আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তোমরা যারা লুলামী করো

জীবনের চেয়ে মূল্যবান কিছু নেই, বেঁচে থাকার চেয়ে উপভোগ্য আর কিছুই হতে পারেনা। মানুষের উপকার করার মত আনন্দদায়ক কাজ পৃথিবীতে আর একটিও নেই।
আমি লুল নই, লুল হওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়নি। এটা আমার দোষ নয়, আমার বয়সের দোষ। আমার বয়স যদি আরও একটু (মানে ৮-১০ বছর) বেশি হতো তাহলে আমিও লুল হতে পারতাম, ব্লগের প্রাপ্তবয়স্ক রমনিদের বড় আপা না ডেকে অন্য কোন বিশেষনে বিশেষায়িত করার চেষ্টা করতে পারতাম, তাদের সাথে লাইন মারার চেষ্টা করতে পারতাম।

সৃষ্টিকর্তা আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন, হেটে হেটে পিসির সামনে আসার জন্য পা দিয়েছেন, ইন্টারনেট বিল পরিশোধ করে ব্লগে ঢোকার জন্য টাকা দিয়েছেন, সুন্দর সুন্দর রমনিদের ছবি দেখার জন্য চোখ দিয়েছেন, তাদেরকে আপা সম্মোধন করে মন্তব্য অথবা মেসেজ টাইপ করার জন্য হাত দিয়েছেন, তার পরও কেমন জানি আপচুচ থেকে যায়, কেমন জানি না পাওয়ার বেদনা আমাকে গ্রাস করে। মাঝে মাঝেই আল্লাহকে প্রশ্ন করি, হে আল্লাহ তুমি আমাকে এত্ত কিছু দিয়েছ তার জন্য ধন্যবাদ, তা আমার বয়স একটু বাড়িয়ে দিতে তোমার কি কষ্ট হয়েছে, সুন্দর সুন্দর আপাদের জন্মের কয়েকদিন আগে আমাকে এই সুন্দর পৃথিবীতে পাঠালে তোমার এমন কি ক্ষতি হতো ? তার পরও আমি হতাশ হইনা, আমার চেয়ে কম বয়সি সুন্দরী অপি আক্তারকে দেখে আশ্বস্ত হই, তার মধ্যে আশার আলো খুঁজি। নিয়মিত তার ব্লগে ঢুকি আমার করা কমেন্টের উত্তর পাওয়ার অপেক্ষায় থাকি। ২) লুলামী মানুষের অধিকার এবং সম্ভবত মানুষ জন্মগতভাবেই লুল। দেশের সকল জনগনের লুলীয় মত প্রকাশ করার এবং লুলামীতে অংশগ্রহণ করার অধিকার রয়েছে আর তাই তরুনরা সেই অধিকার ভোগ করবে এটাই স্বাভাবিক।

একজন সত্যিকারের লুল সহজেই গড়ে উঠে না, লুল হতে হলে অধ্যাবসায়ী এবং বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী হতে হয়। সত্যিকারের লুল হলেন সেই ব্যাক্তি, যিনি মুখপোড়াদের কুটুক্তি আর সুন্দরীদের ভৎসনার পরও হতাশ না হয়ে মাটি কামড়ে, পিঠে খোল বেধে সুন্দরীর পেছনে ফেবিকলের মত লেগে থেকে, তাকে যথাক্রমে প্রেমিকা, স্ত্রী এবং অনাগত সন্তানের জননীতে পরিণত করতে পারেন এবং ঘরে স্ত্রী থাকার পরও নতুন কোন সুন্দরীর সাথে আঠার মতো লেগে থেকে হুজুগ পেলেই তার সাথে ইটশিপিটিশ করতে পারেন। যুগে যুগে পৃথিবী জুড়ে বহু লুলের জন্ম হয়েছে, প্রবাদ প্রতিম লুলা ডি সিলভা থেকে শুরু করে হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদরা মানুষের এই জন্মগত অধিকার চর্চাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। যুগ যুগ ধরে এই অধিকার চর্চা বজায় রাখার মাধ্যমে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। মুখপোড়া দের কুটক্তি আর বেরসিক রমনিদের শত ভৎসনার পরও পিছপা হননি, শুধুমাত্র তাদের এই নাছোড় আচরন আর অধ্যাবাসায়ের কারনে লুলামী শুধুমাত্র অধিকারের গন্ডি ছাড়িয়ে শিল্পের আকার ধারন করেছে।

পৃথিবী জুড়ে লাখো তরুণ এই শিল্প চর্চা করছে। একজন লুলের জীবনের উদ্যেশ্য কী? একজন লুল নিজেকে ভবিষ্যত প্রেমিক বা স্বামী হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করবে। তাই লুলদের মূল কাজ হলো সুন্দর সুন্দর তরুনীদের খুঁজে বের করে তাদের সাথে লুলামী করা। লুলরা ব্লগে যাবে, ফেইসবুকে আইডি চালু করবে, অন্যদের লুলামী দেখে নিজেকে প্রস্তুত করবে। তরুনীদের সাথে আড্ডা দেবে, গল্প করবে, কি করলে সেই রমনিকে লাইনে আনা যায়, কি করলে সেই রমনির সাথে প্রেম কার যায় এবং তার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে অনাগত সন্তানকে পৃথিবীতে আনার মতো মহৎ কর্ম সম্পাদন করা যায়, তা নিয়ে ভাববে।

