আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শ্রীশান্তের ‘পাপের’ কান্না

ইউটিউবে সবচেয়ে বেশিবার দেখা ক্রিকেট ভিডিওগুলোর একটি তাঁর কান্না। আইপিএলেই হরভজন সিংয়ের হাতে চড় খেয়ে কেঁদেছিলেন মাঠে। আইপিএলই কাল আবার কাঁদাল শ্রীশান্তকে, এবার পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে। পুলিশের একটি সূত্র টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছে, চোখের পানি ঝরিয়ে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন শ্রীশান্ত। স্বীকার করেছেন স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার কথা! সেবার মাঠে অশ্রু ঝরিয়ে সমবেদনা পেয়েছিলেন অনেকের।

এবার পাশে নেই কেউ।
স্বীকার করেছেন নাকি গ্রেপ্তার হওয়া তিন ক্রিকেটারের আরেকজন অঙ্কিত চাভানও। পুলিশের আরেকটি সূত্র এনডিটিভিকে বলেছে, জিজ্ঞাসাবাদে ভীষণ ভেঙে পড়েছেন অঙ্কিত চাভান। বলেছেন, ‘মস্ত এক ভুল’ করে ফেলেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে আটক ১১ জুয়াড়িকেও, যাঁদের একজন আইপিএলেই খেলা সাবেক এক ক্রিকেটার! ২০০৯ আইপিএলে নেটে এক পেসারকে দেখে দারুণ পছন্দ হয়ে গিয়েছিল শেন ওয়ার্নের।

সেবারই রাজস্থান রয়্যালসে নিলেন তাঁকে। আইপিএল অভিষেকে ৩ উইকেট, পরের ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা, মাঠে নেমেই হইচই ফেলে দিলেন সেই পেসার। পরে রাজস্থানের হয়ে তিন মৌসুমে খেলেছেন ২৩ ম্যাচ। পারফরম্যান্স পড়তির দিকে থাকায় গত মৌসুম শেষে তাঁকে ছেড়ে দেয় দলটি। সেই পেসার, অমিত সিং ক্রিকেটার থেকে হয়ে গেছেন জুয়াড়ি! পুলিশের এফআইআরে যদিও নাম লেখা হয়েছে অমিত কুমার।

কিন্তু কাল নিশ্চিত হওয়া গেছে, অমিত কুমারই আসলে অমিত সিং। শ্রীশান্তদের মতো অমিতকেও বহিষ্কার করেছে বিসিসিআই। স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারি নিয়ে করণীয় ঠিক করতে রোববার জরুরি সভা ডেকেছে ভারতীয় বোর্ড।
শ্রীশান্তের আইনজীবী দীপক প্রকাশ কাল দুপুরে দাবি করেছিলেন, তাঁর মক্কেল পুরোপুরি নির্দোষ, ‘দয়া করে শ্রীশান্তকে সমর্থন করুন, বেচারা পুরোপুরি নির্দোষ। ওর বিরুদ্ধে ভুল খবর ছড়িয়ে আমরাই বরং অপরাধ করছি।

ওর হয়ে আমি নিশ্চিত করছি, পুরোপুরি নির্দোষ ও। কোনো জুয়াড়ির সঙ্গে কখনো কথা বলেনি, কোনো অর্থ নেয়নি, কিছুই প্রমাণ হয়নি। ’ অজিত চান্ডিলার আইনজীবী তো পুরো ঘটনাকে বলছেন পুলিশের সাজানো নাটক, ‘ফোনালাপ রেকর্ড করতে পুলিশ নিজেই আইনবিরোধী ও অবৈধ পন্থার আশ্রয় নিয়েছে। অপরাধজগতের হুমকি ছিল তাদের কথামতো খেলার, কিন্তু অজিত তাতে রাজি হননি। পুরো ঘটনাটাই সাজানো, কারণ সাম্প্রতিক অনেক কারণে চাপের মুখে থাকা দিল্লি পুলিশ নিজেদের ভাবমূর্তি বদলাতে চাইছে।

এটি একটি পরিকল্পিত নাটক। ’ তিন ক্রিকেটারের পরিবারও তাঁদের নির্দোষ দাবি করেছে। আগামী মাসেই বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল অঙ্কিত চাভানের। তাঁর ভাই নিহারের দাবি, ‘আমরা খুব সাধারণ পরিবার, এত কিছু বুঝি না। অঙ্কিত অনেক কষ্ট করে এই পর্যায়ে এসেছে, ও কখনোই এমন কাজ করতে পারে না।


তবে দিল্লি পুলিশ আবারও নিশ্চিত করেছে, তাদের হাতে পর্যাপ্ত প্রমাণ আছে। আছে শত শত ঘণ্টার ফোনালাপের রেকর্ড। একটি সূত্র এনডিটিভিকে বলেছে, জুয়াড়িদের সঙ্গে শ্রীশান্তের সরাসরি ফোনালাপের রেকর্ড না থাকলেও শ্রীশান্তকে নিয়ে অন্য জুয়াড়িদের কথার রেকর্ড আছে। জুয়াড়িদের নিজেদের মধ্যে যে কথা হয়েছিল, মাঠে শ্রীশান্তকে ঠিক তা-ই করতে দেখা গেছে। শিগগিরই তাঁদের জামিন পাওয়ার সম্ভাবনাও কম।

রিমান্ড আছে আরও চার দিন, এ ছাড়া ‘সংগঠিত অপরাধ আইনে’ মামলার চিন্তাভাবনা করছে পুলিশ, যেটা জামিনের অযোগ্য। আপাতত যে মামলায় তাঁদের আটক দেখানো হয়েছে, সেটার সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের জেল।
স্পট ফিক্সিংয়ে অপরাধজগতের সম্পৃক্ততা নিয়েও যথারীতি ছিল জল্পনা-কল্পনা, আলোচনা। ক্রিকেটে ম্যাচ পাতানোর আগের সব বিতর্কের মতো এবারও নাম এসেছে দাউদ ইব্রাহিমের। পুলিশের একটি সূত্র বলেছে, ভাই আনিস ইব্রাহিম, বিশ্বস্ত সহকারী ছোটা শাকিল ও সুনীল দুবাইয়ের মাধ্যমে দাউদই স্পট ফিক্সিংয়ের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন।

তবে অপরাধজগতের এই ‘চাঁইরা’ এবারও হয়তো থেকে যাবেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এএফপি, ওয়েবসাইট। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে ১০ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।