আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুসলিমদের সংযত আচরণ

Real knowledge is the knowledge about "The Real", or at least, that which leads to "The Real" - rest is just conjecture!

আমি এই নিকে "আমার ব্লগে"ও লিখি। আমার ব্লগে প্রগতিশীল ও সুশীলদের অন্যতম প্রধান characteristic হচ্ছে এই যে, তারা সাধারণত অবিশ্বাসী বা সংশয়বাদী এবং তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে পারেন। ইসলাম সম্বন্ধীয় যে কোন লেখাকেই তারা, একরকম গায়ে পড়েই, হাস্যকর কিছুতে পরিণত করতে সচেষ্ট হন এবং অনেক ক্ষেত্রেই লেখকদের শেষ পর্যন্ত "ছাগু", "রাজাকার" ইত্যাদি নামে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করেন। গালি গালাজের দিক থেকে সামুতে অবস্থাটা অনেক ভালো - এখানকার পরিবেশ রীতিমত "ভদ্রজনোচিত" বলা যায় । এখানকার নাস্তিকরাও অনেক পরিশীলিত - যদিও যে কোন মুসলিমকে মুহূর্তে "তুই-তুকারি" করতে বা "ছাগু", রাজাকার" ইত্যাদি বলতে তারাও পিছ পা হন না।

মুখে গণতন্ত্রের মুখোশ আঁটা থাকলেও - তাদের মন মত কিছু না হলেই My way, or no way মনোভাবটা মুহূর্তে প্রকট হয়ে ওঠে। এসব সত্ত্বেও আমি বলবো (ইসলামী ব্লগগুলো ছাড়া) বড় ব্লগগুলোর ভিতর সামুর পরিবেশই সবচেয়ে ভদ্র, মার্জিত আর লেখাগুলোও বেশীরভাগ মোটামুটি মান সম্পন্ন! তবুও দেখুন একজন ভদ্র ছেলে ইসলাম সম্বন্ধীয় আমার একটা লেখায় (www.somewhereinblog.net/blog/mariner77/29187816 ) সহানুভূতি দেখাতে গিয়ে দুঃখ করে কি বলেছেন: ========= মাহমুদ সিএসই বলেছেন: সামুতে কুরআন-হাদিস নিয়ে কোন লেখার মর্যাদা দিতে কেউ জানে না। আপনি লিখে যাবেন, হয়তঃ কেউ পড়েও দেখবে না। অথচ নাস্তিকতা নিয়ে একটি লেখা দিলে তা পড়ার জন্য সবাই হুমরি খেয়ে পরে আর আলোচনা করার সময়েরও তখন অভাব থাকে না। সেইসব নাস্তিকবাদী লেখায় ইসলামের পক্ষে কথা বলতে গেলে ছাগু/শিবির/রাজাকার/প্রাগৈতিহাসিক জন্তু উপাধি দেয়া হয়।

সামুতে আগে আরও বেশ কয়েকজনকে ইসলামিক বিষয় নিয়ে লিখতে দেখেছি এবং নাস্তিকদের অশ্লীল সমালোচনায় অনেকে লেখাই বন্ধ করে দিয়েছে। =============== আমি একজন 'আলেমকে চিনি - যিনি আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত দিতে "আমার ব্লগে" একটা নিক নিয়ে লিখে থাকেন। তাঁকে ওখানকার সুশীলরা অনেক সময়েই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে থাকেন, যে গুলো আমি উদাহরণ দেখাতেও উচ্চারণ করতে পারবো না। অথচ আমি ১০০% নিশ্চিত যে, তিনি জামাত-শিবিরের কেউ তো ননই বরং তাদের ঘোর বিরোধী। তবে এটা ঠিক যে, যে কোন নাস্তিক-কাফির-মুশরিক বা কাফিরপন্থীদের visa-a-vis তিনি সব সময় একজন মুসলিমের প্রতি স্নেহশীল বা সহানুভূতিশীল - এবং একজন মুসলিমের তাই হবার কথা! এজন্য তাঁকে আমি সবসময় appreciate করেছি।

