আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বহির্বিশ্বে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির বীজ ও বীক্ষণ



বহির্বিশ্বে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির বীজ ও বীক্ষণ ফকির ইলিয়াস ========================================= নিউইয়র্কে ১৭ ও ১৮ জুলাই ২০১০ দুই দিনব্যাপী এবিসি (আমেরিকা-বাংলাদেশ-কানাডা) সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। হাজারও মানুষের মিলনমেলায় মুখরিত ছিল নিউইয়র্কের ম্যারি লুইস একাডেমি প্রাঙ্গণ। সেমিনার, সাহিত্য, সংস্কৃতি আর নাচে-গানে অভিবাসী বাঙালিরা মেতেছিলেন আনন্দে, শিকড়ের সন্ধানে। এই সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন একটি গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার ছিল। বিষয় 'তৃতীয় বাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতি-শিল্পচর্চার যথার্থ মূল্যায়ন হচ্ছে কী?' এই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রবাদপুরুষ শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।

এই সেমিনারের একজন প্যানালিস্ট হিসেবে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল আমারও। বলা দরকার, তৃতীয় বাংলা বলতে ঢাকা ও কলকাতার বাইরে অর্থাৎ বহির্বিশ্বকে বুঝানো হয়েছে। আমি ইতোমধ্যেই লক্ষ্য করেছি, ব্রিটেন প্রবাসী বাঙালিরা নিজেদের 'তৃতীয় বাংলা'র অধিবাসী বলে দাবি করতে শুরু করেছেন। এর সর্বশেষ প্রমাণ হিসেবে 'তৃতীয় বাংলার কবি ও কবিতা' নামে একটি কাব্য সংকলন সম্পাদনা করেছেন ব্রিটেন অভিবাসী কবি আবু মকসুদ। ব্রিটেন অভিবাসী কবি-সাহিত্যিক-শিল্পীরা সেই দাবি অব্যাহত রেখেছেন।

একই অবস্থা পরিলক্ষণ করছি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও। তার কারণ হলো এই, অধিক পরিমাণ অভিবাসী আসার সুযোগে গেল ক'বছরে কয়েক লাখ বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট হয়ে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। এখানে সাহিত্য-সংস্কৃতি শিল্পের চর্চায় গড়ে উঠেছে বহুমুখী উদ্যোগ। জন্ম নিয়েছে অনেক সংগঠন, প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিত্ব। বিশেষ করে ফোবানা সম্মেলন, এবিসি সম্মেলন, নজরুল সম্মেলন, কবিতা সম্মেলন, উত্তর আমেরিকা সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্মেলন, রবীন্দ্র সম্মেলন, বইমেলা, গ্রীষ্ম মৌসুমে বড় বড় পথমেলা, সাংস্কৃতিক অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানের মতো সুবৃহৎ আকারের আয়োজন হচ্ছে প্রতিবছর।

এই সাহিত্য-সংস্কৃতির বীজ বপন প্রক্রিয়া, এর থেকে ফসল কী ঘরে উঠছে? এই প্রশ্নটিই মুখ্য ছিল এবারের এবিসি সম্মেলনের সেমিনারে। এ বিষয়ে বলতে গিয়ে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় জানালেন তার অভিব্যক্তির কথা। তিনি বললেন, 'এই সুদূর পরবাসে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা হচ্ছে সেটাই আমার কাছে বড়। বহির্বিশ্ব থেকে এ মুহূর্তেই খুব বড় প্রতিভা হয়তো আমি প্রত্যাশা করি না। তবে আমি আশাবাদী চর্চা অব্যাহত থাকলে আগামীতে বড় মননশীল লেখক-সাহিত্যিক প্রবাস থেকে বেরিয়ে আসবেন- সে প্রত্যাশা আমি করতেই পারি।

' শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য-সংস্কৃতি মূলত বেঁচে থাকবে বাংলাদেশকে ঘিরে। যে দেশের মানুষ তাদের মাতৃভাষার জন্য প্রাণ বিসর্জন দিতে পারেন, তারা এই সাহিত্য বাঁচিয়ে রাখবেন না তো কে রাখবে? তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ হিন্দি সংস্কৃতির আগ্রাসনের শিকার। আমি যখন বাংলাদেশে যাই তখন বাংলাদেশের মানুষের আত্মীয়তা আমাকে বারবার ঋণী এবং সমৃদ্ধ করে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, যদি ভারতবর্ষ আমাকে তাড়িয়ে দেয়, তবে জানি বাংলাদেশ আমাকে বুকে তুলে নেবে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় যে প্রত্যয় নিয়ে কথা বলেছেন, সেই প্রত্যয় বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন অভিবাসী বাঙালিরা।

আমরা জানি, 'অন্ধ হলেই প্রলয় বন্ধ থাকে না। ' কেউ স্বীকৃতি দেবে কি দেবে না- সে তোয়াক্কা না করেই বিদেশে অবস্থানরত বাঙালিরা অব্যাহত রেখেছেন তাদের প্রচেষ্টা। ব্রিটেনের 'সাপ্তাহিত সুরমা' কিংবা নিউইয়র্কের 'সাপ্তাহিক ঠিকানা'র মতো সুপ্রতিষ্ঠিত কাগজগুলোর কথা তো বলা যায় বটেই। এ সময়ে অনলাইন বাংলা ওয়েবসাইটগুলো বহির্বিশ্বে রীতিমতো যে সাড়া ফেলে দিয়েছে তা সত্যি বিস্ময়কর। এ প্রসঙ্গে কানাডা থেকে প্রকাশিত দুটি বাংলা সংবাদ সাহিত্য-সংস্কৃতিবিষয়ক ওয়েবসাইট নতুনদেশ ডট কম এবং বেঙ্গলিটাইমস ডট সিএ - এর নাম উল্লেখ না করলেই নয়।

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে, আমাদের লেখক বেশি পাঠক কম। বাঙালির পাঠাভ্যাস একটি নির্দিষ্ট বলয়ে আবদ্ধ। এ বলয় যেন কোনমতেই ভাঙা যাচ্ছে না। কেন যাচ্ছে না? এ প্রশ্নটি আমি সবিনয়ে বোদ্ধা সমাজের কাছে করতে চাই। ১৫ কোটি নাগরিকের দেশ বাংলাদেশ, রাষ্ট্রের প্রথম সারির কোন কবির কাব্যগ্রন্থ এক হাজার কপিও চলে না।

এটা গোটা জাতিসত্তার দুর্ভাগ্যই বলতে হবে। একই অবস্থা প্রবাসেও। নিউইয়র্কে বসবাস করেন বিরলপ্রজ কবি শহীদ কাদরী। ২০০৯-এর বইমেলায় তার 'আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও'- শিরোনামে চতুর্থ কাব্যগ্রন্থটি বের হয়। এই বইটি কি যুক্তরাষ্ট্রে শত শত কপি চলেছে? না চলেনি।

অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি রয়েছেন যারা নিজেদের কবি দাবি করেন। তাদের পঠন-পাঠনের দ্বীনতা দেখলে খুব বেশি শিউরে উঠতে হয়। দুই বহির্বিশ্ব থেকে বেশ কিছু লিটল ম্যাগাজিন নিয়মিত বের হয়। এর মধ্যে ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত 'শব্দপাঠ' নামের লিটল ম্যাগাজিনটি পাঠক মহলে একটি বিশেষ স্থান করে নিতে সমর্থ হয়েছে। 'শব্দপাঠ'-এর সম্পাদকমন্ডলীতে রয়েছেন-কবি আতাউর রহমান মিলাদ, আবু মকসুদ ও কাজল রশীদ।