কি করলে অথবা কিভাবে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি লুলীয় দিন উপহার দেয়া যায় তা নিয়ে ভাববে। লুলামী শিল্পকে কিভাবে বাঁচিয়ে রাখা যায় তা নিয়ে ভাববে। লুলামীর নতুন নতুন পদ্ধতি আবিস্কার করবে, সর্বোপরী এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখে নতুন প্রজন্মকে উন্নত এক লুলীয় পদ্ধতির সাথে পরিচিত করতে কাজ করে যাবে। কোন পদ্ধতিতে লুলামী করলে দেশ এবং দেশের আপামর তরুনীদের উপকার হবে তা নিয়ে ভাববে। তোমরা যারা লুলামী করো তারা আসলে কি কারণে লুলামী করছো? লুলামী করে কি দিয়েছো দেশকে, কি দিয়েছ রমনিদের ? তোমরা কি রমনিদের বর্তমান প্রেমিককে সাবেক বানিয়ে নিজেকে বর্তমানে পরিণত করতে পেরেছো ? তোমরা কি কোন এক রমনির সাথে দীর্ঘদিন লুলমীর পর তাকে নিয়ে কেএফসিতে ডেটিং দিতে পেরেছো ? তোমরা কি লুলামী করে কাউকে স্ত্রীতে পরিণত করে তার সাথে সংসার শুরু করতে পেরেছো ? লুলামী, প্রেম এবং ‍বিয়ের মাধ্যমে দেশকে কি নতুন প্রজন্ম উপহার দিতে পেরেছো ? তোমার কি লুলামীর নতুন কোন পদ্ধতি আবিস্কার করতে পেরেছো ? তোমাদের হাত ধরে কি লুলামী শিল্পের নতুন কোন দিগন্তের সূচনা হয়েছে ? নতুন প্রজন্মের লুলদের জন্য তোমার কি করেছো, তাদের জন্য কি রেখে যাচ্ছ ? লুলামী কোন ছেলেখেলা নয়, লুলামীর সাথে একজন তরুনীর সংসার জীবন জড়িয়ে আছে।

নতুন প্রজন্মের আগমনের বার্তা রয়েছে, তুমি যদি সঠিক পদ্ধতিতে লুলামী করো তাহলে নতুন প্রজন্ম আসবে, আর যদি তুমি সঠিকভাবে লুলামী করতে না পারো তাহলে নতুন প্রজন্ম তো আসবেই না বরং তুমি সারাজীবন অবিবাহিত থেকে যাবে। সময় এবং নদীর স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না, মাথায় টাক পড়ে গেলে সুন্দরীরা তোমার দিকে ফিরেও তাকাবে না, তার আগেই প্রস্তুত হও, সঠিক সময়ে সঠিক কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের পৃথিবীতে আসার পথ সুগম করে দাও। তাই শুধু শুধু ঠাট্টা তামাশা না করে এবং সুন্দরীদের নতুন নতুন ছবি দেখাতে লুলামীকে সীমাবদ্ধ না রেখে সামনে আগাও, কিভাবে একজন সন্দরীকে প্রেমিকা এবং স্ত্রীতে রুপান্তর করা যায়, তা নিয়ে গবেষনা করো। অনাগত ভবিষ্যত প্রজন্মকে পৃথিবীতে আসতে বাধ্য করো। হাতে এখনও অনেক কাজ বাকি আছে, সুন্দরীরা তোমার অপেক্ষায় বসে আছে, অনাগতরা তোমার অপেক্ষায় মুখিয়ে আছে।

এগিয়ে যাও লুল, তুমাকেই খুঁজছে সুন্দরীরা। কেউ একজন বলেছিলেন, মানুষ বাঁচে আশায় দেশ বাঁচে ভালবাসায়। আমি দেশপ্রেমিক, স্বার্থপর নই, নিজের আগে দেশের চিন্তা করি, দেশের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি। আমি শুধু অপি আক্তারের কমেন্টের উত্তর বসে নেই, তার ভালবাসা পেয়ে দেশকে বাঁচানোর চেষ্টায় মগ্ন আছি। বিশ্বাস করেন দেশের যদি ভালবাসার প্রয়োজন না হতো তাহলে আমি অপি আক্তারের কাছ থেকে ভালবাসা আশা করতাম না।

আমি বিশ্বাস করি অপি আক্তার দেশপ্রেমিক, তিনি আমাকে ভালবাসার মাধ্যমে মুমূর্ষ দেশকে সতেজ করতে এগিয়ে আসবেন, ভালবাসা দিয়ে মৃতপ্রায় দেশকে বাঁচিয়ে তুলবেন।
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।