আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশের উন্নয়নে আত্মগঠন ও সম্মিলিত প্রয়াস



উন্নয়ন স্বর্গীয় আরোপন অথবা প্রাকৃতিক নিয়মের ফলাফল নয়। মানুষ নয় ক্ষমতাহীন স্বত্তা । উন্নয়ন মানব ইচ্ছা দ্বারা পরিচালিত কিংবা প্রভাবিত হতে পারে। উন্নয়ন'কে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক উন্নয়ন বলে বিবেচনা করা ঠিক নয়। অর্থনৈতিক উপাদানের পাশাপাশি উন্নয়নে আরো প্রাসঙ্গিক উপাদানের কথা বিবেচনায় আনতে হবে।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন শুধুমাত্র সামগ্রীক সমাজ ব্যবস্থার একটি অংশ বা আয়তনের অগ্রগতি বা উন্নয়নে প্রতিধিত্ব করে, সামগ্রিকতাকে নয়। দেশের উন্নয়ন এমন একটি বিষয় যা নূন্যতম পক্ষে জাতীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি অনর্্তভুক্ত করে। উন্নয়ন প্রক্রিয়া অর্থনৈতিক মাপকাঠি বা প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দ্বারা বিবেচনা করা হলেও এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষ। সে কারনেই উন্নয়নের অন্যতম বিবেচনার বিষয় হলো মানবিক ক্ষেত্র। তাইতো দেশের উন্নয়নে আত্মগঠন ও সম্মিলিত প্রয়াসের কোন বিকল্প নেই।

সেক্ষেত্রে যা করনীয়- ব্যক্তিগত পরিকল্পনা গ্রহণঃ অপরিকল্পিত জীপন-যাপনে শুধুমাত্র সাধারন মানুষই তৃপ্তি পায়। যিনি অসাধারন তিনি সময়কে পরিকল্পিতভাবে ব্যায় করেন। যোগ্যএকক ব্যক্তির পরিপূরক কখনই দশকোটি অযোগ্য ব্যাক্তিও হতে পারেন না। মাথা গুনে হিসাব করেতো মুর্খরা,জ্ঞানীরা মস্তিষ্কের উর্বরতা ও তার প্রয়োগে ফলাফলটা বিচার করেই মূল্যায়ন করে। যেহেতু ব্যক্তি গঠনের আন্দোলন ফলপ্রসূ করা সম্ভব আত্মগঠনের মাধ্যমেই সেহেতু নিজেকে গড়ার জন্য ব্যক্তিগত পর্যায়েই সুচিন্তিতভাবে অত্যন্ত বাস্তবসম্মত,যুগোপযুগী,কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে ।

পরিকল্পনার ধরন- প্রথমত,গোটা দুনিয়াবী জীবনে যা প্রত্যাশা,যা কিছু করতে দারুনভাবে আগ্রহী,বিভিন্ন ক্ষেত্রে যা অর্জন করতে চান,যেথায় পৌছতে চান - অতিব গুরুত্বপূর্ন শ্রেষ্ট চাওয়া গুলো সুনির্দিষ্ট করে একটি তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। সেখানে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, মানবসেবা ও সমাজকল্যানমূলক নানান ক্ষেত্রেরই সবের্াচ্চ আকাংখাগুলো আসতে পারে। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন মেয়াদে যার যার সাধ্যনুযায়ী,সামর্থানুসারে,সুবিধাজনক সময়ের জন্য গোটা জীবনের চাওয়াগুলো পাবার উপযোগী করে নিজেকে কাংখিতমানে গড়ে তোলার সঠিক ও সুন্দর পরিকল্পনা গ্রহন করতে হবে । মূল দীর্ঘমেয়াদী পরকিল্পনাটি অনেকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাগে বিভক্ত থাকবে। প্রতিটি ভাগের বৈশিষ্ট্য হবে- ক) সময় ৬ মাস অন্তর অন্তর তথা ষান্মাসিক খ) যা করণীয় কাজ, যা অর্জন করবেন (প্রতি ৬ মাসে লক্ষ্যের উপর দৃষ্টি রেখে প্রয়োজনীয় কাজগুলো সুনির্দিষ্টকরণ) গ) কী কী সমস্যা আসতে পারে, সেই সম্ভাব্য সমস্যাগুলো চিহ্নিতকরণ।

ঘ) সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান কৌশল কী কী হতে পারে তা চিন্তা-ভাবনা করে লিখা। এবার বিশ্লেষণে আসা যাক । ধরুন কেউ গোটা জীবনের জন্য করা টার্গেটে ভবিষ্যতে রাষ্টদূত হবার আরেকজন দেশের সেরা কলামিস্ট হবার সিদ্ধান্ত নিলেন । দু'জনের এ'লক্ষ্যই চিন্তায়, মননে,কাজ-কর্মে তাদেরকে ভিন্ন বৈশিষ্টের অধিকারী করে ফেলার কথা। যিনি ভবিষ্যতে আনর্্তজাতিক কোন সংস্থার প্রধান হবেন যিনি বড় শিল্পপতি কিংবা ব্যবসায়ী হবেন দু'-জনের জীবনের নানান অংশেই অমিল দেখা যাবে ,এটাই স্বাভাবিক।

যাদের স্বকীয়তা ও ব্যক্তিত্ব থাকে, নিজেকে ব্যতিক্রম ভাবতে ও প্রমাণ করতে পারেন তারাই বড় হন। সেজন্য টার্গেটে পেঁৗছতে হলে নিজেকে প্রস্তুুত করার সিদ্ধান্ত কালবিলম্ব না করে এই মুহুর্ত থেকেই বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে। আর পৃথিবীতে এমন সমস্যা নেই যার সমাধান নেই। যার সমাধান অসম্ভব সেটিকে কোনভাবেই সমস্যা বলে চিহ্নিত করা যাবে না। সমস্যা আসলে যারা সাফল্য লাভের উপযুক্ত তারা ঘাবড়ে যায় না।

