আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাগফিরাত, রহমত ও ক্ষমার মাস রমজানুল মোবারক.............



রমজানুল মোবারকের রোজা হলো বান্দার গোনাহ মাফ করানোর ও মাগফিরাত লাভ করার তথা চিরশান্তি, চিরমুক্তি লাভের একটি সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা, একটি অতি নির্ভরযোগ্য সুযোগ। কিন্তু যে এ সুযোগের সদ্ব্যবহার না করে তার ধ্বংস অনিবার্য, তার বিপদ অবশ্যম্ভাবী। আর রোজাদার সম্পর্কে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন : "অনেক রোজাদার রয়েছে যাদের রোজায় অনাহারে থাকা ছাড়া কোনো উপকার নেই; আর অনেক লোক রয়েছে যারা রাতে জাগ্রত থেকে নামাজে দণ্ডায়মান হয়, জাগরণ ছাড়া তাদের কোনো উপকার নেই। " কেননা, সারাদিন রোজা রেখে হারাম অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থসম্পদ দিয়ে ইফতার করলে রোজা বা নামাজ দ্বারা কী উপকার হতে পারে? অতএব, রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করা না হলে, রোজার হক আদায় না করা হলে এর আসল উদ্দেশ্য হয় ব্যর্থ। আত্মশুদ্ধি লাভ করে মানুষ যেন উন্নততর মহত্ত্বর চারিত্রিক গুণাবলীর অধিকারী হতে পারে, সংযম অভ্যাস করে আল্লাহ্পাকের বিধি-নিষেধ পালনে অভ্যস্ত হতে পারে, সবার ওপর এ জীবন-সাধনার মাধ্যমে পরম করুণাময় আল্লাহ্ তায়ালার নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হতে পারে—এটা রমজানুল মোবারক মাসের রোজা মূল প্রশিক্ষণ।

রোজা সর্ম্পকিত হাদিস শরীফঃ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন : "যদি মানুষ জানত রমজানের সত্যিকার মাহাত্ম্য কী তবে আমার উম্মত আকাঙ্ক্ষা করত যেন সারা বছর রমজান হয়। " আর একটি হাদিসে ইরশাদ হয়েছে : "রমজান মুবারকের রোজা এবং প্রতি মাসের তিনটি রোজা অন্তরের সব খুঁত ও সন্দেহ দূর করে। " হজরত উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন : "রমজানুল মুবারকে আল্লাহ্পাককে স্মরণকারী ব্যক্তিকে মাফ করা হয়, আর আল্লাহ্পাকের মহান দরবারে প্রার্থনাকারী ব্যক্তি বঞ্চিত হয় না। " হজরত আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রয়েছে, "রমজানের প্রত্যেক রাতে একজন ফেরেশতা এই ঘোষণা করে, হে কল্যাণকামী! এদিকে মন দাও, কল্যাণের পথে অগ্রসর হও। হে অন্যায়কারী! এবার বিরত হও।

চক্ষু খোল। এরপর সেই ফেরেশতা বলে : আছে কি কোনো ক্ষমাপ্রার্থী? যাকে ক্ষমা করা যায়। আছে কি কোনো তওবাকারী? যার তওবা কবুল করা যায়। আছে কি কোনো প্রার্থনাকারী? যার প্রার্থনা মঞ্জুর করা যায়। " অর্থাত্ রোজাদারের যে কোনো নেক দোয়া আল্লাহপাক কবুল করেন।

যে সিয়াম সাধনায় রত, যে আল্লাহ্পাকের প্রেমে মুগ্ধ হয়ে পালন করছে রোজা, তার সব প্রার্থনা আল্লাহপাকের দরবারে গ্রহণ করা হয়, তার যাবতীয় প্রয়োজনের আয়োজন করা হয়। রোজাদাররা জান্নাতের একটি বিশেষ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। সেই দরজার নাম রাইয়ান। যখন রোজাদারদের প্রবেশ করা শেষ হবে তখন সে দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। অতঃপর অন্য কেউ আর সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।

‘রাইয়ান’ দরজা দিয়ে প্রবেশকারীদের কখনও তৃষ্ণার কষ্ট হবে না। (তিরমিযি শরীফ) রোজা এবং কোরআন শরীফ উভয়ই কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে। রোজা বলবে : "আমার জন্য এই বান্দা খানা-পিনা বন্ধ রেখেছিল তার জন্য আমার সুপারিশ কবুল করা হোক। " কোরআন শরীফ বলবে : "আমার কারণে সে রাত্রিকালে শয়ন করেনি তার জন্য আমার সুপারিশ কবুল করা হোক। অতঃপর আল্লাহ্ তায়ালা উভয়ের সুপারিশই গ্রহণ করবেন।

" হজরত আবু উমামা (রা.) আরজ করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম! উত্তম কোনো আমল আমাকে শিক্ষা দিন। হজরত রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন—রোজা রাখতে থাক, এর চেয়ে উত্তম আমল আর কিছুই নেই। আল্লাহপাক আমাদের রমজানুল মোবারক মাসে মহাত্ম বুঝার এবং সহীহভাবে, যেভাবে রোজা রাখলে আল্লাহ পাক আমাদের উপর রাজি-খুশি হয়ে যাবেন সেভাবে রোজা রাখার তওফিক দান করুন। ...........................................................................................আমিন।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.