আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

র্বতমান তারুণ্য: সমস্যা ও সম্ভাবনা



তারুণ্য- জীবনের সূচনাময়ী সূর্যোদয়, জীবন বিচ্ছিন্ন ভাব নয়। এ হচ্ছে এক অকল্পনীয় সাইক্লোন চেতনা। তরুণেরা প্রাণ প্রাচুর্যে ভরা, উল্লাসের প্রতীক, ঔদার্যের মহিমায় ভাস্বর, প্রেমের লীলাভুমি, প্রাণচঞ্চল, আলো পিয়াসী, নবযাত্রার অভিলাষী, ইতিহাসের সকল কল্যাণ-সুন্দর আর ঐতিহ্যের অনন্য রুপকার, অসাধারণ অনুপম সুন্দরের স্বপ্নদ্রষ্টা। এদের তেজবীর্য স্থিমিত নয়, আষাঢ়ের মধ্যাহ্নের সূর্যের প্রদীপ্ত কিরণের মত, শক্তি অপরিমেয়, গতিবেগ ঝঞ্চার ন্যায়, অফুরন্তপ্রাণ, বিপুল আশা, ক্লানত্দিহীন উৎসাহ, বিরাট ঔদার্য, অটল সাধনা, মৃতু্য মুঠিতলে। এরা এক প্রচন্ড বিষ্ফোরণ, প্রতিবাদী সাহসী সত্তার আগ্নেয়গিরি, মহাসাগরের ঊর্মিমালার জোয়ার, ঢেউরুপী সমাজ ভাঙ্গা গড়ার দুঃসাহসী কারিগর, অসীম শক্তিধর যোদ্ধা, বাধার প্রাচীর ভাঙ্গনের মূল হাতিয়ার, সৃষ্টি করে প্রাণচাঞ্চল্য, যোগায় কর্মশক্তি, করে অদম্য সাহসী, নতুনকে গ্রহণ করতে যোগায় অনুপ্রেরণা, দুর্লভকে লাভ করে, দুর্জয়কে জয় করে, না পাওয়াকে পেতে উন্মাদনা যোগায়, সকল জীর্ণতা- দীনতা ও হীনতার উধের্্ব উঠে, মূল্যবান প্রাণসম্পদ, ইস্পাত কঠিন বিদু্ৎদীপ্ত।

তরুণেরাই পারে-দীর্ঘদিনের জড়তা ও জীবন বিরোধী সব প্রথা ও বিশ্বাস গুড়িয়ে দিতে, পৃথিবীর সকল জাতির সকল ধর্মের মানুষের মঙ্গল সাধন করতে, জাতীয় জীবনে উত্তরণের দিশা দিতে, সৃজনশীল প্রাণশক্তি ও সাহায্যের বলে পৃথিবীকে সুন্দরভাবে সাজাতে, চিনত্দার জড়তাকে অতিক্রম করে মুক্ত বুদ্ধির চিন্তা ও বিবেকের প্রতিষ্ঠা করতে, মানবতার কল্যাণে আত্মনিয়োগ করতে, মনুষত্ববোধে উজ্জীবিত হয়ে মানব মর্যাদা ও সৌন্দর্য চেতনার সমন্বয় ঘটাতে, কর্মের মাধ্যমে ধরণীতে নব জীবনের আশির্বাদ আনতে, দেশকে সুন্দর মধুর করে গড়ে তুলতে, পৃথিবীকে অশানত্দিমুক্ত স্বর্গে পরিণত করতে। তরুণেরা-পুরাতন, মিথ্যা ও মৃতু্যকে আঁকড়ে পড়ে থাকেনা, শতাব্দীর নব যাত্রীর চলার ছন্দে ছন্দ মিলায়ে কুচকাওয়াজ করতে জানে, অটল সংস্কারের পাষাণস্তুপ ধরে থাকেনা, আলোকপ্রাণ চঞ্চলদের কল-কোলাহলে আনন্দিত হয়। মানুষের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান, সর্বাধিক কর্মক্ষম সময়টিই তারুণ্য। হাজার বছর ধরে বাঁচতে পারে শুধু তারুণ্যের কর্মময় স্বপ্ন, পৃথিবীকে সুন্দর করে সাজানোর স্বপ্ন, চাঁদের হাসি আর ফুলের সৌরভে আকাশ-বাতাস ভরে দেবার স্বপ্ন। কঠিন সুউচ্চ পর্বতশ্রেণী আর গহীন জঙ্গল কেটে, সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গ মাড়িয়ে, আকাশের নীলিমা ছাড়িয়ে, জলে-স্থালে-অনত্দরীক্ষে পথ রচনার কাজ তরুণকেই করতে হয়।