পরিকল্পনার প্রতিটি অংশে সম্ভাব্য সমস্যা আনতে হবে যাতে মানসিক প্রস্তুতিই শক্তি জোগায়। আর সম্ভাব্য সমাধান কৌশল নির্ধারিত থাকলে আগে থেকেই ভেবে রাখবে সমস্যার সমাধান করে টার্গেটে পেঁৗছাটা অসম্ভব হবে না। পৃথিবীতে কয়েক ধরনের মানুষ আছে। কিছু মানুষ আছে যারা তার আত্মপরিচয়ই জানে না, নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ উদাসীন, এরা অজ্ঞ। কিছু মানুষ নিজেরর দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে জানে, আত্মপরিচয় সংকট নেই, তবে কীভাবে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবে তার কৌশল, পদ্ধতি জানে না; ফলে এরা নিস্ক্রিয় ভূমিকা রাখে।

কিছু মানুষ কৌশল জানে এবং মানে এরাই সত্যিকারের সৌভাগ্যবান, সাফল্যলাভকারী। আর কিছু মানুষ কৌশল জেনেও মানে না এরা জ্ঞানপাপী। কে কোন ধরনে নিজেকে ফেলবে সেটা তার ইচ্ছা ও প্রচেষ্টার উপরেই নির্ভরশীল। জীবন ডায়েরী রাখাঃ- প্রতিভাবানের ক্ষিপ্রতা অনেক প্রতিভাহীনের কাছে পাগলামো বৈ কিছুই নয়। অনেকেই খুব সহজেই অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হন,সিদ্ধান্তহীনতা ও দ্বিধাদ্বন্ধে ভোগেন।

এদের নিজস্ব ব্যক্তিত্ব বলতে কিছুই নেই। অন্যের চিন্তায় চিন্তা করেন,অন্যের ভাবে নিজের ভাষা সাজান। এরকম অন্ধ অনুকরন,বিবেচনাহীন অনুসরন ব্যক্তিত্বশালীরা করেননা । যারা হীনমন্যতায় ভুগেন প্রতিযোগিতা ও সংগ্রামমুখর এ'জগতের জন্যে তারা অভিশাপ স্বরুপ। যারা ঘটনার মহানায়ক রূপে আর্বিভূত হন,বড় মাপের মানুষ হন তারা জীবনের নানা ঘটনা, চার পাশের বাস্তবতা এবং জীবন ও জগত থেকে অর্জিত শিক্ষা,অভিজ্ঞতা লিখে রাখতে পছন্দ করেন।

পরবর্তী প্রজন্ম এ থেকে মনিমুক্তা কুড়িয়ে নিতে পারে। এছাড়া নিজের সিদ্ধান্ত,স্বপ্ন, বিভিন্ন জনের দেয়া পরামর্শ এসব লিখে রাখলে তা নিজেকেও অনুপ্রানিত করতে পারে। আমরা অনেক কিছুই ভূলে যাই। সুতরাং দৈনিক ১/২ পৃষ্টা করে জীবন ডায়রী লেখা যেতে পারে। তবে হ্যাঁ অপ্রয়োজনীয় কিছু লিখে যাতে সময় নষ্টের সম্ভাবনার তীব্রতা ঘনিভূত না হয় সেদিকে সর্তক দৃষ্টি রাখতে হবে।

প্রতিটি কাজই বুঝে শুনে,চিন্তা-ভাবনা করে করতে হবে। আন্তরিকতা না থাকলে, আনন্দের সংমিশ্রন না ঘটলে কখনো নিরস কাজ সফলতার মুখ দেখেনা । সেক্ষেত্রে কে কী ভাবলো, এনিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই। কেননা ক্ষুদ্র মনের মানুষ মহৎ ব্যক্তির বৃহৎ আয়োজনেরও ইতিবাচক কোন অর্থ খুঁজে পায়না । বক্তৃতার ক্ষমতা অর্জনঃ- বক্তৃতা এমন শক্তি যার সাথে অন্যকোন শক্তির তুলনা করা বেমানান।

বড়মাপের শিক্ষিত কোন ব্যক্তিও যদি ভাল বলতে না পারেন তবে অনেকে ঠাট্টা করে বলবে শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করে চাকুরীর লক্ষ্যে পড়াশুনার আয়োজন বোকার স্বর্গ রচনার প্রয়াস বৈ কিছুই নয়। যিনি ভাল বক্তা তিনি অনেক ক্ষেত্রেই প্রচণ্ড শক্তির অধিকারী । যে ক্ষেত্রে যে অবস্থানেই তিনি থাকুন না কেন সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠার ক্ষেত্রে এটি বড়ই সহায়ক ভূমিকা রাখে,সফলতার স্বর্নালী দিগন্ত উন্মোচন তার জন্য সহজ হয়। যদি প্রকাশ না পায় সে জ্ঞানে মানুষের মোটেই কল্যান হয়না । ধরুণ- বিশ্ববিদ্যালয় যদি হয় জ্ঞানের সাগর, এখানে কেউ কোন রকম সাতঁরে পার হবে,কেউ মনিমুক্তা কুড়িয়ে সমৃদ্ধ হবে,কেউ এর সৌন্দর্য অবলোকন করেই তৃপ্ত হবে , কেউ হয়তোবা ডুবে মরবে এটা স্বাভাবিক।

এগিয়ে যদি থাকতেই হয়,প্রযুক্তির সংসর্্পশের বিকল্প নেই। আর সেজন্য যেমন প্রয়োজন অর্থ,জ্ঞান,সাহসিকতা ও ক্ষমতার তেমনই মানুষকে নিয়ে বৃহৎ কোন উদ্যেগ বাস্তবায়ন ও বিশাল আয়োজন সফল করতে প্রয়োজন ভাল বক্তৃতার । এর কোন বিকল্প নেই। ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন ঃ- 'হেকমত,'টেকনিক,আর 'কৌশল , এর মানেইতো লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, মুলনীতি ঠিক রেখে টার্গেটে পৌছাঁর জন্যে পরিবেশ পরিস্থিতি ও সময়ের দাবী অনুযায়ী পদ্ধতি বা প্রক্রিয়ায় যৌক্তিক পরিবর্তন সাধন, উপযুক্ত পরিকল্পনা গ্রহন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনয়নের প্রক্রিয়া, প্রচেষ্টা। আর কল্যানের দিকে ডাকতে হবে সবাইকে।

