আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছাত্রলীগের ধর্মঘটে অচল রাবি

ক্যাম্পাস সচল করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো উদ্যেগ না নেয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।  
শুক্রবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী আবাসিক হলে নিজ কক্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ছাত্রলীগ নেতা রুস্তম আলী আকন্দ।
এই ঘটনায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আশরাফুল আলম ইমন জড়িত দাবি করে তাকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত অনিদিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ। শনিবার থেকে শুরু হয় এই ধর্মঘট।
‘অন্তঃকোন্দল’ থেকে ছাত্রলীগ নেতা রুস্তম খুন হতে পারেন- এমন খবর গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।


তারপরও ছাত্রলীগের ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ায় খোদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও উষ্মা প্রকাশ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য সারওয়ার জাহান সজল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। কিন্তু কোনো সমাধানে যেতে পারিনি। ”
সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের কর্মসূচি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অস্বস্তিতে রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ আল তুহিন রুস্তম আলী হত্যায় ছাত্রশিবির সভাপতি আশরাফুল আলম ইমনসহ অন্যদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন।


আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আনবে এমনটাই আশা তার।
পুলিশের উপ কমিশনার (পূর্ব) প্রলয় চিচিম জানান, রুস্তম হত্যাকাণ্ড ছাত্রলীগের ‘অন্তঃকোন্দল’ থেকেও ঘটতে পারে। ছাত্রলীগের সন্দেহভাজন নেতাদের নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।
এছাড়াও ছাত্রশিবির বা অন্য কোন কারণ জড়িত কি না সেসব বিষয় মাথায় রেখেও তদন্ত চলছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এদিকে ধর্মঘটের চতুর্থ দিন মঙ্গলবারও কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি।

এদিন রুস্তম হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করে ছাত্রলীগ।
গত বছর ১৯৫ দিন কার্যদিবসের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা হয়েছে ১১৩ দিন। গত ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত ফি ও সান্ধ্যকোর্স বাতিলের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ ও পুলিশ হামলা চালায়, যে ঘটনায় আহত হয়েছিল অর্ধশত।
ঘটনার পর দিনই অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়। ৩৬ দিন পর গত ১০ মার্চ থেকে ক্লাস-পরীক্ষায় ফেরে।


বিভিন্ন বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলোজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা গত ১২ সেপ্টেম্বর শুরু হলেও এখনও শেষ হয়নি।

ফাইল ছবি

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয় গত ১৭ নভেম্বর। ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও ১০টির মধ্যে মাত্র ৫টি কোর্সের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। বিভাগের অন্য বর্ষেরও চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে।
ফাইল ছবি
আইন বিভাগের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয় গত ১৯ নভেম্বর।

আর প্রথম ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয় ২০ নভেম্বর। তাদের অনেকেরই এখনও পরীক্ষা চলছে।
বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা গত ১০ নভেম্বর শুরু হলেও ৭টি কোর্সের এখনও ১টি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়নি। নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা গত ১৯ নভেম্বর শুরু হলেও এখনও মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়নি।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা গত ৫ ডিসেম্বর শুরু হয়ে এখনও চলছে।

কয়েক দিন আগে ওই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও অন্তত ১৫টি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হলেও শেষ হয়নি।
ফার্মেসি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওবায়দুর রহমান বাবু জানান, একের পর এক সহিংসতায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকছে আর তারা সেশনজটে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছেন।
সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাবাসুম সুমাইয়া হিমু বলেন, “ছয়বার ভর্তি পরীক্ষা পেছানোর পর ভর্তি পরীক্ষা হয়েছিল এবার। আর ভর্তি কার্যক্রম শেষে গত ১০ মার্চ ক্লাস শুরু হয়।

অথচ অন্যন্য বিশ্ববিদ্যালয় জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হয়েছে। ”
এভাবে চলতে থাকলে চার বছরে অনার্স কতদিনে শেষ হবে, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা প্রসঙ্গে উপাচার্য অধ্যাপক মিজানউদ্দিন বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করি শিগগিরই ক্লাস-পরীক্ষা সচল করতে পারবো। ”


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.