আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছাত্রের যোগ্যতা কি প্রাইভেট বা পাবলিক এ সীমাবদ্ধ?

একদিন আমাদের স্বপ্ন পূরন হবেই। বাংলাদেশ একদিন সোনার বাংলা হবেই।

বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, আমাদের দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষেরা প্রাইভেট, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কোনটি শ্রেষ্ঠ তা নিয়ে বেশ আটঘাট বেঁধে তর্কে নেমেছেন। কেউ পাবলিক এর প্রশংসা করছেন, কেউবা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে এমন ভাবে উপস্থাপন করছেন যে তাতে করে মনে হয়, পাবলিক এ যারা পড়েন তারা বোধহয় ভিনগ্রহের বাসিন্দা। অন্য বেশ কয়েকটি পোস্টে দেখলাম এই প্রবনতা।

সে যাই হোক, এমনিতে যখন বিতর্ক তুঙ্গে, তখন যেন, একে আরো বেশি জোড়ালো করতে এক অভাবনীয় ভূমিকা রাখল বাংলাদেশ সরকার। সাম্প্রতিক বাজেটে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার উপর ৪.৫% ট্যাক্স আরোপ করায়, এর পক্ষে বিপক্ষে নানা মতবাদ গড়ে উঠছে। আবারো সবাই ইট-পাটকেল ছোড়াছুড়িতে ব্যাস্ত হয়ে পরলেন। এর মাঝে কিন্তু, মুনাফাভোগীরা ঠিকমতই তাদের কাজ করে যাচ্ছেন। এজন্য আমাদের মত হুজুগে বাঙ্গালিদের নির্বুদ্ধিতাকে ধন্যবাদ না জানিয়ে পারলাম না।

এই যে আমরা প্রাইভেট না পাবলিক-এই বার্নিং ইস্যু নিয়ে তর্ক করছি, একবার ভেবে দেখুনতো, আপনি কি সকল পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে বিবেচনা করেছেন? সমস্যা শুধু পাবলিক অথবা প্রাইভেট এ নয়, সমস্যা আমাদের শিক্ষা কাঠামোতে। ভালো দিক অথবা খারাপ দিক সে তো যেকোন ভার্সিটিতেই থাকতে পারে, প্রাইভেট না পাবলিক সেটা তো মুখ্য বিষয় নয়। তাহলে, এই বিতর্কের সুত্রপাত কোথা থেকে? আমি মেনে নিচ্ছি যে, কতিপয় বেসরকারি বিশ্ব্যবিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শিক্ষা বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু, সেটিতো সকলের জন্য সত্যি না। এখন অনেক ভাল মানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে অনেক ভাল মানের শিক্ষার্থী আছেন।

যদিও বুয়েট বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনা করবনা আমি, নাহলে, সমাজের বিশিষ্ট বিবেকবানেরা আমাকে তুলোধুনো করবেন। সারাদেশে প্রতি বছর কত শত ছাত্র ছাত্রী ইন্টার পাস করেন, তাদের মধ্যে কয়জন সরকারিতে ভর্তি হতে পারেন? মোট শিক্ষার্থীর তুলনায় এ সংখ্যা বড়ই অপ্রতুল। তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যে স্বল্প কিছু আসনে যারা ভর্তি হন, তারা বাদে বিপুল সংখ্যাক শিক্ষার্থী কোথায় যাবে বলতে পারেন? তাদের সামনে, তিনটি পথ খোলা থাকে- ১. যাদের আর্থিক সামর্থ্য আছে, তারা প্রাইভেট এ ভর্তি হতে পারে। ২. যাদের তা নাই, তারা হয় একবছর ড্রপ দিয়ে আবার সরকারিতে চেষ্টা চালায় ৩. তানাহলে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি কলেজ গুলোতে ভর্তি হয় (যারা অন্যান্যদের চাপে পর্যবসিত)। তাহলে, আমরা মেধার সংঙ্গা দিব কিসের মানদন্ডে? যখন ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন একজন পরিক্ষার্থী, তারও স্বপ্ন থাকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার, কিন্তু সবার পক্ষে তো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সম্ভব হয়না।

বলুন তার কি করা উচিত? স্বপ্নকে বিসর্জন দেয়া উচিত নাকি অন্য কোন বিকল্প উপায় বেছে নেয়া উচিত? আবার, যদি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা ধরেন, তাহলে তাদের কাছে যে মানের শিক্ষক রয়েছে, প্রাইভেট তা পায়না, এছাড়াও অনেক অবকাঠামগত সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্ছিত। তবে এসব কিছু বিবেচনা করে, একজন শিক্ষারথীর মেধা বিবেচনা করা উচিত না বলে আমি মনে করি। একজন শিক্ষার্থীর যোগ্যতা সেখানেই, যেখানে সে সকল প্রশ্নের উর্দ্ধে উঠে নিজের মেধাকে প্রমান করতে পারে, আর এমন শিক্ষার্থী সরকারি বা বেসরকারি যেকোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আসতে পারে। সরকারের উচিত, মেধাবীদের পৃষ্ঠপোষকতা করা। ট্যাক্স, ভ্যাট এসব না বসিয়ে মেধাবীরা যাতে দেশের কল্যানে কাজে আসতে পারেন, সে ব্যাবস্থা করা।

আসুন, আমরা কে বড়?-এই বিতর্কে না গিয়ে নিজের দেশের কল্যানে নিবেদিত হই। যদি আমার কোন কাজে দেশের কল্যান হয়, তাতে আমি সরকারি না বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, সে প্রশ্ন অমূলক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.