মানব সমাজের অন্তর্ভুক্ত সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন এমন একজন ব্যক্তিও নেই যিনি ভাল পথের দিকে আহ্বান শুনারও অনুপযুক্ত। আর ধর্মেও 'আশরাফুল মাখলুকাত' 'আল্লাহর খলিফা' 'খায়রে উম্মাত'-বলার মানে কী? স্রষ্টা এসব পরিচয় দিয়েছেন কী পরিচয় রক্ষার যোগ্যতা না দিয়েই? সেটি তো হতে পারে না। আমাদের মহানবী (সা) তো ছিলেন একজন ব্যক্তি মানুষ। তার উত্তরসূরী, উম্মত আমরা। সে হিসেবেও ব্যক্তিগত পর্যায় থেকেও বিশ্বব্যাপী যা ভাল, সুন্দর, কল্যাণকর তার প্রচার প্রসার ঘটানোর চেষ্টা করা উচিত নয় কী? প্রযুক্তির উৎকর্ষতার কল্যাণে প্রত্যেকটি ব্যক্তির জন্যই এক্ষেত্রে যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি হয়েছে, চেষ্টা করলে যার বাস্তবায়ন অনেক সহজ হয়ে এসেছে।

বিভিন্ন উপলক্ষে নানান প্রক্রিয়ায় সবার কাছাকাছি হতে পারলে পরোক্ষভাবে কল্যাণের পথ দেখানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে। আন্তরিকতা বৃদ্ধি ও সম্পর্ক গভীর হলে ও প্রত্যক্ষভাবেই ভাল কথা বলা, সুন্দর কাজে সম্পৃক্ত হবার আহ্বানের সুযোগ থাকবে। এ জন্য ইংরেজি অবশ্যই দক্ষতা অর্জন করতে হবে। লেখার মাধ্যমে, বলার মাধ্যমে, প্রযুক্তিকে ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী নিজের, নিজ সংগঠনের পরিসরকে বিস্তৃত করতে হলে এর কোন বিকল্প নেই। কম্পিউটার ও ইন্টানেট সংক্রান্ত জ্ঞান: অন্যদেরকে ব্যবহার করার কৌশল আয়ত্ব করতে হবে।

বিশ্বনবী (সা) কী প্রয়োজনে অন্যের আশ্রয়ে থাকেন নি? বিধর্মীদের কাছ থেকে জিযিয়া কর নেন নি? যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে গনিমতের মাল সংগ্রহ করেন নি? তখনকার প্রেক্ষাপটে আর বর্তমান প্রেক্ষাপট একরকম নয়। এখন অনেক ক্ষেত্রেই পরিবর্তন এসেছে। সেই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াইয়ে মূলনীতি ঠিক রেখে কী সর্বোত্তম বিকল্প খুঁজে নিতে হবে না? কল্যাণ কীভাবে, সুফল কোথায়, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা উপলব্ধির ক্ষেত্রে গভীর আন্তরিকতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হবে। রাসূল (সা) কী নিজের নাম স্বহস্তে কাটেন নি? তাতে ক্ষতি না লাভ হয়েছে? অবশ্যই ইসলামের বিজয় পথ সুপ্রশস্ত হয়েছে। সংকীর্ণতা, অন্ধপ্রেম, অতিরিক্ত আবেগ ও জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে হৃদয়ের গভীর থেকে উৎসারিত ভালবাসার জোয়ার বৃহৎ কল্যাণ হাসিলের কৌশল ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

সেক্ষেত্রে বাস্তব সম্মত চিন্তা ও সচেতনতা প্রয়োজন। না হলে পরিণতি হবে ভয়াবহ। কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের ব্যবহার না করলে ব্যক্তি সময়ের তালের সাথে ছন্দ মিলিয়ে সামনে এগুতে পারবে না, পিছায়ে পড়তে হবে। সে জন্য এগিয়ে থাকতে হলে প্রত্যেকেই কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংক্রান্ত জ্ঞান অর্জন এবং অর্জিত জ্ঞানের প্রয়োগ সঠিক পন্থায় করতে হবে। লেখালেখিতে পারদর্শিতাঃ- ছাত্রও যুবসমাজ সহ সুপ্রতিষ্ঠিত অনেক ব্যক্তিত্ব শালীদের অনেকেই রাজনৈতিক সংগঠনকে অপছন্দ করেন, দেশজাতি ও মানবতার কল্যানে ভাল কিছু করতে চান।

কিন্তু সম্মিলিত কোন বৃহৎ উদ্যোগ না থাকায় তাদের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা গুলো খুব বেশি সুফল বয়ে আনে না। অনেকের ইচ্ছা ও আগ্রহের স্বপ্নের জগতেই যবনিকাপাত ঘটে,বাস্তবতার মুখে দেখার সৌভাগ্য হয়না। বিভিন্ন জন তাদের বিবেক কিংবা আবেগ অনুভূতির দ্বারা তাড়িত হয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্তহয়। অনেক সময় এসব বিক্ষিপ্ত চিন্তা ও এক গতিধারায় নতুন শক্তির সম্পৃক্ততার প্রয়াস ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে আনে । তাই বিদ্যমান সমস্যার সমাধান ও সংকট নিরসন করে সম্ভাবনার বিকাশ ঘটায়ে মঙ্গল বয়ে আনার প্রচেষ্ঠতেই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়।