তারুণ্যই সংগ্রাম ত্যাগ ও সাধনার সময়। সদা ক্রিয়াশীল যুবক কখনো নিস্ক্রীয় থাকেনা, হয় সে মেতে উঠে সৃষ্টি সুখের উলস্নাসে, না হলে মেতে উঠবে ধ্বংসের উন্মাত্ততায়। তারুণ্যের ধর্ম-নতুনত্ব, অমিততেজ, সাহস ও নিঃশঙ্কচিত্ততা, সৃষ্টির উলস্নাস। পুরাতনের বিরোধ, নতুনেরে গ্রহণ করা, ভেঙ্গে গড়ার প্রবণতা, অস্থিরতা আর দুরনত্দ অভিযাত্রা। যেখানে চঞ্চল কিশোরের কৌতুহল থমকে দাঁড়ায়, বয়োবৃদ্ধ সত্দব্ধ হয়ে পড়ে, পৌঢ় ভাবনার কাছে বন্দি হয়ে যায় সেখানেই তারুন্য বিদ্রোহ করে, উচ্ছলতা ও উদারতা মাড়িয়ে যায় সমসত্দ স্থবিরতা ও অলসতাকে।

পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনার নায়ক তরুন, চাকা ঘুরিয়ে ইতিহাসের র্কতৃত্ব হাতে তুলে নিয়েছে তরুন। তারুণ্য বিজয়ের ধর্ম নিয়ে চলে। নিজের মধ্যে সর্ব মানবের ডাক শুনে, চেতনার মধ্যে জাগে অসীমের আহ্বান। প্রগতিশীলতা, সৃষ্টিশীলতা, জীবনমুখী ভাব, আধুনিকতা, প্রগতি, সংস্কার মুক্ততা, চলমানতাবোধই হচ্ছে তারুণ্য। মানুষের মঙ্গল সাধনেই তারুন্যের আনন্দ।

তারুণ্য একক শক্তি, একক অসত্দিত্ব। দিনমনির সোনালী প্রভায় বিদূরিত হয় অমানিশার অন্ধকার। সমাজের প্রাণশক্তি তরুণেরাই সমাজকে করতে পারে আলোকিত। প্রেমে, ভালবাসায়, সেবায়, ত্যাগে, দানে, আশ্বাসে, সহানুভূতিতে তারুণ্যের মঙ্গলময় মাতৃরুপ প্রকাশ পায়। দেশ বা জাতির এগিয়ে চলার প্রেরণা তরুণদের মেধা, মনন যদি কল্যাণের অনুগামী না হয়ে ব্যক্তিস্বার্থ বা নেতিবাচক নীতির পথে পরিচালিত হয় তাহলে এর চাইতে মহাসংকট আর কিছু হতে পারে না।

আত্মার বিনাশ কিংবা পরিশুদ্ধির জন্য শ্রেষ্ট সময় । সমাজ সংস্কারের মূল চালক তরুণেরাই। তাই, ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ দেশও জাতির কল্যাণ ও মঙ্গলের লক্ষ্যে তরুণসমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে। সমস্যার বেড়াজালে তারুণ্যঃ[ আমাদের সার্বিক সমাজ ব্যবস্থাপনা তারুণ্যকে সমস্যার অতল গহ্বরে নিমজ্জিত করেছে। চলচ্চিত্র আধুনিক সমাজের বিনোদনের মাধ্যম হলেও বর্তমান চলচ্চিত্রে নগ্নতা আর উলঙ্গপনার ছড়াছড়ি ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না।

ফ্যাশন শোর পাশ্চাত্য কালচারটা বর্তমানে আমাদের দেশেও আমদানি করা হয়েছে। যুবতী নারীদের দেহ প্রদর্শনীই হচ্ছে এর মুখ্য উদ্দেশ্য। কোটি কোটি দর্শকের সামনে পণ্যের বিজ্ঞাপন মডেল হিসাবে নারী তার দেহ প্রদর্শনী করছে। আজ থেকে ৫৫ বছর আগে১৯৫১ সালে লন্ডনে প্রথম অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগীতা। বর্তমানে এটি বিশ্বের নারী প্রেয়সীর "সুখ চর্চার" অন্যতম মাধ্যম ।

১৯৯৫ সালে বাংলাদেশেও এর যাত্রা শুরু হয় । সংস্কৃতিসেবীদের আর এক উপজীব্য হচ্ছে লীভটুগেদার । এরা ধর্মের বন্ধন কে মানে না। এরা একে অপরের শয্যাসঙ্গীনী হতে পারলে নিজেদের কে খুব ধন্য মনে করে। বিগত কয়েক বছর যাবৎ ১৪ ফেবু্রয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবস হিসাবে পালিত হচ্ছে।

৮২৭ সালে রোমের পোপ হলেন সেন্ট ভ্যালেনটাইন নামের এক সুদর্শন যুবক। যাকে সেই দেশের সম্রাট ফাঁসির কাষ্টে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। সেই থেকে খ্রিস্টান সমাজের পালিত সেই দিবস আজকে আমাদের সমাজে উঠতি বয়সের তরুণ তরুণীদের উদ্দাম, উচ্ছল আর নগ্নতার আলিঙ্গনের মাধ্যমে পালিত হচ্ছে তথাকথিত ভালবাসা দিবস হিসেবে। সাহিত্য মানুষের মনের খোরাক জোগায়। সাহিত্য মানুষের নিত্য সঙ্গী।

