আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সব কিছুতেই কি মিডিয়ার অতিরঞ্জন ? : দু'টি ছবি - কিছু কথা

তারা বলে সম্ভব না, আমি বলি সম্ভাবনা

আংশিক নয় পুরো সত্য খবর জানানোর অঙ্গীকার নিয়ে বছরখানেক আগে যাত্রা শুরু করেছিল বসুন্ধরা গ্রুপের দৈনিক কালের কন্ঠ। তার দীর্ঘ এই পথ চলায় হাজারো প্রতিবেদন, স্থিরচিত্র, সম্পাদকীয়, প্রবন্ধ আর নিবন্ধে কতটুকু সত্য, কতটুকু আংশিক সত্য আর কতটুকু ডাহা মিথ্যা তথ্য ছিল তার বিচারের দায়িত্ব বিজ্ঞ পাঠক সাধারণের। তবে সর্বশেষ গত ২৭ সেপ্টেম্বর দৈনিকটির প্রথম পাতায় প্রকাশিত এক কিশোরী বধুর দুহাতে নির্মম নির্যাতনের বিবরণ সম্বলিত এক সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যা নিয়ে গতকাল সামহোয়ার ইন ব্লগ সহ বিভিন্ন বাংলা ব্লগেও বেশকিছু পোষ্ট দেয়া হয়েছিল। তীব্র ঘৃণা ও নিন্দার ঝড় বয়েছে ওই অশিক্ষিত কৃষক স্বামীর বিরুদ্ধে।

আজেকের সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানা গেল সেই সত্য - যে গতকাল প্রকাশিত সেই কিশোরী বধুর ছবিটি কম্পিউটারের মাধ্যমে কারসাজি করে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে। তবে নির্যাতনের গটনা সত্য এবং হোসনে আরার স্বামী ফাজিমুদ্দিন ওরফে মামুনকে গেফতার করা হয়েছে। শ্রদ্ধেয় আবেদ খান সম্পাদিত কালের কন্ঠের মত একটি শীর্ষ দৈনিকের কাছ থেকে এমন ভুল হয়ত কেউ-ই প্রত্যাশা করেনা। সংবাদপত্রের সহসম্পদকদের কে বলা হয় সীমান্তের শেষ প্রহরী। তাদের বাই-ফোকাল মাইন্ড দিয়ে যাচাই-বাছাই করে দেখার অবকাশ ছিল যে, এই ছবিটির মধ্যে কোন কারসাজি আছে কি না।

যতদূর বোঝা যায়, তাদের কারো মনেই কোন প্রশ্ন উদয় হয়নি। এমনকি এই ব্লগেও যারা বিষয়টি নিয়ে কমেন্ট করেছেন, তারাও কোন প্রশ্ন তোলেন নি। কালের কন্ঠ তাদের প্রাথমিক দ্বায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন, তবে পরের দিন প্রথম পাতায় কিশোরীর হাতের প্রকৃত একটি ছবি ছেপে এবং দু:খ প্রকাশ করে তাদের সম্পাদকীয় দায়িত্ব মোটামুটিভাবে পালন করেছেন। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন মোহনগঞ্জ প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। আমরা দুঃখিত Click This Link দেখুন গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনটি: Click This Link তবে চোখ আটকে যায় আজ ২৮ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন পড়ে।

প্রায় সব দৈনিকেরই এটি শীর্ষ অর্বা দ্বিতীয় শীর্ষ প্রতিবেদন। মিডিয়াকে দোষারোপ করে উপদেস্টা ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তবে সারাদেশে তোলপাড় করা পাবনার ডিসি সাহেব ও তার সহকর্মীদের রোদনের সেই ছবিগুলোও কি অতিরঞ্জিত। যা নিয়ে অনেক নিবন্ধ/প্রবন্ধ/টক-শো ও হয়ে গেছে অনেক। ঘটনার চারদিন পরে প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা ও এক প্রতিমন্ত্রী সেখানে গিয়ে আবিস্কার করলেন - কেহই কাদেন নি।

এসবই মিডিয়ার অতিরঞ্জন। উপদেষ্টা সাহেব বলেছেন - গণমাধ্যম সরকারকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করে, কিন্তু মাঝে মধ্যে আমাদের কস্ট হয়। একটি বিষয় নিয়ে এভাবে কার্টুন করে এমন করা উচিত হয়নি। সত্যিই ডিসি সাহেব কেঁদেছিলেন নাকি তার চোখে ময়লা পড়েছে তা প্রমান করার জন্য কি কোন এক্সপার্টের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন আছে? Click This Link পাবনার প্রশাসন কাঁদেননি? Click This Link মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সাহেবের এই বিবৃতি মনে করিয়ে দেয় অর্ধযুগ আগের জোট সরকারের সেই দাম্ভিক উক্তি - দেশে বাংলা ভাই, ইংরেজি ভাই বলে কিছু নেই, এবং থাকলে তা মিডিয়াকে খুজে বের করে দিতে। মিডিয়া ঠিকই খুজে বের করতে যথাযথভাবে সহায়তা করেছিল বাংলা ভাই, শায়খ রহমানদের গ্রেফতারে।

আজ সেই জোট সরকারও অতীত, অতীত বাংলা ভাইরাও। কিন্তু স্মৃতিগুলো অমিলিন। সংবাদপত্রের পাতায় পাতায় সে সময়কার সবকিছু এভিডেন্স হয়ে পড়ে আছে। আর বর্তমান মহাজোটের সামনে তা শিক্ষণীয় ইতিহাস। কিন্তু কে কবে ইতিহাস থেকে শিখেছে।

যে যায় লংকা, সে-ই হয় হুনুমান। প্রবচনটির মত অবস্থা বিগত কিংবা বর্তমান সরকারের লোকদের। পাবনায় সরকার সমর্থিত কতিপয় নেতা-কর্মী প্রশাসনের সঙ্গে যা করল তা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত অবস্থায় নেই। মিডিয়াকে দায়ী করে বৈতরণী পেরুবার প্রচেস্টা করলে, ইমাম সাহেবদের পরিণতিও তাদের পূর্ববর্তীদের চেয়ে ভিন্ন কিছু হবেনা। মিডিয়ারও কখনও কখনও ভুল হয়।

ছোট কিংবা বড়। কালের কন্ঠের মোহনগঞ্জ প্রতিনিধির মত ইচ্ছকৃত (!) ভুলও হয়। বেশিরভাগ ভুলই সংশোধন করা হয়। তবে রাজনীতিবীদ এবং তাদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত মিডিয়া কদাচিৎই তাদের কৃত ভুলের সংশোধন করে। তাদের ভুলের দায় কি গণমাধ্যমের বহন করা উচিত?


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.