এসব নানান ভাল চিন্তা সমাজে সহজেই ছড়ানো সম্ভব লেখালেখির মাধ্যমে। একটি ভাল লেখার প্রভাব পৃথিবী যতদিন টিকে থাকবে ততদিনই ক্রিয়াশীল থাকতে পারে । সেজন্য লেখনির মাধ্যমে জাতিকে দিক নিদের্শনা দিতে হবে,সজাগ ও সচেতন করতে হবে। চিন্তাশীল,গভীর পান্ডিত্ব , প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টির অধিকারী লেখকেরাই পারে সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়ন করতে । সুতরাং লেখালেখিতে পারদর্শিতা অর্জন খুবই গুরুত্ব দিতে হবে।

আকর্ষণীয় করে উপস্থাপনাঃ. দেশি-বিদেশি খ্যাতিমান লেখক,চিন্তাবিদ, গবেষক ও সফল ব্যক্তিত্বদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে অনেক কিছুই জানা ও বোঝার সুযোগ তৈরি হতে পারে। সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পিত বিভিন্ন প্রশ্ন করে তার উত্তর নেয়া যেতে পারে। যা আমাদের জ্ঞানের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করবে। সেগুলো বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে প্রকাশ করাও যেতে পারে। সরাসরি সাক্ষাৎকার গ্রহণ, বিভিন্ন বিষয়ে শীর্ষমানের জ্ঞানী ব্যক্তিত্ব ও সফল মানুষদের চিন্তা ও বিশ্লেষণ সংক্রান্ত লেখা, মতবিনিময়, প্রয়োজনীয় বিষয়ে গবেষণামূলক বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে সেরা সেরা লেখাগুলো প্রকাশ করা যেতে পারে।

এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে জরিপ পরিচালনা করে প্রাপ্ত ফলাফল প্রকাশ হতে পারে। আর এ'সব কার্যক্রম পরিচালনায় সফল হবার জন্য আকর্ষণীয় করে নিজেকে উপস্থাপনার কৌশল আয়ত্ব করতে হবে। পোশাকে-আষাকে, কথায়-বার্তায়, লেখায়-বক্তৃতায় সুরুচিশীলতার পরিচয় দিতে হবে। উপস্থাপনা সুন্দর হবার ওপরই অনেক ক্ষেত্রে সাফল্য নির্ভর করে। সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের প্রচেষ্টা: ধর্মীয় আবেগ ও দেশপ্রেমের অনুভূতিকে প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করে নানান কর্মসূচী বাস্তবায়নকারী ব্যক্তি, দল বা সংগঠনের স্বার্থলোলুপ দৃষ্টির শুধু সমালোচনা না করে উত্তম বিকল্প দিতে হবে।

শুধু সমালোচনা নয়, সমাধান চাই, বিকল্প চাই। যাতে মঙ্গল তার বিরুদ্ধে অর্জিত অনাকাঙ্ক্ষিত ফলাফলকে কাজে লাগানোর বিরুদ্ধাচারণ মুখে বলেই পূর্ণ সুফল পাওয়া অসম্ভব। যেহেতু স্বার্থসন্ধানী, লোভী, ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠীর অর্জিত ক্ষমতা যা ভাল তার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, সুতরাং একে রুখতে হবে। এ জন্য কৌশল একটাই সর্বোত্তম বিকল্প সৃষ্টি করা। যে কোনো ক্ষেত্রে, যেকোনো পরিসরে যখনই দেখা যাবে সমাজের জন্য অকল্যাণ বয়ে আসছে সেখানে সেই পরিসরেই উত্তম বিকল্প তৈরি করতে হবে।

আর এজন্য অবশ্যই প্রয়োজন হবে নানাবিধ যোগ্যতার, বহুমুখী প্রতিভার। যত্নটা ব্যক্তিপর্যায়ে হতে হবে। সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের অব্যাহত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক, সেবামূলক, সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। মেধা ও প্রতিভার উপযুক্ত পরিচর্যা হতে হবে।

যাতে কোনো মেধাই হারিয়ে না যায়, সুপ্ত প্রতিভা লুকিয়ে লুকিয়ে শুকিয়ে না যায় সে জন্য প্রয়োজনে সর্বস্তরে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর হঁ্যা সুপ্ত প্রতিভা ও মেধার সুষ্ঠু বিকাশের পাশাপাশি তা যাতে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে আসে যে ব্যাপারটিকেও গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় আনতে হবে। আর এ জন্য প্রথমত, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেই উদ্যোগী হতে হবে। দ্বিতীয়ত, এ ব্যাপাওে সামষ্টিকভাবেও অতিব গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রশান্তিঃ- মানুষের মধ্যে মনুষত্ব থাকবে এটাই স্বাভাবিক ।

মানুষের মাঝে মনুষত্ব থাকবে,পশুর মধ্যে পশুত্ব থাকবে এটাই যৌক্তিক । আমি মানুষকে মনুষত্বহীন কল্পনা করিনা। মনুষাকৃতির কারো মােেঝ যদি মনুষত্ব অনুপস্থিত থাকে তবে সে মানুষের মত দেখতে কিন্তু আসলে মানুষ নয় । আসল মানুষের মাঝে মানবপ্রেম থাকবে ,যার নেই সে নকল মানুষ। প্রতিটি সুস্থ বিবেক সম্পন্ন মানুষের উপরই তার নিজ পরিবার ,আত্মীয়-স্বজন পাড়া-পড়শী ,সমাজবাসী,দেশবাসী,মানবতার কিছু অধিকার পূরনের দায়িত্ব ও কর্তব্য সৃষ্টি হয় ।

প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ সবল একজন প্রকৃত অর্থে ও আকৃতিতে আসল মানুষ এটা বলতে পারেন যে, 'জীবনের এতটুকু সময় পরের জন্য কিছু করবনা নিজের জন্য ছাড়া' । ব্যক্তি যদি একা না পারে কোন সামষ্টিক ভাবে হলেও বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়নের বৃহৎ প্রচেষ্টায় অংশ গ্রহন করবে এটাই যৌক্তিক । আর এত বিরাট দায়িত্ব ও কর্তব্য অসুস্থ শরীর ও রোগ্ন মনের দূর্বল মানুষের পক্ষে পালন করা অসম্ভব। জীবন সংক্ষিপ্ত, সময় অনন্ত । সংক্ষিপ্ত জীবনে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকার কোন মানে হয়না ।