কিন্তু আমাদের পত্রিকার স্টল, বাস এবং রেলস্টেশন গুলোতে এমন এক ধরনের যৌন আবেদনময়ী অশ্লীল ম্যাগাজিন বিক্রি হচ্ছে যা আমাদের উঠতি বয়সের যুব সমাজের চরিত্র কে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ডিস এন্টিনার মাধ্যমে উগ্র যৌনতা তরুণ সমাজের চরিত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ভেঙ্গে পড়ছে আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন । যুব সমাজ আজ নৈতিকতার সকল বন্ধনকে উপেক্ষা করতে শুরু করেছে । অনেকে পহেলা বৈশাখ ,পহেলা ফাল্গুণকে বরণ করার নামে সংস্কৃতি চচর্ায় নিজেদের কে যত বেশী নগ্নতার দিকে ঠেলে দিতে পারছে ততই নিজেদের কে আধুনিক মনে করছে।

সীমাহীন পাপাচার অশ্লিলতা,নিলর্্জ্বতা ,বেহায়াপনা,অসভ্যতা,নগ্ন অপসংস্কৃতির কালথাবা গ্রাস করেছে আমাদের ভবিষ্যতের সোনালী প্রজন্মকে। সভ্য সমাজ ব্যবস্থায় সভ্য আইনের আড়ালে অবাধ মেলামেশা ও অবাধ যৌনচারের কারণে কত যে লোমহর্ষক ঘটনা নিত্য সংগঠিত,নিযর্াতিত ুনিষ্পেষিত মানবতার ক্রন্দনে আজ আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। হত্যা-আত্মহত্যা নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসিডের ছোবলে কতমুখ ঝলছে যাচ্ছে,কত সুখের নীড় পরকীয়া প্রেমের অনলে দাও দাও করে জ্বলছে;নীড় ভেঙ্গে ছারখার হচ্ছে। এসব নিযর্াতিত-নিষ্পেষিত মানবতার জন্য তথাকথিত সভ্য সমাজ ও সভ্য আইনের অসারতা ও মুখ থুবড়ে পড়া ব্যর্থতাকে দেখেও তাদের বিবেক জাগ্রত হচ্ছেনা।

তরুণ সমাজ আজ গভীর সমস্যার বেড়াজালে ; যেন তাদের মুক্তির আর কোন পথ খোলা নেই । তারুণ্যের সমস্যার সমাধান কৌশল নৈতিকতা বিবর্জিত এঘোর অমানিশা ও চরম অবক্ষয়ের যুগে দৃষ্টিকে প্রসারিত করতে হবে কঠোর ভ্রান্তির মধ্যে নিপতিত ক্ষতিগ্রস্থ বিশ্বমানবতাকে । তারুন্য যৌবনের অধিকারীরা আজ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত সমস্যার ভীড় দেখে হতাশ না হয়ে ভয়না পেয়ে, সমাধানের জন্য চেষ্টা চালাতে হবে। আগামী দিনের জাতির আশা আকাঙ্খার প্রতীক তারুন্য ও যৌবন শীক্তকে সত্য, সঠিক, সুন্দর ভাবে গড়ে তোলার মধ্যেই দেশের কল্যাণ নিহিত হলেও তারা আজ বিপদগামী। এই সংকট নিরসনে করণীয় হচ্ছে- সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করে উপযোগী করতে নানাবিধ কর্মতৎপরতা চালানো।

এক্ষেত্রে সমবেত প্রচেষ্টা ছাড়া সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবেনা। তরুণসমাজ যাতে বিপথে না যায় সেজন্য জনসচেতনতা সৃষ্টিতে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। চেতনাকে উৎসাহিত করতে হবে। পরস্পরকে সর্তক ও সচেতন থাকার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করে স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে প্রচেষ্টা চালিয়ে আনত্দরিকতা বৃদ্ধি করতে হবে। বিভিন্ন ব্যাপারে ভ্রানত্দ ধারণার সংশোধন করে সঠিক ধারণা সৃষ্টি করতে হবে।

যা কল্যাণকর তার প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে। এক্ষেত্রে চেতনার উন্নয়ন ঘটানোর বিকল্প নেই। অজ্ঞতা দূরীকরণ প্রয়োজন । কেননা জ্ঞানের আলো মুক্তির পথ দেখায়। বুদ্ধিবৃত্তিক সংকট বিরাট সমস্যা।

অনত্দর কে আলোকিত করতে হবে । কলুষিত আত্মা ভাল কিছু গ্রহণ করতে পারে না। অন্ধকারের ঘূর্নাবর্তে অনত্দর আচ্ছন্ন থাকলে কাংখিত ফলাফল পাওয়া যায় না। তাই অনত্দরকে আলোকিত করে তুলতে হবে। নিজ নিজ অবস্থানে থেকেই বিচক্ষণতার সাথে সিদ্ধান্ত নিতে হবে পরিবেশ পরিস্থিতি কে পর্যবেক্ষণ করে।

