আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বঙ্গবন্ধুর সমালোচনাকারীরাই এখন ঘর আলো করে বসে আছেন

আজ যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে খুব বেশি বাড়াবাড়ি করছেন তারাই একদিন তাকে অশিক্ষিত নেতা বলতেন। আমাদের ডেকে বলতেন, তার (বঙ্গবন্ধু) মধ্যে কোনো বুদ্ধি নেই। প্রতিভা নেই। তোমরা তাকে নেতা মানছ কেন? এসব লোকই এখন দেখি ঘর (আওয়ামী লীগ) আলো করে বসে আছেন। প্রদীপ্ত সূর্য রশ্মির মতো বিচ্ছুরিত হচ্ছেন।

গত বুধবার চ্যানেল আই'র তৃতীয় মাত্রা অনুষ্ঠানে ষাটের দশকের ছাত্রলীগ সভাপতি, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা ও প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী এসব কথা বলেন।

জিল্লুর রহমানের উপস্থাপনায় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কিন্তু ক্ষমতা আশ্রিত বা কুসুমাস্তীর্ণ পথ দিয়ে হেঁটে আসা দল নয়। নানা প্রতিবন্ধকতা উত্তরণের মধ্য দিয়ে তিল তিল করে পুরো জাতিকে একটি চেতনার মোহনায় একত্রিত করে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে আওয়ামী লীগ চূড়ান্ত বিস্তার লাভ করেছে। দীর্ঘ ১৭টি মাস বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জেলে থাকার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। কাছ থেকে তার চিন্তা, চেতনা, মননশীলতায় একটি কথাই দেখেছি_ বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি।

তার মধ্যে পিতার স্নেহ যেমন ছিল, তেমনি ছিল রাজনৈতিক দূরদর্শিতা। এক সংবাদ সম্মেলনে তাকে বেকায়দায় ফেলতে ডেভিট ফ্রস্ট জিজ্ঞাসা করেছিলেন- 'মি. প্রাইম মিনিস্টার, হোয়াট ইজ ইউর কোয়ালিফিকেশন?' তিনি সামান্য হেসে বলেছিলেন, 'আই লাভ মাই পিপল। ' এরপর ডেভিট আবার প্রশ্ন করলেন, 'হোয়াট ইজ ইউর ডিসকোয়ালিফিকেশন?' তিনি চশমাটা খুলে চোখ মুছতে মুছতে প্রতিভাদীপ্ত কণ্ঠে বললেন, 'আই লাভ দেম টু মাচ। ' ডেভিট ফ্রস্ট বলেছিলেন, আমি বিশ্বে অনেক বড় বড় নেতার ইন্টারভিউ করেছি কিন্তু তোমাদের নেতা ঈশ্বর প্রদত্ত। সাবেক এই ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় গুণ ছিল তিনি সবার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন।

সরাসরি কোনো নির্দেশ দিতেন না। আমাদের কথা শুনতেন। শোনার পর নির্যাসটা বলতেন। মওলানা ভাসানী বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলেছিলেন, 'আমি তার নেতা ছিলাম। এখন সে আমার নেতা।

তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। তোমরা তাকে অবিশ্বাস করো না। ' নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, এখন ইতিহাস প্রতিটা ক্ষেত্রে বিকৃত করা হচ্ছে। কেউ কেউ বঙ্গবন্ধুর পাকিস্তানে আটক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। শেখ মুজিবকে ধরে নেওয়ার পর পাকিস্তানে তার জন্য কবর খোঁড়া হয়েছিল।

কিন্তু মারেনি, কারণ তারা তাকে শেষ ট্রামকার্ড হিসেবে রেখেছিল। আর ধরে নিয়ে গিয়েছিল কারণ, তারা তাকে বাংলাদেশেও রাখতে সাহস পায়নি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সবাই শুনেছেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট বলেছিলেন, আমি যদি হুকুম দেওয়ার নাও পারি তোমাদের যার কাছে যা কিছু আছে তা নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করো।

নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস।

বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ, বিকাশ, সফলতা ও ব্যাপ্তির প্রাণপুরুষ ছিলেন তিনি। তিনি শুধু জাতির জনকই নন, মানুষের মনের নিভৃত কোঠরে যে শ্রদ্ধার সিংহাসন সেখানে তিনি মুকুটহীন সম্রাট। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি নিগৃহ, বঞ্চনা, নিপীড়ন দেখে ছয় দফা কর্মসূচি দিয়েছিলেন। দৃঢ়কণ্ঠে বলেছিলেন সবার আগে ছয় দফা মানতে হবে। এটা ছিল স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতায় উত্তরণের পটভূমিকা।

ছয় দফার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষের মুক্তির অগ্রদূত হিসেবে সামনে এসে দাঁড়ান। দূরদর্শিতা বা সংকীর্ণতার কারণে সে দিন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় ছয় দফা গৃহীত হয়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু থামার মানুষ ছিলেন না। তিনি ছাত্রলীগের তদানীন্তন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে ডেকে বললেন, এটা আমার বাংলার মুক্তি সনদ। এর মাধ্যমে আমি স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যাব।

তারা সঙ্গে সঙ্গে শপথ করে বলেছিলেন, আমরা এটা বাংলার ঘরে ঘরে পেঁৗছে দেব। হ্যাঁ, ছয় দফা আন্দোলন হয়েছিল। ছয় দফাই ছিল বাংলার মুক্তির সনদ।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.