আধমরা হয়ে অন্যের ওপর বোঝা হয়ে না মরে মৃতপ্রায় হয়ে বেচেঁ থাকা কাম্য নয় । বেচেঁ থাকাটাই যদি অর্থহীন হয়ে পড়ে দুঃখের কোন সীমা পরিসীমা থাকেনা । সুতরাং শারিরীক সুস্থতার প্রতি যত্মবান হতে হবে । জাতির প্রতিটি সদস্য কে সুস্থ,সবল ,বলবান শক্তিশালীরূপে গড়ে তুলতে হবে । শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রশান্তি বিনা বৃহত্তর কল্যানে আত্মনিয়োগ করা বা করানো সম্ভব নয় ।

যে নিজেই দুর্বল অন্যকে সে শক্তি জোগাবে কী ভাবে ? এটা অসম্ভব। পরিচিত জনদের ঠিকানা সংরক্ষণ: আমরা জীবনের বাঁকে বাঁকে নানান জনের সংস্পর্শে আসি। অনেকের ফোন, ফ্যাঙ্, ইমেইল নং, মোবাইল নং কিংবা স্থায়ী- অস্থায়ী ঠিকানা সংগ্রহে না থাকার কারনে পরবর্তীতে ইচ্ছা করলেও মন চাইলে কিংবা প্রয়োজন হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয় না। অথচ এসব যোগাযোগ জীবন চলার পথে অনেক সময় বিরাট সুফল বয়ে আনে, কাজে লাগে। সুতরাং স্বল্প কিংবা দীর্ঘ সময় মেয়াদের পরিচিতজনদের যোগাযোগের ঠিকানা সংরক্ষনের জন্য একটি ডায়েরী নির্দিষ্ট করে ব্যবহার করা যেতে পারে।

কিংবা ঠরংরঃরহম পধৎফ গুলো সুন্দর একটি এ্যালবামে সংরক্ষণ করা যেতে পারে । স্মৃতি সংরক্ষণঃ প্রাইমারী জীবনে ডিসি ,এমপির হাত থেকে পুরস্কার নেয়া মাধ্যমিকে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে সংধর্বনা ক্রেস্ট পাওয়া উ্চ্চমাধ্যমিক বা বিশ্ববিদ্যালয় পযর্ায়ে বিশাল বিশাল অনুষ্টানাদিতে নানান প্রোগ্রামে অংশগ্রহনের স্মৃতি গুলো কার জন্য না আনন্দের। যা আর ফিরে আসেনা কোন দিন। ভবিষ্যতে আসতে পারে নোবেল কিন্তু শৈবব কৌশর ও যৌবনের প্রানচাঞ্চল্যের সময়ের প্রানোচ্ছল চেহারা আর ফিরে পাওয়া যাবেনা । নিজের জন্য না হলেও অন্যের জন্যে এগুলো হতেই পারে প্রেরনার।

সুতরাং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য হলেও স্বীকৃতি, সম্মাননা, পুরষ্কার অর্জনসহ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ নানান দৃশ্যগুলো সংরক্ষণ করা যেতে পারে। একজনের সাফল্য আরেকজনকে আরো বড় সফলতা অর্জনে অনুপ্রাণিত করতেই পারে। সুতরাং ভিডিও, অডিও যাই হোক স্মৃতি সংরক্ষণের আয়োজন থাকলে মন্দ হয় না। ছবির এ্যালবাম সমৃদ্ধের পাশাপাশি অটোগ্রাফ নেবার জন্যেও আলাদা সুন্দর একটি নোটবুক ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি সুন্দর কথা, পরামর্শ একটি জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।

এটা মোটেই হাসি তামাসার নয় বরং সিরিয়াসলি নেয়ার মত। নিজের আত্মজীবনী লেখা, ভালো আলোচনা, বক্তৃতা রেকর্ড করে রাখা পরবর্তীতে শুনা এগুলো মানসিক তৃপ্তির পাশাপাশি নিজের উন্নতি করে। যা ব্যক্তিকে উদ্যমী, আগ্রহী করার ক্ষেত্রে সহায়ক। এছাড়াও এসবের সুফল রয়েছে মেলা- সেটা নাইবা বললাম। কলম ও নোট বুক সাথে রাখা ও ব্যবহার ঃ আমরা তথ্য ও তথ্যের জগতে বাস করি।

এমন অনেক বিষয় আমরা দেখি কিংবা শুনি যা স্মৃতির ভান্ডারে আজীবন সংরক্ষনের ইচ্ছা ও জাগে কিন্তু লিখে না রাখায় এমন গুরুত্ব পূর্ণ অনেক কিছুই বিস্মৃতির অতল গহবরে হারিয়ে যায়। যার ফলাফল প্রয়োজনের সময় আর তা খুঁজে না পাওয়া । অনেক ক্ষেত্রে এমন হতেই পারে দ্বিতীয় বার জীবনে আর হারানো সুযোগ টি নাও আসতে পারে । মূল্যবান কিছু যাতে হারাতে না হয় সেজন্য সর্তকতার সাথে সব সময় কলম ও ছোট নোট বুক সাথে রেখে প্রয়োজন হলেই তার সোর্বত্তম ব্যবহার নিশ্চত করা যেতে পারে। জানার জন্য ভ্রমণঃ হাসপাতালগুলো পরিদর্শন করলে বিভিন্ন বয়সের নানা ধরনের রোগী দেখে নানান ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

