আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাকিস্তানে চলে যাচ্ছি !



আমার নিজের জন্য মাঝে মাঝে আফসোস হয় আমি এত দায়িত্ববোধহীন একটা জীব ! ক্যাম্পাস থেকে এত কাছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ তারপরেও প্রথম বছরে দেখা হলো না। পরের বছর ১৫ ডিসেম্বর রা্ত ৩টার দিকে ছাত্রদলের বড় ভাইয়েরা রুমের দরজায় লাথির পর লাথি। ঘুম থেকে না উঠা পর্যন্ত। পাঁচ মিনিটের মধ্যে হল গেটে আয়। তাদের কল্যাণে সেবার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে পারলাম।

পরের দিন ক্যাম্পাসে বিশাল মিছিল হয়েছে...জিয়ার সৈনিক এক হও...। আমি আর সেই দিন, দেশের সকল জিয়ার সৈনিকদের এক করতে গেলাম না। কি কপাল সে দিন, রাস্তায় ছাত্রদলের নেতা ডিপার্টেমেন্টের বড় ভাইয়ের সাথে দেখা ...মিছিলের সময় কৈ ছিলি? মিছিল যখন করিস নাই তখন তোর আর রুমে থাকার দরকার নাই, তুই রুম ছেইড়া দিয়া গেস্ট রুমে উঠবি। অনেক ক্ষমা চাওয়ার পর ভাইয়ের মন গললো। যত কিছু হোক ডিপার্টমেন্টর ছোট ভাই, মাফ..মাফ..।

এরপর আর এগুলা করবি না ! আমিও তারমত (ছাত্রদল নেতা) ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি, কিন্তু আমি এবং আমরা, ভোদাই হে সাধারণ ! তারা মহামানবদের কাছাকাছি, তারা ভুল করতে পারেন না। মনের মধ্যে এত কষ্ট পেলাম। মনে হল বাসায় চলে আসি। আবার হল ছাড়া ভালো লাগে না। স্যারদের কাছে শুনতান আগের দিন গুলা কত সুন্দর।

তখন বার বার মনে হাইতো ইস্ আগে ক্যান জন্মাইলাম না, কত ভালো দিন কাটাইতাম। মিছেলে না গেলে কেউ চড় মারতো না, লবিং ছাড়াই ভালো রুম পাইতাম..! একদিন কোথায় যেন পড়লাম পাকিস্তানের শেষ সময়ে ছা্ত্র সংগঠন এন.এস.এফের ব্যাপক ক্ষমতা ছিল। তারা প্রভোস্টের টেলিফোন নিজের রুমে রাখে, ডাইনিং তাদের জন্য স্পেশাল মেনু, ক্যান্টিনে ফ্রি অথবা নাম মাত্রমূল্যে খাবার, নীলক্ষেত এলাকার চাঁদা এফ রহমান হলের নেতার , গুলিস্তানের চাঁদা পাবে- এফ এইচ হল, আজিমপুর এলাকার হবে এস এম হলের। আর একটা বিশেষ ছাড় ছিল নেতাদের জন্য ! তারা চাইলে যৌনকর্মীদের নিজেদের রুমে নিয়ে যেতে পারতেন। অবশ্য এক যৌনকর্মী এন এফ এসের এক ছাত্রনেতার হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে জুহু হলের (তৎকালীন জিন্না হল) পাঁচ তলা থেকে লাফ দেয়।

২০১০ সালের ক্যাম্পাস গুলোতে বর্তমান ছাত্রনেতারা আর যৌনকর্মী নিয়ে আসেন না (চাইলে হয়তোবা পারেন)। তাবে এন এস এফের নেতারা যা যা করতেন, তার কোনটাই বর্তমান ছাত্রনেতারা বাদ দেননা। তয়তো তাদের কাছে ক্ষমতার সংজ্গা এন এস এফের মতোই। তবে এটা লেফট হ্যান্ড সাইড = রাইট হ্যান্ড সাইডের মতো প্রমাণিত তারা পাকিস্তানি ছাত্রনেতাদের চেয়ে এগিয়ে। আগে তরুণী যৌনকর্মী নিজেকে বাঁচানোর জন্য ৫তলা থেকে লাফ দিতো, এখন ছাত্রলীগ হলে, ক্ষমতার লড়াই টিকে থাকতে নিজের কর্মীদের হলের ছাদ ফেলে দেয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.