আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কালের চিৎকার – ১

কালের চিৎকার – ১ -------------------------------------- রাজনীতির ঔদার্য-মাধুর্য এখন আর তেমন অবশিষ্ট নেই । রাজনীতিতে স্বচ্ছ-মানুষ, সাদা- মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত কমছে । কমছে নৈতিকতা, আদর্শ। এখন এখানে অর্থের ঝনঝনানি, শক্তির দাপট, অস্ত্রের মহড়া। এসব যাদের আছে, রাজনীতি এখন তাদেরই করায়ত্ব।

রাজনীতির ‘নীতি’ এখন প্রায় নির্বাসনে। । “রাজনীতি” শব্দটার স্বাভাবিক ব্যাখ্যা দাঁড়ায়,প্রজা পালনে রাজা কর্তিক অনুসারিত নিতি। আর নীতির সাথে সত্য,সুন্দর,কল্যান ও ন্যায়বোধের এক অমোঘ সম্প্রীতি আছে। একদা রসিক রাজা রাগিয়া- মাগিয়া গোপালকে শুধাইয়াছিলেন, ওহে গোপাল তোমাতে আমাতে ব্যবধান কতদূর, জান কি তা! প্রত্যুত্তরে সপ্রতিভ গোপাল হাত দিয়া দূরত্ব মাপিয়া বলিয়া দিয়াছিল, এই তো মাত্র তিন হাত।

রসজ্ঞ রাজন সহাস্যবদনে তাহাই মানিয়া লইয়াছিলেন। কিন্তু ইহা গল্প, বাস্তব নয়। প্রকৃতপক্ষে রাজা ও প্রজার মধ্যে দূরত্ব যোজন যোজন, উহা অনতিক্রম্য। সভা-সমাবেশ করিতে বিরোধী দল পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি চাহিয়াও পায় না। পক্ষান্তরে শাসক দলের কোনো অনুমতির প্রয়োজন হয় না।

তাহারা কাহারও অনুমতি চাহেও না .ডেমোক্র্যাসির যুগে এহেন উপসংহার সুশীলগণের মনে মানিবে না। সরকার গণজাগরণ মঞ্চ কে তিন স্তরে নিরাপত্তা দিতে কণ্ঠিত হয়নি। অথচ হেফাজতের সমাবেশে একরাতের নিরাপত্তা নিয়েই শঙ্কিত। আবার ফিরে আসি রাজার গল্পেঃ রাজা বীরবলকে সঙ্গে নিয়ে বাজার গেলেন। রাজা হাঁটছে, বীরবল হাঁটছে, হঠাৎ রাজা দেখতে পেল এককৃষক বেগুন বিক্রি করছে।

কি চমৎকার দেখতে,এত সুন্দর জিনিস আমি আগে কখনো দেখিনি। এটা কি আমার রাজ্যে জন্মে?এই ফলটির নাম কি বীরবল? রাজা জানতে চাইল । বীরবল জানাল এর নাম রাজামশায় বেগুন। আপনি ঠিকই বলেছেন, এত সুন্দর ফল আগে আমিও দেখিনি। এটা আমাদের রাজ্যেই হয় রাজামাশায়।

সত্যিই তো, এটা দেখতে চমৎকার। এটা রান্না করে খেতে হয়। রাজা বলল, এটা খেতে কেমন বীরবল? দারুন খেতে, অতি সুস্বাদু খাবার,একবার খেলে সারাজীবন মনে থাকবে। মানুষতো এই বেগুন আছে বলেই আপনার রাজ্যে বাস করছে। প্রাসাদে ফিরে রাজা বেগুন দিয়ে খেতে বসেছে।

কিন্তু কোনো ভাবেই খেতে পারছেনা। ডেকে পাঠাল বীরবলকে। এসব কি? এসব কি এনেছ?আমি তো খেতে পারছিনা। রাজা মাশায়, বেগুন আবার মানুষ খায় নাকি। এর নামই হলো বে গুন, যার কোন গুন নেই।

এটা আপনার কোনো ক্রমেই খাওয়া সম্ভব নয়। এসব রাজপ্রাসাদের খাবার তো নয়ই। খুবই জঘন্য। বাজারে এটা কেউ কিনে না। এসব ঘোড়ার খাবার রাজামশায়।

রাজা তো অবাক। প্রশ্ন করলো, কিন্তু তুমিই তো বাজারে বলেছ, এটা সুন্দর, খেতে চমৎকার। জ্বি রাজা মশায় আমিতো আপনার চাকরি করি, বেগুনের নয়। আমরাও তো রাজার দেশে বাস করি। রাজার ভালই আমাদের ভাল, রাজার মন্দই আমাদের মন্দ।

আমরা সবসময় রাজার কথা বিশ্বাস করি। তোফায়েল আহমেদ,মতিয়া চোধুরী সহ আওয়ামী লিগের এক কয়েক ডজন নেতাই ওইদিন বাজারে (রাজপথে থেকে) বলেছিল বেগুন(তত্ত্বাবধায়ক সরকার) খুব ভাল। এখন রাজা(শেখ হাসিনা) যখন বলল এটা খারাপ, তখন তোফায়েল সাহেবেরা বলল বেগুন(তত্ত্বাবধায়ক সরকার) কোন সবজি এ (সিস্টেম) হতে পারেনা। এই হচ্ছে আমাদের মানসিক দাসত্বের গনতন্ত্র। আর এটা বোঝার জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হতে হয়না।

ডঃ কামাল যখন বললেন তোফায়েল আহমেদ কে মুখ খুলতে তখন তোফায়েল সাহেব কি বললেন তা সবারেই জানা। মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানি বলেছিলেন "Tongue is my big enemy” কিন্তু এখন আমাদের নেতারা সেটাকে বন্ধু বানিয়ে ফেলেছেন। আমরা কি পারিনা রাজা-প্রজার রাজনীতি থেকে বের হয়ে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে। স্বাধীনতার ৪২ বছরে না হলে আর কখন হবে, সেটা না হয় প্রশ্নই থেকে গেল? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।