আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শামসুর রাহমান মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানীদের সেবা করেছেন, দালাল ছিলেন, পাকিস্তানের পা চেটেছেন- পাগলে কি না বলে, ছাগু কি না খায়

আমি ঘুরিয়া ঘুরিয়া সন্ধানো করিয়া স্বপ্নেরও পাখি ধরতে চাই আমি স্বপ্নেরও কথা বলতে চাই আমার অন্তরের কথা বলতে চাই...

শামসুর রাহমান মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানীদের সেবা করেছেন, দালাল ছিলেন, পাকিস্তানের পা চেটেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় অকথ্য গালিগালাজ করেছে মুক্তিযোদ্ধাদের, স্বাধীনতার পর ভোল পাল্টেছেন। -মেজর জেনারেল এম এ মতিন বীরপ্রতীক এমনটাই লিখেছেন তার আমার দেখা ব্যর্থ সেনা অভ্যুথান ৯৬' বইয়ের ৩১৩ নাম্বার পৃষ্ঠায় "অভিশাপ দিচ্ছি" কিংবা "স্বাধীনতা তুমি"-র মত এমন কবিতার লেখক কি রাজাকার হতে পারে !!! অসম্ভব !!!!! এটি বিশ্বাস করে বিভ্রান্ত অনেকেই। তারা অবলীলায় শামসুর রাহমানকে প্রো পাকিস্তানী বলে গালি দিয়ে বসে। ১৯৭১ সালের ১৭ মে দৈনিক পাকিস্তানে ৫৫জন বুদ্ধিজীবি সাক্ষরিত যে বিবৃতিটি পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কাজে লাগায় তাতে শামসুর রাহমানের সাক্ষর ছিল না। অথচ আহসান হাবীব, ফররুখ আহমেদ, সৈয়দ শামসুল হকদের ছিল।

এদের বেশীরভাগই বন্দুকের মুখে সই দিয়েছেন। এমনকি সই দিয়েও মরতে হয়েছে মুনীর চৌধুরীকে। সেসময় দৈনিক পাকিস্তানে সাহিত্য পাতা দেখতেন শামসুর রাহমান। সম্পাদক ছিলেন আবুল কালাম শামসুদ্দীন, যিনি সাক্ষরদাতাদের অন্যতম। অথচ অপপ্রচারে শামসুর রাহমানকেই সম্পাদক বানিয়ে দেয় অনেকে।

বাস্তবে শামসুর রাহমানকে প্রতিরোধ সংগ্রামের ফরাসি কবি পল এলুয়ার ও লুই আরাগঁর কাতারে অনায়াসেই ফেলা যায়। মার্চের উত্তাল দিনগুলোতে লেখক-শিল্পীদের সঙ্গে রাজপথে ছিলেন মিছিলে। ২৫ মার্চ রাতে গণহত্যা শুরু হলে কবি পরিবার নিয়ে আশ্রয় নেন নরসিংদির পাড়াতলী গ্রামের পৈত্রিক ভিটায়। এখানেই রচিত হয় তার অমর দুই সৃষ্টি- স্বাধীনতা তুমি এবং তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা নামে কবিতাদুটোর। জুনে তিনি ফিরে আসেন ঢাকা, যোগ দেন কাজে।

কিন্তু কবিতা লেখা থামেনি। সেসব কবিতা কপি হয়ে হাতে হাতে পৌছে যেত মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে। ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর কলকাতার সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় ছাপা হয় শামসুর রাহমানের এই অবরূদ্ধ যাপনের অনুভূতি সম্বলিত কিছু কবিতা। আবু সয়ীদ আইয়ুবের ভূমিকাসহ সেসব কবিতা ছাপা হয়েছিল ছদ্মনামে। বন্দী শিবির থেকে ঈর্ষাতুর নই, তবু আমি তোমাদের আজ বড় ঈর্ষা করি।

তোমরা সুন্দর জামা পরো, পার্কের বেঞ্চিতে বসে আলাপ জমাও, কখনো সেজন্যে নয়। ভালো খাও দাও, ফুর্তি করো সবান্ধব সেজন্যেও নয়। বন্ধুরা তোমরা যারা কবি, স্বাধীন দেশের কবি, তাদের সৌভাগ্যে আমি বড়ো ঈর্ষান্বিত আজ। যখন যা খুশি মনের মতো শব্দ কী সহজে করো ব্যবহার তোমরা সবাই। যখন যে শব্দ চাও, এসে গেলে সাজাও পয়ারে, কখনো অমিত্রাক্ষরে, ক্ষিপ্র মাত্রাবৃত্তে কখনো-বা।

সেসব কবিতাবলী, যেন রাজহাঁস দৃপ্ত ভঙ্গিমায় মানুষের অত্যন্ত নিকটে যায়, কুড়ায় আদর। অথচ এদেশে আমি আজ দমবদ্ধ এ বন্দী-শিবিরে মাথা খুঁড়ে মরলেও পারি না করতে উচ্চারণ মনের মতন শব্দ কোনো। মনের মতন সব কবিতা লেখার অধিকার ওরা করেছে হরণ। প্রকাশ্য রাস্তায় যদি তারস্বরে চাঁদ, ফুল, পাখি এমনকি নারী ইত্যাকার শব্দাবলী করি উচ্চারণ, কেউ করবে না বারণ কখনো। কিন্তু কিছু শব্দকে করেছে বেআইনী ওরা ভয়ানক বিস্ফোরক ভেবে।

স্বাধীনতা নামক শব্দটি ভরাট গলায় দীপ্ত উচ্চারণ করে বারবার তৃপ্তি পেতে চাই। শহরের আনাচে কানাচে প্রতিটি রাস্তায় অলিতে-গলিতে, রঙিন সাইনবোর্ড, প্রত্যেক বাড়িতে স্বাধীনতা নামক শব্দটি আমি লিখে দিতে চাই বিশাল অক্ষরে। স্বাধীনতা শব্দ এত প্রিয় যে আমার কখনো জানিনি আগে। উঁচিয়ে বন্দুক, স্বাধীনতা, বাংলাদেশ- এই মতো শব্দ থেকে ওরা আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখছে সর্বদা। অথচ জানেনা ওরা কেউ গাছের পাতায়, ফুটপাতে পাখির পালকে কিংবা নারীর দু'চোখে পথের ধুলায় বস্তির দুরন্ত ছেলেটার হাতের মুঠোয় সর্বদাই দেখি জ্বলে স্বাধীনতা নামক শব্দটি।

বিভিন্ন ব্লগ ঘেঁটে এতটুকুই বলতে পারি, যে কবি আসাদের শার্ট, স্বাধীনতা তুমি কিংবা বর্ণমালা আমার দুঃখিনী বর্নমালা কিংবা বন্দী শিবির থেকে-র মতো অসধারন কবিতা লিখতে পারেন তিনি রাজাকারদের সহযোগিতা করেছেন এটা পাগল ছাড়া কেউ বিশ্বাস করবে না।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।