তারুণ্যের সমস্যা নিরসনে কৌশলগত ভূমিকা রাখার মত ক্ষেত্রগুলোকে অবশ্যই পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে হবে। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি না হলে কল্যাণ ও মঙ্গল না দেখে বিপরীত দিকটাই শুধু পর্যালোচনা হয়। ফলে এক সংকীর্নতা, হতাশা, হীনমন্যতা তথা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠে । তাই ভাল,কল্যানকর দিক গুলো চিন্তা করে, বলে, লিখে ইতিবাচক মনোভাব গড়তে হবে। দৃষ্টিকে প্রসারিত ও পরিচ্ছন্ন করতে হবে।

শুধু সমস্যা নয় সম্ভাবনাও ভাবতে হবে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। মনের মানসিক অবস্থা কর্মকে প্রলুদ্ধ করে তাই পংকিলতার প্রবণতা দূর করতে হবে। চারিত্রিক সংশোধনের উদ্যোগ নিতে হবে। এব্যাপারে আগ্রহ, উদ্দীপনা তৈরি সহ সচেতনতা এবং এর গুরুত্ব সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরতে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে।

ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনসহ সকল সত্দরেই উদ্যোগ নিতে হবে। সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই সম্ভব কাংখিত ফলাফল আনয়ন। । সচেতনতা বাড়ানোকে গুরুত্ব দিতে হবে। সচেতনতাই মানুষকে অনেক গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে।

দৃঢ় প্রতিজ্ঞা না নিলে কোন সিদ্ধানত্দে টিকে থাকা যায় না। তাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েভূমিকা পালন করতে হবে। প্রচেষ্টা ছাড়া সফলতা আসেনা । কষ্ট,পরিশ্রম ও সাধনার মাধ্যমেই বিজয় আসে। তাই নিরলস প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

নৈতিক চেতনা জাগ্রত করেই এ সমস্যার মূলোৎপাটন সম্ভব । ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা ছাড়া মানুষ পরিপূর্ণ হয় না। তাই ওহীর কল্যাণপ্রদ জ্ঞানের জগত কে সমৃদ্ধ করতে হবে। আলো ছড়িয়ে দিতে হবে সর্বত্র। তরুনদের মধ্যে দেশপ্রেম ও ঐক্যশক্তি বৃদ্ধি করতে হবে।

এসমস্যার একমাত্র সমাধান ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা । অশস্নীলতায় সমাজ ডুবে গেলে শানত্দিময় সমাজ পুনরুদ্ধার বড়ই ভাগ্যের কথা। তাই অপসংস্কৃতির মরণ ছোবল রোধ করতে হবে । দায়িত্ব বোধের জাগরণ দরকার। দায়িত্ববোধের জাগরনোর ব্যর্থতা অকল্যাণ বয়ে আনছে।

একদিক থেকে সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগাতে হবে পাশাপাশি প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। তারুণ্যের সম্ভাবনা ও বিকাশের উপায় ঃ তারুণ্যের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে প্রয়োজন মন ও মননের পরিশুদ্ধি। সৎ ও যোগ্য মানুষ হিসেবে তাদেরকে তৈরী করতে প্রকৃত মঙ্গলের উৎস সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে হবে । তাই তাদের মন ও চিন্তাকে পবিত্র রাখতে হবে যাতে তার সব কাজ ও আচরণ পবিত্র হয়। সঠিক নেতৃত্ব দেয়ার দুর্লভ যোগ্যতার অধিকারী দুঃসাহসিক সৈনিক হিসেবে তাদের তৈরী করতে হবে ।

মানবমন ও মানব প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এক বাস্তব জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে এর পূর্ণ অনুশীলন করা যাবে এমন সমাজ গড়তে হবে । তাদের আভ্যনত্দরিণ প্রচ্ছন্ন শক্তির বিকাশ ঘটায়ে আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শক্তির উচ্চতম শিখরে নিয়ে যেতে হবে । এজন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ , যোগ্য নেতৃত্ব তৈরী, প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার, মানব সম্পদ উন্নয়ন, বুদ্ধিবৃত্তিক দীনতা দূর করা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বন্ধ করা, আইন শৃংঙ্খলার অবনতি রোধ করা, জাতীয় ঐক্যের অভাব দুর করা, নৈতিকতার চরম অভাব দূর করা, চিনত্দার বিভ্রানত্দি দূর করা, অর্থনৈতিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠা, অপসংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করা,নতুন আলোক চৈতন্যে উদ্ভাসিত ব্যক্তি গঠন,কল্যাণমুখী অভিযাত্রার পাথেয় হিসেবে উত্তম আদর্শকে গ্রহণ,হৃদয়ে স্রষ্টার ভয়কে দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করা,নিঃশর্ত আনুগত্য নিয়ে ঐশী জ্ঞানের কাছে ফিরে আসা প্রয়োজন । পুরাতনকে ভেঙ্গে নতুন করে গড়তে বীরদর্পে সামনে এগিয়ে চলতে হবে। এক্ষেত্রে সমূজ্জল আলোকবর্তিকার প্রতি দৃষ্টিকে প্রসারিত করা, সোনালী ইতিহাসের উজ্জ্বলতম স্মৃতিগুলো স্মরণ করা, চ্যালেঞ্জের সাহসী মুকাবেলা করা, বাসত্দবভিত্তিক ধারণার অভাব দূর করা, শক্তিশালী ঐক্য গড়ে তোলা, শক্তিশালী গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা করা দরকার ।