তবে এখানকার অভিজ্ঞতা আর অভিজাত হোটেল বিপনী কেন্দ্র গুলো পরিদর্শনে মানসিক প্রতিক্রিয়া অভিজ্ঞতা এক হবেনা । বিশাল প্রসাদ আর অট্টালিকায় বসবাস করে, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল কলেজ আর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ে , সব সময় গাড়ী নিয়ে ঘুরে ,ফাষ্টফুড খেয়ে বস্তিবাসীদের দুঃখ কষ্ট,গ্রামীন কৃষক সমাজকে বুঝা তথা এ'দেশকে , দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে, তাদের জীবন যাত্রাকে গভীরভাবে উপলব্ধি করা সম্ভবনা। তেমনি রিঙ্া চালায়ে মাঠে কাজ করে , কাট ফাঁটা রৌদ্রে পুড়ে ,ঘামে ভিজে বড়লোক শ্রেণীকে বুঝা সহজ নয় । হয়তো বলবেন এগুলো বুঝার দরকার কী? একজন শিক্ষিত সচেতন মানুষ যিনি দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করতে চান তাকে দেশের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ, সমাজের বিশেষ সমস্যা ও সম্ভাবনা গুলোকে বুঝতে হবে। না হলে কারো সম্পর্কে নেতিবাচক কিংবা ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়ে একসময় বিশ্বাসে রূপ নেবে।

অথচ সেটি অযৌক্তিক, অগ্রহণযোগ্য হতে পারে। পাইলটের পক্ষে রিঙ্া চালকের দুঃখ-দুর্দশা বুঝা বেশ কঠিন। অর্থাৎ প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মানুষের যে জ্ঞান হয়, পড়ে-শুনে কিংবা কোনো মাধ্যমে দেখে সেরকম হওয়াটা সম্ভব নাহওয়াটাই স্বাভাবিক। সুতরাং দেশ-বিদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য জানার জন্যে দর্শনীয় নানা স্পটগুলো ঘুরে ঘুরে দেখার পাশাপাশি বিভিন্ন মানুষের সাথে মিশে, সমাজ ও সাংস্কৃতিকে দেখে এ পৃথিবীর মানব সমাজের মধ্যকার নানা বৈচিত্র্যকে উপলব্ধি করা শিখতে হবে। অজানাকে জানার মাধ্যম হিসেবে বিভিন্ন সভা, সেমিনারে অংশগ্রহণ, লাইব্রেরীতে বসে অধ্যয়ন ও ইন্টারনেট ব্যবহারই যথেষ্ট নয়।

অচেনাকে চেনার জন্য ভ্রমনের কোনো বিকল্প নেই। এতে জ্ঞানপিপাসু মন তৃপ্ত হবে, মানসিক প্রশান্তি লাভ হবে। ব্যক্তিগত লাইব্রেরী সমৃদ্ধকরণbr /> পৃথিবীর বিপুল গ্রন্থ ভান্ডারের সব বই সংগ্রহ করাও সম্ভবনা, পড়াও সম্ভবনা। এটার প্রয়োজনও নেই। ব্যক্তিগত লাইব্রেরী সমৃদ্ধ হওয়া মানেই জ্ঞানে সমৃদ্ধ হওয়া ব্যাপারটি এমনও নয়।

অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে, লাইব্রেরীতে, পরিচিতদের কাছ থেকে ধার এনে নানান ভাবেই বই পড়া চলতে পারে। তারপরও ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক একটি লাইব্রেরী থাকলে মন্দ হয় না। না থাকলে কেমন যেন একটা অপূর্নতা থেকে যায় । তার মানে ভাব দেখানোর জন্য নয় এটা প্রয়োজনীয়ও বটে । সবার পছন্দ অপছন্দ এক রকম না।

এমন কিছু বইয়ের সাথে সাক্ষাৎ ঘটে, পরিচয় থেকে ভাললাগা, ভাললাগা থেকে ভালবাসা এমন গভীর পর্যায়ে পেঁৗছে যায় যেন ঐ বইটি হৃদয়ের সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। একবার নয় বারবার পড়েও অতৃপ্তি আসে না, বিরক্তিবোধ হয় না, স্বাদ না কমে বাড়তেই থাকে। এমন বইতো না কিনে উপায় নেই। তাই এ ধরনের বইগুলো ব্যক্তিগত সংগ্রহে থাকতে পারে। যা রুচিবোধ, মননশীলতা, চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গিকে সুস্পষ্টরূপে প্রকাশ করবে।

যেটি আপনার বই, একান্তই নিজের। ইচ্ছামত পড়া যাবে, আন্ডারলাইন করা যাবে। ইচ্ছে করলে পাশে মন্তব্য বা নোটও লিখা যাবে। থাকবে পূর্ণ স্বাধীনতা। সুতরাং নিশ্চিন্তে সাগ্রহে ব্যক্তিগত লাইব্রেরী গড়া ও সমৃদ্ধ করার জন্যে স্বতঃস্ফুর্তভাবে এগিয়ে আসুন, তাতেই মঙ্গল।

ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তা ও কাজ: জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী , জাতীয় ও ধর্মীয় বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে শুভেচ্ছা বাতর্া পাঠানো , আমন্ত্রন জানানো , বিভিন্ন উপহার সামগ্রী প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সম্পর্ক সৃষ্টি করে কাছাকাছি হওয়া যায় । এ জন্য অবশ্যই মস্তিষ্কের সবের্াচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে নিজ কৌশল আবিষ্কার করার প্রয়োজন রয়েছে । ডাক, মোবাইল , ফোন, ফ্যাঙ্, কুরিয়ার, ইন্টারনেট , সংবাদপত্র ও মিডিয়া চ্যানেলকে প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে । এ ব্যাপারে চিন্তা ও গবেষনা বাড়ালে তাতে অনেক সুফল পাওয়া সম্ভব । ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তা ও কাজে অনেকেই সহজে আকৃষ্ট হয় ।

