি অংশকে তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে, যার প্রথম অংশে আমার ণিজের সম্পর্কে, মাঝে তোমার সম্পর্কে এবং শেষে আমাদের সম্পর্কে- এ সূত্র নিশ্চয়ই সহজবোধ্যতার মাত্রাকে বাড়িয়ে দেবে। চিঠি লিখতে বসে একটি শপথ করেছি এবং একটি ভেঙেছি। না, আজ ভাঙার কথা বলবো না।

গড়ার কথা বলি,শপথ করেছি- 'যা লিখবো সত্য লিখবো, সত্য বৈ মিথ্যা লিখবো না'। কেউ কেউ বলে আমি নাকি বদলে গেছি, সত্যিই কি তাই? কিন্তু আমি তো বদলে যেতে চাইনি। আমি স্বীকার করছি পরিবর্তন হয়েছে শারিরিক কিংবা মানসিক, দৃষ্টিভঙ্গি- এখানেও পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। যেই আমি আপদমস্তক একজন প্রগতিশীল ছিলাম সেই আমি আজ উদারপন্থি ও কট্টরপন্থির মিশ্রিত এক অদ্ভুত রক্ষণশীল আবার কখনো বা সংস্কারপন্থি মানুষ ও। প্রায় ১২০০ দিন কারো মনের কাছাকাছি থেকে ও আজও প্রকৃতভাবে বলতে পারিনা হৃদয়ের দাবী কি।

এটি বিলাসিতা বা অলসতা নয়, এটি পরিষ্কার ব্যর্থতা। এটি ও মেনে নিচ্ছি। যেমন মেনে নিচ্ছি এই কলমটির অত্যাচার, যা থেকে মাঝে মাঝেই কালি পরা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তায় আমার বর্তমান আজ অনেক বেশি আতঙ্কগ্রস্থ, ভীত, রঙহীন, নির্জীব। কারো আগমন আমাকে বাড়তি আনন্দ দেয় না, তেমনি বাড়তি কষ্ট হয় না বিদায়ে।

ইদানিং বা নিকট অতীতে অথবা আরও কিছু বেশি সময় ধরে আমি তোমার সম্পর্কে যা জেনেছিলাম বা জানছি তাতে সেই তুমি আজ অনেক বেশি মানবিয়, অনেক বেশি এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল ও পরনির্ভরশীল, অহংকারী (!), দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং কুশলী। তোমার এ বৈশিষ্টগুলোকে আমি আর যাই হোক ঋণাত্মক বলি না। উঁচুতে উঠতে কে না চায়? তবে উচ্চাভিলাষ সম্ভবত দীর্ঘশ্বাসের ও কারন। আমি সেই তোমার কথাই বলছিলাম, যার জন্য অসংখ্য রাত জাগা যেত, কবিতা তৈরি হতো কিংবা এক সহস্র আলোকবর্ষ দূর হতে পায়ে হেঁটে এনে দেয়া যেত পাঁচটা পদ্ম ফুল। এগুলো তো আসলে মীনা বাজারে পাওয়া যায় না।

তাই আগোরার এক প্যাকেট সুস্বাদু আচার বা অ্যান্ডারসনের এককাপ আইসক্রিমের জন্য তোমার এই পরিবর্তন সময় ও যুগোপযোগী এবং অবিসম্ভাবী। অভিনন্দন তোমায়। " (সংকলিত)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.