জাতির উন্নতির চাবিকাঠি শিক্ষাকে বেঁচে থাকার অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হিসেবে গ্রহণ করে বাস্তবতার আলোকে যুগোপযুগী কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন, বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক ও আদর্শিক আন্দোলন গ্রহণ,আদর্শিকভাবে প্রত্যক্ষ নমুনার প্রতিচ্ছবি হওয়া, ব্যক্তিগত পরিশুদ্ধতার পরিচর্যা করা, সাম্য ও মৈত্রীর নীতি অবলম্বন করাকে গুরুত্ব দিতে হবে । প্রয়োজন সম্মিলিত প্রয়াস । সনত্দানকে নৈতিকতা সম্পন্নরূপে গড়ে তোলা পিতা মাতার একান্ত নৈতিক দায়িত্ব। সনত্দানের ওপর পিতামাতার প্রভাবই সবচেয়ে বেশি পড়ে। সৎসঙ্গীর সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলার ব্যাপারে পিতামাতাকে ভূমিকা রাখতে হবে।

শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণ ও দেশ পরিচালনার যোগ্য লোক শিক্ষকরাই তৈরী করে। ছাত্রদেরকে সমাজের স্রোতে গা ভাসিয়ে চলা নয় বরং তার পরিণতি সম্পর্কে সজাগ করা, দেশপ্রেম সৃষ্টি করাটা শিক্ষকদের নৈতিক দায়িত্ব। সমস্যাক্লিষ্ট মানুষ নানাবিধ সমস্যায় দিশেহারা হয়ে সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের নিকট অনেক বড় আশা নিয়ে আসে। এ জন্য সমাজপতিদের আরো দূরদর্শী ভুমিকা রাখতে হবে এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে সৎ ও চরিত্রবান হিসেবে।

আলেম-ওলামাগণ এ দেশের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার শ্রদ্ধার পাত্র। সমাজে তাদের একটা ভাল অবস্থান রয়েছে। তাই নৈতিক মূল্যবোধ জাগরণে তারা বিরাট ভুমিকা রাখতে পারে। প্রত্যেক ব্যক্তির বিকাশে রাষ্ট্রকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করতে হবে। পুলিশকে জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে গণমানুষের বন্ধুরূপে।

নৈতিকতাবোধ জাগ্রতকরণের কর্মশালা হাতে নিতে হবে। অনৈতিক বা শৃঙ্খলা বিরোধী কাজের জন্য দিতে হবে কঠোর সাজা। যাতে তারা কল্যাণমূলক কাজে আত্মনিয়োগে অভ্যস্ত হন। বন্ধুর প্রভাব আরেক বন্ধুর উপর পরে। তাই নৈতিক মূল্যবোধের জাগরণে বন্ধুরা ভূমিকা রাখতে পারে।

হতাশাগ্রস্থ ও সমস্যা জর্জরিত তরুণদের আশাবাদী করার পাশাপাশি নৈতিক প্রশিক্ষণদানের মাধ্যমে চরিত্রবান রূপে গড়ে তুলতে ছাত্র সংগঠনগুলো বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে। স্থানীয় ক্লাবগুলো বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নের মাধ্যমে গতিশীল নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, মেধা-মননশীলতার বিকাশ, পবিত্র চিনত্দাধারার ব্যক্তিত্ব তৈরীতে ভূমিকা রাখতে পারে। পেশাজীবি সংগঠনগুলো দেশপ্রেম ও নৈতিকতা জাগ্রতকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের ব্যবস্থা করতে পারে। এতে সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে , যা কিছু সুন্দর তার পক্ষে জনমত গড়ে উঠবে। সচেতনতা ছাড়া মুক্তি অসম্ভব।

তারুণ্যের শক্তিকে দেশ ও জাতির প্রয়োজনে কাজে লাগাতে সকল সত্দরের ব্যক্তিবর্গকে জাতীয় স্বার্থে ভুমিকা রাখতে হবে। বিভেদ নয় ঐক্যের পাহাড় গড়ে তুলতে হবে। কেননা, তারুণ্যের ইতিবাচক ভূমিকা ছাড়া কখনোই জাতির অগ্রগতি, উন্নতি স্বাভাবিকভাবে হতে পারে না। সমস্যার সমাধান ও সম্ভাবনা বিকাশে করণীয়ঃ কেউ আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ জ্বালিয়ে আমাদের একদিন ভোরে সমস্যামুক্ত দিনের সূচনা করবেন না। এটার জন্য আমাদের বিবেককে জাগাতে হবে।