শুধু তাই নয়, তিনি যে অসীম ধৈর্য সহকারে অকথ্য অশ্লীল গালি গালাজ সহ্য করে আল্লাহর দ্বীনের কথা বলে চলেছেন, সেজন্য তাঁর অসীম ধৈর্যের প্রশংসাও করেছি খোলাখুলিভাবে। কিন্তু ঐ 'আলেম ব্যক্তিটি একদিন সম্ভবত, আর সহ্য করতে না পেরে গালি-গালাজ সম্বলিত একটা পোস্ট দিয়ে বসেন। তখন আমি তার পোস্টে নিম্নলিখিত মন্তব্য করি: ================== নীচের ঘটনাটি বুখারী ও মুসলিমে লিপিবদ্ধ: কাতাদাহ (রা.) বর্ণনা করেন,“আমরা ইমরান ইবন হুসায়েন ও বুশায়ের ইবন কাব- এর সাথে বসেছিলাম । ইমরান বর্ণনা করেন যে, 'শালীনতাবোধ হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ গুণ' অথবা তিনি বলছিলেন 'শালীনতাবোধ পুরোটাই ভাল। ' এটা শুনে বুশায়ের ইবন কাব বলেন 'আমরা নিদিষ্ট কিছু বইয়ে অথবা জ্ঞানের বইয়ে দেখতে পাই যে, এটা হচ্ছে আল্লাহ্ প্রদত্ত মনের প্রশান্তি অথবা আল্লাহর খাতিরে ভদ্র আচরণ এবং এর কিছু দুর্বল দিকও রয়েছে।

' ইমরান এতই রাগান্বিত হলেন যে, তাঁর চক্ষু লাল হয়ে উঠল এবং তিনি বললেন, 'আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর রাসূলের (সা.) একটি হাদীস বর্ণনা করছি আর তুমি তার বিরোধিতা করছো। ’ ” এই হাদীস (আছার) থেকে স্কলাররা বলেন যে, শ্লীলতার গোটাটুকুই ভালো। নবী (সা.) কখনোই কোন অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ করতেন না এবং কারো অশ্লীল কথা উচ্চারণকে পছন্দও করতেন না। "আমার ব্লগের" সুশীলরা যেভাবে গালাগালি করেন, আমি বুঝি, তাতে আপনার (মুসাফিরের) মেজাজ খারাপ হয়। কিন্তু ইসলামী ধর্মতত্ত্ব অনুযায়ী মন্দের প্রতিকার মন্দ দিয়ে করা যাবে না - ভালো দিয়ে করতে হবে।

আপনার মত একজন 'আলীমের "খিস্তি-খেউড়" কেবল আপনারই "পদ-স্খলনের" পরিচায়ক - আপনার উপর স্পষ্টতই শয়তান এক্ষেত্রে বিজয়ী হয়েছে! ================ একটা লেখা কারো পছন্দ বা অপছন্দ হতেই পারে - সেই ভালো লাগা বা ভালো না লাগা প্রকাশ করার জন্য না না রকম ব্যবস্থা তো রয়েছেই - সামুতে যেমন '+' বা '-'। আমার লেখায় কেউ কোন অবস্থায় '-' দিতে পারবে না - এটা মনে করাটা একটা ফ্যাসিবাদী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। একজন মুসলিম হিসাবে আমার কাছে কেবল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) কথাই সমালোচনার ঊর্ধ্বে। আর যে কারো কোন মত বা কথা আমার ভালো লাগতে পারে বা নাও লাগতে পারে। আমি ভালো লাগা প্রকাশ করতে '+' দিতে পারি - ভালো না লাগা প্রকাশ করতে '-' দিতে পারি - এটা মেনেই আমরা ব্লগিং করি।

ইচ্ছা হলে মতামত দিতে পারি আবার নাও দিতে পারি। কিন্তু আমরা বিশ্বাসী মুসলিমরা ইনশা'আল্লাহ্ সাধারণভাবে কিছুতেই গালি গালাজ বা অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে কটুক্তি করবো না - আর বিশেষভাবে অপর ব্যক্তিটি যদি (এমনকি নাম মাত্রও) মুসলিম হন, তবে তো কিছুতেই নয় - কারণ আল্লাহর কাছে একজন মুসলিমের মূল্য, এই পৃথিবী এবং তাতে যা কিছু রয়েছে তার চেয়েও বেশী - কারণ যতক্ষণ একজন বিশ্বাসীও বেঁচে থাকবেন, ততক্ষণ ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না। তাছাড়া আমরা মনে রাখতে চেষ্টা করবো যে, গালি-গালাজ দুর্বলের Last resort - সবলের নয়!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.