আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলামের উপর অযৌক্তিক অপবাদে বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয়

মিথ্যার পতন সন্নিকটে..........

মানুষের বুদ্ধি প্রায়ই স্বার্থের দাস হয়ে থাকে৷ সমকালীন পরিবেশ ও ঘটনাবলী তার বুদ্ধি-বিবেককে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে৷ তাই, মানবরচিত বিধান সাধারণত ত্রুটিপূর্ণ হয়ে থাকে৷ পাক্ষান্তরে, কুরআন প্রণেতা আল্লাহতাআলা কামনা-বাসনা ও স্বার্থের উর্ধ্বে৷ তাঁর বুদ্ধি-বিবেক ত্রুটিহীন৷ তিনিই মানুষ এবং মানুষের স্বভাব প্রকৃতিকে সৃষ্টি করেছেন৷ তাই আল্লাহর বিধানই ত্রুটিহীন হওয়া সম্ভব৷ বিধান রচনায় মানুষের দুর্বলতার কিছু দিক নিম্নরূপ- ১. মানুষের জ্ঞান সীমিত৷ পাক্ষান্তরে আল্লাহ সর্বজ্ঞানী৷ ''মহাকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, তার সবই আল্লাহ জানেন৷ (আর) সকল বিষয় সম্বন্ধে তাঁর জ্ঞান আছে৷'' (৪৯/হুজরাত-১৬) ২. মানুষ প্রায়ই অতীতকে ভুলে যায়, বর্তমান সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করে আর ভবিষ্যতের কোন নিশ্চিত জ্ঞান তার নেই৷ পাক্ষান্তরে, ''(আল্লাহ) তাদের সম্মুখের (বর্তমান বা ভবিষ্যতের) ও পেছনের সকল কিছুই জানেন৷ (২/বাকারাহ-৫৫) ৩. মানুষ অন্য মানুষের মনের ভেতরে কি আছে তা জানে না; কিন্তু আল্লাহ তা জানেন৷ ''পৃথিবী ও মহাকাশের প্রত্যেকটি বস্তু বা বিষয় সম্বন্ধে তাঁর (আল্লাহর) জ্ঞান আছে৷ তোমাদের প্রকাশ্যে বা গোপনে করা সকল কাজই তিনি জানেন এবং (প্রতিটি কাজের সময়) তোমাদের মনের অবস্থাও তিনি জানেন৷'' (৬৪/তাগাবুন-৪) ৪. মানুষ সর্বদা ১০০% পক্ষপাতহীন আইন তৈরি করতে চাইলেও পারে না৷ কিন্তু আল্লাহ এতে সমর্থ৷ ''তিনি (আল্লাহ) সকল কিছুর রব৷ নিজ অর্জন নয় এমন কিছু তিনি কারো উপর চাপান না৷ একজনের বোঝা অন্যজনের উপর তিনি চাপান না৷ (৬/আনআম-১৬৪) ৫. মানুষ জীবনের এক দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ দিকে অবহেলা করে বসে৷ কারণ, তার মেধাশক্তি ও স্মৃতিশক্তিসহ সকল শক্তিই সীমিত৷ পাক্ষান্তরে- ''সকল শক্তি একমাত্র আল্লাহর করায়ত্ত৷'' (২/সূরা আল বাকারাহ-১৬৫) ৬. মানুষের কর্মস্থল সংকীর্ণ৷ কিন্তু- ''তাঁর (আল্লাহর) গদি (ক্ষমতা ও প্রশাসন) পৃথিবী ও মহাকাশ জুড়ে বিস্তৃত৷'' (২/বাকারাহ-২৫৫) ৭. মানুষ মরণশীল৷ পাক্ষান্তরে আল্লাহ চিরঞ্জীব৷ ''আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন (সঠিক বা সার্বিকভাবে কল্যাণকর) আইন প্রণেতা নেই৷ তিনি চিরস্থায়ী এবং সব কিছুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করে রেখেছেন৷'' (২/সূরা আল বাকারাহ-২৫৫) ৮. সময়ের পরিবর্তনে মানবরচিত বিধান বা আইন পরিবর্তিত হয়৷ কিন্তু আল্লাহ সর্বজ্ঞানী বিধায় তার আইনে কোন পরিবর্তন আনার প্রয়োজন পড়ে না৷ আল্লাহ বলেন, ''(ভুল না থাকায়) আল্লাহর বাণীর কোন পরিবর্তন নেই৷ এটি এক মহাসাফল্য৷'' (১০/সূরা ইউনুস-৬৪) ৯. মানুষ নানা বিপর্যয় সৃষ্টির জন্য দায়ী৷ কিন্তু আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টি করেন না৷ কুরআন বলছে- ''মানুষেরই কৃতকর্মের ফলে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবীর জলভাগে ও স্থলভাগে৷'' (৩০/আর