পরিপুষ্ট এই লিটল ম্যাগাজিনটি নবীন-প্রবীণ লেখকের সমন্বয় ঘটিয়ে যাচ্ছে প্রায় এক দশক ধরে। অভিবাসে থেকে যারা লেখালেখি করেন তাদের অর্জন কী? এ প্রশ্নটি আসতেই পারে। যুক্তরাষ্ট্র বেশ ক'জন লেখক-সাহিত্যিক বাস করেন, যারা 'বাংলা একাডেমী পুরস্কার'প্রাপ্ত। দিলারা হাশেম, শহীদ কাদরী, ড. জ্যোতি প্রকাশ দত্ত তারা একাডেমী পুরস্কার পাওয়ার পরই পরবাসী হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে লেখালেখি শুরু করে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছিলেন ঔপন্যাসিক মোজাম্মেলন হোসেন মিন্টু।

সদ্য প্রয়াত এই লেখক প্রবাসে বসেই করতেন তার শ্রেষ্ঠ লেখালেখি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অধ্যাপক আলী আনোয়ারও বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছেন সম্প্রতি। প্রাপ্তির পুষ্পার্ঘ আরও আছে। সিংহভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রে থেকে লেখালেখি করে 'অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার' পেয়েছেন পূরবী বসু। ব্রিটেন প্রবাসী লেখিকা সালেহা চৌধুরীও সম্প্রতি পেয়েছেন এই 'অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার'।

ঢাকার এক সময়ের প্রভাবশালী দৈনিক আজকের কাগজ প্রবর্তন করেছিলেন 'কাগজ সাহিত্য পুরস্কার'। এই পুরস্কারটি পেয়েছিলেন কানাডা অভিবাসী গল্পকার সালমা বাণী। মূলত যিনি প্রবাসী লেখিকা। বিদেশে অবস্থান করে বাংলাদেশের মূলধারার সাহিত্যের সঙ্গে যারা নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন তাদের লেখনীর মাধ্যমে তাদের সংখ্যা মোটেই কম নয়। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসী কবি তমিজ উদ্দীন লোদী, কবি শামস আল মমীন, কবি ওমর শামস, প্রাবন্ধিক হাসান ফেরদৌস, কানাডা অভিবাসী কবি সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, কবি ইকবাল হাসান ,কবি ফেরদৌস নাহার, গল্পকার সাদ কামালী, কবি মাসুদ খান, কবি নাহার মণিকা প্রমুখ নিয়মিত লিখছেন।

ব্রিটেন অভিবাসী কবি আহমদ ময়েজ, শাহ শামীম আহমেদ, সৈয়দ রুম্মান. টি এম আহমেদ কায়সার, শামীম শাহান, ফারুক আহমেদ রনি, ফরীদ আহমদ রেজা, ইসহাক কাজল প্রমুখ সক্রিয় রয়েছেন লেখালেখিতে। অস্ট্রেলিয়া অভিবাসী কবি সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ, আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ, আবুল হাসনাত মিল্টন ও আকিদুল ইসলাম লিখেছেন নিয়মিত। সিডনি প্রবাসী অজয় দাশগুপ্ত জাতীয় দৈনিকগুলোতে লিখছেন নিয়মিত । আমি মনেপ্রাণ বিশ্বাস করি অভিবাসন কোন প্রকৃত লেখকের কর্মকা-কে বিপন্ন কিংবা বাধাগ্রস্ত করে না। অভিবাসী সাহিত্যিকদের সর্বোচ্চ সাহিত্য সম্মান 'নোবেল পুরস্কার' পাওয়ার অনেক ঘটনা আমরা জানি।

বরং অভিবাসী লেখকের সুবিধা হচ্ছে এই, তিনি একাধারে জন্মভূমির ফেলে আসা স্মৃতি আর গ্রহণ করা অভিবাসী সমাজের আবহের বাস্তবতা, দুটিই পরখ করতে পারেন পাশাপাশি। ফলে তার লেখার প্রেক্ষাপট শুধু সমৃদ্ধই হয় না বরং খুলে দেয় দেখার চতুর্থ নয়ন যুগল। বাংলাদেশের বিশিষ্ট কিছু চিত্রশিল্পী এখন পরবাসী। ফ্রান্স অভিবাসী মনিরুল ইসলাম, কানাডা অভিবাসী সৈয়দ ইকবাল, যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসী তাজুল ইমাম অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য নাম। প্যারিস অভিবাসী বিশিষ্ট মূকাভিনেতা পার্থপ্রতিম মজুমদার, ক্যালিফোর্নিয়া অভিবাসী মূকাভিনেতা মাশহুরুল হুদা, তাদেরও আসন উজ্জ্বল করে রেখেছেন আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে।