এজন্য ব্যাপক আকারে সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টি করা দরকার। তরুণেরা বিপদগ্রসত্দ হচ্ছে এমন চিহ্নিত পয়েন্টকে বের করে তার সমাধান করতে হবে। এক্ষেত্রে সর্বাগ্রে প্রয়োজন সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন,অপরাধীদের আইন অনুসারে সাজা দেওয়া,বুদ্ধিবৃত্তিক ভিত্তি নির্মাণের মাধ্যমে সমাজ সংস্কার -এ জন্য অবশ্যই সমবেত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। সংহতি ও সহযোগিতার মনোভাব তৈরী করে, এক অগ্রণী দলকে দক্ষতার সাথে সমকালীন সমাজকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে যেতে হবে। অগ্রবর্তী দল এমন ব্যক্তিদের নিয়েই গঠন করতে হবে যারা দৃঢ় বিশ্বাস, গভীরজ্ঞান ও সমঝতার এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ভিত্তিতে হৃদয়ের বন্ধনে আবদ্ধ।

বিশ্বজনীন, মানবতাবাদী আদর্শের ব্যাপক প্রচার ও প্রসার করে সংগঠিত ও সম্মিলিত থাকার প্রচেষ্টায় চেতনাকে উৎসাহিত করে জনমত গড়ে তুলতে হবে। পরস্পরকে সত্য ও সহিষ্ণুতার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করে দায়িত্বশীল নেতৃত্ব, সুদুঢ় ভিত ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রকে ঢেঁলে সাজিয়ে বিজয় প্রত্যাশী প্রজন্ম, মানবিক গুণে গুনান্বিত, দেশপ্রেমে উজ্জীবিত অগ্রণী দল গড়ে তোলা অত্যনত্দ গুরুত্বপূর্ণ। তরুণ সমাজকে বাচাঁতে হলে সর্ািবক পরির্বতন প্রয়োজন । রাজনৈতিক কর্মকান্ডের লক্ষ্য হবে সকল দূর্বলচিত্তের ও বিশ্বাসঘাতকদের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে সাহসী ও সৎলোকদের অর্পন।

সামাজিক ক্ষেত্রে কর্মসূচির লক্ষ্যই হবে দারিদ্র্য, অশিক্ষা, রোগব্যাধি ও পাপাচার দূরকরে সামাজিক কল্যাণ সাধন করা। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কর্মসূচি হবে, আর্থিক দুর্গতি ও সুদভিত্তিক ঋণের বোঝা থেকে মুক্ত করা এবং সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখা। মিডিয়া ও প্রচারক্ষেত্রগুলোর কর্মসূচীর লক্ষ্য হবে, আদর্শ প্রচার, নৈতিক শিক্ষার ব্যাখ্যা, আদর্শের মধ্যমপন্থার বৈশিষ্ট ও ব্যাপকতা স্পষ্ট করা। ফলে সব ধরণের অস্পষ্টতা এবং সত্যের স্বচ্ছতাকে বিনষ্ট করতে পারে এমন সব মিথ্যাচার নিমর্ূল হয়ে যাবে। বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে কাজের উদ্দেশ্যই হবে ভ্রানত্দ ধারণার সংশোধন করে সঠিক ধারণার সৃষ্টি এবং ভ্রানত্দ ধারনা ও ত্রুটিপূর্ণ মতামত সংশোধন।

সকল ক্ষেত্রে কাজ করা জরুরী এবং কোনোটাই অবহেলা করা বা ফেলে রাখা উচিৎ নয়। বুদ্ধিবৃত্তিক ও জ্ঞানের ক্ষেত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বুদ্ধিবৃত্তিক সংকট বিরাট সমস্যা। এ'টি দূর করতে হবে। আমাদের ভুল ধারণা, খারাপ চিনত্দাধারা, ঘৃণ্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, অগ্রহণযোগ্যনীতি নৈতিকতাকে সঠিক ধারণা, স্বচ্ছ ও সৎ চিনত্দা, প্রশংসনীয় চরিত্র ও উন্নত নৈতিকতায় পরিবর্তিত করতে হবে।