ক্ষুদ্রঋনের ধারনা থেকে শুরু করে নৌকা স্কুল, ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী , ভাসমান হসপিটাল, ক্যাডেট মাদরাসা আর প্রথম কার্ড বিনিময় চালুর ধারণা পর্যন্ত সবক্ষেত্রেই নতুনত্ব রয়েছে। মানুষ নতুনত্বের সন্ধানী। তাই ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তা ও কাজ বৃদ্ধি করতে হবে। অন্যকে স্বমতে আনার যোগ্যতা: সফলতার জন্যে প্রয়োজনীয় এ গুণটি অর্জনে জ্ঞান ও সাহসের বিকল্প নেই। বুদ্ধিমান ভীরু তুলনামূলক কম জ্ঞানী সাহসী ব্যক্তিত্বের কাছে যেকোনো প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ধরাশয়ী হয়ে পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

আর হঁ্যা পারস্পরিক আলাপচারিতায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে দেয়া বক্তব্যে আবেগই অযৌক্তিক বিষয়ের অবতারণা ঘটাতে পারে। সে জন্য সচেতন থাকতে হবে। কারো দুর্বলতা জেনে দুর্বল পয়েন্টে আঘাত করে ঘায়েল করার প্রয়াস চালানোটা যৌক্তিক হবে না। যিনি বিশ্বমানবতার জন্যে বিশাল কিছু করতে চান অন্যকে স্বমতে আনার যোগ্যতা তাকে অর্জন করতেই হবে। কারণ একা একা অনেক বৃহৎ কাজ করা যায়না ।

আর ইতিহাসের মোর যারা ঘুরিয়ে দেন , ঘটনার মহানায়ক রূপে যারা আর্বিভূত হন তাদেরকে মানুষকে নিয়ে এগিয়ে চলার দুঃসাহসিক কাজ করতে হয়। ঘটনা প্রত্যক্ষ করার জন্য দুটো চক্ষুই যথেষ্ট। ঘটনা উপলব্ধির জন্য প্রয়োজন সচেতন মনের । আর তা গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন ও বিচার বিশ্লেষনে প্রয়োজন জাগ্রত বিবেক । তবে নিঃসন্দেহে নিজেকে ঘটনার মহানায়ক রূপে আর্বিভূত করা অনেক বেশী কঠিন কাজ ।

ইতিহাস লেখা ও পাঠ করা যেমন সহজ; ইতিহাস সৃষ্টি করাটা তেমন কঠিন। যেমন হাততালি পাবার মাঝে মঞ্চ অভিনেতা মানসিক প্রশান্তি খুজে নাও পেতে পারে ,অভিনয়েই তার আনন্দ। আর হ্যাঁ যারা অন্যের স্বীকৃতি বা পুরষ্কারের দিকে না তাকিয়ে নিরবে সরবে নিজের দায়িত্ব -কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করে যান এদের সংখ্যাটা তুলনামূলক ভাবে খুব কমই হয়ে থাকে। সৃষ্টির সেবার উদ্যোগঃ- ধরুন ী,ু,ু তিন সহপাঠী। ী যদি জানে যে ুও ু এর মধ্যে বড় ধরনের গন্ডগোল হয়েছে ।

সমর্্পকে ঘটেছে চরম অবনতি । এমন গুরুতর পযর্ায়ে গিয়েছে যে ু এর পকেটে থাকা বন্দুকটি দিয়ে ু কে খুন করতে চাচ্ছে। তখন ী কী ু এর কাছ থেকে ছলে বলে কৌশলে কিংবা শক্তি প্রয়োগ করে বন্দুকটি কেড়ে নেবেনা? কোন প্রতিক্রিয়াই দেখাবেনা? বর্তমান যে চ্যালেঞ্জ তাতে শান্তির পক্ষের শক্তিকে দমানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত। অশান্তির দাবানল তার শক্তি নিয়ে শান্তির করুন পরিসমাপ্তি ঘটাতে প্রত্যক্ষ -পরোক্ষভাবে প্রতিনিয়ত যুদ্ধেরত । সুতরাং কৌশলে যা পাওয়া সম্ভব নেয়া দরকার ,মঙ্গলের পক্ষে ব্যয় করে সৃষ্টির সেবার উদ্দ্যোগ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া থাকা দরকার ।

এখানে ী মানে- নবীন প্রজন্ম, দেশপ্রেমিক যুবসমাজ , ু মানে- পুঁিজবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসনী শক্তি, ু মানে- মানবতা ,মনুষত্ব , সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি, কল্যান-উন্নতি,অস্র হচ্ছে- নানান দালাল গোষ্টি, বিভিন্ন ঘএঙ ও প্রতিষ্ঠান, দাতাগোষ্ঠী সমূহ ইত্যাদি। সেবার নামে স্বার্থ উদ্ধার, বানিজ্য নয় প্রয়োজন নিঃস্বার্থ সেবা। এজন্য কৌশলে ু এর শক্তি ও অস্রের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার কুফল থেকে তকে মুক্তি দিতে যতটুকু করা যায় তাতেই মঙ্গল। মহৎ উদ্দেশ্য সাধনে ব্যয় হলে যা আসবে তাতো গনিমতের মালের মত । তবে সৃষ্টির সেবায় আত্মনিয়োগ করার মত মহৎ কার্য সাধনে নিঃসন্দেহ যোগ্য মানুষদের যৌথ প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।

একক প্রচেষ্টায় অনেক বড় কিছু করাটা অতসহজ নয়, অনেকটা অসম্ভবই বটে। পরিকল্পিত ভাবে মানুষের সাথে মেশাঃ সঠিক পরিকল্পনা ও শক্তিশালী কর্মপ্রচেষ্টায় কঠিন কাজ ও সহজ হয়ে ওঠে । মানবপ্রেম সত্যিকারের মানুষের বড় গুন । মানবিকতা ও মনুষ্যত্ববোধই মানব সেবার মহৎ গুনটির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। কারো ভালবাসার পরিসর খুবই সংকীর্ণ,কারোবা বিশাল পরিসরে বিস্তৃত।