বিশিষ্ট আলোকচিত্রী আবুল ফজল, ওবায়দুল্লাহ মামুন এখন বসবাস করেন নিউইয়র্কে। তারা প্রবাসী প্রজন্মের প্রতি বপন করে যাচ্ছেন খাঁটি বাঙালি মনন ও মনীষা। ফিরে আসি শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আড্ডা প্রসঙ্গে। বাংলা সাহিত্যের বর্তমান গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে বেশ উচ্চাশা ব্যক্ত করলেন তিনি। বললেন, আমাদের কথাসাহিত্য সমকালীন বিশ্বপ্রবাহকে স্পর্শ করছে খুব ঘনিষ্ঠভাবেই।

আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নকে আমাদের গল্পে-উপন্যাসে ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারছি বলেই আমার মনে হয়। তার বিখ্যাত উপন্যাস 'মানবজমিন' নিয়ে একটি ধারাবাহিক প্রচারিত হচ্ছে ঢাকার এই স্যাটেলাইট চ্যানেলে। এ প্রসঙ্গে বললেন, মূল চরিত্র ঠিক রেখে সামান্য যোগ-বিয়োগ করা হয়েছে। তিনি আরও জানালেন, এবার আমেরিকা থেকে ফিরে প্রবাসে বাঙালিয়ানা নিয়ে একটি উপন্যাস লেখার কাজে হাত দেবেন। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বললেন, সাহিত্য কোন শর্টকাটের বিষয় নয়।

সিদ্ধিলাভ করতে হলে সাধনা চালিয়ে যেতেই হবে। একজন মেধাবী লেখককে প্রতিষ্ঠিত করতে বড় বড় মিডিয়া হাউসের বিশেষ ভূমিকা থাকে। এ প্রসঙ্গে 'আনন্দ পাবলিশার্স' এর নাম বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে উল্লেখ করা যায়। বাংলাদেশে এমনকি বিদেশেও এমন প্রতিষ্ঠানের আরও প্রসার লাভ প্রয়োজন। বিদেশ থেকে যেসব বাংলা কাগজ প্রকাশিত হয়; তারাও প্রবাসের মেধাবী লেখক-লেখিকাদের গ্রন্থ প্রকাশে এগিয়ে আসতে পারেন।

হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন বিত্তবান সাহিত্যানুরাগীরাও। বিদেশে নতুন প্রজন্মের অনেক বাঙালি ছেলেমেয়ে আছে যারা ইংরেজিতে নিয়মিত লিখছে। তাদের লেখায়ও উঠে আসছে সেই বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশকে ছেড়ে এসেছেন, তাদের পিতামাতা। এসব মেধাবী তরুণ-তরুণীর লেখা গ্রন্থাবলিরও প্রকাশনার সুযোগ থাকা উচিত।

কারণ এদের শাণিত চেতনায় বাংলা ভাষা সংস্কৃতির বীজ পুঁতে দেওয়ার জন্যই তো আমাদের দীর্ঘ এই পরবাস। নিউইয়র্ক , ২ আগস্ট ২০১০ ----------------------------------------------------------------------- দৈনিক সংবাদ । ঢাকা । ৬ আগস্ট ২০১০ শুক্রবার প্রকাশিত ছবি - ১ . এবিসি সম্মেলনে আসমা আব্বাসী , শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, ও মোস্তফা জামান আব্বাসী . ২ . এবিসি সম্মেলনের বইস্টলে বাংলাদেশের ইংরেজী ভাষার বই কিনছেন একজন বিদেশিনী ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.