আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।

মত ও পথের পার্থক্য থাকা নতুন কিছু নয়। আমার সাথে অনেকে একমত নাও হতে পারেন। যুক্তি যুক্ত সমলোচনা করুন। কোন সমস্যা নাই। সামু দীর্ঘজীবি হোক।

সকলকে শুভেচ্ছা

সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীসংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায়ের সঙ্গে সঙ্গে ১৯৭২ সালের আদি সংবিধান পুনঃস্থাপিত হয়ে গেছে। কাজেই ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরে এসেছে। বাংলাদেশ আজ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। তাই কোনো ব্যক্তিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা যাবে না। গতকাল সোমবার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।

রায়ে আদালত বলেন, ‘সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদ অনুসারে ফিরে আসা সংবিধান মানতে আদালত বাধ্য। আপিল বিভাগের রায়ের পর আমরা অন্য কোনো সংবিধান স্বীকার করতে পারি না, করব না। ’ গত ২২ আগস্ট একটি দৈনিকে ‘নাটোরের সরকারি রানী ভবানী মহিলা কলেজ, বোরকা না পরলে আসতে মানা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদটি আদালতের দৃষ্টিতে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুব শফিক ও কে এম হাফিজুল আলম। ওই দিন হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমোটো) হয়ে আদেশ দেন।

এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশের কোনো দপ্তরে নারীদের বোরকা পরতে বাধ্য না করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা যে কোনো দপ্তরে নারীদের বোরকা পরতে বাধ্য করা এবং খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রাখা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। পাশাপাশি নাটোরের রানী ভবানী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হককে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গতকাল শুনানির সময় অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক আদালতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। গতকাল আদালতে আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী মাহবুব শফিক এবং কে এম হাফিজুল আলম, সরকারপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজরুল ইসলাম তালুকদার ও অধ্যক্ষের পক্ষে খলিলুর ররহমান মামলা পরিচালনা করেন।

শুনানিতে নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ঘটনা তদন্তে প্রাথমিক প্রতিবেদনে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁকে ওএসসি করা হয়েছে। আবার তদন্ত হবে। পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের ফলে ধর্মনিরপেক্ষতা পুর্নবহাল হয়েছে। স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার মৌলিক অধিকার।

তাই কাউকে বোরকা পড়তে বাধ্য করা যাবে না। তেমনি পড়লেও নিষেধ করা যাবে না। শুনানিতে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয় বলে তাঁর আইনজীবী বক্তব্য দেন। শুনানি শেষে আদালত রায় দেন। রায়ে আদালত বলেছেন, সামরিক শাসকরা সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করেছিল।

৭২’র সংবিধানের মুল স্তম্ভের অন্যতম হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতা। ধর্মনিরপেক্ষ দেশে কাউকে ধর্মীয় পোশাক পড়তে বাধ্য করা যায় না। সকল ধর্মের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালন করার অধিকার রয়েছে। কাজেই কোন ধর্মীয় পোশাক কারও উপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। একই কারনে কেউ ধর্মীয় পোশাক পড়তে চাইলে মানাও করা যাবে না।

প্রতিটি মানুষ শালীনতা বজায় রেখে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী পোশাক পরিধান করার অধিকারী। ’ এছাড়া ১৯৭২ সালের সংবিধানের আলোকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে ধর্মীয় পোশাক পড়তে বাধ্য না করা হয়, তা সংশ্লিস্টদের জানাতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদেশের পর কে এম হাফিজুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হওয়ার পর পুনঃস্থাপিত সংবিধানের আলোকে এটিই প্রথম রায়। নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, বিভাগীয় কার্যক্রম চলাকালে অধ্যক্ষকে সাময়িকভাবে বরখান্ত করা উচিত বলে আদালত উল্লেখ করেছেন। এখন বিভাগীয় কার্যক্রমে তাকে তাঁর প্রতিনিধির মাধ্যমে শুনানির সুযোগ দিতে বলা হয়েছে।

উৎস : দৈনিক প্রথম আলো

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.