অভ্যসত্দ জীবনধারা পাল্টায়ে জীবনকে কাজ ও উৎপাদনমুখী করতে হবে। জ্ঞান ও কর্মসাধনা, দ্বীনদারী ও দুনিয়াদারী, দেহ ও আত্মা, পরিকল্পনা ও সংগঠন, উৎপাদন ও উন্নয়ন, পূর্ণতা ও উৎকর্ষতা অর্জন করতে হবে। উত্তরাধীকারীদের কাছে শিক্ষা এবং সত্য আদর্শের আলোকে জীবন গড়ে অনুমোদিত জীবনাচরণকে সংরক্ষণ, বিজয় অর্জন, ন্যায় বিচার ও কল্যাণকামিতার প্রসার ঘটিয়ে, জ্ঞান ও বিশ্বাসের ধারা সুপ্রতিষ্ঠিত করে, বিশ্বজনীন, নৈতিকতাবাদী, মানবতাবাদী ও ধর্মীয় সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করে নৈতিক মূল্যবোধ জাগাতে হবে। মানুষ ও জীবনের প্রতি এক মধ্যম সমন্বিত ও প্রসারিত দৃষ্টি ভঙ্গির প্রতিফলন ঘটায় চরমপন্থা ও ঔদাসীন্য থেকে মুক্ত, সংহত, সুষম, ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি। বর্তমানের মধ্যে নিজেকে সীমিত না রেখে সব সময় ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি প্রসারিত করে চিনত্দা করতে হবে ।

তরুণদের প্রবল কুপ্রবৃত্তি ও তার কামনা-বাসনা দূরীকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। জাতীয়, দলীয় ও বংশীয় গর্ব-অহংকার ও তার প্রতি অন্ধপ্রীতি দূর করতে হবে। দিতে হবে ওহীর জ্ঞান । মানুষের ভেতর ও বাইরে থেকে বহু চিনত্দা-চেতনা, ভয়-ভীতি, প্ররোচনা এবং তার ষড়রিপুর প্রভাব যখন তাকে অনৈতিক কাজ করানোর চেষ্টা করে তখন ওহীর জ্ঞান তার সহায়তায় এগিয়ে আসে এবং সঠিক পথ প্রদর্শন করে। মানবমন্ডলীর আত্মার পরিশুদ্ধি ও চরিত্রের পবিত্রকরণ, চিনত্দা ও বিশ্বাসের সৃষ্টতা ও বিন্যাস, ভুল মতাদর্শ ও কুসংস্কার বিদুরণ, আলস্নাহ ও বান্দার সাথে যথাযথ সম্পর্ক স্থাপন, মানুষের অধিকার সংরক্ষন, নৈতিক চরিত্রের উৎকর্ষ সাধন ও স্বচ্ছতা বিধান, স্বৈরতন্ত্র ও নিপীড়নের মূলোৎপাটন, বিশ্বলোক বিস্তীর্ণ ও সামাজিক ক্ষেত্রে গুমরাহীর অবসান সাধন, আনত্দর্জাতিক বিশ্বে মানবিক শানত্দি ও নিরাপত্তা বিধান এবং এক নির্দোষ নিস্কলুষ দুর্নীতিমুক্ত পবিত্র পরিচ্ছন্ন এবং আদর্শ ও শানত্দিময় বিশ্বসমাজ গড়ে তোলতে উদ্যোগী হতে হবে সবাইকে।

আমাদের তরুণেরা তাদের মন ও মানসকে যদি সত্যের আলোকে গড়তে পারে তাহলে দুঃখ ও হতাশার কালোমেঘ দূর হয়ে আশার সোঁনালী সূর্যের আলোকে আলোকময় হবে দেশ ও জাতি। ফলে সমগ্র বিশ্ব হবে নিরাপদ, শানত্দিময় এবং সমৃদ্ধ । তরুণসমাজের যদি চৈতন্য ফিরে আসে, টগবগে তারুণ্যের চিনত্দাশীলতা সত্য ও শুভ্রতার সমন্বয়ে এক অনিন্দ্য সুন্দর সমাজ তৈরী করবে। এজন্য অন্যদের পাশাপাশি তারুণ্যের শক্তিকেই সঠিক সিদ্ধানত্দ গ্রহণ ও তার বাসত্দবায়ন করতে হবে। বিশ্বাসের সাথে কর্মের সম্পর্ক ঘনিষ্ট।

নৈতিকতাবোধে উজ্জীবিত পবিত্র বিশ্বাস জাগাতে হবে। সুষ্ঠু সামাজিকনীতি প্রণয়ন করে পরিকল্পিতভাবে আমাদের আর্থ-সামাজিক কাঠামোকে উন্নত করতে হবে। জ্ঞানকে পরিপূর্ণ করার চেষ্টা চালাতে হবে। বাংলাদেশে নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ে সৃষ্ট সংকটের নিরসন হলে , তরুণরা গঠনমূলক ও সৃজনশীল কাজে এগিয়ে আসলে জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বে মাঁথা উচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। উপসংহারঃ আজকের এই অশানত্দ পৃথিবীতে সুন্দর জীবন বিধানের প্রতিষ্ঠা হোক সে আশায়ই সবাই উদগ্র পথ পানে চেয়ে আছি।

