আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাবি কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় নেই প্রাণচাঞ্চল্য



শহীদ মিনার কমপ্লেক্স ও রাকসু ভবন সংলগ্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার অবস্থান। এই ক্যাফেটেরিয়ার সামনে রয়েছে ছায়া সুনিবির একটি আম বাগান। এই ভবনটি আধুনিক স্থাপত্যের এক মনোরম নিদর্শন। ১৯৬৩ সালে এই ভবনটি নির্মিত হয়। সর্বপ্রথম এখানে নিজ নিজ হাতেই পরিবেশন পদ্ধতির প্রচলন হয়েছিল।

এটা রাকসু ভবনের পাশে অবস্থিত হওয়ার কারণে সবসময় শিক্ষার্থীদের আনাগোনা লেগেই থাকতো। আড্ডায়, গল্পে মেতে থাকতো সবসময়। আর চা-কফি, সিঙ্গারা, চমচা আড্ডার সময়কে আরো দীর্ঘক্ষণ বাড়িয়ে দিতো। এককালে এখান থেকেই ছাত্রনেতারা আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করতেন। তবে এখন এই ক্যাফেটেরিয়াতে আগের মতো আর প্রাণচাঞ্চল্য নেই।

শিক্ষার্থীদের আর সরব উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায় না। ঐতিহ্য হারাতে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্যাফেটি। ভবনটি আধুনিক নির্মাণশৈলীর অন্যতম নিদর্শন হলেও সঠিক পরিচর্যার অভাবে দিন দিন তার সৌন্দর্য্য হারাতে বসেছে। চেয়ার-টেবিল অনেক পুরনো । তার মধ্যে আবার কতকগুলো ভাঙ্গা, কতকগুলোর নেই পায়া ।

সংস্কারেরও নেই কোন উদ্যোগ। মান্ধাত্বার আমলের এই আসবাবপত্র দেখে খাবারের আর রুচি থাকে না। খাবারের মানও একেবারে নি¤œ পর্যায়ে চলে এসেছে। খাবার পরিবেশন করা হয় অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে। তাছাড়া কর্মচারীরা খাবার পরিবেশনের সময় শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকে বলে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়।

ক্যাফেতে তিনবেলা খাবার পরিবেশনের নিয়ম থাকলেও দুপুরে ভাত পরিবেশন করার মধ্যেই এটি সীমাবদ্ধ থাকে। সকালে নামমাত্র নাস্তার ব্যবস্থা থাকলেও কোন শিক্ষার্থীকে এখানে নাস্তা করতে দেখা যায় না। কেউ কেউ বলেন ক্যাফেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনগুলো থেকে একটু দূরে অবস্থিত। ক্লাস শেষে শ্ক্ষিার্থীরা একামেমিক ভবন সংলগ্ন আবুর ক্যান্টিন, সাগর ক্যান্টিনসহ বিভিন্ন হোটেলগুলোতেই খাবার আর আড্ডাতে মেতে উঠে। ক্যাফেতে শুধু দুপুর বেলায় খাবার পরিবেশনের পরই সারাদিন পড়ে থাকে শিক্ষার্থীশুন্য হয়ে।

চা-সিঙ্গারার মধ্যদিয়ে দেখা যায় না কোন ধরনের আড্ডা। বারিন, অপু, শওকত, তরিকুল, মাসুম, শাওন, রাকিব, ইমন, কবির এরা সবাই ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের শিক্ষার্থী। ক্লাস শেষে তারা সবাই ক্যাম্পাস সংলগ্ন ক্যান্টিনগুলোতে আড্ডায় মেতে ওঠে। ক্যাফেতে না যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন-‘ওখানে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার পরিবেশন করা হয়। কর্মচারীদের বিহেভটা একটু কেমন যেন।

তাছাড়া ক্যাফেটি খানিকটা দূরে । তাই সেখানে যেতে ইচ্ছে হয় না’। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা হয় প্রশাসক প্রফেসর ড. মাইনুল হক এর সাথে। জানা যায় নানা সীমাবদ্ধতার কথা। ১৬ টাকা থেকে ৬০ এর মধ্যে খাবারের ব্যবস্থা আছে এখানে।

তবে বর্তমান বাজার দরে ১৬ টাকা দিয়ে এর চেয়ে বেশি ভালো মানের খাবার দেয়া সম্ভব নয় বলে তিনি জানান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিবছর ক্যাফেটেরিয়ার জন্য প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে দিয়েই কর্মচারী-বাবুর্চিদের বেতন প্রদানসহ নানা খরচ চালাতে হয়। রক্ষণাবেক্ষন, উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য আলাাদা কোন বরাদ্দ নেই। ক্যাফের অবস্থান ক্যাম্পাস থেকে দূরে অবস্থিত এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন-ক্যাফেটি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া তাই এর অবস্থান ঠিকই আছে।

তবে ক্যাফের চেয়ার -টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্রের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন-আসলে এখানে আধুনিকতার ছোঁয়া পাওয়া দরকার। কাঠামোগত সাইজ আরো বড় হওয়া দরকার। আর এগুলো সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর প্রতি সুদৃষ্টি দিলে। তাহলে এখানে আবার ফিরে আসবে শিক্ষার্থীদের আগের সেই প্রাণচাঞ্চল্য। আড্ডায় জমজমাট হয়ে ওঠবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্যাফেটি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.