রূম-৪১) ১০. আরও কিছু কিছু কারণে মানবরচিত আইন ভুল-ত্রুটি ও অকল্যাণের জন্ম দেয়৷ কারণ, -যারা আইন রচনা করে, তারা অনেক সময় সব মানুষের কল্যাণের পরিবর্তে কোন গোষ্ঠী বা শ্রেণীর স্বার্থে আইন তৈরি করে -কখনও কখনও অপশক্তির চাপে বা স্বেচ্ছায় দেশের বেশির ভাগ লোকের ঈমান-আকীদা (বা চেতনা বা বিশ্বাস) বিরোধী আইন তৈরি করা হয় পাক্ষান্তরে, আল্লাহর বিধান কোন অত্যাচারী গোষ্ঠীকে মতা আঁকড়ে রাখার সুযোগ দেয় না৷ আর সেজন্যই, আল্লাহর আইনের পক্ষে নিয়মতান্ত্রিক প্রচেষ্টা কোন কালেই বন্ধ হয়নি৷ মানবরচিত ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থগুলোর একটিও আল-কুরআন (তথা ইসলাম) -এর সাথে তুলনাযোগ্য নয়৷কারণ- -কুরআনের একটি কথাকেও আজ পর্যন্ত কেউ অবৈজ্ঞানিক বলে প্রমাণ করতে পারেনি৷ -কুরআনে এমন সব বৈজ্ঞানিক তথ্য রয়েছে যা নাযিল হয়েছে ১৪শত বছরেরও অধিক পূর্বে আর তার সত্যতা প্রমাণ হচ্ছে এ শতাব্দীতে৷ -একমাত্র কুরআনই অবিকৃত অবস্থায় আছে৷ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ বিকৃত হয়ে গেছে৷ এ কারণেই, বিশ্বে কুরআনের সকল কপির মধ্যে বিন্দু পরিমাণ তারতম্যও নেই; যা অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের ক্ষেত্রে আছে৷ -বিশ্বের সকল ধর্মগ্রন্থ নষ্ট হয়ে গেলে শুধু কুরআনই হাফেজদের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব৷ -তাছাড়া, সম্প্রতি আবিষকৃত কুরআনে ব্যবহৃত বর্ণসমূহের মধ্যে বিদ্যমান নিখুঁত গাণিতিক বন্ধনও কুরআনকে অদ্বিতীয় করে দিয়েছে৷ (আহমেদ দীদাত রচিত অলৌকিক কিতাব আল-কুরআন দ্রষ্টব্য) গাণিতিক সমস্যার সঠিক উত্তর হয় এক রকম আর ভুল উত্তর হয় বহু রকম৷ ঠিক তেমনি, সঠিক জীবনবিধানও হতে পারে কেবল একটি আর ভুল ধর্ম হয়ে থাকে অসংখ্য৷ সঠিক সেই বিধান হলো কুরআনিক জীবনবিধান (ইসলাম); যা ব্যতিক্রমধর্মী, ভ্রান্তিহীন ও শ্রেষ্ঠ৷ কারণ- -প্রায় সকল ধর্মের নামকরণ হয়েছে ঐ ধর্মের প্রবর্তকের নাম অনুসারে৷ কিন্তু ইসলামের নামকরণ কোন ব্যক্তির নামানুসারে হয়নি৷ -একমাত্র ইসলামই স্বয়ংসম্পূর্ণ হবার যৌক্তিক দাবি তুলতে পারে৷ -পৃথিবীতে এমন বহু ধর্ম আছে যার আইন মানুষকেই সংশোধন করতে হয়৷ যে ধর্ম বা আইন ভুল এবং যা মানুষকেই সংশোধন করতে হয়, তা কি আল্লাহ প্রেরিত ধর্ম হতে পারে? -কোন কোন ধর্মে দেখা যায় উপাসনা সবাইকে করতে হয় না৷ এমনকি সবার উপাসনার অধিকার পর্যন্ত নেই৷ কিন্তু ইসলামে এ জাতীয় সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি ও পক্ষপাত একেবারেই অনুপস্থিত৷ -যারাই শিতি ও জ্ঞানী (স্বার্থবাজ, মূর্খ বা অতিদরিদ্র নয়) তারা কেউই কোনদিন ইসলামের চেয়ে অন্য ধর্মকে অধিক যুক্তিগ্রাহ্য মনে করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করেছে এমন নজির ইতিহাসে নেই বললেই চলে৷ কিন্তু অন্যান্য ধর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণের দৃষ্টান্ত রয়েছে ভুরি ভুরি৷ কাজেই, সমস্যা সমাধানে অন্যান্য ধর্ম ও মতবাদ ব্যর্থ৷ তাই, সত্‍ মানুষ ও সুন্দর সমাজ গড়ার ক্ষেত্রেও মানবসৃষ্ট ধর্ম বা মতবাদ পরিহার করে কুরআনের দিক-নির্দেশনাই (যা নির্ভুল) অনুসরন করা প্রয়োজন৷

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.