আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চট্টগ্রামে অন্তহীন কোন্দল

সরকারের মেয়াদ শেষ হতে চললেও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি না হওয়ায় জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্মী সমর্থকরা উদ্বিগ্ন। দীর্ঘকালেও কার্যত বিভেদ চুকেনি আওয়ামী লীগের এই শাখাটিতে। সহসা কমিটি না হলে বিভক্তির কারণে চট্টগ্রাম শহরের ৪টি সংসদীয় আসনেই নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো এক মাসের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করলেও উপর্যুপরি এমন আশাবাদ অতীতে ভেস্তে যাওয়ায় এবারও তেমনটিই হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।

মহানগর আওয়ামী লীগ নতুন কমিটি ঠিক কবে হবে তা নিশ্চিত বলতে পারছেন না সংগঠনের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। তবে চট্টগ্রাম থেকে সদ্য প্রেসিডিয়ামে ঠাঁই পাওয়া আরেক শীর্ষ নেতা, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি এক প্রশ্নের জবাবে এক মাসের মধ্যেই এই কমিটি ঘোষণার আশাবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ জেলা কমিটির মতো মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিও ঘোষণা করবেন সংগঠনের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কমিটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কাজী ইনামুল হক দানু অসুস্থ থাকায় নতুন কমিটি ঘোষণায় দেরি হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মোশাররফ হোসেন।

সর্বশেষ প্রায় অর্ধযুগ আগে ঘটা করে সম্মেলন হলেও পূর্ণ কমিটি ছাড়াই শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণাই হয় মহানগর আওয়ামী লীগের। এর দীর্ঘকালীন গ্রুপিংয়ের কারণে অতীতেও শহর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও জাতীয় নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না পাওয়ার নজির আছে। গ্রুপিংয়ের কারণেই 'হবে হবে' বলেও বিলম্বিত হয়েছে পূর্ণ কমিটি ঘোষণার প্রক্রিয়া। সর্বশেষ সম্মেলনের পর কথা ছিল সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সভাপতি এম এ মান্নান এবং সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ইসহাক মিয়া ঐকমত্যের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি করবেন। কিন্তু ইতোমধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নান ইন্তেকালও করেছেন। এর আগে উক্ত চারজনের কোনো বৈঠকও হয়নি। হয়নি ঐকমত্য। এ কারণে ইতোমধ্যে বিগত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থক মেয়র প্রার্থী মহিউদ্দিন চৌধুরীকে বেকায়দায় পড়তে হয়। সিটি নির্বাচনের পরে গ্রপিং প্রকাশে রূপ পায়। মহিউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে দীর্ঘকালীন বিরোধী নেতা অপেক্ষাকৃত তরুণ আ জ ম নাছির উদ্দিনের সম্পর্ক অনেকটা সহজ ও স্বাভাবিক হলেও দূরত্ব বাড়ে খোদ মহিউদ্দিনের অনুজপ্রতিম ও শিষ্য খ্যাত এমপি ডা. আফসারুল আমীন ও চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের। দীর্ঘকাল ঘনিষ্ঠ থাকা অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম চৌধুরী বাবুলের সঙ্গেও দূরত্ব বাড়ে। অথচ পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হলেও বিরোধিতাকারীরা সবাই মহিউদ্দিন চৌধুরী নির্দিষ্ট আংশিক কমিটির সহসভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক, অর্থ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদেই রয়েছেন। অবশ্য এসব পদের বৈধতা নিয়েও প্রকাশ্যেই প্রশ্ন তোলেন এরা কেউ কেউ।

এরই মধ্যে মাহনগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন প্রক্রিয়াকে ঘিরে ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলনে গোলাগুলি, ভাঙচুর, প্রকাশ্যে বিরোধ হাতাহাতি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা যেন রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। এমন অবস্থায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের অনেকের স্বপ্নের বুকে ফাটল ধরিয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যা দাগি আসামিকে নিয়ে যুবলীগ মহানগর কমিটি গঠিত হয়েছে। সমালোচিতদের কারণে কমিটিতে যারা ত্যাগী ও পরীক্ষিত রয়েছেন_ তারাও বিব্রত হচ্ছেন। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি ছাত্রলীগের নতুন মহানগর কমিটিতেও একই দশা হবে? আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আদৌ মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি হবে কিনা_ তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেন্দ্র অনুমোদিত মতে দুই সদস্য নেতা নিয়ে দেশের প্রাচীন সংগঠনটির মহানগর শাখার প্রায় অর্ধ যুগ অতিক্রান্ত বিষয়েও নানা প্রশ্নের শেষ নেই। এই দুই নেতার একজন শয্যাশায়ী। অন্যজন মহিউদ্দিন চৌধুরী গতকাল অবধি ব্যস্ত ছিলেন টুঙ্গিপাড়ায় শোক দিবসের মেজবান। এতে করে কার্যত গতকাল শোক দিবসেও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ ছিল যেন নির্বাচনী আসনভাগে এবং গ্রুপিংয়ে বিভক্ত। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কিংবা শহরের আওয়ামী লীগ এমপিরা ঐক্যের কথা বলছেন ঠিকই, কিন্তু কার্যত পূর্ণাঙ্গ নতুন কমিটি হওয়ার আগে ঐক্যের কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.