সত্যিকারে ভালবাসিতো তাকেই যার প্রতিক্ষনের আনন্দ আমাকে মানসিক প্রশান্তি ও তৃপ্তিতে ভরিয়ে তুলে । যার সামান্য দঃখ বেদনায়ও হৃদয়ে কষ্টানুভূত হয় সেইতো প্রিয়জন । যার প্রতি কখনও ঘৃনা বা বিরক্তি নয় থাকে সহানুভূতি ও সহমর্মিতা । এই ভালবাসার আবেগ ও অনুভূতি ছড়িয়ে পড়তে হবে বিস্তৃত পরিসরে , পৃথিবীর সকল মানুষের মাঝে । একজনের একটু ঘোমড়া মুখ দেখে খাওয়া,ঘুম সব হারাম হয়ে যায়, আরেকজন অ্যাকসিডেন্ট করে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকলেও মন কেঁদে উঠেনা ।

এতো স্বার্থপর , পশুর চেয়েও নিৎকৃষ্ট, মানব জাতির কলংক। নীল আকাশের বড়ত্ব , মহাসাগরের বিশালতা , প্রকৃতির উদারতাও যাকে ক্ষুদ্র চিন্তায় বিভোর রাখে সে সত্যিই হতভাগা তার প্রতি করুনা হয় ,মায়া হয়। বিভিন্ন শ্রেনীর নানান ধরনের মানুষের সাথে মিশে তাদের স্বভাব , প্রকৃতি,চাহিদা সম্পর্কিত বিস্তৃর্ণ ধারনা অর্জন করতে হবে। পুঁথিগত বিদ্যা দিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে আয় রোজগার করে জীবন চালানো যায় প্রকৃত জ্ঞান লাভ হয়না । প্রকৃত জ্ঞানী হিসাবে নিজেকে গড়ার জন্য পরিকল্পিতভবে মানুষের সংসর্্পশে যেতে হবে , জানতে ও জানাতে হবে, বুঝতে হবে ,নিজেকে সমৃদ্ধ করতে হবে ।

সর্ম্পকের ছড়ানো জাল বড় ধরনের কল্যান হাসিলের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে । যা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। যোগাযোগ রক্ষাঃ- যোগযোগের জন্য শক্তিশালী একটি গ্রুপ, গবেষনার জন্য শক্তিশালী একটি টীম , অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ, সম্ভাবনাময় মেধাবী ও যোগ্য নেতৃত্ব এবং কর্মী বাহিনী,একটি বড় উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে। এ'ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যক্তিকে মেধাবী, চরিত্রবান ও সাহসী হবার পাশাপাশি ইংরেজি শুনা, বলা, পড়া ও লেখায় দক্ষতা, কম্পিউটার ব্যবহার ও বক্তৃতায় পারদশর্ী হতে হবে । রাজনৈতিক পরিচয় ব্যক্তির গ্রহনযোগ্যতার পরিসরকে সীমিত করে ।

সেক্ষেত্রে অবশ্যই কৌশলী ভূমিকা থাকতে হবে। ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে সর্ব পর্যায়ে যোগাযোগের স্কীলটা ভাল থাকতে হবে। মোবাইল, ফোন, ফ্যাঙ্, ইন্টারনেটসহ সবই ব্যবহারের আয়োজনটা থাকতে হবে। শুধু শরীর নিয়ে দেঁৗড়ায়ে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যক্তিত্বরূপে নিজেকে এগিয়ে রাখা দুঃস্বপ্ন বৈ কিছুই নয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সহায়তার সর্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে হবে।

যোগাযোগের নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবন করে নানাবিধ প্রক্রিয়ায় প্রচার, প্রসার ব্যাপকভাবে করে নেটওয়ার্ক সমপ্রসারণ করতে হবে। এসবের পাশাপাশি ব্যক্তিকে রক্তের সম্পর্ক, এলাকার সম্পর্ক, শিক্ষাজগতে বিচরণ করতে গিয়ে গড়া সম্পর্ক, খেলার মাঠের সম্পর্কসহ নানানভাবে আমরা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সার্কেলটা বিশাল বিস্তৃত। আর এসব সম্পর্ক তৈরি করে এক ধরনের দাবী ও অধিকার। এটাকে কাজে লাগায়েও অনেক কিছু করা সম্ভব।

এ জন্য প্রয়োজন তীক্ষ্ম বুদ্ধির, যোগাযোগ রক্ষা করার মতো ধৈর্যের, উদার মানসিকতার, প্রয়োজনীয় উপায়-উপকরণের। ব্যক্তিপর্যায়ের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ইতিবাচক ফলাফল আনতে হলে যোগাযোগ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। বিভিন্ন সামাজিক কল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ: সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য সেবামূলক সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সম্মিলিত প্রয়াসে দেশ, জাতি ও মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত হওয়ার সুফল অনেক। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যুগোপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও ক্ষুদ্র কিংবা বৃহৎ প্রচেষ্টাকে আরো গতিশীল করণে নানা কর্মকৌশল গ্রহণ করতে হবে। বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রকে গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি সামাজিক ও সেবামূলক কাজকে অত্যন্ত গুরুত্ব না দেয়ার কোনো কারণ নেই ।

স্বার্থচিন্তায় বিভোর এমন মানুষের সংখ্যা যত বাড়বে পৃথিবীতে শান্তি ততই কমবে। সমাজে চিন্তাশীলদের গঠনমূলক ও কল্যাণকর চিন্তার প্রকাশে অবাধ সুযোগ থাকতে হবে। তবেই সময়ের দাবি পূরন, বাস্তবতাকে বিবেচনা করে উপযুক্ত প্রক্রিয়ায় সমৃদ্ধ হওয়া সম্ভব হবে। সমাজ উন্নয়নে গৃহীত ভাল কাজের ব্যাপারেও নেতিবাচক নানান ধারনা বিদ্যমান থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তারপরও পরের কল্যাণে ব্যক্তিস্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে হলেও এ'সমস্ত পিছুটান ছিন্ন করতে পারাতেই বীরত্ব।

লোভ-লালসা, কামনা-বাসনার সাগরে য়ারা সাঁতার বেড়ায় তাদেরকে মানবপ্রেম ও দেশপ্রেমে নিবেদিত করাটা মোটেই আর।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.