সুখ ও শানত্দিময় শানত্দ পরিবেশ ও পবিত্র সমাজই আমাদের প্রত্যাশা। এ প্রত্যাশাকে বাসত্দবে রুপ দিতে পারে তরুণেরাই । আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি অফুরনত্দ সম্ভাবনাময় বাংলাদেশে সম্পদের অভাব নেই। পৃথিবীর কোথাও নেই এমন উর্বর মাটি। সবুজ শ্যামল সৌন্দর্যের অপরুপ ভূমি মাঠের পর মাঠ হরেক রকম গাছপালা ফুলে ফুলে সুশোভিত বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামের মধ্যেই রয়েছে সুগভীর মিল ।

কিন্তুু সততা এবং সৎ নেতৃত্বের অভাবই বারবার বাংলাদেশকে পেছনে ঠেলে দিচ্ছে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে যোগ্যতা সম্পন্ন সৎ নেতৃত্ব প্রয়োজন। সত্যিকার আর্দশবান, নি:স্বার্থ, চরিত্রবান ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাব দূর না হওয়া পর্যনত্দ আমাদের অবসথার উন্নতি হতে পারে না। দেশের প্রায়োজনে ব্যক্তি দল সব স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেয়াটা সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব। এ দায়িত্ববোধ জাগানোর ব্যর্থতা স্বাধীনতাকে অনর্থবহ করে তুলে।

তাই দায়িত্ববোধ তৈরি ও ত্যাগের মহিমা সৃষ্টি করতে তরম্নণসমাজকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে । কর্তব্য যথাযথভাবে পালনের মানসিকতা তৈরি করতে হবে। কর্মঠ, শক্তিশালী , সত্যবাদী, সাহসী, নিয়মানুবতর্ী, সহিষ্ণু ও কর্তব্য-পরায়ন হতে হবে। আত্নবিশ্বাস, দৃঢ় মনোবল, কঠোর সংকল্প, সুচিনত্দিত ইচ্ছাশক্তি, আত্নগঠন ও মান উন্নয়নের জন্য বড়ই প্রয়োজন। স্বাধীন সার্বভৌম দেশের ভবিষ্যত হিসেবে তরুণকে নিজেদের স্বাথের্, সমাজের স্বার্থে, সমগ্র জাতির স্বার্থে নৈতিক চরিত্র গঠন ও মান উন্নয়নে জোড় প্রচেষ্টা চালায়ে পরস্পরের সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে সেবাদান করে জীবনকে সরল ও সুন্দর করার মানসিকতা নিয়ে আত্ম অহংকার-দাম্ভিকতা আর মানসিক স্বার্থপরতা পরিহার করে জীবন সংগ্রামে শানত্দিময় বিজয় অর্জনের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

আমাদের মাঝে যার যার দায়িত্ব ও কর্তব্য সুষ্ঠুভাবে পালনের মত মানসিকতা তৈরী করতে হবে। তবেই বইবে শানত্দির সুবাতাস। শানত্দি সবারই পি্্রয়। সবাই শানত্দি খ্ােঁজে। তবে অশানত্দির পথে চলে শানত্দির আশা করা আত্নপ্্রবঞ্চনা ও আত্মঘাতিরই শামিল।

বাংলাদেশের নানা ক্ষেত্রেই বিরাজমান অশানত্দি দূর করতে না পেরে সমাজ তার গতি হারিয়েছে। বাড়ছে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও সংঘাত। সবকিছুকে গ্রাস করেছে অনাকাঙ্ক্ষিত এক স্থবিরতা। অথচ, গণতান্ত্রিক জীবনবোধে উজ্জীবিত, অর্থনৈতিক সাম্য প্রতিষ্ঠায় কৃতসংকল্প এবং সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য সংরক্ষণে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের জনগণ জীবনপণ করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের অনলকুন্ড থেকে ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতার লাল গোলাপ। হসত্দগত করে রক্তরঞ্জিত পতাকা।

পূর্বদিগনত্দে উদিত হয় নতুন সম্ভাবনার এক রক্তিম সূর্য। প্রত্যেকেরই প্রত্যাশা ছিল, এতোদিনের বঞ্চনা থেকে সবাই মুক্তি লাভ করবেন। সবার জীবনে আসবে সার্থকতার স্পর্শ, সাফল্যের কিঞ্চিত ত্যাগ। শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বাসস্থান-কর্মসংস্থানসহ সকল কল্যাণমূলক ক্ষেত্রে সবাই অংশীদার হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের সম্মানীয় নাগরিক হিসেবে সবাই মাথা উচুঁ করবে। কিন্তু সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের ব্যর্থতায় সব সুখস্বপ্ন শূণ্যে মিলিয়ে গেছে।

তাই তারুণ্যের শক্তিকেই নিজ সমস্যার সমাধান করে , বৃহৎ পরিসরে পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ,দেশ তথা জাতির যাবতীয় সমস্যা ও সংকট সমাধানের প্রয়োজনে আত্ননিয়োগ করতে হবে । এছাড়া মুক্তির দ্বিতীয় কোন পথ নেই ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।